সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সসাগরা সদ্বীপা রাজ্যের মার্তণ্ডপ্রতাপ সম্রাটের প্রাসাদে প্রার্থনা লইয়া উপস্থিত হইল যুবক।
সম্র্রাট কহিলেন, "কী প্রার্থনা তব?"
"কর্মের প্রত্যাশা করি, রাজাধিরাজ," প্রদীপ্তভাবে উত্তর করিল যুবক।
"কী কর্ম সম্পাদন করিতে পার তুমি?" কৌতূহল ভরিয়া প্রশ্ন করিলেন সম্রাট।
আনন্দে উদ্বেলিত হইয়া যুবক বলিল, "যাহারা লোহিত স্ফটিকে বিশ্ব অনুসন্ধান করিয়া থাকে, আর যাহারা নীলাভ স্ফটিকে বিশ্ব অনুসন্ধান করিয়া থাকে, তাহাদিগের নিকট হইতে বাক্যবাণে স্ফটিক অপসারণ করিবার প্রয়াস পাইতে পারি।"
সম্রাট বলিলেন, "তোমার কর্মপ্রত্যাশা গৃহীত হইল। তবে স্ফটিক অপসারণ নহে, সসাগরা সদ্বীপা রাজ্যের তেপান্তর পেরিয়ে বিজন বনের ধারে ভূষণ্ডির মাঠ অদ্য হইতে তৃণাচ্ছাদিত করিবে তুমি। রাজ্য হইতে নিয়মিত তোমার পারিশ্রমিক প্রেরণ করা হইবে।"
"যথাজ্ঞা, মহানুভব।"
সম্রাটের কোতোয়াল ভূষণ্ডির মাঠে যুবককে পৌঁছাইয়া দিল। আরও কয়েকজন যুবকের সাথে কর্মে প্রবৃত্ত হইল সে।
সম্রাটের সুবর্ণিক যুবকের নিকট পত্র প্রেরণ করিল, সম্রাটের জানিতে অভিলাষ, তৃণাচ্ছাদনের অগ্রগতি কীরূপ।
"ভূমি কর্ষণ করা হইয়াছে।" যুবক উত্তর প্রদান করিল।
কিয়ৎ দিবস পরে সুবর্ণিক আবারও পত্র প্রেরণ করিল।
"বীজ বপন করা হইয়াছে।"
"তৃণের অঙ্কুরোদগম পরিলক্ষিত হইয়াছে।"
"সবুজ তৃণে ভরিয়া উঠিয়াছে ভূষণ্ডির প্রান্তর।"
"তৃণ কর্তন করা হইয়াছে।"
"তৃণের মূলোৎপাটন সম্পন্ন হইয়াছে।"
এমতে চক্র পূর্ণ হইল, সুবর্ণিক পত্র প্রেরণ করিল।
"ভূমি কর্ষণ করা হইয়াছে।"
"বীজ বপন করা হইয়াছে।"
"তৃণের অঙ্কুরোদগম পরিলক্ষিত হইয়াছে।"
"সবুজ তৃণে ভরিয়া উঠিয়াছে ভূষণ্ডির প্রান্তর।"
"তৃণ কর্তন করা হইয়াছে।"
"তৃণের মূলোৎপাটন সম্পন্ন হইয়াছে।"
...
নীলাভ লোহিত স্ফটিকে প্রজাদিগের সমস্যা ছিল না কোনো কালে।
কর্ম ও পারিশ্রমিকে শঙ্কামুক্ত হইল যুবক।
যুবকের ব্যাধিমুক্তিতে তৃণকর্তনচক্রের যথার্থতায় আরেকবার আনন্দিত হইলেন সম্রাট।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৮