২০০৩ সালে মুকুল শিকদার এইচ.এস.সি পরীক্ষা দওেয়ার জন্য গৌরিপুর তার পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছি একটি বাসা ভাড়া নিয়েছে ২ দুজন বন্ধুকে নিয়ে। বন্ধুরাও পরীক্ষার্থী। অন্যান্য ক্লাসমেটরাও তার আশে-পাশেই বাসা ভাড়া নিয়েছে।
পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভালই যাচ্ছে দিন-কাল। সামনে ২ দিন বন্ধ। তাই মুকুল ওর পরিচিত অন্য ক্লাসমেটের সাথে দেখা করতে তার বাসায় গেল। অনেক কথা-বার্তা হল, পরীক্ষার পিপারেশন নিয়েও কথা হল। বাসা থেকে বের হয়ে গেটে চলে আসছে এমন সময় পিছন থেকে একজন হিজড়া ডেকে বলল-ঐ ছেমড়া, খুবতো রসের খতা কলি তোর নাগরের লগে। আমার লগে একটু পিরিতির কথা কবিনা। হা.হা.হা..........
মুকুল পিছনে ফিরে তৃতীয় লিঙ্গের এই মানুষটিকে দেখে ও তার কথা শুনে একেবাড়ে ঘাবড়ে গেল। সে কখনো এমন পরিস্থিার সাথে পরিচিত নয়।
মুকুল বলল- আমি আমার বন্ধুর সাথে দেখা করতে এসেছি। পরীক্ষার ব্যাপারে কথা বলেছি।
হিজড়া- অ। বুঝছি। তয় আমার কাছেও তুই পরীক্ষা দে-দেখি তোর কদ্দুর পাওয়ার আছে।
কথা শেষ করে হিজড়া লোকটি হেলে দুলে মুকুলকে ধরার জন্য যেইনা এগিয়ে আসছে এমনি মুকুল ভয়ে এক দৌড়ে তার বাসায় চলে এসে হাপাতে লাগলো। ওর অবস্থা দেখে বন্ধু কৌশিক বলল- কি রে কি হয়েছে? অমন হাপাচ্ছিস কেন ?
মুকুল পানি খেয়ে একটু স্বাভাবিক হয়ে ঘটনা খুলে বলল। শুনে কৌশিক হাসতে হাসতে বলল- অ, এই ব্যাপার। এতে ভয়ের কি আছে। আমার সাথে এর চেয়ে বাজে ঘটনা ঘটেছে।
সেদিন আমি বাজার করে বাসায় ফিরছিলাম ব্রিজে আমাকে একলা পেয়ে ২ জন হিজড়া পথ রোধ করে দাড়াল। বলল- বাহ্। দেখতে একেবারে নায়কের মত। নায়কের পকেটে টেকা আছে। ১০০/- টাকা দে। দোকানে গিয়া কিছু খাই।
আমি বললাম- বাজার করে টাকা শেষ হয়ে গেছে। ২০/- টাকা আছে।
অমনি খিস্তি খেউড় করে বলল- শালা। ২০/- টাকা দিয়া কি করমু-রে। তোর টেকা তুই খা।
কথা বলার এক পর্যায়ে আমার গোপনাঙ্গে একজন হাত দিল। আমি সরে যাওয়ার চেষ্টা করতেই আরেকজন এসে জাপটে ধরল।
ভয় ও ঘুনায় আমি কি করব দিশা পা্চিছলামনা। এরমধ্যে একজন আমার পেন্টের চেইল খুলে ফেলেছে। আমি মরিয়া হয়ে চিৎকার দিলাম- বাচাঁও। আমাকে বাচাঁও।ঠিক তখনই ২/৩ জন পথচারী এদিকে আসছে দেখে আমাকে শাষিয়ে ওরা চলে গেল। যাওয়ার সময় বলল-আরেকদিন পাইলে তোরে বাসায় নিয়া ছুইলা খামু।
তারপর থেকে আমি ওদের দেখলে নিরাপদ দূরুত্বে থাকি।
ঘটনা শুনে মুকুল বলল- কি সাংঘাতাকি ব্যাপার। ভাবা যায়না।
এতক্ষন ধরে দুই বন্ধুর কথা শুনে মুখ খুলল অরণ্য।
অরণ্য বলল- তাহলে আমি একটা ছোট্ট ঘটনা বলি তোদের। কুমিল্লা টাইন হলের মাঠে মেলা বসেছে। আমি এক বড় ভাইয়ের সাথে মেলায় যাব বলে টিকেট কাউন্টারে দাড়িয়ে আছি। তখন ৩ জন হিজড়া টিকেট ছাড়া মেলায় ঢুকার জন্য তোড় জোড় করছে। বড় ভাইকে দেখে একজন কামুক ভঙ্গি করে বলল-ইস্ তুই কি সুন্দর, তোরে একলা পাইলে চুমা দতিাম। আমারা ওদের কথা না শোনার ভান করে টিকেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করছি ।
হিজড়াদের চিল্লা-চিল্লি শুনে পুলিশ এগিয়ে এল। ওদের ঠেকাতে প্রথমেই বলল- ভালয় ভালয় এ্ই জায়গা ছাইড়া চ্ইলা যা। ন্ইলে কিন্তু ভাল হইবনা।
ওদের বেপরোয়া ভাব দেখে একটু নরম হয়ে বলল-তোরা মেলায় যাবি ভাল কথা। টিকেট কেটে যা।
এই কথা শুনে তিন জন হিজড়া মারমুখী ভঙ্গি করে বলল-এইরে হালার পুরিশ। আমগো কি টিকেট লাগেরে। আমগো লাইগা সব ফ্রি। এখন ঢুকতে দিবি না হইলে কিন্তু সব খুইলা দেখাই দিমু। এই বলে তারা তাদের গায়ের পোশাক খুলতে শুরু করল। কয়েকজন নারী ও পুরুষ যারা গেইটে ছিল দ্রুত সরে পড়ল এই লজ্জাজনক ঘটনা এড়াতে। শেষমেষ পুলিশ বাধ্য হয়ে ওদের অনুমতি দিল। বলল-মেলাতে যদি কোন অঘটন ঘটাস তবে সোজা জেলে দিয়ে দেব।
মুকুল বলল- দিন দিন ওদের অত্যাচার বেড়েই চলছে। কেউ প্রতিবাদ করেনা। প্রতিবাদ করলে ওরা দলবেধে এসে চড়াও হয়।ওদের উপর হাত তোলাও যায়না, হাত তুললে নাকি জেল জরিমানা হয়! তাই লোকজন সম্মানের ভয়ে কিছু বলেনা, ওদের পাশ কাটিয়ে চলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮