somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিলন
আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

দুর্বৃত্তপরায়ন ও দুষিত রাজনীতি প্রতিরোধে শাসনযন্ত্র ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন ।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাকিস্থানের সাথে আমরা দীর্ঘ একটানা ২৪ বছর সংসার করেছি, তারও আগে ব্রিটিশদের সাথে দুইশত বছর করেছি, বাস্তবিক অর্থে সংসার করা বললে ভুল হবে, মূলত এই দুই শক্তির দ্বারা আমরা শাসিত ও শোষিত হয়েছি।ব্রিটিশ ঔপনিবেশকিতা থেকে আমরা যে কারণে স্বাধীন হয়েছি ঠিক সেই একই কারণে পাকিস্থানীদের থেকেও আলাদা হয়েছি, কিন্তু কাগজে কলমে স্বাধীনতা ও প্রকৃত স্বাধীনতার মধ্যে পার্থক্য কি ? পার্থক্য অনেক -এই পার্থক্য বর্তমান বাংলাদেশ ! আমার কাছে কেোন ঔপনিবেশিক শক্তি বা পরাশক্তির কাছ থেকে কোনো দেশের স্বাধীনতা অর্জনের উদ্দেশ্য তিনটি - স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও স্বনির্ভরতা । এই তিনটি উপাদানই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পুরো ইতিহাস চালিত করেছে। বিস্তারিত বলতে গেলে লেখার পরিধি অনেক বড় হয়ে যাবে।

আমাদের এখন হিসাব কষার সময় এসেছে মুক্তিযুদ্ধের এই ৪২ বছর পর আমরা অন্তত কোন উপাদানটি অর্জন করতে পেরেছি ? একটি দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী ইতিহাস ও সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে এরকম দেশের সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে খুব বেশি নেই হাতে গোণা কয়েকটি । তারমধ্যে একটি আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রতিদিন অনেক কিছুই ঘটে যাচ্ছে কিছু নাটকীয় কিছু পরিকল্পিত, আর কিছু পুতুল নাচের মত ঘটতেছে যেখানেই জনগণই পাপেট অথবা দর্শক আর সরকার বা কোনো প্রভাবশালী মহল হল সেই পাপেট শোর কারিগর !

পাকিস্থানের মত অপহরণ, খুন, গুম, হত্যা এখন আমাদের নিত্য সঙ্গী। এইতো গতকালের খবর পাকিস্থানের প্রখ্যাত সাংবাদিক হামিদ মীর সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলিবদ্ধ! পাকিস্থানে কখন যে কে অপহরণ, গুম, খুন হন এর কোনো নিশ্চয়তা নেই এবং স্বয়ং পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রীও দিতে পারবেন না যে তিনি গুম হবেন না ! এর কারণ পাকিস্থানের বর্তমান অবস্থা একদিনে সৃষ্ট হয়নি। পাকিস্থানের নেতাদের রাজনৈতিক দুদর্শিতার অভাব যেমন দায়ী তেমনি দায়ী তাদের ভ্রান্ত ও দুষিত রাজনীতি, পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ ও মৌলবাদ তোষণের রাজনীতি। এবার মিল দেখুন, বাংলাদেশে পাকিস্থানের মত কি ঘটতেছে না ? ইলিয়াস আলীর গুম, সাগর রুনির হত্যাকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক আবু বকরের অপহরণ হওয়াসহ কোনটি বাংলাদেশে ঘটতেছে না ? হ্যাঁ, শুধু মাত্রাগত দিক দিয়ে পাকিস্থানের চেয়ে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ অনেক কম। বাংলাদেশেও প্রচুর জঙ্গী আছে তবে ওরা সুপ্ত অবস্থায়। সুযোগ খুঁজতেছে সরকারের ব্যর্থতা ও নির্বুদ্ধিতার !

কোনো একটি দেশের সমস্যা একদিনের সৃষ্টি হয় না । পাকিস্থান যেমন এর বড় প্রমান তেমনি বাংলাদেশও আর একটি উদাহরণ। আমরা পাকিস্থান থেকে মুক্ত হয়েছি বটে কিন্তু পাকিস্থানের রেখে যাওয়া দুর্বৃত্তপরায়ন রাজনীতি, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সাম্রাজ্যবাদ প্রীতি ও মৌলবাদ তোষণের রাজনীতি শিশুকালের ধারাপাতের মত মুখস্ত করেছি। জাতি হিসাবে আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা আমরা নিজেদের জন্য এখন পর্যন্ত যুগোপোযোগী ও শক্তিশালী শাসনযন্ত্র রচনা করতে পারিনি ! আমাদের বর্তমান যে শাসনযন্ত্র তা মূলত ঔপনিবেশিকতা থেকে প্রাপ্ত ও কপি করা শাসনযন্ত্র! এই শাসনযন্ত্রে একক ব্যক্তিকে সুপ্রীম অথোরিটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে।উপনিবেশিকতার মানসিকতায় আক্রান্ত জাতি তার স্বকীয়তা হারিয়ে যখন কোন কোন মানবকে দেবতার আসনে অধিষ্ঠীত করে তখন সেখানে ব্যাক্তি পূজা শুরু হয় আর সেই দেবতাকে তুষ্ট করতে যেয়ে চাটুকারী প্রজন্ম ভূত-ভবিষ্যৎ না ভেবেই দেশকে এমন এক অবস্থায় নিয়ে গেছে যেখান থেকে বের হওয়া খুবই দূরহ ব্যাপার । এই চাটুকারী ও তোষামোদী প্রজন্ম তাদের তোষামোদী ও মোসাহেবী কার্যক্রম চিরস্থায়ী করার জন্য আমাদের সংবিধানকে ব্যবহার করেছে । বাংলাদেশের সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যা পৃথিবীর কোন গণতান্ত্রিক দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী ভোগ করেন না ! বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ যদি কোন ফেরেস্তোকেও দেওয়া যায় তাহলেও Omnipotent Authority হওয়ার কারণে সেই ফেরেস্তাও স্বৈরাচার হতে বাধ্য । বর্তমানে বাংলাদেশে যা ঘটতেছে এখানেই এর মূল রহস্য ! আমেরিকা যুক্তরাস্ট্রের স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক যে শাসনযন্ত্র রচনা করেছিলেন সেই শাসনযন্ত্র দ্বারা আমেরিকা এখন পরিচালিত হচ্ছে! সেই জর্জ ওয়াশিংটন ইচ্ছে করলেই পারতেন তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মত Omnipotent Authority হতে, শুধু দু’বার নয় ইচ্ছে করলেই তিনি ততোধিক বা আজীবন প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন, কিন্তু এটা করলে আমেরিকা যুক্তরাস্ট্র আজকে বিশ্বের একক পরাশক্তি হতে পারত না ! তেমনি ভারত একটি বহুজাতিক ও বহুভাষাভাষিক রাস্ট্র হওয়ার পরেও টিকে থাকার মূল রহস্য তাদের সংবিধান !

এজন্য আমাদের শাসন যন্ত্রের পরিবর্তন দরকার । বর্তমান শাসন বাবস্থায় আমরা কোন সন্তোষজনক ফল পাব না । আওয়ামীলীগ ও বিএনপি একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ । উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য আমাদের তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান তরুণ সমাজের একটি খারাপ প্রবণতা হল I hate politics ! এরা মনে করে, দেশ নিয়ে ভাবার দরকার নাই। মোটামুটি কিছু উপার্জন, বাজার করি, দুবেলা তিনবেলা খেয়ে মনের সুখে ঘুমাই। দেশ নিয়ে ভাবার দরকার কি? কিন্তু আপনিতো কষ্ট করে কামালেও খেতে পারবেন না। রাস্তা দিয়ে চললে চান্দাবাঁজ ধরবে, সন্ত্রাসী ধরবে। চান্দা না দিলে ছেলেকে ধরে নিয়ে যাবে, মেয়েকে ধরে নিয়ে যাবে, কিডন্যাপ করবে। অথবা যে বিল্ডিং এ আপনি কাজ করেন দুদিন পর দেখেবেন সেই বিল্ডিং আপনার মাথায় মাটির গুড়ার মত ভেঙ্গে পড়ছে । হয় আপনাকে মরতে হবে নতুবা সারাজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করতে হবে ! আবার ধরুন, কষ্ট করে একটা দোকান দিলেন। পরের দিন এসে হাজির হবে চান্দা দাও। নইলে জানটা হারাতে হবে! না হলে ইলিয়াস আলীর মত গুম হতে হবে, সাগর রুনি বা বিশ্বজিতের মত খুন হতে হবে বা আবু বকরের ভাগ্য বরণ করতে হবে । তাই বলছি তরুণ সমাজ রাজনৈতিক ভাবে সচেতন হলেই এই দুর্বৃত্তপরায়ন রাজনীতি প্রতিরোধে আশানুরুপ ফল পাওয়া যেতে পারে । অন্যথায় এই চাটুকারী ও তোষামোদী প্রজন্ম আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে শাসন ও শোষন করে যাবে । আর এর পরিণাম যারা রাজনৈতিকভাবে সচেতন নয় তাদেরও ভোগ করতে হচ্ছে ও আরো কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×