somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিলন
আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

ফিলিস্তিনিদের অন্যতম স্বাধীনতাকামী ও প্রতিরোধী সংগঠন হামাস ও তাঁর ইতিকথা ।

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা পিএলও যে স্বপ্ন বা উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ফিলিস্তিনি জনগণের সেই প্রত্যাশা পুরুন করতে না পারায় স্বভাবতই ১৯৮৭ সালে হামাস নামে নতুন এক দলের উৎপত্তি হয়। ইয়াসির আরাফাত ছিলেন আপোসহীন এবং আরাফাতের নেতৃত্বে পিএলও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষন করতে সক্ষম হন আর ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত পিএলও ছিল দুর্দান্ত এক মিলিট্যান্ট সংগঠন কিন্তু জতিসংঘের প্রস্তাবে আরাফাত তথা পিএলও অস্ত্র পরিত্যাগ করে ইসরায়েলের সাথে শান্তি আলোচনায় বসে কিন্তু বিল ক্লিনটনের মধ্যস্থতায় ১৯৯৩ সালে আসলো শান্তি চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিল ফাতাহ আর এর বিনিময়ে আরাফাত পেল নোবেল পুরুষ্কার। এই চুক্তি সম্পর্কে ফিলিস্তিনের কন্ঠস্বর এডওয়ার্ড সাইদ বলেছেন, ”অসলো চুক্তি শুধু ফিলিস্তিনি দুর্বলতার প্রকাশই নয়, বরং বড় ধরণের অযোগ্যতা এবং ভুল হিসাবের কারণে হয়েছে, যার ফলাফল ভয়ঙ্কর হতে পারে। আরাফাত যে একটা ফিলিস্তিন রাষ্ট্র পান নাই তা বুঝতেও তার এক বছরের মতো সময় লেগেছে। অসলোর গোপন চুক্তি সে করেছে কেবল নিজেকে বাঁচানোর জন্যে। আরাফাত শুধু তার নিজের স্ট্যাটাস সংক্রান্ত প্যারাটাই পড়েছেন। তা পড়েই ভেবেছেন তিনি প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র পেয়ে গেছেন “ এরপর ইসরায়েল আলোচনার নামে সময়ক্ষেপন করে দখল অব্যহত রাখে ফিলিস্তিনি ভূমি আর অবৈধ বসতি স্থাপনের কাজ চলে জোর গতিতে।আলোচনার ফলাফল ফিলিস্তিনি জমিতে নতুন নতুন ইহুদি বসতি ! আজকের ফাতাহ শাসিত পশ্চিম তীরে জালের মত ছড়িয়ে আছে ইহুদী বসতি। ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলো মানে পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম অঞ্চল মৌমাছির মৌচাকের মতই ইহুদি বসতিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। পিএলও অস্ত্র পরিত্যাগ করে শান্তি আলোচনায় মনযোগী হওয়াতে পশ্চিমা নেতাদের বাহবা কুড়ালেও উল্লেখযোগ্য কোনো অর্জন করতে না পারায় তখন থেকেই ফাতাহর ক্ষয় শুরু আর স্বাভাবিকভাবেই শুন্য স্থান পুরনে উত্থান হতে থাকে ফাতাহর চেয়ে আরো দুর্ধর্ষ ও দুর্দান্ত হামাসের।ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইস্রায়েল এবং জাপান হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সৌদি আরব, মিশর, আরব আমিরাতসহ আরো কিছু আরব দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবেই বিবেচনা করে অন্যদিকে ইরান, সিরিয়া, কাতার, তুরস্ক, রাশিয়াসহ বিশ্বের আরো বিভিন্ন দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন নয় বরং একটি স্বাধীনতাকামী ও প্রতিরোধকামী সংগঠন হিসাবেই দেখে। হামাসের রাজনৈতিক শাখার পাশাপাশি আল কাসাম ব্রিগেড নামে একটি সামরিক শাখা আছে। এই শাখাটি মূলত ইসরায়েলের সাথে গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধরত।

হামাস শব্দের অর্থ উদ্দীপনা । হামাসের প্রতিষ্ঠাতা হলেন ফিলিস্তিনি ধমীয় নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিন। শেখ আহমেদ ইয়াসিন ছিলেন একজন পঙ্গু মানুষ এবং প্রায় অন্ধ ।তিনি চলাফেরা করতেন হুইল চেয়ারে করে।যখন তার বয়স বারো বছর তখন তিনি একটা দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রতিবন্ধী হন। তিনি মিশরে লেখাপড়া করেণ ফিলিস্তিনে ফিরে এসে প্রতিষ্ঠা করেণ হামাস । গত ২২ মার্চ ২০০৪ এর প্রত্যুষে বাসা থেকে ১০০ মিটার দূরের মসজিদে হুইল চেয়ারে করে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। ইসরায়েল ঐ সময় ৬৪ অ্যাপাচি হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে মিসাইল নিক্ষপ করে শেখ আহমেদ ইয়াসিনকে হত্যা করেন। সঙ্গে থাকা বডিগার্ডসহ আরো ৯ জন পথচারী নিহত হন।শেখ আহমেদ ইয়াসীন শহীদ হওয়ার অল্প কয়েকদিনের মধ্যে একই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েল হত্যা করে হামাসের সদ্য নতুন প্রধান আবদেল আজিজ আল রানতিশি।দিনটি ছিল ১৭ এপ্রিল ২০০৪ ।রানতিশি একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ছিলেন।শুরুতেই এমনকি ইয়াসির আরাফাত জীবিতকালীন হামাসের তেমন কোনো পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা ছিল না কিন্তু ফাতাহর ব্যর্থতাই ছিল হামাসের সফলতা ! তবে ইয়াসির আরাফাত জীবিতকালীন পর্যন্ত হামাসের সাথে ফাতাহর কোনো দ্বন্দ্বও ছিল না । কিন্তু দ্বন্দ্ব শুরু হয় তখনই যখন ২০০৬ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে হামাস বিপুল ভোটে বিজয়ী হয় এবং নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এ নির্বাচনে পশ্চিমারা পর্যবেক্ষক ছিলেন। পশ্চিমারা বলেছিল তারা নির্বাচনের ফলাফলকে মিনে নিবেন কিন্তু হামাস জয়ী হবে তারা তা কল্পনা করতে পারে নি এজন্য যে তারা তো বছর বছর ফাতাহকে প্রচুর ডলার সাহায্য দিত । তাহলে এ সাহায্য গেল কোথায় ? আসলে ইয়াসির আরাফাতের দল ফাতাহ জড়িয়ে পড়ে দুর্নীতি ,পশ্চিমা আর ইসরায়েল প্রীতিতে।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন হামাসের ইসমাইল হানিয়া কিন্তু যুক্তরাস্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব হামাসকে মেনে নিতে অস্বীকার করল । পশ্চিমাদের গণতন্ত্রেরে এ হলো স্বরুপ ! যারা গণতন্ত্রের ফেরওিয়ালা তাদের অধীনেই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচিত হামাসকে মেনে নিতে অস্বীকার করল ! যুক্তরাস্ট্র, ইউরোপসহ পশ্চিমাবিশ্ব এক যোগে ঘোষনা করল হামাস যতদিন সরকার হিসাবে থাকবে ততদিন তারা ফিলিস্তিনিদের কোন সাহায্য সহযোগীতা করবে না আর ইসরায়েলকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে যাবে।

ফাতাহ তথা মাহমুদ আব্বাসও সুযোগ খুজছিলেন হামাসকে কিভাবে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা যায়। অনেক টানাপোড়নের পর ফিলিস্তিনির প্রেসিডেন্ট হিসাবে মাহমুদ আব্বাস হামাস সরকারকে বরখাস্ত করেণ ও তার নিজ দল ফাতাহ দ্বারাই সরকার গঠন করেণ। স্বভাবতই নির্বাচনে বিজয়ী হামাস তা মেনে নিতে অস্বীকার করে।ফলে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ফলে ফিলিস্তিন হয়ে পড়ে দু’ভাগ। সেই থেকে পশ্চিম তীর শাসিত হচ্ছে মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহ দ্বারা আর গাজা শ্বাসিত হচ্ছে হামাস দ্বারা।ইসরাইল ফিলিস্তিনে তার আসল আধিত্যবাদী অস্তিত্বের পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক মনে করে আদর্শনিষ্ঠ ও অকুতোভয় হামাসকে। তাই হামাস গাজার শাসনভার কাঁধে তুলে নেওয়ার পর থেকেই ইসরাইল অবোরোধের মাধ্যমে এ ক্ষুদ্র জনপদের ১৫ লক্ষ মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। ফলে অসহায় গাজাবাসী বিনা দোষে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছে। গাজায় যাতে কোন পন্য সামগ্রী এমনকি খাদ্য পর্যন্ত ঢুকতে না পারে ইসরায়েল কড়াকড়ি ব্যবস্থা গ্রহন করে আর এ কাজে সহযোগীতা করে আসছে মিসর। বর্হিবিশ্বের সাথে গাজার একমাত্র সংযোগ পথটি হল রাফা ক্রসিং যা গাজাবাসীকে মিসর দিয়ে বর্হিবিশ্বের সাথে যোগাযোগে সাহায্য করে তা হুসনি মোবারকের আমল থেকেই বন্ধ আর বাকি দিক ইসরায়েল দ্বারা পরিবেষ্টিত ও অন্যদিকে সাগর ! গাজার প্রতি এ অসহনীয় অবোরোধ সহ্য করতে না পেরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কিছু বিবেকবান মানুষ একত্রিত হয়। আর্তমানবতা ডাকে সাড়া দিতে তারা সবাই ১০ হাজার টন সাহায্য সামগ্রী নিয়ে ৩১ মে ২০১০, ৬ টি জাহাজের একটি বহর ফ্লটিলা সাইপ্রাসের একটি বন্দর থেকে যাত্রা করে। তাদের লক্ষ্য ছিল অবরুদ্ধ গাজা। বহরের যাত্রীদের সবাই ছিলেন শান্তিবাদী ত্রাণকর্মী। ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যসহ ১৫ টি দেশের নাগরিক।দেশগুলো হল যুক্তরাস্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা,গ্রীস, বেলজিয়াম, নরওয়ে, সার্বিয়া, সুইডেন,আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আলজেরিয়া, তুরুস্ক,কুয়েত, মালয়েশিয়া ও ফিলিস্তিন।

ভোরের আলো আঁধারীতে জাহাজগুলো যখন আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ইসরায়েল উপকুল থেকে ৪০ মাইল দূরে তখনি ইসরায়েলী কমান্ডো হেলিকপ্টার থেকে নেমে হামলা চালায়।তারা নেমেই নির্বিচারে গুলি ছুড়ে। এতে ২০ জন নিহত ও ৬৬ জন আহত হন। নিহতেদের প্রায় অর্ধেকই তুরুস্কের নাগরিক।ইসরায়েলী সেনারা হতাহত ও অন্যসব যাত্রীবাহী জাহাজগুলো আটক করে নিয়ে যায় তাদের বন্দরে।

হামাসের উদ্দেশ্য হল গাজা, ইসরায়েল ও ওয়েস্ট ব্যাংক নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যদিও ২০০৯ সালে হামাসের রাজনৈতিক শাখা প্রধান খালেদ মেশাল দামেস্কে এক বিবৃতিতে ১৯৬৭ সালের সীমানার ভিত্তিতে জেরুজালেমকে রাজধানী করে ইসরায়েলকে মেনে নেওয়ার কথা বলেছিলেন কিন্তু ইসরায়েল তা প্রত্যাখান করে। আসলে ইসরায়েলের মূল উদ্দেশ্য ফিলিস্তিনিদের সাথে সহবস্থান নয় বরং উদ্দেশ্য সম্পূর্ন ফিলিস্তিনসহ পাশ্ববর্তী দেশগুলি দখল করে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করা। যে বৃহত্তর ইসরায়েলের কথা ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থে নাকি বর্ণিত আছে।অবশ্য আদি ইহুদিরা এ কথা বিশ্বাস করে না বরং ইসরায়েল রাস্ট্রকে তারা তাদের ধর্ম গ্রন্থের বানীর পরিপন্থী বলে মনে করেণ।

ইসরায়েলের প্রচুর জমি দরকার কারন ইসরায়েল বিশ্বের সমগ্র ইহুদীদের নিজ নাগরিক মনে করে। তারা মনে করে একদিন বিশ্বের সমগ্র ইহুদী সম্প্রদায় একত্রিত হবে আর প্রতিষ্ঠা করবে বৃহত্তর ইসরায়েল রাস্ট্র। এরকম ভাবনা বিশ্বের আর দ্বিতীয় কোন নজীর নেই । আপনি যদি ইহুদী হন তাহলে আজই ইসরায়েলের সাথে যোগাযোগ করুন । আপনার সমস্ত খরচ ইসরায়েল রাস্ট্রীয়ভাবে বহন করে ঐ ইহুদী রাস্ট্রটিতে আপনাকে নিয়ে যাবে এবং আপনি পাবেন ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা কোন এক বাড়ি আর থাকা, খাওয়া ও জীবিকা অর্জনের সব ব্যবস্থা তো আছেই !

ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা যেন শেষ নেই ! প্রতিটি ফিলিস্তিনি মা'কে হত্যা করার ঘৃণিত আহ্বান জানিয়েছেন ইহুদিবাদী ইসরাইলের এক মহিলা সংসদ সদস্য। ইহুদিবাদী ইসরাইলের জিউইশ হোম পার্টির সংসদ সদস্য আইলেত শাকেদ ফিলিস্তিনিদের সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করে গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসনের সময়ে প্রতিটি ফিলিস্তিনি মাকে হত্যার আহ্বান জানিয়েছেন!!! অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছেন একজন ইহুদিবাদী রাবাই-ডভ লিওর ! ইহুদিবাদী এ রাবাই বলেন, যেখানে খুশি সেখানে বোমাবর্ষণ করার স্বাধীনতা সেনাবাহিনীর রয়েছে। বর্ণবাদী ইসরাইলের এ ধর্মীয় নেতা আরো বলেন, “প্রয়োজনে পুরো গাজা ধ্বংস করে দেয়ার অনুমতিও সেনাবাহিনীর থাকবে।” তার মতে, ইসরাইলি সেনারা এখন গাজার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে; কাজেই এই মুহূর্তে মানবতার প্রশ্ন তোলা উচিত নয়। ইহুদিবাদী ইসরাইলে রাবাই লিওনের হাজার হাজার অনুসরি রয়েছে। অন্যদিকে ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ডেভিড ওয়ার্ড বলেছেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বসবাস করলে তিনিও ইসরাইলকে লক্ষ্য করে রকেট ছুঁড়তেন।

ইসরায়েলের কারাগারে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি এখনো মানবেতর জীবন যাপন করতেছে।এমনো অনেকই আছেন যাদের শিশুকালে ইসরায়েল ধরে নিয়ে গেছে আর কারাগারেই বাকি জীবনটা পার করে দিয়েছেন। আর হামাস বা ফাতাহ’র তো হাজার হাজার নেতা কর্মী সমর্থক ইসরায়েলী কারাগারে বন্দী আছেন আর গুপ্ত হত্যার মাধ্যমে এ পর্যন্ত কতজন যে মারা গেছেন তার কোন ইয়ত্তা নেই।মাহমুদ আব্বাসের সাথে ইসরায়েলের এত দহরম মহরম সম্পর্ক থাকার পরেও মাঝে মাঝে ইসরায়েলীরা মাহমুদ আব্বাসকেও হত্যার হুমকি দেয় ! এজন্যই হামাস মাঝে মাঝে সুযোগ পেলে ইসরায়েলী সেনাকে অপহরণ করে যাতে বন্দী বিনিময় চুক্তি করে ইসরায়েলী কারাগার থেকে বন্দী ফিলিস্তিনিদের মুক্ত করা যায়। এরকমই গিলাত শালিত নামে এক ইসরায়েলী সেনার বিপরীতে গত ২০১১ সালে হামাস ১০৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্ত করেছে! আর চলমান যুদ্ধেও ৪২ ইসরায়েলী সেনা নিহত ০১ ইসরায়েলী সেনাকে বন্দী করেছে হামাস !

লক্ষ করার বিষয় হল যে ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করার জন্য কোন মুসলিম প্রধান রাস্ট্র এগিয়ে আসে নি একমাত্র ইরান ও সিরিয়া ছাড়া। সিরিয়া তো এখন নিজেই গৃহযুদ্ধ ও জঙ্গীদের দ্বারা এক জ্বলন্ত কড়াই ! হামাসকে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগীতা একমাত্র ইরানই দিয়ে আসছে। নেটে সার্চ দিলেই পাবেন আজকে হামাস যে সব অস্ত্র দ্বারা জায়নিস্টদের আক্রমন প্রতিহত করতেছে সেসব অস্ত্র ইরানেরই প্রযুক্তির তৈরি বা ইরান কর্তক সরবরাহকৃত।অন্যদিকে আরবরা অস্ত্র দিচ্ছে সিরিয়া ও ইরাকের জঙ্গীদের যাতে তারা নিজেরা নিজেরাই যুদ্ধ করে মারা যায় কিন্তু এই মেরুদন্ডহীন আরব শাসকরা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটা বুলেটও পাঠাতে সাহস পায় না !! আরবদের যে সব উন্নত অস্ত্র শস্ত্র আছে সে সব তো পশ্চিমা দেশগুলি থেকে ক্রয় করা আর পশ্চিমা দেশগুলির প্রধান শর্তই হল এসব অস্ত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধ ব্যবহার করা যাবে না । এই শর্ত পুরন করলেই আরবরা তাদের কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে পারে কিন্তু প্রশ্ন হল তাহলে পেট্রোডলার দিয়ে কেনা এ সব অস্ত্র দ্বারা আরবরা করবে কি ? ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার জন্য আরব ইসরায়েল যুদ্ধেরও প্রয়োজন নেই। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার জন্য ফিলিস্তিনিরা একাই যথেষ্ট-আজকে হামাসই তার প্রমান ! শুধু প্রয়োজন ফিলিস্তিনিদের অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা-ইসরায়েলের সমমানের না হোক এর কাছাকাছি মানের অস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকা নিশ্চিত করতে হবে। আর এই সহায়তার কাজটা করতে পারে একমাত্র আরবরাই কারণ একা ও দূরবর্তী ইরান বা অন্য কোনো দেশ কতটুকু সাহায্য করতে পারে ফিলিস্তিনিদের যেখানে তারা ইসরায়েল দ্বারা চারদিক অবরুদ্ধ ! তবে আরবরা ভাবছে, নিজে বাঁচলে বাপের নাম-ফিলিস্তিন শেষ হয় হোক, কিন্তু আরবরা ভুলে গেছে ফিলিস্তিন শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল বাপকেও ছাড়বে না। ইসরায়েলের লক্ষ্য শুধু ফিলিস্তিন নয় -ইসরায়েলের লক্ষ্য বৃহত্তর ইসরায়েল রাস্ট্র প্রতিষ্ঠা !
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×