somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিলন
আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

ভূমিকম্পের কারণ এবং প্রাণহানী প্রতিরোধে করণীয়

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছোট ছোট পোকা মাকড় ও কীটপতঙ্গ থেকেও অনেকসময় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানা যায়। চীনে ২০০৮ সালের ভূমি কম্পের পূর্বে মাটির নীচ থেকে অনেক ব্যাঙ এভাবে রাস্তায় চলে আসে কিন্তু তখন লোকজন এই ঘটনাকে মোটেই গুরুত্ব দেয়নি । ফলাফল হাজার হাজার লোকের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি !

"হায়রে মানুষ,রঙ্গিন ফানুস দম ফুরালেই ফুস, তবুও কেন হয়না সবার একটু খানি হুস"---গতকাল ভূমিকম্পের স্থায়ী ছিল ২ মিনিট কিন্তু আমি/আমরা অনুভব করেছি মাত্র কয়েক সেকেন্ড ! এই ১০/২০ সেকেন্ডই মানুষ কত অসহায় হয় গতকাল সেটা অনুভব করেছিলাম ! কেউ মূল্যবান জিনিস, টাকা পয়সা সঙ্গে নেওয়ার চিন্তাও করেনি! বের হওয়ার সময় চিন্তা করেনি সে কোন ড্রেসে ও কি অবস্থায় আছে !আর একটু বেশি মাত্রার হলে বিল্ডিং থেকে বের হওয়ার সময়টুকুও পাওয়া যেত না ! কি ভয়াবহ অবস্থা ! গতকাল ও আজকের ভূমিকম্প বড় ধরণের কোনো ভূমিকম্পের পুর্বাভাস কিনা জানা নেই। না হলেই শুকরিয়া। আমাদের বাংলাদেশে বড় ধরণের তেমন ভূমিকম্প হয়নি। শুধু মৃদ ভূমিকম্প ছাড়া। আল্লাহ না করুক যদি এরকম কিছু হয় আমাদেরে দেশের কি ভয়াবহ অবস্থা হবে তা কল্পনাও করতে পারছি না! কারণ বাংলাদেশের মত ঘণবসতিপূর্ণ দেশ বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই ! রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের বিল্ডিংগুলো ভূমিকম্প প্রতিরোধী করে যে তৈরি করা হয়নি তা বাংলাদেশের সবাই জানে, এক রানা প্লাজা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে । আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ঢাকার ফ্লাইওভারগুলিও । এইদিক দিয়ে বলতে হয়-আমাদের বাংলাদেশের প্রতি সৃষ্টিকর্তার আলাদা দরদ আছে বলেই ভবন নির্মাণে কোনো কোড টোড মেনে না চলেও সহি সালামতে টিকে আছি । ইরানে ২০০৩ সালে ভয়াবহ এক ভূমিকম্পে ঐতিহাসিক বাম নগরী পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল মারা গিয়েছিল প্রায় ৩০ হাজার লোক ! তেমনি ২০০৮ সালে চীনের সিয়াচানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজার হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল ! কিছু কিছু দেশে নিয়মিতই কম বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এটা নির্ভর করে ঐ দেশের ভৌগলিক অবস্থানের উপর।

ভূমিকম্পের কিছু কারণের মধ্যে ভূ-অভ্যন্ত আন্তঃপ্লেটের সংঘর্ষ অন্যতম একটি কারণ ।আমাদের পৃথিবীর উপরিভাগ কতগুলো অনমনীয় প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত। এই প্লেটগুলোকে বলা হয় টেকটনিক প্লেট। পৃথিবীর অভ্যন্তরে গলিত পদার্থের বাহিরের আবরণ যা এক একটি পাথরের স্তর-এগুলোই মূলত টেকটনিক প্লেট।এই প্লেটগুলি একে অপরের সাথে পাশাপাশি লেগে রয়েছে।বিভিন্ন কারণে একটি প্লেটের সাথে অপর একটি প্লেটের মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষ হয়। অথবা একটি প্লেট নিজের স্থানচ্যুত করে অন্য একটি প্লেটের নিচে ঢুকে যায়। যেহেতু প্লেটগুলি শিলা দ্বারা গঠিত তাই তাদের একটি অপরটির সাথে ধাক্কার ফলে ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়।গত শনিবারের ভূমিকম্পনটি ছিল এরকমই একটি ঘটনা। কাঠমান্ডু থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে নির্জন পাহাড়ি এলাকা পোখরা। সেখানেই মাটির ১১ কিলোমিটার গভীরে শনিবারের ভূমিকম্পের উৎসস্থল।শনিবার দুপুরে ভারতীয় প্লেটটি পিছলে ঢুকে যায় ইউরেশীয় প্লেটের নিচে। সেই প্রক্রিয়ায় যে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়, তার জেরেই কেঁপে ওঠে কাঠমান্ডু থেকে দিল্লি টু বাংলাদেশ। কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল ৭.৯ ! এ কম্পন কোথাও এক মিনিট, কোথাও দেড় মিনিট কোথাও দুই মিনিট স্থায়ী হয়, কিন্তু মহাপ্রলয়ের জন্য এই সময়টুকুই যথেষ্ট ! কারণ এরকম একটি ঘটনায় গত শনিবার দুটি প্লেটের মাঝে সংঘর্ষের ফলে যে পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়েছে তা হিরোশিমা নাগাশাকিতে নিক্ষেপিত একটি পরমানু বোমার চেয়ে প্রায় ৫০০ গুণ বেশি ! ভারতীয় উপমহাদেশ তথা আমাদের বাংলাদেশও এরকম টেকটনিক প্লেটের মাঝেই আবদ্ধ। তাই মাঝে মধ্যেই আমাদের ভূ-কম্পন অনুভূত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় কিন্তু অলৌকিকভাবে গত শনিবার ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বড় ধরণের ভূ-কম্পন অনুভূত করিনি ! ১৮৯৭ সালের ১২ জুন ৮.৭ মাত্রার বড় ধরণের ভূমিকম্প ভারতবর্ষকে আঘাত হানে। গত শনিবার দুপুরে প্লেট দুটি আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ! হয়তো আবারো বড় ধরণের কোনো ভূমিকম্পনের পূর্ব সংকেত এটি !

ভূমিকম্প ঠেকানোর সাধ্য আমাদের কারো নেই, নেই বিজ্ঞানীদেরও এমনকি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পূর্বাভাসও জানা সম্ভব হয় না । ছোট ছোট পোকা মাকড় ও কীটপতঙ্গ থেকেও অনেকসময় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানা যায়। চীনে ২০০৮ সালের ভূমি কম্পের পূর্বে মাটির নীচ থেকে অনেক ব্যাঙে রাস্তায় চলে এসেছিল কিন্তু তখন লোকজন ঐ ঘটনাকে মোটেই গুরুত্ব দেয়নি । ফলাফল হাজার হাজার লোকের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি ! বিভিন্ন পোকা মাকড়, কীট পতঙ্গ, পাখি বা অন্য কোনো প্রাণী ভূমিকম্পের পুর্বাভাসের একটি মাধ্যম হতে পারে। এতে ক্ষয় ক্ষতি ও প্রাণহানির হাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু পুর্ব প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। তেমনি নতুন নতুন ভবন নির্মাণে সরকারের তরফ থেকে কড়াকড়ি নিয়ম আরোপ করা উচিৎ।এজন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ও সংস্থাকে অধিক কঠোর মনোভাবপন্ন হতে হবে। অন্যদিকে যেহেতু ভূমিকম্প খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটে তাই যারা বহুতল ভবনে বসবাস করেণ তাদের তাড়াহুড়ো করে বের হওয়া উচিৎ নয় আর অধিক মাত্রার ভূ-কম্পন হলে বের হওয়ার সময়টুকুও পাবেন না। এতে প্রাণহানির সম্ভবনা বেড়ে যায় তাই যে যেখানেই থাকুন সেখানে কোনো নিরাপদ জায়গা খুজুন। খাট অথবা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন। তবে একদম ছোট আকারের বিল্ডিং হলে ও বের হওয়া সম্ভব হলে ভিন্ন কথা । তবে বড় কোনো গাছের পাশে দাড়াবেন না তেমনি কোনো বিল্ডিং এর পাশেও দাড়াবেন না । কারণ বিল্ডিং এর দেয়াল ধ্বসে প্রাণহানির সম্ভবনা অত্যধিক।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×