ভূমিকাঃ শুরুটা হয়েছে বেশ কাঁচা হাত নিয়ে।অবশ্য কাঁচা হাতটা যে এখন পেকে গেছে সেটা কিন্তু বলার ছলে জানানোর ইচ্ছে নেই, আদতেই আমি এখনো যথেষ্ট আনাড়ি।তবে চেষ্টা করেছি নিজেকে সংশোধনের মাধ্যমে সবসময় ভালো কিছু করার।শব্দচয়ন, বানান ক্রুটি থেকে শুরু করে লেখার ম্যারপ্যাচে ভুল হওয়া থেকে অনেক খানি এখন সামলে চলতে পারছি।প্রাপ্তি বলতে আমার কাছে এতটুকুই।তাই ভুল করে হলেও একবার পিছনের দিকে নজর দিতে ইচ্ছে করছে।
চলে যাচ্ছি পিছনেঃ যতদূর মনে পড়ে ২০১৬-এর শুরুর দিকে আমি লিখতে শুরু করি।খুব সম্ভবত তখন এটাও জানতাম না যে, মাইক্রোসফট্ ওয়ার্ড আবার কি জিনিস! তাই যুক্তবর্ণে এবং স্পেসিং এ অনেক ঝামেলায় পড়তে হতো। কতবার যে, “জ্ঞান” কে “ঞান” লিখেছি তার হিসেব নেই।এরকম হাজারো ভুলের সম্মুখীন হয়েছি বারবার।কিন্তু কখনো মনে হয়নি যে, আমার লেখালেখি ছেড়ে দেওয়া উচিত।যাকগে, সেসব কথা থাক।চলে যাচ্ছি পরিসংখ্যানে,
আজ পর্যন্ত আমার লেখা মোট ছোট গল্পের সংখ্যাঃ আনুমানিক উনিশটি।
১। নীল স্লিপিং পিল
২। বিশ্বাস
৩। আমার অস্পৃহা
৪। হোটেলঃ দ্য ডেভিল
৫। দ্য সিক্রেট কিলার
৬। আমিও ছিলাম
৭। সিট নং ৫৫
৮। ত্রি-চক্রায়ন
৯। শব্দদূষণ
১০। শুভ্রর ডায়েরী
১১। রুমমেট
১২। নর্দমার কীট
১৩। নীলিমা
১৪। পুরনো আলমারিটা
১৫। বোবা মেঠোপথ
১৬। গল্পটা লেখা হয়নি
১৭। চায়ের কাপে শেষ চুমুক
১৮। রাস্তার শেষ মাথায় এবং
১৯। গন্তব্যস্থল সহ সোসিয়াল ওয়ার্ল্ডে(ব্লগে ও ফেসবুকে) অপ্রকাশিত এবং অসমাপ্ত এরকম আরো বেশ কিছু ছোট গল্প রয়েছে।আমার দৃষ্টিকোণ থেকে সে সবগুলো গল্পেই বাক্যেবিন্যাস, শব্দচয়ন, গল্পের ধরণ এবং মুটিভ নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। এবং এটার জন্য আমি নিজেকেই সবসময় দায়ী করেছি এবং করছি। (এক)আমার অভিজ্ঞতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে, (দুই)লেখালেখি জগতে একজন গল্পকার হিসেবে অনুপ্রবেশ করার বয়েস অনেক কম এবং (তিন)আমি বই খুব কম পড়েছি- মোটামুটি এই তিনটে কারণকেই আমি আমার নিজের ক্রুটি ও ব্যর্থতা হিসেবে বিবেচনা করছি।
আমি একজন গল্পকার হতে চাইঃ ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো গল্প বলতে পারতাম।আর সবাই মুগ্ধ হয়ে সে গল্পগুলো শুনতো।কিন্তু বড় হয়ে দেখলাম এখন সবার হাতে সে সময় কই! যে আমার গল্পগুলো সময় ব্যয় করে শুনবে? মনের অজান্তে তাই হঠাৎ একটা প্রশ্ন নিজেকে করতে ইচ্ছে করে, “আমার গল্পগুলো কেউ কেন শুনবে? বা কেউ কেন পড়বে? এমন কি স্পেশ্যাল বস্তু রয়েছে আমার গল্পের ভিতর?” সত্যি বলতে চারপাশে অনেক সুন্দর মনোভাবাসম্পন্ন লেখকদের কাছে আমি নিতান্তই ক্ষুদ্র।আমার লেখার মাঝে সত্যিই “স্পেশ্যাল” নামক শব্দটি নেই।তার উপর যখন কেউ সমালোচনার ঝড় তোলে এসব নিয়ে তখন যেন মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করে।২০১৭-এর শেষের দিকে এসেও লেখালেখি নিয়ে আমার সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত(উপন্যাসে হাত দেবার) ফলাতে পারিনি।কোথায় যেন মনে হয়েছে আমি এখনো প্রস্তুত নই।এমনকি কি-বোর্ডে আঙুল চালিয়ে দুই-দুইটা উপন্যাসের মধ্যেপ্রান্তে গিয়ে আটকে গেছি।তারপর আর সামনে এগুতে পারিনি।কেউ কখনো বলেনি, “ঠিক এমন করে লেখা উচিত, একজন চিন্তাশীল মানুষ হওয়া উচিত অথবা একজন লেখক হতে গেলে এসব নির্দেশনাবলী মেনে চলতে হবে”।একই সাথে এটাও সত্য যে, সামনে এগুতে গেলে কারো না কারো সাপোর্ট খুব বেশি একটা দরকার নেই বরং নিজের বড় হবার চিন্তাগুলোই মানুষকে বড় করে তোলে।কিন্তু নির্দেশনাহীন কোন কাজ, নির্দেশনাহীন জীবনের মত হয়ে যায়।তার গতি প্রকৃতি আমরা কেউ আগে থেকে জানিনা।জানিনা এসবের গন্তব্যস্থল কি।তবুও লিখে যেতে চাই, সমালোচনাগুলো শুনতে চাই আর আমার ছোট্ট স্বপ্নটুকুর বাস্তবায়ন করতে চাই।শুরুটা যেমন আকস্মিকভাবে হয়েছিলো, শেষটাও হবে কোন ভালোলাগার চিন্তার সমুদ্রের জোয়ার-ভাটায় ডুবে যাবার মত করে।
তাই বাকি রাস্তার জন্য দোয়াপ্রার্থনা করছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯