somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মি. বিকেল
আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মুভি রিভিউঃ Mr. Nobody

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মানুষের জন্মেরও আগে মানুষ যখন জান্নাতে/স্বর্গে ছিলো তখন সে সব জানতো।কিন্তু পৃথিবীতে আসার পূর্বে স্বর্গের পরীরা বা ফেরেশতারা আমাদের স্মৃতি মুছে দেন।তাই আমরা পৃথিবীতে এসে আমাদের জন্মের আগের অতীত সম্পর্কে কোন ধারণা রাখি না।যদিও এটি একটি ধর্মীয় বিশ্বাস।সে যাইহোক, কিন্তু এমন যদি হয় যে স্বর্গের পরীরা আপনার পৃথিবীতে আসার পূর্বে আপনার স্মৃতি মুছে দিতে ভুলে যায়? জন্মানোর পরে যখন আপনি আপনার ভবিষ্যৎ মনে রাখতে পারছেন ঠিক যেমন করে আমরা অতীত মনে রাখি তাহলে ঠিক কি হতে পারে? কথা বলছিলাম ৬ই নভেম্বর ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া মুভি “মি. নো বডি” নিয়ে।

মুভির নামঃ Mr. Nobody
ধরণঃ ড্রামা/ফান্টাসি
সময়কাল ব্যাপ্তিঃ ২ঘন্টা ৩৭মিনিট
অভিনয়ে ছিলেনঃ Jared Leto, Diane Kruger, Sarah Polley, Juno Temple, Toby Regdo, Linh Dan Pham, Rgys Ifans, Natasha Little, Thomas Byrne, Clare Stone, Audrey Giacomini, Laura Brumagne, Allan Corduner, Daniel Mays, Michel Riley, Ben Mansfield, Laurent Capelluto & Leni Parker
স্ক্রিনপ্লেঃ Jaco Van Dormael
পরিচালনায় ছিলেনঃ Jaco Van Dormael
মুভিটির বাজেট ছিলোঃ ৪৭ মিলিয়ন ইউ.এস ডলার
রেটিং ৭.৯/১০, রোটেন টম্যাটোস ৬৬% এবং আমার ব্যক্তিগত রেটিং ৮/১০

এই মুভিটিতে প্রথমে দেখা যায় একজন বৃদ্ধকে যিনি কিনা নিজেকে ৩৪ বছরের একজন মানুষ বলে ক্লেইম করছেন।সামনে আছে ২০৯২ সালের পৃথিবী, মানুষ তখন অমর হওয়া শিখে গেছে এবং একজন সাইকোলজিস্ট।যিনি কিনা হিপনোটাইজ করার মাধ্যমে জানবার চেষ্টা করছেন এই বৃদ্ধ লোকটির অতীত।

প্রশ্ন হলো বৃদ্ধ লোকটি কি তখন ২০৯২ সালে পৃথিবীতে অদৌ অবস্থান করছিলেন? না কি এসব তার দেখা নিজের ভবিষ্যৎ?
মুভিটিতে দুটি ডাইমেনশন আমি খুঁজে পেয়েছি।এক- পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব এবং এই অস্তিত্বের ফলে আমাদের নেয়া সিদ্ধান্তের ফলাফল।একই মানুষ কি করে একাধিক সময়ে বাস করতে পারে? শুধু তাই নয়, একই মানুষ দেখছে তিনটি ভিন্ন মেয়ের সাথে তিনটি ভিন্ন রকমের সম্পর্ক এবং তিনটি ভিন্ন রকমের জীবন।তিনি বিভিন্ন জীবনে বারবার মারা যাচ্ছেন এবং অন্য সম্ভাবনা খুঁজে বেড়াচ্ছেন বেঁচে থাকার জন্য।তাই হয়তো তিনি অমর।মুভিটি থেকে আমরা জানতে পারি যে, আমাদের জীবনে সিদ্ধান্ত নিতে হবেই।আমরা সিদ্ধান্ত না নিয়ে কোন এক বিশেষ জায়গায় আবদ্ধ থাকতে পারবো না।কারণ সময় আমাদের তা করতে দিবে না।
যখন আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন তখন আপনি সেটা আর ফেরত পাবেন না।কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবার আগে পর্যন্ত আপনার হাতে লিমিটলেস অপশন থাকে বেছে নেবার মত।নেমু আসলে কাকে চেয়েছিলেন? এলিস? এন্ন্যা? না কি জেন কে? আর যদি এলিসকে চেয়ে থাকেন তাহলে কেন চেয়েছিলেন?

উত্তর খন্ডন আমি পুরোপুরি করবো না।অনেক ক্ষেত্রে পুরোপুরি করতেও পারবো না।নেমু আসলে সেই ছেলেটি যে ছেলেটি দেখছে তার বাবা এবং মায়ের একটি সুন্দর সম্পর্ক।তারপর তার মায়ের এক্সট্রা ম্যারিট্যাল আফেয়ার্সের কারণে তার বাবা এবং মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে।আমরা দেখতে পাই, একটা রেলওয়ে স্টেশনে সে দাঁড়িয়ে আছে এক হাত বাবার হাতটা ধরে আছে এবং তার অন্য হাতটা মায়ের হাত ধরে আছে।এই মুহুর্তে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, সে তার মায়ের কাছে থাকবে না কি তার বাবার কাছে থাকবে? তাই সে শুরু করলো তার ভবিষ্যৎ দেখা।মায়ের সাথে থাকলে তার কেমন জীবন হতে পারে তার সম্ভাবনা এবং বাবার সাথে থাকলে কেমন জীবন পেতে পারে তার সম্ভাবনা।এবং এই ভবিষ্যৎ এর সাথে কি কি সম্ভাবনা যুক্ত হতে পারে তার সব।কারণ একবার যখন সে সিদ্ধান্ত নিবে তখন সে তার ভবিষ্যৎ ভুলে যাবে এবং যেটা সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সেই মোতাবেক তাকে বাকী জীবন চলতে হবে।


আমার আরেকটা প্রশ্ন থেকে গেছে মুভিটির পরিচালকের কাছে আর সেটা হলো, “জীবন মানে ভোগান্তি”।এটা কি আপনি বিশ্বাস করেন?
আমার মনে হয় করেন।তাই শেষ দৃশ্যে নেমুর সিদ্ধান্ত আপনাকে বাতলে দিবে সিদ্ধান্ত যেটাই নেন না কেন এক মানুষ জীবনের সবক্ষেত্রে কখনোই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।যেহেতু সঠিক সিদ্ধান্ত আমাদের সঠিক গন্তব্যস্থলে পৌঁছায় এবং ভুল সিদ্ধান্ত ভুল গন্তব্যে বা ভোগান্তিতে।সুতরাং জীবনে আপনি একবার হলেও ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন এবং এজন্যই জীবনে ভোগান্তি অনিবার্য।

মুভিটিতে সময় এবং স্থানের আপেক্ষিকতা এবং বিগ ব্যাঙ থিউরি নিয়েও ট্যাচ করা হয়েছে।বিজ্ঞান যেমন বিশ্বাস করে বিগ ব্যাঙের ফলে এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে এবং একসময় এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এবং আবার এক্সপ্লোসিভ ঘটার মাধ্যমে নতুন একটি পৃথিবী গঠিত হবে।আর মুভিটি বলছে ধ্বংস হবার আগের সময়টুকু একটু মঙ্গলে থাকলেই চলবে, একটু লম্বা শীতনিদ্রার মধ্যে থাকলেন।তারপর পুনরায় আপনি আপনার যৌবন এবং পৃথিবী দুটোই পাবেন।কারণ যা আমাদের নষ্ট করছে সেটা হলো, সময় এবং স্থান।কে জানে পরবর্তী পৃথীবীতে সময় হয়তো উল্টো দিকেও চলতে পারে।
যাইহোক, আজ এই পর্যন্তই।



সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:০২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×