অন্তরে আর বাহিরে সমান নিত্য প্রবল হও!
যত দুর্দ্দিন ঘিরে আসে, তত অটল হইয়া রও!
যত পরাজয়-ভয় আসে, তত দুর্জ্জয় হয়ে উঠো,
মৃত্যুর ভয়ে শিথিল যেন না হয় তলোয়ার-মুঠো।
সত্যের তরে দৈত্যের সাথে করে যাও সংগ্রাম,
রণক্ষেত্রে মরিলে অমর হইয়া রহিবে নাম।
এই আল্লার হুকুম-ধরায় নিত্য প্রবল রবে,
প্রবলেই যুগে যুগে সম্ভব করেছে অসম্ভবে।
ভালোবাসেন না আল্লা অবিশ্বাসী ও দুর্ব্বলেরে
“শেরে-খোদা” সেই হয়, যে পেয়েছে অটল বিশ্বাসেরে।
ধৈর্য ও বিশ্বাস হারায়, সে মুসলিম নয় কভু,
বিশ্বে কারেও করে নাক ভয় আল্লাহ যার প্রভু;
নিন্দাবাদের মাঝে “আল্লাহ-জিন্দাবাদ”-এর ধ্বনি
বীর শুধু শোনে, ‘কোনো নিন্দায় কোনো ভয় নাহি গণি’।
আল্লা পরম সত্য, ভয় সে ভ্রান্তির কারসাজি,
প্রচন্ড হয় তত পৌরুষ, যত দেখে দাগাবাজি!
ভুলে কি গিয়াছ অসম সাহস নির্ভীক আরবীর?
পারস্য আর রোম সম্রাটে কাটিয়াছে যারা শির !
কতজন ছিল সেনা তাহাদের? অস্ত্র কি ছিল হাতে?
তাদের পরম নির্ভর ছিল শুধু এক আল্লাতে !
জয়-পরাজয় সমান গণিয়া করেছিল শুধু রণ,
তাদের দাপটে কেঁপে উঠেছিল পৃথিবীর প্রাঙ্গণ !
তারা দুনিয়ার বাদশাহী করেছিল ভিক্ষুখ হয়ে,
তারা পরাজিত হয়নি কখনো ক্ষণিকের পরাজয়ে
হাসিয়া মরেছে, করেনি কখনো পৃষ্ঠপ্রদর্শন,
ইসলাম মানে বুঝেছিল তারা অসত্য সাথে রণ !
তারা জেনেছিল, দুনিয়ায় তারা আল্লার সৈনিক,
অর্জ্জন করেছিল স্বাধীনতা নেয়নি মাগিয়া ভিখ !
জয়ী হতে হলে মৃত্যুঞ্জয়ী পুরুষ হইতে হয়,
শত্রু-সৈন্য দেখে কাঁপে ভয়ে, সেত সেনাপতি নয় !
শত্রু-সৈন্য যত দেখে তত রণ-তৃষা তার বাড়ে,
দাবানল-সম তেজ জ্বলে ওঠে শিরায় শিরায় হাড়ে !
তলোয়ারে তার তত তেজ ফোটে যত সে আঘাত খায়,
তত বধ করে শত্রুর সেনা, রসদ যত ফুরায়।
নিরাশ হয়ো না ! নিরাশা ও অদৃষ্টবাদীরা যত
যুদ্ধ না করে হয়ে আছে কেউ আহত ও কেউ হত!
যে মাথা নোয়ায়ে সিজদা করেছে এক প্রভু আল্লারে,
নত করিও না সে মাথা কখনো কোনো ভয় কোনো মারে।
আল্লার নামে নিবেদিত শির নোয়ায় সাধ্য কার?
আল্লা সে শির বুকে তুলে নেন, কাটে যদি তলোয়ার।
ভীরু মানবেরে প্রবল করিতে চাহেন যে দুনিয়াতে
তারেই ইমাম নেতা বলি আমি, প্রেম মোর তারি সাথে।
আড়ষ্ট নরে বলিষ্ঠ করে যাঁর কথা যাঁর কাজ,
তাঁরি তরে সেনা সংগ্রহ করি, গড়ি তাঁরি শির-তাজ!
গরীবের ঈদ আসিবে বলিয়া যে আত্মা রোজা রাখে,
পরমাত্মার পরমাত্মীয় বলে আমি মানি তাকে।
অকল্যাণের দূত যারা, যারা মানুষের দুশমন
তাদের সংগে যে দুরন্তেরা করিবে ভীষণ রণ-
মোর আল্লার আদেশে তাদেরে ডাক দিই জমায়তে,
অচেতন ছিল যাহারা, তারাও আসিছে তীর্থ-পথে।
আমি তকবীর-ধ্বনি করি শুধু কর্ম-বধির কানে,
সত্যের যারা সৈনিক তারা জমা হব ময়দানে!
অনাগত “নবযুগ”-সূর্যের তূর্য বাজায়ে যাই,
মৃত্যু বা কারাগারের আমার কোনো ভয় দ্বিধা নাই।
একা “নবযুগ”-মিনারে দাঁড়িয়ে কাঁদিয়া সকলে ডাকি,
দম্মার হাঁস না আসে, আসিবে মুক্ত-পক্ষ পাখী।
এ পথে ভীষণ বাজ-পাখী আর নিঠুর ব্যাধের ভীতি,
আলোক-পিয়াসী পাখীরা তবুও আসিছে গাহিয়া গীতি।
মৃত্যু-ভয়াক্রান্ত আজিকে বাঙলার নর-নারী,
তাদেরে অভয় দিতেই আমরা ধরিয়াছি তরবারি।
আমরা শুনেছি ভীত-আত্মার সকরুণ ফরয়্যাদ,
আমরা তাদেরে রক্ষা করিব, এ যে আল্লার সাধ।
আমরা হুকুম-বর্দ্দার তাঁর পাইয়াছি ফরমান,
ভীত নর-নারী তরে অকাতরে দানিব মোদের প্রাণ।
বাজাই বিষাণ উড়াই নিশান ঈশান-কোণের মেঘে,
প্রেম-বৃষ্টি ও বজ্র-প্রহারে আত্মা উঠিবে জেগে !
রাজনীতি করে তৈরি মোদের কুচকাওয়াজের পথ,
এই পথ দিয়ে আসিবে দেখিও আবার বিজয়-রথ।
প্রবল হওয়ার সাধ ও সাধনা যাহাদের প্রাণে আছে,
তাদেরি দুয়ারে হানা দিই আমি, আসি তাহাদেরই কাছে।
সঙ্ঘ-বদ্ধ হতেছে তাহারা বঙ্গ-ভূমির কোলে,
আমি দেখিয়াছি পূর্ণচন্দ্র তাদেরই ঊর্ধ্বে দোলে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫১