somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুহাম্মাদ মুজাহিদুল ইসলাম
আমার ব্যাপারে জানতে চান ?লিখা শুরু করলে তো অনেক কিছুই লিখতে হবে।সংক্ষেপে শুধু এটা জেনে রাখুন, আমি একজন 'বইপোকা'।জ্বি, আমি খুব বেশি অধ্যয়ন করি।লিখতে ভালোবাসি সেই ছোটবেলা থেকেই।এ জন্যেই ব্লগে আমার আগমন।ধন্যবাদ।

নিত্য প্রবল হও - কাজী নজরুল ইসলাম

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অন্তরে আর বাহিরে সমান নিত্য প্রবল হও!
যত দুর্দ্দিন ঘিরে আসে, তত অটল হইয়া রও!

যত পরাজয়-ভয় আসে, তত দুর্জ্জয় হয়ে উঠো,
মৃত্যুর ভয়ে শিথিল যেন না হয় তলোয়ার-মুঠো।

সত্যের তরে দৈত্যের সাথে করে যাও সংগ্রাম,
রণক্ষেত্রে মরিলে অমর হইয়া রহিবে নাম।

এই আল্লার হুকুম-ধরায় নিত্য প্রবল রবে,
প্রবলেই যুগে যুগে সম্ভব করেছে অসম্ভবে।

ভালোবাসেন না আল্লা অবিশ্বাসী ও দুর্ব্বলেরে
“শেরে-খোদা” সেই হয়, যে পেয়েছে অটল বিশ্বাসেরে।

ধৈর্য ও বিশ্বাস হারায়, সে মুসলিম নয় কভু,
বিশ্বে কারেও করে নাক ভয় আল্লাহ যার প্রভু;

নিন্দাবাদের মাঝে “আল্লাহ-জিন্দাবাদ”-এর ধ্বনি
বীর শুধু শোনে, ‘কোনো নিন্দায় কোনো ভয় নাহি গণি’।

আল্লা পরম সত্য, ভয় সে ভ্রান্তির কারসাজি,
প্রচন্ড হয় তত পৌরুষ, যত দেখে দাগাবাজি!

ভুলে কি গিয়াছ অসম সাহস নির্ভীক আরবীর?
পারস্য আর রোম সম্রাটে কাটিয়াছে যারা শির !

কতজন ছিল সেনা তাহাদের? অস্ত্র কি ছিল হাতে?
তাদের পরম নির্ভর ছিল শুধু এক আল্লাতে !

জয়-পরাজয় সমান গণিয়া করেছিল শুধু রণ,
তাদের দাপটে কেঁপে উঠেছিল পৃথিবীর প্রাঙ্গণ !

তারা দুনিয়ার বাদশাহী করেছিল ভিক্ষুখ হয়ে,
তারা পরাজিত হয়নি কখনো ক্ষণিকের পরাজয়ে

হাসিয়া মরেছে, করেনি কখনো পৃষ্ঠপ্রদর্শন,
ইসলাম মানে বুঝেছিল তারা অসত্য সাথে রণ !

তারা জেনেছিল, দুনিয়ায় তারা আল্লার সৈনিক,
অর্জ্জন করেছিল স্বাধীনতা নেয়নি মাগিয়া ভিখ !

জয়ী হতে হলে মৃত্যুঞ্জয়ী পুরুষ হইতে হয়,
শত্রু-সৈন্য দেখে কাঁপে ভয়ে, সেত সেনাপতি নয় !

শত্রু-সৈন্য যত দেখে তত রণ-তৃষা তার বাড়ে,
দাবানল-সম তেজ জ্বলে ওঠে শিরায় শিরায় হাড়ে !

তলোয়ারে তার তত তেজ ফোটে যত সে আঘাত খায়,
তত বধ করে শত্রুর সেনা, রসদ যত ফুরায়।

নিরাশ হয়ো না ! নিরাশা ও অদৃষ্টবাদীরা যত
যুদ্ধ না করে হয়ে আছে কেউ আহত ও কেউ হত!

যে মাথা নোয়ায়ে সিজদা করেছে এক প্রভু আল্লারে,
নত করিও না সে মাথা কখনো কোনো ভয় কোনো মারে।

আল্লার নামে নিবেদিত শির নোয়ায় সাধ্য কার?
আল্লা সে শির বুকে তুলে নেন, কাটে যদি তলোয়ার।

ভীরু মানবেরে প্রবল করিতে চাহেন যে দুনিয়াতে
তারেই ইমাম নেতা বলি আমি, প্রেম মোর তারি সাথে।

আড়ষ্ট নরে বলিষ্ঠ করে যাঁর কথা যাঁর কাজ,
তাঁরি তরে সেনা সংগ্রহ করি, গড়ি তাঁরি শির-তাজ!

গরীবের ঈদ আসিবে বলিয়া যে আত্মা রোজা রাখে,
পরমাত্মার পরমাত্মীয় বলে আমি মানি তাকে।

অকল্যাণের দূত যারা, যারা মানুষের দুশমন
তাদের সংগে যে দুরন্তেরা করিবে ভীষণ রণ-

মোর আল্লার আদেশে তাদেরে ডাক দিই জমায়তে,
অচেতন ছিল যাহারা, তারাও আসিছে তীর্থ-পথে।

আমি তকবীর-ধ্বনি করি শুধু কর্ম-বধির কানে,
সত্যের যারা সৈনিক তারা জমা হব ময়দানে!

অনাগত “নবযুগ”-সূর্যের তূর্য বাজায়ে যাই,
মৃত্যু বা কারাগারের আমার কোনো ভয় দ্বিধা নাই।

একা “নবযুগ”-মিনারে দাঁড়িয়ে কাঁদিয়া সকলে ডাকি,
দম্মার হাঁস না আসে, আসিবে মুক্ত-পক্ষ পাখী।

এ পথে ভীষণ বাজ-পাখী আর নিঠুর ব্যাধের ভীতি,
আলোক-পিয়াসী পাখীরা তবুও আসিছে গাহিয়া গীতি।

মৃত্যু-ভয়াক্রান্ত আজিকে বাঙলার নর-নারী,
তাদেরে অভয় দিতেই আমরা ধরিয়াছি তরবারি।

আমরা শুনেছি ভীত-আত্মার সকরুণ ফরয়্যাদ,
আমরা তাদেরে রক্ষা করিব, এ যে আল্লার সাধ।

আমরা হুকুম-বর্দ্দার তাঁর পাইয়াছি ফরমান,
ভীত নর-নারী তরে অকাতরে দানিব মোদের প্রাণ।

বাজাই বিষাণ উড়াই নিশান ঈশান-কোণের মেঘে,
প্রেম-বৃষ্টি ও বজ্র-প্রহারে আত্মা উঠিবে জেগে !

রাজনীতি করে তৈরি মোদের কুচকাওয়াজের পথ,
এই পথ দিয়ে আসিবে দেখিও আবার বিজয়-রথ।

প্রবল হওয়ার সাধ ও সাধনা যাহাদের প্রাণে আছে,
তাদেরি দুয়ারে হানা দিই আমি, আসি তাহাদেরই কাছে।

সঙ্ঘ-বদ্ধ হতেছে তাহারা বঙ্গ-ভূমির কোলে,
আমি দেখিয়াছি পূর্ণচন্দ্র তাদেরই ঊর্ধ্বে দোলে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিসের সনদের মান নির্ধারণ করা শয়তানী কাজ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪০



সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০১। মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক। মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ মোনাফেকী রোগে আক্রান্ত। তুমি তাদের সম্পর্কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×