somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুহাম্মাদ মুজাহিদুল ইসলাম
আমার ব্যাপারে জানতে চান ?লিখা শুরু করলে তো অনেক কিছুই লিখতে হবে।সংক্ষেপে শুধু এটা জেনে রাখুন, আমি একজন 'বইপোকা'।জ্বি, আমি খুব বেশি অধ্যয়ন করি।লিখতে ভালোবাসি সেই ছোটবেলা থেকেই।এ জন্যেই ব্লগে আমার আগমন।ধন্যবাদ।

নাসীম হিজাজী ও কিছু কথা

৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলায় কমিক বই পড়তাম অনেক।
চাচা চৌধুরী, সাবু, ফ্যান্টম এসব চরিত্র ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী।
তারপর একটা সময় এগুলো আর ভালো লাগত না।
"চাচা চৌধুরীর বুদ্ধি কম্পিউটারের চেয়েও প্রখর" ডায়লগটা মনে পড়লে এখন হাসি পায়।
তারপর পড়া শুরু করলাম তিন গোয়েন্দা, ওয়েস্টার্ন গল্পের বইগুলো।
তিন গোয়েন্দার সাথে লস এঞ্জেলেস, রকি বীচ, গ্রীনহিলস, হলিউডসহ আরও নানান জায়গায় নানান রোমাঞ্চকর অভিযানে হারিয়ে যেতে ভালোই লাগত।
রকিব হাসানের লেখা কোনো বই বাদ দেইনি।
অবশ্য এখন আর পড়া হয় না।
কারণ শামসুদ্দিন নওয়াবের লেখা বইগুলো ভালো লাগে না।
কিছুদিন মাসুদ রানাও পড়েছি।
একটা বই ছাড়া আর কোনটাই ভালো লাগেনি।
বইটার নাম ছিল "আই লাভ ইউ ম্যান'।
এখনো মনে পড়ে, মৃত্যুর আগ মুহুর্তে মাসুদ রানাকে উদ্দেশ্য করে বলা রডরিকের শেষ কথাগুলো, "আই লাভ ইউ ম্যান, আপন ভাইয়ের চেয়েও বেশি ভালবাসি তোমাকে"
পড়েছি পাশ্চাত্য লেখকদের অনেক বই।
সাইমুম সিরিজ ১-৫৪ পর্যন্ত পড়েছি।
সর্বশেষ হয়ত ৫৬ পর্যন্ত বেরিয়েছে।
এখনো পড়া হয়নি।
জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পড়েছি 'নাসীম হিজাজী'র বই।
আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ বই কোনটি ??
আমি নির্দ্বিধায় জবাব দিবো, "নাসীম হিজাজীর সকল বই"
হ্যা, নাসীম হিজাজীর বইগুলো আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার।
'মরণজয়ী' দিয়ে শুরু তারপর একের পর এক 'মুহাম্মদ ইবনে কাশিম', 'শেষ প্রান্তর', 'খুন রাঙ্গা পথ', 'ভেঙ্গে গেল তলোয়ার',
'আধার রাতের মুসাফির','সফেদ জাজীরা', 'কায়সার ও কিসরা', 'চূড়ান্ত লড়াই', 'হেজাজের কাফেলা' , 'লৌহ মানব', 'শেষ বিকেলের কান্না', 'ইউসুফ বিন তাশফীন'
আরও কয়েকটা বই।
পড়েই গেছি।
কিন্তু তৃষ্ণা মেটেনি।
কল্পনার ডানায় ভর করে হারিয়ে গিয়েছি গ্রানাডা, আল হামরা আর কর্ডোভার সুউচ্চ মিনারে।
যেখানে সা'দ, আহমদ আর হাসান বিন আব্দুল মুনীম ছিল আমার সঙ্গী।
বসরা, কুফা আর বাগদাদে ছুটে বেড়িয়েছি তাহির বিন ইউসুফের সাথে।
ইউসুফ বিন তাশফীনের সাথে মিলে মুখোমুখি হয়েছি আলফানসু'র অজস্র সেনাবাহিনীর।
নয়ীম হয়ে মোকাবেলা করেছি হাজার ঘাত প্রতিঘাত।
আর জুবায়েরের রূপ ধরে সিন্ধু পর্যন্ত বিজয় করেছি মুহাম্মদ ইবনে কাশিমের সাথে।
অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে চেষ্টা করেছি তাঁকে বাচানোর।
তারপর ব্যর্থ হয়ে কেদেছি।
টিপু সুলতানের হাতের তলোয়ার হয়ে প্রতিরোধ করেছি ইংরেজদের টানা ত্রিশটি বছর।
তারপরেও মন ভরেনি।
আমি হলিউড কিংবা রকি বীচের রাস্তার চেয়ে পছন্দ করি গ্রানাডার সেই গালিচা বেছানো পথ।
আমি তিন গোয়েন্দার রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চার যতটা না ভালোবাসি তার চেয়ে অধিক ভালোবাসি মুজাহিদদের তলোয়ারের ঝনঝনানি।
তিন গোয়েন্দার মত এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ানো হয়ত আমার জন্য সম্ভব নয়, কিন্তু সা'দ বিন আব্দুল মুনীমের মত অত্যাচারী শাসকের সামনে দাড়িয়ে চিৎকার করে সত্য কথাগুলো অকপটে বলে দেয়াটা তো সম্ভব।
আমি সত্যি হারিয়ে যেতে চাই সেই রাজ্যে।
আমার জাতির উত্থান আর পতন যেখানে লেখা আছে স্বর্ণাক্ষরে।
মোয়াজ্জম আলী হয়ে আহমদ শাহ আবদালীর অধীনে মুখোমুখি হতে চাই লাখ লাখ মারাঠা সৈনিকের।
গলা টিপে মারতে চাই আবুল কাশেমের মত গাদ্দারদের।
ঘুরে বেড়াতে চাই মুর্শিদাবাদ থেকে দিল্লী, সেখান থেকে হায়দারাবাদ।
আমি তিন গোয়েন্দা পড়ে শিহরিত হতে চাই না।
বরং রক্তমাখা ইতিহাসের একেকটি পাতা উল্টাতে উল্টাতে হতে চাই অশ্রুসিক্ত।
আমি জটিল রহস্যের সমাধান করে যতটা না হাসতে ভালবাসি, তার চেয়ে বেশি ভালবাসি আমার জাতির ইতিহাস পড়ে কাঁদতে।
হ্যা, আমি মহীশুরের টিপু সুলতানের একজন নগন্য সৈনিক হতে চাই।
হতে চাই আনোয়ার আলী কিংবা মুরাদ আলীর মত।
আমি অপার সাগরে খুঁজে বেড়াতে চাই আমার জাতির থমকে যাওয়া ইতিহাস।
এ ইতিহাস কোটি মুমিনের রক্তের বিনিময়ে আনা।
এ ইতিহাস হাজার অশ্রুসিক্ত মায়ের বেদনার্ত হৃদয়ের হাহাকার।
এ ইতিহাস আমার।
আমার জাতির পরম সম্পদ।
এতে অন্য কারো ভাগ নেই।
থাকতে পারে না।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১:৪০
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×