somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সব পয়গম্বরদের 'দ্বীন' এক ও অভিন্ন ছিল !

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অর্থাৎ "নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম !............." (সুরাঃ আল- ইমরান, আয়াত-19)

'দ্বীন ও ইসলাম' শব্দের ব্যাখ্যা ঃ আরবী ভাষায় 'দ্বীন' শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে ! তন্মধ্যে এক অর্থ রীতি ও পদ্ধতি ! কোরআনের পরিভাষায় 'দ্বীন' সেসব মূলনীতি ও বিবিধ-বিধানকে বলা হয় যা হযরত আদম (আঃ) থেকে শুরু করে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) পর্যন্ত সব পয়গম্বরদের মধ্যে সম্ভাবেই বিদ্যমান রয়েছে ! 'শরীয়ত' অথবা 'মিনহাজ' শব্দটি পরবর্তী পরিভাষা ! 'মাযহাব' শব্দটি 'দ্বীনের' বিভিন্ন শাখার বিধি-বিধান অর্থে ব্যবহৃত হয়, যা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উম্মতের মধ্যে বিভিন্ন রূপ পরিগ্রহ করেছে ! কোরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে-
অর্থাৎ "আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য সে দ্বীনই প্রবর্তন করেছেন, যার নির্দেশ ইতিপূর্বে নূহ ও অন্যান্য পয়গম্বরকে দেওয়া হয়েছিল !"
এতে বোঝা যায় সব পয়গম্বরদের 'দ্বীন' এক ও অভিন্ন ছিল !
আমরা সকলেই জানি 'ইসলাম' শব্দের অর্থ শান্তি এবং মুসলমান বা মুসলিম শব্দের অর্থ আত্মসমর্পণকারী ! অথচ কোরয়ানপাকের এই আয়াতে দেখা যায়- ("ফা ইন হাজ্যুকা ফাকুল আসলামতু ওয়াজহিয়া লিল্লাহি ওয়া মানিত্তাবায়ানি, ওয়াকুলিল্লাযীনা উতুল কিতাবা ওয়াল উম্মিইনাআ আসলামতুম, ফা ইন আসলামু ফা কাদিহ তাদাওয়া ইন্ তাওয়াল্লাও ফাইন্নামা আলাইকাল বালাগুল অল্লাহু বাছিরুম বিল ইবাদী") অর্থ হচ্ছে- 'তাঁরা যদি তোমার সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হয় তবে বলে দাও "আমি এবং আমার অনুসারীগণ আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ করেছি" ! আর আহলে কিতাবদের এবং নিরক্ষরদের বলে দাও তোমরা কি আত্মসমর্পণ করেছো ? তখন তারা যদি আত্মসমর্পণ করে, তবে সরলপথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে তোমার দায়িত্ব হলো শুধু পৌঁছে দেয়া ! আর আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্দা' ! (সুরাঃ আল-ইমরান, আয়াত-20)

তাই, 'ইসলাম' শব্দের প্রকৃত অর্থ আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করা এবং তাঁর অনুগত হওয়া ! এ অর্থের দিক দিয়ে প্রত্যেক পয়গম্বরদের আমলে যারা তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং তাঁদের আনীত বিধি-বিধানের আনুগত্য করেছে, তারা সবাই মুসলমান ও মুসলিম নামে অবিহিত হওয়ার যোগ্য ছিল এবং তাদের ধর্মও ছিল ইসলাম !
এ অর্থের দিকে লক্ষ্য করেই হযরত নূহ (আঃ) বলেন- "ওয়া উমেরুতু আন আকাওনা মিনাল মুসলিমিনা" অর্থাৎ 'আমি 'মুসলিম' হওয়ার জন্যে আদিষ্ট হয়েছি' - (সুরাঃ ইউনুছ) ! এ কারণেই হযরত ইবরাহীম (আঃ) নিজেকে ও নিজ উম্মতকে 'উম্মতে মুসলিমা' বলেছিলেন: "রব্বানা ওয়ায আল্না মুসলিমাইনি লাকা ওয়ামিন যুররিইয়াতিনা উম্মাতাম মুসলীমাতাল্লাকা" ! হযরত ঈসা (আঃ) এর সহচরগণ এ অর্থের প্রতি লক্ষ্য রেখেই সাক্ষ্য দিয়ে বলেছিলো : "ওয়াশহাদ'বিয়াননা মুসলিমুনা" অর্থাৎ 'সাক্ষী থাকুন যে, আমরা মুসলিম" !

মোটকথা এই যে, প্রত্যেক পয়গম্বরের আমলে তাঁর আনীত 'দ্বীন'ই ছিল দ্বীন'এ ইসলাম এবং আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য ! পরে এগুলো একের পর এক রোহিত হয়েছে এবং পরিশেষে দ্বীন'এ মুহাম্মদীই 'ইসলাম' নামে অভিহিত হয়েছে- যা কিয়ামত পর্যন্ত কায়েম বা প্রতিষ্ঠিত থাকবে ! যেহেতু পূর্ববর্তী আয়াতগুলোর দ্বারা এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, আল কোরআনই সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ এবং পূর্ববর্তী সকল ঐশী গ্রন্থের সারমর্ম সমেত বিস্তৃত গ্রন্থ !
দ্বীন ইসলামই মুক্তির বাহন : আজকাল ইসলামের উদারতার নামে কুফর ও ইসলামকে এক করে বলা হয় সৎকর্ম সম্পাদন করলে ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী হলে যে কোনো ধর্মাবলম্বীই মুক্তি পাবে- সে ইহুদী, খ্রিস্টান, মূর্তিপূজারী যা-ই হোক ! প্রকৃত প্রস্তাবে এটা ইসলামকে বিধ্বস্তকারী মতবাদ ! কারন, এর সারমর্ম দাঁড়ায় এই যে, ইসলামের বাস্তব কোনো ভিত্তি নেই! এটা একটা কাল্পনিক বিষয়, যা কুফরের পোশাকেও সুন্দর মানায় ! কোরআনের অসংখ্য আয়াতে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, আলো এবং অন্ধকার যেমন এক হতে পারেনা, তদ্রুপ অবাধ্যতা এবং আনুগত্য উভয়টি আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় নয় ! যে ব্যক্তি ইসলামের কোনো একটি মূলনীতি অস্বীকার করে, সে নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও তাঁর পয়গম্বরদের বিদ্রোহী শত্রু, প্রচলিত অর্থে সৎকর্ম বা নেক কর্ম ও প্রথাগত চরিত্রে সে যতই সুন্দর হোক না কেন, তাতে কিছু যায় আসে না ! কোরআনে এমন লোকদের সম্পর্কে বলা হয়েছে- ('ফালা নুকিমু লাহুম ইয়াউমাল কিয়ামাতি ওয়াজনান';) অর্থাৎ কিয়ামতের দিন আমি তাদের কোনো আমল ওজন করবো না !
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৫৭
৭টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×