somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাশ - একটি সত্য ঘটনা

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৯৮০ সাল।
ফরিদ একজন ট্রাক ড্রাইভার। থাকে টঙ্গীতে। তার নিজস্ব একটি লাশবাহী পিক আপ আছে, ভাড়া খাটায়। সুযোগ পেলে সে নিজেও ড্রাইভ করে। লাশ বহন করলে ইনকাম ভালই। তবে, লাশের গাড়ী একা নিয়ে যেতে স্বাভাবিকভাবেই ভয় লাগে, তাই দুজন লোক লাগে। একজন ড্রাইভার ও অন্যজন এসিস্টেন্ট। একটি লাশ বহন করতে হবে। এসিস্টেন্ট ছুটিতে। তাই ফরিদ নিজেই সেদিন এসিস্টেন্ট হয়ে ফ্রন্ট সিটে বসেছে। রওনা করেছে চিটাগংয়ের উদ্দেশ্যে। পিক আপের পেছনে লাশের সাথে বসেছে, মৃত ব্যক্তির চাচাত ভাই। বাকী যে দুই একজন আত্নীয় স্বজন ছিল, তারা বাসে করে আগেই চিটাগং রওনা করেছে। কুমিল্লায় চা বিরতির সংক্ষিপ্ত বিরতি দিয়ে, আবার রওনা করেছে তারা। এবার ফরিদ নিজে ড্রাইভিং সিটে, আর তার ড্রাইভার ফ্রন্ট সিটে। লাশ নামিয়েই সকালে যত তাড়াতাড়ি ফেরা যায়, তত ভাল। আরেকটি ট্রিপের সুযোগ থাকে সকালে।
রাত তখন দেড়টা। কুমিল্লা আর ফেনীর কাছাকাছি একটি নির্জন রাস্তা। গাড়ী চলছে মোটামুটি স্পিডেই। হটাৎই পেছন থেকে লাশের ভাইয়ের চিৎকার ভেসে আসে। লাশের গাড়ীতে এরকম হটাৎ চিৎকার ও কান্না অস্বাভাবিক নয়। কারণ, মৃত ব্যক্তির শোকে থাকা আত্নীয় স্বজন প্রায়শই হটাৎ করে কাঁদে। কিন্তু, এই চিৎকারটা অন্যরকম। গাড়ী একটু স্লো করার সাথে সাথেই, লাশের সাথে থাকা লাশের চাচাত ভাই, গাড়ীর পেছন থেকে লাফ দিয়ে নেমে দৌড় দিয়েছে রাস্তা ফেলে ক্ষেতের দিকে। ফরিদ একটু অবাক হয়ে রাস্তার পাশে গাড়ী নিয়ে থামাতে গিয়ে এসিস্টেনকে বলে -
- কি হয়েছে? দেখতো।
গাড়ী রাস্তার পাশে সম্পূর্ণরুপে থামানোর আগমুহুর্তেই ফরিদ দেখে যে, তার ড্রাইভার অর্থ্যাৎ এসিস্টেন্ট গাড়ীর দরজা খুলেই, একইভাবে নেমে দৌড় দিয়েছে।

ফরিদ পেছনে তাকিয়ে দেখে, লাশ উঠে বসেছে। সাদা কাপড় জড়ানো, কিন্তু মুখের অংশ হয়তোবা কোনভাবে খুলে গেছে। চোখ বন্ধ। ফরিদ শুনেছে, মৃত্যুর পরে অনেক সময় নাকি লাশ কিছুটা বাঁকা হয় মাংসপেশীর টানে। গাড়ী থামার ঠিক আগমুহুর্তেই ফরিদ দেখে -
- আস্তে আস্তে দুটো হাত দুদিকে উঠে যাচ্ছে এবং চোখ দুটি খুলতে শুরু করেছে। ভয়ে মুহুর্তের মধ্যেই গাড়ী থেকে নেমে ফরিদ দৌড় দেয় সামনের দিকে। খানিক দৌড়ানোর পরে রাস্তার পাশে একটি গাছের আড়াল থেকে, তার এসিস্টেন্ট ডাক দেয় -
- ওস্তাদ।
ফরিদ থামে। দুজনই হাপাচ্ছিল। এরপরে সাহস করে তারা গাড়ীর দিকে তাকিয়ে দেখে -
- লাশটি গাড়ীর পেছন থেকে হেঁটে হেঁটে গাড়ীর সামনে আসল। এরপরে লাশটি ড্রাইভিং সিটে বসল। রাস্তার পাশ থেকে লাশের চাচাত ভাই এসে ফ্রন্ট সীটে বসল।
- লাশ, নিজে লাশবাহী গাড়ীটি ড্রাইভ করে তাদের সামনে দিয়েই চলে গেল।
- "ফরিদ বুঝল, তার গাড়ী ছিনতাই হল।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×