somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভূতের কিচ্ছা

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সে বার যখন আমাদের নতুন বাড়িটি আমার বাবা কিনেছিলেন তখন আমি বেশি একটা বড় ছিলাম না । বাবা বাড়ি কিনার পরে তার বন্ধুবান্ধব এবং আমাদের সকল আত্মীয়স্বজন সকলকে বাড়ি কেনার ব্যপারটা জানান তাতে সকলের কাছ থেকে একটি জবাব পাওয়া যায় ইমন তুমি মনে হয় বাড়িটি কিনে ভুলকরতেছ তার পরেও বাবা কেন জানি কার কোন কথা ছুনলেন না ।

বাড়ি কেনার পরে বাবা সকলকে জিজ্ঞাসা করলেন তোমরা কেন আমাকে বাড়ি কিনতে নিষেধ করেছিলে এবার আমাকে বুঝিয়ে বলত । বাবা এ কথা বলার পরে সকলে বাবাকে
বল্ল ইমন তুমি যে বাড়িটি কিনেছ তা অনেক আগের বা প্রাচীন রাজা বাদশাহা ও জমিদারদের আমলের আর ঐ দরনের প্রাচীন আমলের বাড়িতে কোন না কোন রহৎস
থেকে যায় । ঐ ধরনের বাড়িতে থাকে নানান ধরনের ইতিহাস বিশেষ করে ভূত পেতের গন্ধ থাকে বেশি তাই তোমাকে বাড়িটি কিনার জন্য না করেছিলাম ।

বাবার এক বন্ধু বললেন ইমন বাড়িটা কিছুটা গুরে যা দেখলাম তাতে কোন সন্ধেহ নাই যে তাতে ঐ বাড়িতে ভূত নাই । তোমার ও বাড়িটা যে জমিদারের আমলের সে জমিদার বৃষ্ণ নারায়ণ খুব অত্যাচারী ছিল । জমিদার ছয়টি বিবাহ করেছিল আর তার ছয় নম্বর স্ত্রীর মৃত্যুর পিছনে একটি রহসৎ আছে তা কি তুমি জান ।

তা ইমন তুমি কত টাকা দিয়ে বাড়িটি কিনেছ তা আমি প্রায় ছয়লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছি ।
তাহলে বুঝ এবার একে জমিদার বাড়ি তার ভিতরে অনেক দিন বাড়িটি খালি পড়েছিল কেউ তার ধারে কাছেও যায় নায় তার ভিতরে তুমি মাত্র ছয়লক্ষ টাকা দিয়ে বাড়িটি কিনলে । তাহলে এতেই স্পর্স্ট বুঝা যাচ্ছে অবশ্যই সে বাড়িটিতে ভূত পেত বা কোন রহসৎ লুকিয়ে যা হয়ত ইমন তুমি জান না । তা না হলেকি বাড়িটি এতদিন খালি পড়ে থাকে ।

যাই হোক সে আংঙ্কেলের কথা শুনে বাবা কিছুতা চিন্তিত হলেও আমাদের তা ওনি বুঝতে দেন নাই । বাবা তার বুকে অনেক সাহস রেখে আমাদের সকলের সামনে বললেন শুনো ঘর থেকে ছাড় পোকা তাড়াবার যেমন কোন না কোন ঔষধ লাগে তেমন ভূতপেত তাড়াতে কিছু যাদু মন্ত্র লাগে আর ও ধরনের ভূত পেত তাড়ানোর যাদু মন্ত্র সব আমার জানা আছে তাই আমি কোন ভূত পেতকে ভয় পাই না ।

বাবা অবশ্য তখন একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতেন । আর আমরা আমাদের পরিবারের সবাই খুব আল্লা ভিরু প্রকতির লোক ছিলাম । সকলে পাচঁ ওয়াক্ত নামজ পড়তাম ।

বাড়িটি কেনার পরে আমরা পরিবারের সকলে মিলে একদিন চলেগেলাম দেখার জন্য বাড়িটি বিশাল বড় ও বেশ সুন্দর । চার দিকে বেশ বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের গাছে সাজানো গোছান আছে ।
তবে বাড়িটির দক্ষিন দিকদিয়ে একটু ভয়ঙ্কর মনে হয়েছে যেমন নিরালা নির্জন তেমন ভয়ঙ্কর ছিল ।
তার পরে বাড়ি দেখা শেষ করে আমার বাবা ও আমাদের পরিবারের আর সদস্য আমরা যারা ছিলাম তারা সকলে মিলে বাড়ির আশে পাশে যেসব প্রতিবেশী ছিল তাদের কাছে ঐ বাড়িটির সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলে তারা যে জবাব দেয় সে অনুসারে ওটা আসলে মানুষ থাকার মত যোগ্য বাড়ি নয় পুর বাড়ি নাকি প্রায় রাতের সময় ভূতের আড্ডা খানার মত হয় ।

এক পর্যায় এক প্রতিবেশী বল্লেন তারা প্রায় সময় দেখে আকাশে আলো ভরা চাদঁ ও আকাশ ভরা তারা থাকে আর ঐ বাড়ির চার পাশ আলোকিত থাকলেও বাড়িটির ভিতর সাইট থাকে অন্ধকার ।

আরেক প্রতিবেশী বল্লেন মাঝ রাতে বাড়ির ভিতর থেকে বিভিন্ন ধরনের শব্দ শুনতে পান তারা কখন কাচের জিনিস ভাংঙ্গার বা কখন মারামারির শব্দ আছে বাড়ির ভিতর থেকে ।

আরেক প্রতিবেশী বলেন একবার ঐ গ্রামের একটি মাডারের আসামী সন্ধান পেয়ে কয়েক জন গয়েন্ডার লোক গ্রামে আসলে তাদের কাজটি শেষ হতে বেশ কয়েক দিন লাগবে বলে তারা সে গ্রামের মাতাববড়দের সাথে কথা বল্লে মাতাববড় সাহেবেরা তাদেরকে ঐ বাড়িতে থাকার জন্য ব্যবস্থা করে দেন । গোয়েন্ডা দের সদস্য ছিলেন ৭ জন ৪জন পুরুষ ও ৩ জন মেয়ে । মেয়েরা তিন জন গোসল করার পরে ছাদে যায় রোদ্রে কাপড় শুকানোর জন্য ।
এক সময় তিন জন মেয়ে ছাদের তিন কোণে দাড়িয়ে তারা বাড়িটার আশ পাশটা একটু দেখতে ছিলেন । হঠাৎ করে তাদের মধ্যে যে মেয়েটি দক্ষিন পাশে দাড়ানো ছিল সে মেয়েটি দক্ষিন কোনে বাড়ির পিছন সাইটে পড়ে যান আর তাতে তার হাত পা ভেংঙে প্রায় ১মাসের মত হাস পাতালে থাকেন । পরে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বল্ল সে বাড়িটির আশ পাশটা একটু দেখতে ছিলেন হঠৎ করে কে যেন তাকে পিছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন ।

বাড়িটির পাশে থাকা আরেক জন প্রতিবেশী বল্লেন বাড়িটিতে প্রায় মাঝ রাতে দেখা যায় কয়েকটি ঘোড়া বাড়িটির ছাদেরর উপরে দৌড়াদৌড়ি করে ।
এভাবে একের পর এক রহৎসের কথা শোনা যায় বাড়িটির বিষয়ে ।
তাতেও আমার বাবা একটুও পিছু পা হননী তার একটি কথাই ও রকম কিছু ভূত পেত্তনী তারাবাড় মত অনেক মন্ত্র আমার জানা আছে ।

ওখান গুরে এসে তার কিছুদিন পরেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই আমরা নতুন বাড়িতে চলে যাব এবং কয়েক দিনের ভিতরে চলেও যাই ।

নতুন বাড়িতে উঠলাম বেশ কয়েকদিন থাকলাম কোন সমস্যা মনে হচ্ছেলো না । এক দিন বাড়িতে কেও নাই আমার বড় দুবোন ছাড়া । বাবা অফিসে মা ছিলেন পাশের প্রতিবেসীর বাসায় তাদের মেয়ের বিবাহ গায়ে হলুদ চলতেছিল আর আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়ুয়া ছাত্র আমি ছিলাম স্কুলে । ঘটনা ঘটলো এরকম আমার বড় বোন দুজনে দেখলেন আমার মা বাসায় গেছে এবং তাদেরকে বলেছে তোমরা ছাদে যাও ওখানে আমার আরো দুটি হলুদের শাড়ী ধুয়ে রোদে দেওয়া আছে ও দুট পড়ে তোমরা গায়ে হলুদে যাও ।

আপুরা দুজনে ছাদে গেলেন এবং দুটি হলুদের শাড়ী পেলেন তা নিলেন এবং নিচে নেমে এসে দেখেন ঘরে বাবাও এসেছে তো বাবা ও মা দুজনে মিলে কথা বলছেন আর আমাদেরকে বলছেন তোমরা চলে যাও তারাতারি চলে এসো আপুরা চলেগেলেন শাড়ি নিয়ে পাশের প্রতিবেশীর বাড়িতে ওখানে যেয়ে দেখেন মা ওখানে আংটির সাথে কথা বলছেন । তো মা আমার বোনদের বলছেন তোমরা এত তারাতারি কেন এসেছ এখন অনুষ্ঠান শুরু হয় নাই । তো আপুরা মাকে ওখানে দেখে তাদের কিছু বুঝতে বাকি থাকলো না যে তাদের সাথে হর গন্ডগোল কিছু একটা হয়েছে । তো আপুরা মাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করে বাবাকে ফোন দিলেন বাবা ফোন রিসিভ করলো বাবা জিজ্ঞাসা করলো বাবা তুমি কোথায় বাবা উত্তরে বল্লেন আমি একটু আজ হঠাৎ একটা কাজে ঢাকার বাহিরে চলে গেছি
আজ আর বাসায় ফিরবো না কাল বিকেলে অফিস শেষ করে বাড়িতে ফিরবো ।

আপুরা মাকেও কিছু বল্লেন না পর দিন রাতে বাবা ও সকলে মিলে যখন খাবার টেবিলে
বসলেন তখন আপুরা আগের দিনের ঘটনাটা শেয়ার করলেন ।
তার পরেও আর বেশ কিছু দিন সে বাড়িতে আমরা বসবাস করি এবং নানান ধরনের সমস্যার মোকাবেলা করি অবশেষে বাবা বাড়িটি বিক্রি করে দিয়ে আমাদের সকলকে নিয়ে অন্য আরেকটি বাড়িতে ওঠেন ।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×