somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাচীন যুগে ডাইনী শিকারের কিছু কথা

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটি সময় অনেক বছর আগে পার হয়ে গেছে সে সময় ডাইনী শিকার করা হত । হয়ত ইতি মধ্যে আমার পোস্টে ঢুকে অনেকের মাথায় গিত্তু লেগেছে এরকম প্রশ্ন হয়ত জেগেছে যে ডাইনী আবার শিকার করে কি ভাবে । আসলে মূলত এখানে যা বোঝানো হয়েছে তা হল পৃথিবীতে একটি সময় ডাইনী শিকার হতো তা হলো ডাইনী খোঁজা বা ডাকিনীবিদ্যার প্রমাণ খোঁজা অথবা তাদের ডাইনীর অস্থিত খোঁজা তবে এর সাথে জড়িত ব্যাপারগুলো হলো নৈতিক আতঙ্ক অনেকজনের মূর্ছা যাওয়া এবং জনতার বেআইনী শাস্তি বা বিচারের সময় বেআইনী সাজা দেওয়া এরকম কিছু কে বোঝানো হয়েছে । আসলে বিষয়টি বেআইনী মনে হলেও সে সময় ওটা তাদের আইন সম্মত আইনী ছিল,বা ইতিহাসগত ভাবে ঘটনাগুলো আইনগতভাবেই হয়েছিল এবং দাপ্তরিক ডাকিনীবিদ্যা বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছিল ।


ডাইনী শিকারের প্রাথমিক যুগ ছিল ১৪৮০ সাল থেকে ১৭০০ সালের মধ্যে । পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতিতেই এই ডাইনী শিকার হয়ে আসছে প্রাচীন এবং আধুনিককাল জুড়ে ।মানুষ কুসংস্কারে আক্রান্ত হয়ে ডাইনী ভীতিতে ডাইনীদের বা যারা ডাকিনীবিদ্যা চর্চা করে তাদের হত্যা করে আসছে অথবা বর্জন করে আসছে । ডাইনী শিকার এখনও আধুনিক সমাজে চলছে যেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা আধুনিক বিজ্ঞান যুগে কেও ডাকিনীবিদ্যা এবং গুপ্তবিদ্যা সমর্থন করে না । ডাইনী শিকার বলতে এটাও বোঝায় যে আতঙ্কজনিত কারণে আসল ডাইনী বাদে অন্য সন্দেহজনক ভুল মানুষকে খোঁজা । প্রাচীন মিশর এবং ব্যবিলনে জাদুকর ও ডাইনীদের জন্য আলাদা আইন ছিল । হামুরাবি কোড ১৮০০ সালের আগের হিসেব অনুযায়ী যদি একজন মানুষ আরেকজনের ওপর যাদুটোনা করে এবং তা যদি প্রমাণিত না হয় তবে যার ওপর যাদু প্রয়োগ করা হয়েছে সে পবিত্র নদীর কাছে যাবে ও নদীতে নামবে । নদী যদি তাকে ডুবিয়ে ফেলে তবে তার বাড়ীর মালিকানা পাবে ওই যাদু প্রয়োগকারী ব্যাক্তি । যদি সে পবিত্র নদীতে না ডোবে তাহলে ওই যাদুকর কে মৃত্যুদন্ড দিতে হবে এবং তার বাড়ীর মালিকানা পাবে ওই যাদুতে আক্রান্ত হওয়া ব্যাক্তি । এটা হল ভাই প্রাচীন যুগের হিসাব । এর পর চলুন মধ্য যুগ দেখি তখনকার অবস্থা কি ?


প্রাথমিক মধ্যযুগে গির্জায় সরাসরি ডাইনী বিচার যেত না । যদিও এসব বিচার গির্জার আদর্শ থেকেই শুরু হয়ে এসেছে । ৭৮৫ সালে চার্চ অব প্যাডেরবর্ন ডাকিনীবিদ্যা নিষিদ্ধ করেন । পোপ জন XXII ডাকিনীবিদ্যা দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেন ১৩২০ সালে যখন তিনি জানতে পারেন এ বিষয় সম্পর্কে । তদন্তকারী আদালত এই বিচারে জড়িত হয় ১৫ শতকে যখন দুই জন মহিলা স্বীকার করেন যে তারা ১৩৮৪সালে এবং ১৩৯০সালে এক প্রকারের সাদা যাদুতে অংশ নিয়েছে । প্রাথমিক আধুনিক ইউরোপে ডাইনী বিচার শুরু হয়েছিল ভালোভাবেই । ১৫ শতকে এবং ১৬ শতকে প্রাথমিক ডাইনী বিচার শুরু হয় । তারপর মানুষের ডাইনী ভীতি কমে গেলে বিচারও কমে যায় । পরে আবার ১৭ শতকে এটা তুমুলভাবে শুরু হয় । খ্রিস্টান সমাজ এবং সেক্যুলার প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করত ডাকিনীবিদ্যা নগ্ননৃত্য অরজি যৌনতা এবং মানুষের মাংস খাওয়া নিয়ে পালিত শয়তানী ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সাথে ভালভাবে জড়িত । জার্মানীতে ডাইনী শিকার শুরু হয় অনেক আগে । দক্ষিণ পশ্চিম জার্মানীতে ডাইনী শিকারের সফল বছর ছিল ১৫৬১ থেকে ১৬৭০ সাল । তখনকার সময় ডাইনীদের ধরে পুড়িয়ে মারা হত । সারা ইউরোপে প্রায় ১২০০০ ডাইনী বিচারের ঘটনা ঘটেছিল । প্রায় ৪০০০০ থেকে ১০০০০০ লোক এসব বিচার সম্পাদন করেছিলেন । ১৮ শতকে এ ধরনের অভ্যাস কমে যায় । ইংল্যান্ডে শেষ ডাইনী শিকারের ঘটনা ঘটেছিল ১৬৮২ সালে । ১৭১২ সালে জ্যানি ওয়েনহ্যাম ছিল প্রথাগত ডাইনী বিচারের শেষ ঘটনা যেখানে সে ক্ষমা চায় তার কৃতকর্মের জন্য এবং মুক্তি পায় ।


এখন আমাদের এই আধুনিক যুগেও ডাইনী শিকার চলছে বিশেষ করে আফ্রিকাতে । ১৯৯৯ সালে বিবিসির প্রতিবেদনে দেখা যায় যে কঙ্গোতে শিশুদের ডাইনী সন্দেহ করা হচ্ছে এবং তাঞ্জানিয়াতে ডাইনী সন্দেহে বয়স্ক মহিলাদের মারা হচ্ছে যদি তাদের চোখ লাল হয় । ডাইনী শিকার করে আফ্রিকাতে মূলত করে ডাইনীর আত্নীয় স্বজনরা তার সম্পত্তির লোভে । আমেরিকাতেও ডাকিনীবিদ্যা সম্পর্কীত ঘটনা শোনা যায় । ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে ওকলাহোমাতে এক ছাত্রীকে ১৫ দিনের জন্য স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় যাদুমন্ত্র করার অভিযোগে । ১৬ই ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবে ফাওজা ফালিহ নামের এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হয় এবং অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করা হয় ডাইনী সন্দেহে । রাজা যদি তার দুঃষ্পাপ্য ক্ষমা না করেন তবে মহিলার মাথা কাটা যাবে । শেষ হয়েগেছে ।

কি কিছু বুঝলেন ভাই । বুঝেন নাই আরে এগুলো প্রচীন যুগের একটি ভন্ডামী আইন বা বিচারের কথা পড়লেন । এটা এমন বিষয় যেয়ে দাঁড়ালো বা আমরা বুঝলাম যে আসলে ভূত পেতনী যাই বলেন আর আমরা যাই মনে করি না কেন এগুলো শুরু ছিল কিছু ভন্ডামী দিয়ে ।

ছবিগুলো গুগল থেকে নেওয়া ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৮
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×