ম্যাথমেটিক্সে আমার আগ্রহ স্যার আইজ্যাক নিউটনের চাইতে কোন অংশে কম নয়। সেজন্যই ম্যাথম্যাটিক্সে অনার্স করতেছি।কিন্তু নিউটন ব্যাটা(!) সবকিছুতেই বাম হাত দিয়া গেছেন। তাই এখন আমার মত এযুগের একজন মোস্ট ট্যালেন্ডেড পোলাকে শুয়ে বসে অলস দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
যাইহোক, ম্যাথম্যাটিকস নিয়ে যেহেতু পড়ছি তাই প্রথমে "ক্যালকুলাস" নিয়েই গবেষণা করা যাক। কিন্তু আমার আগেই তো নিউটন সাহেব ক্যালকুলাস আবিষ্কার করে ফেলছেন। যদিও নিউটনের আগেই লিবনীজ স্বতন্ত্র ভাবে ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেছিলেন। তথাপি, লিবনীজ ক্যালকুলাসের জনক হওয়ার দাবিদার ছিলন। কিন্তু ক্যালকুলাসের জনক হওয়ার জন্য নিউটন লিবনীজের সাথে যা করছিলো তা জানার পর নিউটনের প্রতি ঈষৎ মনক্ষুন্ন হলাম। তাদের বিবাদের ঘটনাটি এখানে উল্লেখ করছিঃ
লিবনিজ এবং নিউটন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রায় একই সময়ে বিজ্ঞানের একটি নতুন শাখার উন্নয়ন ঘটান যা ক্যালকুলাস নামে পরিচিত। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম ভিত্তি হচ্ছে এই শাখাটি। যদিও আমরা এখন জানি নিউটন লিবনিজের কয়েক বছর পূর্বেই এটি আবিষ্কার করেছিলেন, তবে তিনি তা প্রকাশ করেছিলেন অনেক পরে অর্থাৎ ১৬৯৩ সনে; আর পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করেছিলেন ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে। অথচ লিবনিজ তার কাজের একটি পূর্ণ বিবরণ ১৬৮৪ সালেই প্রকাশ করেছিলেন। মূলত লিবনিজের ব্যবকলন পদ্ধতিই পরবর্তীতে মহাদেশ জুড়ে গৃহীত হয়েছিল।কে আগে এটি আবিষ্কার করেছেন তা নিয়ে তৎকালীন বিজ্ঞানী সমাজের মাঝে প্রবল বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে। দুজনের বিরুদ্ধে ও পক্ষেই অনেক লেখালেখি হয়। আশ্চর্যের বিষয়, নিউটনের পক্ষে লিখিত অধিকাংশ নিবন্ধই ছিল তার নিজের লেখা এবং তার বন্ধুদের নামে প্রকাশিত। বাগ্বিতণ্ডা চলতে থাকায় লিবনিজ বিষয়টি রয়েল সোসাইটিতে উত্থাপন করেন। সোসাইটির সভাপতি নিউটন এর সঠিক অনুসন্ধানের জন্য তার বন্ধুদের নিয়ে একটি পক্ষপাতিত্বমূলক কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ শুরু করে ১৭১১সনে। রয়েল সোসাইটির প্রতিবেদনে লিবনিজকে গবেষণা কর্ম চুরির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর নিউটন নাম গোপন করে এক সাময়িকীতে রয়েল সোসাইটির প্রতিবেদনের পক্ষেও লিখেছিলেন। লিবনিজের মৃত্যুর পর নিউটন বলেছিলেন. লিবনিজের মন ভেঙ্গে দিয়ে তিনি খুব শান্তি পেয়েছেন। [তথ্যসূত্রঃউইকিপিডিয়া]
"ক্যালকুলাস" নিয়ে বিবাদ থাকলেও নিউটন কিন্তু ক্যালকুলাসেই সীমাবদ্ধ নন। "মডেলিং" - Modeling (গণিতের একটি সাবজেক্ট) করতে গিয়ে আবারো নিউটনের দেখা পেলাম। এবার ভাবলাম ম্যাথ রেখে ফিজিক্স হাতে নিই। কিন্তু হায়! ফিজিক্সে দেখি নিউটনের বাম হাত (অবদান) আরো বেশি প্রশস্ত। ম্যাথম্যাটিকাল ফিজিক্স, গতিবিদ্যা, মহাকর্ষ, আলোকবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, বলবিদ্যা (mechanics) সবকিছুতেই নিউটন। এ কারণেই তো অনেকের মতে, নিউটন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী বিজ্ঞানী।
আর তাই আমার অবদান রাখার ক্ষেত্র নিউটনই দখল করে নিয়েছে। কি আর করা, নিউটনের আবিষ্কার পড়েই আমি এখন অলস দিন কাটাই,,,
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৭ রাত ১০:৪৮