৩য় পর্ব:
দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর অবশেষে টিকিট হাতে পেল তাও আবার কেবিনে। আহমাদ মনে মনে বলে কার সাথে যে সিট পড়ে ঠিক নেই। ট্রেনে উঠে তার বগি খুঁজে বের করে সেখানে মালামাল রাখল। কিছুক্ষণ পরে কেবিনে ১টি মহিলা প্রবেশ করলেন, যাকে দেখে আহমাদের চোখ আটকে গেল যিনি দেখতে অবিকল তার মায়ের মত। কোথায় যেন দেখেছে তাকে ঠিক মনে করতে পারছে না। মহিলাটি ঢুকেই সালাম দিল, আহমাদ সালামের উত্তর দিল। এরপর আর কেউ রুমে ঢুকল না। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রেলগাড়ি তাদের নিয়ে চলতে আরম্ভ করল। মহিলার সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলার জন্যই সে বলল, Would you mind, calling you as a Aunt? মহিলাটি বললেন, sure, তাছাড়া অনেকটা পথ কথা না বলে থাকা যাবে না। আহমাদ বলল, আমরা কখন পৌছাচ্ছি? আন্টি বললেন, আগামীকাল দুপুর ২টায়। আপনার সাথে কেউ আসে নি? জিজ্ঞাসা করল আহমাদ। উত্তরে বললেন, আমার কেউ নেই তো তাই? আহমাদ বলল, বুঝলাম না। আন্টি বললেন, আমার ১টি মাত্র ছেলে ছিল সে মারা গেছে পানিতে ডুবে আর স্বামী তার ছেলের শোক সইতে না পেরে hurt attack করে মারা যায় ৩ বছর আগে। আহমাদ বলল, তাহলে আপনি আর বিয়ে করেন নি? তিনি উত্তরে বললেন, তেমন কোনো মানুষ পাই নি? তোমার খবর বল? আমিই তো বকবক করে যাচ্ছি। আহমাদ বলল, আমরা ৩ ভাইবোন ও আমাদের বাবাকে নিয়েই সংসার। তোমার মা? উত্তরে সে বলল, মারা গেছেন গত ১মাস আগে। আন্টি বললেন, দুঃখিত আমি জানতাম না। আহমাদ বলল, ঠিক আছে। এভাবে রাতের খাবারের সময় হলে, আন্টি বলেন, তুমি খাবে না? আহমাদ বলল, খাব পরে। আন্টি বললেন, আমি খাব তুমিও খাও আমার সাথে। আহমাদ বলল, আমার সাথে খাবার আছে। এই বলে, আহমাদ কিছু রুটি বের করে খেতে শুরু করল। খাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়ল। প্রায় রাত ২টার দিকে আহমাদ স্বপ্ন দেখে চিৎকার দিয়ে উঠে আর হাপাতে হাপাতে ঘর্মাক্ত হয়ে যায় পাশে থাকা আন্টি উঠে এসে তার আচল দিয়ে মুখ মুছে দেয় আর পানি খাওয়ান। এরপর আহমাদ শান্ত হলে, তাকে নামায পড়ে শুতে বলে। আহমাদ ওযু করে এসে নামায পড়ে আর আন্টি তার মাথা নেড়ে দেয়। কিছুসময় পর উনি উনার সিটে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। রাতে আর তেমন কিছুই ঘটে নি। ফজরের সময় হলে দুজনেই নামায পড়ে নেয় এবং জেনে নেয় তাদের গাড়ী কেবল ব্রাহ্মণবাড়িয়া পার হয়েছে। তাহলে এখনো আরও ৬ঘণ্টা লাগবে। তারা দুজন এখন স্বাভাবিক হয়ে গল্প করছে কিন্তু আহমাদ আন্টিকে চিনতে না পারলেও তিনি ঠিকই চিনেছেন যে এই ছেলেই তার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯