►লিখাঃ মোঃ নাহিদ হোসাইন
মানবজাতি সৃষ্টির পর থেকেই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি একে অপরের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ দেখা যায় যাকে আমরা ভালোলাগা, আবেগ, প্রেম, ভালবাসা নামে চিনি।
আমাদের বর্তমান এই বয়সটা খুব অদ্ভুত। কোন অজানা কারণেই হঠাৎ করে মন খারাপ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে এতটাই খারাপ লাগে যে কিছুই করার ইচ্ছা হয়না, কোন কাজে উৎসাহ থাকে না, ভিতরে কেমন যেন শূন্যতা অনুভূত হয়।
তখন খুব বেশী খারাপ লাগে যখন দেখি বন্ধুরা তাদের জি.এফ নিয়ে বিজি থাকে, দেখা গেল আমরা আড্ডা দিচ্ছি, আর বন্ধুটা ফোন চাপাচাপিতে বিজি।
মুঠোফোনের ওপাশ থেকে কোন এক বিশেষ মানুষের কণ্ঠ শুনতে ইচ্ছে হয়, সেই মানুষটার টেক কেয়ার পেতে ইচ্ছে হয়, খেতে ইচ্ছে না করলে যে মানুষটা খাওয়ার জন্য জোর করবে, সকালে গুড মর্নিং দিয়ে ঘুম ভাঙাবে, আবার রাতে গুড নাইট দিয়ে জলদি ঘুম পারাবে।
যে মানুষটা বিশেষ বিশেষ দিনে ফোন করে উইশ করবে, যে মানুষটা আমার রাগে-অভিমানে সবসময় পাশে থাকবে। একটি সিঙ্গেল ছেলে/মেয়ে দুইজনেই আশা করে কেউ তাকে অনেক অনেক ভালোবাসুক, তার টেক কেয়ার করুক।
একটি সম্পর্কের শুরু হয় ভালো লাগা থেকে যাকে “Love At First Sight” বলা হয়। ভালো লাগে কারো কথা, কারো হাসি, কারো কণ্ঠ, কারো চেহারা, ইত্যাদি। প্রথমে ভালোলাগা তারপর সুযোগ বুঝে প্রপোজ। তারপর শুরু হয় সম্পর্ক। অনেক সময় সম্পর্ক হয় দুজন ভাল বন্ধুত্বের মাঝে থেকে । সম্পর্ক হয় ভালবাসার, সম্পর্ক হয় ভালোলাগার।
যখন সম্পর্ক একটু গভীর হয় তখন অন্যসব টপিকের চাইতে ১৮+ কথাবার্তা বেশী হয়, একে অপরের সাথে দেখা করার প্রবণতা, ঘুরাঘুরির প্রবণতা বেড়ে যায়। আর তখন ভালবাসার নামে নোংরামি করা হয়, যা বর্তমানে আমরা বিভিন্ন পার্কে দেখতে পাই। অনেকে আবার ভালবাসার অজুহাতে রুম ডেট ও করতে চায়, এক্ষেত্রে ছেলে/মেয়ে যেকোনো একজনের অথবা উভয় জনের সম্মতি থাকে।
আবার যখন কোন কারণে ব্রেকআপ হয়, তখন ছেলেটা/মেয়েটা সুইসাইড পর্যন্ত করে ফেলে।
আচ্ছা তোমাদের কাছে আমার প্রশ্ন এসব মানে কি ভালবাসা? ভালবাসা মানে কি রুম ডেট, নোংরামি করা? সুইসাইড করা?
একদিকে ভালো আর ইমোশনাল ছেলেরা প্লে গার্লদের পাল্লায় পরে বাবার কষ্টের টাকা উড়িয়ে শেষমেশ ছেকা খেয়ে নিজের লাইফটাকে নিকোটিনের ধোঁয়ায় বিষাক্ত করে তুলছে, আবার কেউ কেউ আবার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্লে বয় হয়ে বাকি ভালো মেয়েদের জীবন নষ্ট করছে, আবার কেউবা আত্মহত্যা করছে।
অপরদিকে বেশীরভাগ মেয়েরা প্লেবয়দের প্রেমে পরে, তারপর একটা এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে দুনিয়ার সকল ছেলেদের একরকম মনে করে, ঘরের এক কোনায় নিশ্চুপে কেঁদে কেঁদে রাত পার করে দেয়, কেউবা আবার নিজের জীবনকে বিসর্জন দিয়ে দেয়।
এইগুলো হল আমাদের আজকের জেনারেশনের ভালবাসার ফল। এগুলো করা কখনই সত্যিকারের ভালবাসার পর্যায়ে পরেনা, মেয়েদের বলি, ভালোবাসো কোন সমস্যা নেই, কিন্তু অন্ধ ভালবেসে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে নিজের সতীত্বটুকু দিয়ে আসবে না, একটা কথা মনে রেখ, যদি কোন ছেলে ভালবাসার দোহায় দিয়ে ভোগ করতে চায়, তবে সে তোমাকে নয়, তোমার দেহকে ভালবাসে।
আর ছেলেদের বলছি, সম্পর্ক করার আগে ভেবে নিবে কারণ এক ছলনাময়ীর কারণে তোমার জীবন হয়ে উঠতে পারে বিষাদময়।
যদি তুমি কিছু বললে ব্রেকআপ করার হুমকি দেয়, তাহলে তৎক্ষণাৎ ঠাস করে গালে দুইটা চড় মারো (পারলে যত খুশি) । মন চাইলে লাথিও মারতে পারো। হারামজাদীর পিছনে অনেক টাকা খরচ করেছো, সেগুলো উসুল করতে হবে না? (সরি মুখ খারাপ করে ফেললাম) তবে ভুলেও ইমোশনাল হয়ে নিজের জীবনটাকে নষ্ট করোনা। আজকাল চারদিকে অন্ধ আর কর্পোরেট ভালবাসায় ভরে গেছে, এখন একজন আরেকজনকে ভালবাসে শুধুমাত্র কিছু চাহিদার জন্য।
► পরিশেষে একটা কথায় বলব, ভালবাসা একটা পবিত্র বন্ধন, তার মর্যাদা দিতে শিখ।
কাউকে ভালবাসলে পবিত্রভাবে ভালবাসো । পবিত্র ভালবাসার ওয়ারেন্টি জিএফ/বিএফ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি এমন এক ভালবাসার বন্ধন যা প্রিয় মানুষটির সাথে বাঁধা যায়, যা মৃত্যুর পরও টিকে থাকে। এই ভালবাসার শুরু আছে শেষ নেই। পবিত্র ভালবাসায় কোন দৈহিক চাওয়া থাকেনা, থাকে শুধু কিছু নীরব অভিমান আর অফুরন্ত ভালবাসা। আর হে, বন্ধুরা ভালো যাকেই বাসোনা কেন, বিয়ে তার সাথেই হবে যার সাথে সৃষ্টিকর্তা ঠিক করে রেখেছেন। তাই আমার মতে রিলেশনে জড়িয়ে নিজের জীবনটাকে ধ্বংস করা ঠিক না।