ইহাদের মন মগজ বন্ধক দেওয়া। শয়তানের কাছে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনিয়াছেন- শয়তানের সাথে ইহাদের দারুন দোস্তি। এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যায়, কবর পর্যন্ত ইহা স্থায়ী হইয়া থাকে! দুনিয়া উল্টাইয়া গেলেও যাইতে পারে কিন্তু, ইহাদের কখনও ভুলেও মসজিদের দিকে একবার যাইতে দেখিবেন না।
ফতোয়ার বেলায় ইহারা মহা ওস্তাদ। অজু গোসলহীন একেক জন যেন মুফতিয়ে আজম। নামের শ্রী দেখলে তো ভিরমী খাওয়ার উপক্রম। কীসব জিনিষ যে একেকটার নামের আগে পরে লাগাইয়া রাখে! মাঃ জিঃ আঃ, কুঃ ছেঃ আঃ, জমানার মুজাদ্দেদ, সালারে আলা, পীরানে পীর, আউলিয়ায়ে হক্কানী, ওলিয়ে কামেল, রাহনুমায়ে শরীয়ত, হযরতুল মিল্লাত, শাইখুল মাশায়েখ, অলিকুল শিরোমনি, খাজায়ে খাজেগান, দাস্তানে দস্তগীরসহ কত যে বিচিত্র শব্দাবলীর অপূর্ব সমাবেশ ইহারা ইহাদের নামের আগে পরে যুক্ত করিয়া থাকে! ইহাদের দর্শনলাভ মাত্রই আপনি উপলব্ধি করিতে সক্ষম হইবেন, ইহা নিরেট ভন্ড ব্যক্তি!
কুরআন হাদিস ঘাঁটিয়া দ্ব্যর্থবোধক কোন আয়াত কিংবা হাদিস খুঁজিয়া বাহির করিয়া সেইগুলোর ভুল এবং অপব্যাখ্যা করিয়া তাহা সমাজে ছড়াইয়া দিয়া ফিতনা-ফাসাদ-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা এবং এইসবের সমর্থনে নিজেদের পক্ষে মূর্খ-অজ্ঞ-অথর্বদের একটি দল গড়িয়া তোলা ইহাদের প্রাথমিক কাজ। পরবর্তীতে ইহারা ধর্মের নামে চালাকি আর চালবাজির আশ্রয় লইয়া এই 'নির্বোধ ভক্তদের' পকেট কাটিয়া, তাহাদের নিংড়াইয়া, তাহাদের রক্ত চুষিয়া খাইয়া তাহাদেরকে নি:স্ব ফকির বানাইয়া নিজেরা অট্টালিকা আর দালান-কোঠার মালিক বনিয়া যাওয়া ইহাদের দ্বিতীয় এবং আসল কাজ। 'পীর' হওয়ার কারনে ইহাদের নামাজ-রোজা লাগে না। রমজান মাসের দিন- দুপুরেও ইহারা ভক্ত-পোষ্য পরিবেষ্টিত গাঁজার কল্কি হাতে পরিদৃশ্যমান হন!। ইহাদের অনেকেরই সারা জীবনে এক দু'টি সিজদা করার সৌভাগ্য হইয়া ওঠে না! হায় হায়! তবে, ইহাদের দাবি মোতাবেক ইহারা খাঁটি মুসলমান! হায়রে মুসলমানিত্ব! ইহাই কি মুসলমানিত্ব? ইহা কি কোন মুসলমানের কাজ? ইহাকেই কি শয়তানের কাজ বলিতে হয় না?
ইহাদের কাউকে আপনি যদি নামাজ পড়ার জন্য আহবান করেন, ইহারা বলিয়া থাকেন- কোথায় নামাজ পড়িব? কার পেছনে নামাজ পড়িব? সেজদা দিব কোথায়? ইত্যাদি ইত্যাদি। আহ! কী সাংঘাতিক কথা! ভাবিতে পারেন? আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং যে জমিনে সিজদাহ করিলেন, উম্মতকে সিজদাহ করিতে বলিলেন, তামাম পৃথিবীটাকে যিনি স্বয়ং সিজদাহর উপযুক্ত ঘোষনা করিলেন, সেখানে ইহাদের সিজদাহর জন্য উপযুক্ত একখন্ড জায়গা খুঁজিয়া না পাওয়া কোন্ পর্যায়ের ধৃষ্টতা, চিন্তা করিতে পারেন? ইহাদের দৃষ্টিতে পৃথিবীর কাউকেই ইমামতির যোগ্য মনে হয় না! সর্ব্বনাশ! তাহা হইলে তো আসমান হইতে ফেরেশতা নামাইয়া আনিতে হইবে ইহাদের ইমামতির জন্য! আসলে তো ইহারা শয়তানের মুরিদ হেতু সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহকে সিজদাহ করিতে চাহেন না, কিন্তু সরাসরি মুখের উপর তাহা বলিতে না পারিয়া ঘুরাইয়া ফিরাইয়া বলার চেষ্টা আর কি!
ইহাদের পরিচয় জানিয়া রাখা উচিত নয় কি? নিজেদের ঈমান-আমলকে ক্ষতি হইতে বাঁচানোর তাগিদে, ইহাদের খপ্পর হইতে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখিয়া চলা প্রত্যেক সচেতন ব্যক্তির উচিত নয় কি?
বি: দ্র:
প্রিয় বাংলাদেশ পীর আউলিয়ার দেশ। আল্লাহ পাকের অসংখ্য মকবুল বান্দা এ মাটিতে শুইয়া আছেন। এখনও এ পূন্য ভূমি হাজারো লাখো সত্যিকারের পীর-মাশায়েখ আলেম-ওলামার পদচারনায় মুখরিত। আলহামদুলিল্লাহ। সুতরাং, আমার এই কথা হক্কানী আলেম-ওলামা এবং পীর-মাশায়েখদের জন্য নয়। শুধুমাত্র ধোঁকাবাজ, ধর্মব্যবসায়ী মূর্খ গোমরাহ বেশরা ফকির শ্রেনির মুখোশ উম্মোচন করিতে চাহিয়াছি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:১৯