ছবি কৃতজ্ঞতা: ব্লগার অনন্য দায়িত্বশীল আমি -এর 'আসিফা! কোন বিচারই তোর জন্য যথাযথ নয়!!' পোস্টে ব্লগার পদাতিক চৌধুরির মন্তব্য থেকে সংগৃহীত। লিঙ্ক- আসিফা! কোন বিচারই তোর জন্য যথাযথ নয়!!
মোদি নিজেই একজন উগ্রবাদী। বাবরি মসজিদ ধ্বংসে তার সম্পৃক্ততা এবং নিষ্কৃয়তার বিচার আজও হয়নি। তার মত উগ্র সন্ত্রাসবাদীর নেতৃত্বে ভারত গত কয়েক বছরে শুধু অধ:পতনের দিকেই নেমেছে। মানবতা পদদলিত হয়েছে বারবার। নিষ্পেষিত, দলিত-মথিত হয়েছে ক্ষনে ক্ষনে। গরু জবাই করার অপরাধে(!) মানুষ খুন করা হয়েছে। মানুষ বললে ভুল হবে। বলতে হবে, মুসলিমদের হত্যা করা হয়েছে। মন্দিরে আটকে রেখে আট বছরের শিশুকে আট দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষন করে হত্যা করার মত অকল্পনীয় নির্মমতাও প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে ভারতের আকাশ মাটিকে। আট বছরের 'শিশু' কথাটির সাথে অনিচ্ছায় হলেও বলে দিতে হয়, আট বছরের 'মুসলিম' শিশু। এই 'মুসলিম' হওয়াটাই ওদের অপরাধ। মোদির আস্কারার কারনেই উগ্রবাদী, সন্ত্রাসবাদীদের ভারতে আজ পোয়াবারো। সুতরাং, মোদি, আপনি দায় এড়াতে পারেন না। যত চেষ্টাই করুন না কেন, ক্ষমা আপনাকে চাইতেই হবে। আসিফার জন্য আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে। ফেলানীর জন্য আপনাকে মাফ চাইতে হবে। আরও কতজনের জন্য কতবার যে আপনাকে ক্ষমাভিক্ষা করতে হবে, তার ইয়ত্তা নেই।
আট বছরের নিষ্পাপ কচি একটি মুখ। দেখলেই মায়া লাগে। আহ! আট বছরের শিশুকেও ধর্ষিতা হতে হয়? এই জঘন্যতায় যারা লিপ্ত তাদের মানুষ ভাবতেও তো গাঁ শিউরে ওঠে। এদের কী শাস্তি দেয়া যায়? এ বদমাশদের প্রকাশ্য ময়দানে জনসম্মুখে প্রথমে লিঙ্গ কর্তন করে তারপরে শিরোচ্ছেদ করা উচিত। তাহলে যদি আসিফার আত্মা কিছুটা প্রশান্তি পায়। আহহা, কি বলে ফেললাম আবার, শিরোচ্ছেদের কথা শুনে তো আবার একদল সুশীল নামের পাষন্ড তেড়ে আসবেন, যারা আসিফাদের ধর্ষিত থেতলানো, অবশ লজ্জাস্থান আর নিথর দেহ দেখতে বেজায় সুখ। তারা হায় হায় রব তুলে তেড়ে আসবেন, শিরোচ্ছেদ মধ্যযুগীয় বর্বরতা। আরবীয় অন্ধকার। কুপ্রথা। অমানবিকতা। আরও কত কি?
তাহলে বলি, তোমাদের কাছে ধর্ষকের শিরোচ্ছেদ কিংবা প্রস্তরাঘাতে তাদেরকে হত্যা করাকে যদি বর্বরতা বলে গন্য হয়, তাহলে মানবিকতা কোনটি? ধর্ষন? ধর্ষন অব্যহত থাকলেই তোমাদের মতে মানবতা রক্ষা হয়?
জম্মুর বাখরওয়াল মুসলিম উপজাতি সম্প্রদায়ের ছোট্ট কচি সোনামনি আসিফা, তোমার সাথে কথা বলতে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে আসে। জানি, তুমি পৃথিবীর মানব সম্প্রদায়ের হিংস্রতা দেখেছ। রক্তাক্ত, লাঞ্চিত, ধর্ষিত হয়েছ বারবার। ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত হয়েছ, তোমাকে খাদ্য-পানীয় দেয়া হয়নি। তুমি রক্তাক্ত হয়েছ, তোমাকে আবারও রক্তাক্ত করার জন্য একদল জানোয়ার ওঁত পেতে ছিল। এমনকি মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তেও তোমার নিস্তেজ নিথর প্রায় দেহে আবারও তোমাকে সয়ে যেতে হয়েছে রক্তাক্ত হওয়ার তীব্র যাতনা।
আসিফা, ফুল হয়ে ফোটার আগেই তুমি ঝড়ে গেলে। না, তুমি ঝড়ে যাওনি। তোমাকে নির্মমতম বিভীষিকার ভেতর দিয়ে এখানের আলো বাতাসের ভাগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা কিছু করতে পারিনি। আমাদের তাই লজ্জার আবরনে মুখ ঢেকে থাকা ছাড়া কিছু করার নেই। সোনামনি আসিফা, মাতৃক্রোড়ে থাকার বয়স তোমার এখনও পেরিয়ে যায়নি। অথচ এই বয়সেই তুমি পৃথিবীর সকল অন্ধকারকে দেখে ফেলেছ। এ পৃথিবী যে কতটা নির্মম, তা তোমার চেয়ে বেশি ভাল কেউ জানে না। তোমার কাছে ক্ষমা চাওয়াটাও অপরাধ, লজ্জার। ক্ষমা চাচ্ছিও না। তুমি শুধু ভাল থেকো পরপারের স্নিগ্ধ আলোয়। জোনাকি হয়ে জান্নাতের মায়াবি মায়াকাননে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৫:২৪