somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

ইসলামে উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও চরমপন্থার স্থান নেই

২৮ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস: পরিচিতি ও প্রকরন

জঙ্গি ও জঙ্গিবাদ শব্দদয় ইংরেজি Militant, Militancy শব্দদ্বয়ের অনুবাদ। ইদানিংকালে এ শব্দগুলো আমাদের নিকট অতি পরিচিত ও অতি ব্যবহৃত হচ্ছে। এ শব্দগুলো কিছুকাল পূর্বেও এত প্রচলিত ছিল না। আর আভিধানিক বা ব্যবহারিকভাবে এগুলো নিন্দনীয় বা খারাপ অর্থেও ব্যবহৃত হতো না। শাব্দিক বা রূপকভাবে যোদ্ধা, সৈনিক বা যুদ্ধে ব্যবহৃত বস্তু বুঝাতে এ শব্দগুলো ব্যবহৃত হতো। এককালে বৃটিশ ইন্ডিয়ার কমান্ডার ইন চীফকে বলা হতো 'জঙ্গিলাট'। এটা ছিল তার স্বনামধন্য উপাধি।

শক্তিমত্ত বা উগ্র বুঝাতেও এ শব্দ ব্যবহার করা হয়। Oxford Advanced Learner's Dictionary -তে বলা হয়েছে: militant. adj. favouring the use of force or strong pressure to achieve one's aim. ...militant: n. militant person, esp. in politics. ''মিলিট্যান্ট (জঙ্গি): যে ব্যক্তি তার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য শক্তি বা জোরালো প্রভাব ব্যবহার করা সমর্থন করে।...''

Merriam-Wepster's Collegiate Dictionary -বলা হয়েছে: militant 1: engaged in warfare or combat: fighting. 2: aggressively active (as in a cause). ''মিলিট্যান্ট (জঙ্গি): যুদ্ধ বা সম্মুখসমরে লিপ্ত ব্যক্তি, যুদ্ধরত। উগ্রভাবে সক্রিয়।''

সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের হুমকিতে আতঙ্ক বিশ্বময়: শুধু বাংলাদেশে নয়, শুধু এশিয়াতে নয়, শুধু ইউরোপে নয়, জঙ্গিবাদের ঘৃন্য দৃষ্টান্ত আজ চোখে পড়ে খোদ আটলান্টিকের ওপাড়ের সুদূর আমেরিকার বুকেও। চলমান বিশ্বে মিডিয়া ও রাজনৈতিক অঙ্গনজুড়ে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য এবং আতঙ্কের বিষয়। মুসলিম, অমুসলিম নির্বিশেষে সকল ধর্ম-বর্নের মানুষ, রাজনৈতিক মহল, এই সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ ও জঙ্গিবাদীদের নিয়ে শুধু মহাব্যস্ত নন, রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত। কেন এই সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ জন্ম নিলো, কারা এর পেছনে নাটের গুরু, এর প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ব্যবস্থা কী হতে পারে- এ চিন্তায় হিমশিম খাচ্ছে সকল মহল।

জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা হারাম : ইসলামের দৃষ্টিতে জঙ্গিবাদ হারাম। ইসলামের নামে হোক কিংবা অন্য নামে। ইসলামের লেবাস ধারণ করে হোক কিংবা ভিন্ন পোশাকে। কখনো কোথাও অন্যায়ভাবে মানুষের জানমালের ক্ষতি করা হলে, আতঙ্ক ছড়ানো হলে, অন্যায়ভাবে রক্তপাত ঘটানো হলে, এগুলোই উগ্রবাদ, এর নামই জঙ্গিবাদ। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, হোন তিনি মুসলিম কিংবা অমুসলিম, হোন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব কিংবা রাজনৈতিক নেতা নেত্রী, হোন তিনি দেশী কিংবা বিদেশী। ইসলামের নামে-বেনামে অন্যায়ভাবে মানুষ খুন করা, জান-মালের ক্ষতি করা অথবা দেশের সম্পদ নষ্ট করা, এর সবগুলোই হলো জঙ্গিবাদ। কোনো মুসলিম কর্তৃক অন্যায়ভাবে অমুসলিমদের জান-মাল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করা হারাম। এ ধরনের কর্মকান্ডের কোনো সুযোগ নেই ইসলামে। এই ঘৃন্য অপরাধে যারা লিপ্ত হবে, জান্নাত তো দূরের কথা, তারা জান্নাতের সুঘ্রান থেকেও বঞ্চিত থাকবেন। ইসলাম আগমন করে ইসলাম পূর্ব জাহিলিয়াতের সময়কালের সকল সাম্প্রদায়িকতার ক্ষুদ্র মনোভাবের কবর রচনা করেছে। ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সহাবস্থানে বিশ্বাস করে সমাজ-রাষ্ট্র-জনপদে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করে পৃথিবীতে বসবাস করা ইসলামের অমোঘ সৌন্দর্য্য। এই সৌন্দর্য্য ভঙ্গ করা মহাপাপ। এধরনের সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান ইসলামে নেই। ইসলামের নামে এসব করা হারাম এবং কবিরাহ গোনাহ।



জঙ্গিবাদ বিষয়ে বাংলাদেশের আলেম-উলামাদের দৃষ্টিভঙ্গি : আলহামদুলিল্লাহ। বাংলাদেশের সকল মহলের আলেম-উলামা এ উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে হারাম ফতোয়া দিয়ে আসছেন এবং ওয়াজে, বয়ানে, মসজিদে, মাদরাসায়, মাহফিলে ও মিলাদে এর বিরুদ্ধে বলে যাচ্ছেন। কারণ, ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের ইজ্জত-সম্মান ও জান-মালের ওপর আঘাত করা এবং অমুসলিমদের ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ কিংবা প্রতিষ্ঠানের উপর হামলা করা সম্পূর্ণ হারাম, কবিরাহ গোনাহ। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআ'লা কুরআনুল কারীমে এবং আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে বিশদভাবে বলেছেন। রাসূলে মাকবূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিদায় হজ্বের ভাষণেও মুসলিম দেশে বসবাসকারী অমুসলিমদের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রু রক্ষার প্রতি কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারন করেছেন। জঙ্গিবাদের মত মানব বিধ্বংসী, সভ্যতা ও মানবতাকে আঘাতকারী নিকৃষ্টতম বিষয়টিকে নির্মূল করা রাষ্ট্র ও জনগন সকলের উপর আবশ্যকীয় দায়িত্ব। দল ও মত নির্বিশেষে সরকারি দল, বিরোধী দল, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ধর্মীয় নেতা, ইমাম, খতিব ও পীর মাশায়েখ, শিক্ষক-ছাত্র, শ্রমিক-মজুর-কুলি, চাষী-ধোপা, কামার-কুমার থেকে শুরু করে সমস্ত পেশার সকল লোকের উপর অবশ্য পালনীয় ফরজ দায়িত্ব। কারণ আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কোনো অন্যায়কে প্রতিরোধ করার আদেশ দিয়েছেন। নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

‘তোমাদের ভেতরে কেউ যে কোনো অন্যায় দেখে সে যেন তা প্রতিরোধ করে’ (আল হাদিস)।

তো, পৃথিবীতে উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও চরমপন্থার চেয়ে মানবতা বিধ্বংসী বড় অন্যায় আর কী থাকতে পারে? সুতরাং, আমাদের উচিত এ বিষয়ে সচেতনতার সাথে লক্ষ্য রেখে তা প্রতিহতে যথাযোগ্য এবং সম্ভব সকল প্রচেষ্টা প্রয়োগ করা।

সাম্প্রদায়িকতা : ইসলাম সার্বজনীন এবং মানবতাবাদী পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ হওয়ার কারণে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান এতে নেই। ইসলাম আজন্ম সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষণে ইসলামি রাষ্ট্রে অমুসলিমদের জানমালকে মুসলমানদের জানমালের মতো মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ ঘোষণা করেছেন। এ ব্যাপারে ভাষা, বর্ন, গোত্র এবং আঞ্চলিকতার সকল পার্থক্যকে তিনি মুছে দিয়েছেন। তাঁর ঘোষনায়, মানবের মর্যাদার মাপকাঠি বংশে কিংবা কৌলিন্যে নয়; একমাত্র চরিত্রে। কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্র না থাকায় এবং অধিকাংশ মুসলমান ইসলামে অজ্ঞ ও চরিত্রহীন হওয়ায়, কিছু কিছু ধর্মান্ধ অজ্ঞ মুসলিম দেশে দেশে ইসলামবিরোধী কার্যকলাপ সংঘটনের দায় অন্যদের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। একারণে অমুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষপরায়ণ হয়ে সাম্প্রদায়িক অপকর্মে লিপ্ত হয়। এর পেছনেও রয়েছে বহুবিধ কারণ। কিছু কারন এমন হতে পারে :

১। রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের সঠিক আদর্শ ও শিক্ষাকে গনমানুষের সামনে তুলে ধরতে না পারা,
২। ইসলামী শাসন ব্যবস্থার প্রয়োগ না থাকা,
৩। মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে কারও জানমালের ক্ষতি করলে কী ভয়ঙ্কর মহাপাপ হবে, সে সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না থাকা।
৪। দেশের রাজনৈতিক স্বার্থবাদিতা ও ভোগবাদী পরিবেশ মানুষকে ভোগী ও লোভী বানিয়ে দিচ্ছে।
৫। পাশ্চাত্য পন্ডিতদের অধিকাংশের ঢালাও ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাব এবং তাদের সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্রের জাল।
৬। ইসলাম প্রচারের নামে উগ্র ওহাবী মতবাদের প্রচার।
৭। বিশ্বব্যাপী অন্যায়ভাবে মুসলিম নিধন।
৮। অভিশপ্ত দখলদার ইসরাইল, সাম্রাজ্যবাদ এবং তেলের লোভে মত্ত অন্ধ অপশক্তি।
৯। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশগুলোতে ইসলামপন্থীদের দমন পীড়ন।
১০। বেকারত্ব ও হতাশা।

এমনিভাবে জানা অজানা আরও কিছু কারন রয়েছে এর পেছনে। ফলে চরিত্রহীন ও লোভী এই মানুষ নামের একশ্রেনির পশুদের কাজে লাগিয়ে শত্রুরা ইসলামের ক্ষতি করার জন্য অমুসলিমদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। আর ইসলামবিরোধী মহল এবং অমুসলিমগন বাস্তব কারণ বের করার পরিবর্তে তাদের চিরাচরিত স্বভাব অনুযায়ী এসব অপকর্মকে ইসলামি মহলের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক কাজ বলে অষ্টমুখে অপপ্রচার চালায়। ফলে আসল কারণ জানা সম্ভব হয় না প্রায়শই। ফলশ্রুতিতে অপরাধীরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।

বর্তমানে আমাদের দেশের বিদ্যমান অবস্থায় আলেম-উলামা ও ইসলামি দলের লোকেরা, মসজিদে, মাদরাসায়, খানকায়, মাহফিলে মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে যে কারও জানমালের ক্ষতি করা যে কত বড় সাংঘাতিক পাপ এসব কথা আলোচনা করলে, নির্বোধ শ্রেনির সেসব লোক যারা জান্নাতের মিথ্যে আশ্বাসে প্রলুব্ধ হয়ে, স্বার্থান্বেষী মহলের দাবার ঘুঁটি হয়ে যে কারও উপরে হামলে পড়তে দ্বিধাবোধ করে না, যে কাউকে হত্যা করতে ইত:স্ততবোধ করে না, এমনকি আত্মঘাতী হতেও যাদের বুক কাঁপে না; তাদের ভেতরে কিছুটা হলেও সচেতনতাবোধ আশা করা যায়।

স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত বিচার : বিদেশী নাগরিক খুন হয়েছেন, অমুসলিমদের দোকানে-বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে, মন্দির ভাঙচুর হয়েছে, ঠাকুরকে হত্যা করা হয়েছে, দিনে দিনে এই পাপ ফুলে ফেঁপে অনেক বড় হয়েছে। বেড়েই চলেছে। এর নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত বিচার খুবই প্রয়োজন। ঘুষ, দুর্নীতি, পক্ষপাতিত্ব ও প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করার মানসিকতা থাকলে কোনো কিছুরই সুষ্ঠু বিচার আশা করা যায় না। তার নির্মূলও সম্ভব নয়। কর্তাব্যক্তিরা যদি আগেই বলে দেন যে, এ কাজ অমুক পক্ষ করেছে, তাহলে সঠিক তদন্ত কোনো দিন হবে না। কর্তাব্যক্তিকে অপমান আর অসন্তুষ্ট করে সঠিক রিপোর্ট দেবে - সাহস কার? এসব কারণে কোনো অপকর্মই বন্ধ ও নির্মূল করা যাচ্ছে না। বরং দিন দিন নিত্য নতুন অঘটন সংঘটিত হয়েই যাচ্ছে। এর জন্য দায়ী রাজনৈতিক ব্যক্তি আর ধর্মীয় নেতাদের অনৈক্য ও ব্যর্থতা। তাদের দেশপ্রেম বর্জিত ব্যক্তিক কিংবা দলীয় ক্ষুদ্র চিন্তাভাবনা আমাদের সভ্য জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাড়ানো পথে বড় অন্তরায়।



দেশে এত পুলিশ আর্মি, এত আনসার বিজিবি, এত প্রকারের গোয়েন্দা এবং বাহিনী লালন করার পরও যদি মানুষ শান্তি না পায়, অমুসলিমরা নির্যাতিত ও খুন হয়, এর জন্য তারা ইসলাম ও মুসলমানকে দায়ী করতেই পারেন। কারণ, এ দেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। এ কারণেই এসব ঘটনার স্বচ্ছ নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত এবং বিচার হওয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ, ইসলামের শত্রুরা এসব অপকর্ম ইসলামি লোকেরা করছে বলে প্রচারণা চালিয়ে ইসলামের ক্ষতি করতে চায়। ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ এক শ্রেনির বুদ্ধিজীবীদেরও এসব অপপ্রচারণার কাছে মাথা নত করে, ঘটনার গভীরে না তলিয়ে অপপ্রচারকেই গ্রহন করে এসব অপকর্ম ইসলামপন্থীরা করাচ্ছে মনে করে বাগাড়ম্বর করতে দেখা যায়।

জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা সম্পর্কে ইসলাম কী বলে : আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন,

مَن قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا

'‘যারা খুন অথবা ফ্যাসাদ সৃষ্টির কারণ ছাড়া কোনো মানুষকে (সে যে ধর্মের লোকই হোক) অন্যায়ভাবে খুন করে, তারা যেন পুরো মানবজাতিকেই হত্যা করল। আর যেকোনো মানুষের (সে যে ধর্মের লোকই হোক) জীবন রক্ষা করল, সে সারা মানবজাতিকেই রক্ষা করল।'' আল কুরআন, সূরাহ আল মা-য়িদাহ, আয়াত-৩৪

অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ

''তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের (সে যে ধর্মের লোকই হোক) কল্যাণ করার জন্য।'' আল কুরআন, সূরাহ আ-লে ইমরান, আয়াত-১১০

রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

‘কোনো মুসলমান যদি কোনো অমুসলিমকে অতিরিক্ত কাজ দেয়, তাকে ঠিকভাবে তার পাওনা না দেয় এবং কষ্ট দেয়, আমি রাসূল ওই মুসলমানের বিরুদ্ধে অমুসলিমের পক্ষে গিয়ে আল্লাহর দরবারে বিচার দেবো’ (আল হাদিস)।

অপর হাদিসে তিনি বলেন, ‘যে মানুষের (সে যে ধর্মের লোকই হোক) উপকার করে, সেই ভালো মানুষ (আল হাদিস)।’

মদিনা সনদে অমুসলিদের ইসলামি রাষ্ট্রে পূর্ণ ধর্মীয় ও নাগরিক অধিকার দেয়া হয়েছে। কুরআন ও হাদিসে মানুষ খুন ও অমুসলিমদের কষ্ট দেয়ার ব্যাপারে এবং তাদের অধিকার সম্পর্কে এ রকম বিধান থাকায়, সব ইমাম, আলেম, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরোধী হওয়ার পরও যারা ইসলাম, আলেম-উলামা, ইসলামি দল ও মুসলমানদের পাইকারিভাবে জঙ্গিবাদী ও সাম্প্রদায়িক বানাতে চায়, তারা আসলেই ইসলাম, মুসলমান ও দেশের শত্রু। তারা নিশ্চয়ই মানবতার শত্রু। তারা মানব নামের কলঙ্ক।

ধর্মের নামে, ধর্মের লেবাস পড়ে, ধর্মকে কলুষিত করার হীনমানসে যেসব দুর্বৃত্ত মানবতার গায়ে কলঙ্ক লেপনের অপচেষ্টা চালায় তাদের প্রতিহত করা সময়ের দাবি। মানবতা রক্ষায় মানব সদৃশ এসব দানব অমানুষদের কূটচাল থেকে সকল দেশের সকল জাতির সমগ্র মানুষকে রক্ষা করুন আল্লাহ পাক।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:১২
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×