somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

আজও কার্তিকের নবান্ন খুঁজি

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শীতের পরশ
প্রকৃতিতে ঠান্ড হাওয়ায় শীতের পরশ। আশ্বিনী বৃষ্টির পর শীতের আভাস নিয়ে এল হেমন্ত। এল নবান্নের ঋতু। আজ কার্তিকের ১৪ তারিখ। কার্তিক-অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ-মাঘকে শীতকাল ধরা হলেও এই কার্তিকের হেমন্তেই শীত অনুভূত হওয়া শুরু করে। শীত শীত ভাব, শীতলতার আমেজ, সকাল সাঁঝে হালকা কুয়াশার বিচরন শীতের আগমন বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রগাঢ় আচ্ছন্নতায়।

আজও কার্তিকের নবান্ন খুঁজি
ছয় ঋতুর দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। ষড়ঋতুর চতুর্থ ঋতু হেমন্ত। কার্তিক এবং অগ্রহায়ন এ দু'মাস হেমন্তকাল। শরৎকালের পর এই ঋতুর আগমন। হেমন্ত বিদায় নেয়ার পরে আগমন ঘটে শীতের, তাই হেমন্তকে অভিহিত করা হয় শীতের পূর্বাভাস হিসেবে। সার্বজনীন গ্রাম বাংলার আবহমান কালের লৌকিক উৎসব ‘নবান্ন’ তো এসে থাকে হেমন্তের এই ‘মরা’ কার্তিকেরই পরে। 'এসে থাকে' বলছি যদিও। আসলে বলা উচিত ছিল 'আসতো'। কারন, এখন কি আর সেই নবান্নের আনন্দ আয়োজন পল্লী বাংলার ঘরে ঘরে দেখা যায়? নতুন ধানের নতুন চালের ভাতের মৌ মৌ গন্ধে এখন কি আর হৃদয় মন বিমোহিত হয়? উতসবের আমেজে মুখর হয়ে ওঠে উঠোন কোনের 'ওশ্বার' কিনার?

একসময় বাংলায় বছর শুরু হতো হেমন্ত দিয়ে। কারণ, ধান উৎপাদনের ঋতু হলো এই হেমন্ত। বর্ষার শেষ দিকে বোনা আমন-আউশ শরতে বেড়ে ওঠে। আর হেমন্তের প্রথম মাস কার্তিকে ধান পরিপক্ক হয়। হেমন্তে ফসল কাটাকে কেন্দ্র করেই নবান্ন উৎসবের সূচনা হয়।

ঐতিহ্য অনুসন্ধানে
নবান্নে নানা ধরনের দেশীয় নৃত্য, গান, বাজনাসহ আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। লাঠিখেলা, বাউল গান, নাগরদোলা, বাঁশি, শখের চুড়ি, খৈ, মোয়ার পসরা নিয়ে বসে গ্রাম্য মেলা। যদিও আজকাল এসব ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আজও গ্রামে গঞ্জে মেলা কোথাও কোথাও বসতে দেখা গেলেও তা নিছক 'লাকি কূপন' বিক্রির মাধ্যমে মানুষের পকেট কেটে নেয়ার জন্য স্রেফ জুয়া খেলা আর ধান্দাবাজি এবং পাশাপাশি অশ্লীলতার প্রসার ঘটানোর অপচেষ্টা ব্যতিত অন্য কিছু বলে প্রতীয়মান হয় না।



পাতা ঝরার দিন
হেমন্ত ঋতুর দৃশ্যচিত্র এ রকম- সারা দিন ধরে হিম মাখানো হালকা হাওয়ায় ঝরঝর করে ঝরে পড়ছে কোটি কোটি গাছের পাতা। হেমন্ত প্রকৃতির বিচিত্র রঙে রঙিন হয়ে ওঠার যেন বিদায় উৎসব। সোনাঝরা রোদ্দুরেও শোকার্ত মানবীর মতো বাতাসের আন্দোলন ঘিরে অবিরাম শব্দ উঠছে বুকফাটা হাহাকারে। সে শোক ছড়িয়ে পড়ছে হাওয়ায়-হাওয়ায়। সে শোক ছড়িয়ে যাচ্ছে ঝরা পাতায়। কেন এ শোক? কিসের এ শোকাবহ আবহের ঘনঘটা? হেমন্তের বিদায়ের বেদনা? হেমন্তকে হারানোর ব্যথা ছায়া?

মধ্য কার্তিকে এসেও রাজধানীসহ বাংলাদেশের অনেক এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে গত দু'দিন। দিনভর গরমের পর ভোরের হালকা ঠান্ডা হাওয়া টের পাচ্ছেন নগরবাসীও, তাই সকালের রোদ অনেকের কাছেই হয়ে উঠেছে ভিন্ন স্বাদের, অন্যরকম আনন্দের।

একটু শীতের জন্য মুখিয়ে থাকি
একটু শীতের পরশ পেতে মুখিয়ে থাকি। শীত আসি আসি করেও আসে না। এসেছে, তবে পুরোপুরি নয়। হালকা শীতের আমেজ। ফুরফুরে হিম বাতাস শরীর মনে দোলা দিয়ে যায়। অনাবিল আনন্দের ছোঁয়ায় যেন আলতো শীতের পরশ প্রকৃতিতে।

শীত; কারও কষ্টের কারন হয়ে যেন না আসে
প্রতি বছর শীতের কষ্টে প্রয়োজনীয় বস্ত্রের অভাবে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের কান্নার শব্দ শোনা যায় আমাদের এই জনপদে। দু'মুঠো খাবার সংগ্রহ করা যেখানে অনেকের পক্ষে দায়, সেখানে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে গরম মোটা কাপড় তারা কোথায় পাবে? একটিমাত্র সোয়েটার দিয়ে বছরের পর বছর শীতের কবল থেকে বাঁচার চেষ্টা দেখেছি আমি। গরম কাপড়ের অভাব পূরনে গ্রামের মানুষদের 'মাটির তাওয়ায়' আগুন জ্বালিয়ে ঘর উত্তপ্ত করে রাখার প্রচেষ্টা করতে দেখেছি।

প্রচন্ড শীত! আসুন, একটু 'ওম' দিই, সাহায্যের হাতটা একটু বাড়িয়ে দিই
আমার ঘরের তাকের উপরে সাজানো এতগুলো কম্বল! দেখে চক্ষু চড়কগাছ! এত্ত এত্ত দামি! হায় হায়! লাহোরী, পাকিস্তানি, তার্কি দামি দামি ব্লাঙ্কেট! পশমি! নয়ন জুড়ানো! রয়েছে জোড়ায় জোড়ায় লেপ তোষক! সব তুলে রাখা হয়েছে! কয়টা আর গায়ে দেয়া যায়! অথচ পাশের জড়াজীর্ন ঘরের প্রতিবেশির শীত থেকে আত্মরক্ষার জন্য একটিও কম্বল নেই! তার আদরের বাচ্চাটিকে তিনি তো পশমের এমন সুন্দর দামি গরম কাপড় কিনে দিতে পারেননি। আমি কি একটিবারও তাকিয়েছি তার দিকে? একটিবার ভেবে দেখার চেষ্টা করি তাদের কষ্টের কথা? আমার কি উচিত ছিল না, তাদের সাথে সুখ দু:খগুলো মুঠি মুঠি ভাগ করে নেয়া? তাই আসুন, বেশি নয়, অনেক অনেক শীতার্ত মানুষকে সাহায্য করার প্রয়োজন নেই। আমরা শীতের আগমনের প্রারম্ভে সংকল্প করি, আমি আমার প্রতিবেশি একটি পরিবারের প্রতি দয়ার হাত বাড়িয়ে দিই। এবছরের শীতের প্রাক্কালে আমার পাশের পরিবারটিকে একটি কম্বল দিয়ে, একটি মোটা কাপড় দিয়ে, একটি সোয়েটার দিয়ে সাহায্য করি। প্রত্যেকে প্রত্যেকের দায়িত্ব নিলে, এমনটা করা গেলে সারা দেশের প্রতিটি মানুষ শীতের প্রকোপ থেকে বেঁচে যেতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।

ছবি কৃতজ্ঞতা: গুগল, ইউটিউব

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৮:৫৬
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×