somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যারা ফ্লাট এবং জমিতে বিনিয়োগ করছেন তাদের জন্য কিছু সতর্কতামূলক পূর্বাভাষ : ২০৫০ পর্যন্ত বিশ্লেষণ

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সবাই জানেন অ্যাপার্টমেন্ট ব্যবসা আর ল্যান্ড ব্যবসা মোটামুটি ভেঙে পড়েছে। আসলেই তা। এই ব্যবসা যে কারণে আর জেগে উঠবে না, তার কয়েকটি তথ্য দিচ্ছি যাতে বিনিয়োগকারীরা একটু সতর্ক হতে পারেন :
১. প্রথমত রিয়েল অ্যাস্টেট ব্যবসায়ীরা ৫০ বছরে যে ব্যবসা করার কথা তারা তা ২০ বছরেই করে ফেলেছেন। গ্যাস ক্ষেত্র থেকে অতিরিক্ত গ্যাস তুললে যে অবস্থা হয়, এক্ষেত্রে তাই হয়েছে। ডিমান্ডের কোন হিসাবই এরা করেননি।
২. ২০৩০ এর পরে ঢাকায় নতুন ফ্লাট বিক্রি শূন্যের কোঠায় নামবে। যারা বিক্রি করার জন্য কিনছেন, তাদের না কেনায়ই ভালো। ঢাকায় যে পরিমাণ ফ্লাট বিক্রি হয়েছে তা দিয়ে ২০৫০ সাল পর্যন্ত চলবে। (আরেকটু পরিষ্কার হওয়ার জন্য পয়েন্ট.৫ পড়ুন)
৩. ল্যান্ড এবং ফ্লাটে বিনিয়োগ অবশ্যই ভুল বিনিয়োগ। 'নিজের একটা ফ্লাট/বাড়ি' এই স্লোগান ঢুকিয়ে মধ্যবিত্তকে বোকা বানিয়ে ফ্লাট কেনার জন্য দৌড়ানো হয়েছে। ঘুষ আর লোনের টাকা দিয়ে যারা কিনেছেন, তাদের একটা অংশ ফ্লাটের বিনিময়ে ঘুম হারাম করেছেন। লোনের কিস্তি দিতে গিয়ে স্ট্রোকের সংখ্যা বাড়ছেই! ব্যাংক আর রিয়েল অ্যাস্টেট ব্যবসায়ীরা লোভ দেখিয়ে হাজার হাজার ক্রেতাকে বোকা বানিয়ে এখন তাদের ঘুম হারাম করে দিয়েছেন, ঘুষের রেইট বাড়িয়ে দিয়েছেন। নাগরিকরা সম্ভবত এ ধরনের ভুল লোভ থেকে বা শস্তা স্লোগানের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে শিখেছেন।
৪. এখন যাদের বয়স ২৫-৩০, তাদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার একটা দারুণ ট্রেন্ড শুরু হয়েছে - সেটা খুবই শুভ লক্ষণ। একই সাথে যাদের বয়স ৪০-৪৫ গত ১৫ বছর ভালো বেতন পেয়েছেন, তারাও কেউ কেউ চাকুরি ছেড়ে আবার কেউ কেউ পাশাপাশি উদ্যোক্তা হচ্ছেন। মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার যে হাওয়া লেগেছে তার পূর্ণ সুযোগ নিতে তরুণ পেশাজীবীরা প্রস্তুত এবং তারা দৌড় শুরু করে দিয়েছেন। এই জেনারেশান, ল্যান্ড আর ফ্লাটে বিনিয়োগ করবে না - ভেরি ক্লিয়ার। সেটা ২০২৫ থেকে পুরোপুরি পরিষ্কার দেখা যাবে।
৫. পুরনো ফ্লাট আর ল্যান্ড বিক্রির আগ্রহী বিক্রেতা বেড়ে গেছে। একটা অংশ দেশ ছেড়ে চলে গেছে, আরেকটা বড় অংশ যাবে। ঘটিবাটি বিক্রি করে প্রচুর লোক বাংলাদেশি পাসপোর্ট ত্যাগ করে অন্য দেশে চলে যাচ্ছে এবং যাবে। নতুনের চেয়ে আগামীতে পুরনো ফ্লাটের বিক্রেতা বাড়বে কিন্তু বাড়বে না ক্রেতা। ফ্লাট এবং ল্যান্ডের জন্য আগামীতে আরো দুঃসংবাদই আসবে।
৬. একটি ভয়াবহ ভুল তথ্য দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, জনসংখ্যা ২০৫০ সালে ৩২ কোটি হবে। এটা পুরাই ভুয়া ফালতু হিসাব। লক্ষ লক্ষ পরিবারে এখন দু সন্তান বা এক সন্তান। এই একটা অংশ আবার যাচ্ছে বিদেশে। খেয়াল করে দেখবেন, দেশে এস এস সি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে না! ২০২৫ এর পরে এটা কমবে! নিশ্চিত থাকুন।
এখনি ১ কোটি লোক বিদেশে আছে এবং তারা অনেকেই অবিবাহিত, তরুণ আর যারা বিবাহিত সঙ্গত কারণেই তার সন্তান সংখ্যা কম। ২০৫০ সাল নাগাদ আরো ৩-৪ কোটি যাবেন। পয়দা হবে কম এবং বেশ কম!
৭. আসছে পদ্মা সেতুর ধাক্কা! এটি ঢাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে দারুণ স্লো করে দিবে। পদ্মা নদীর দুই তীর ঘিরে হংকং এর আদলে শহরায়ন হবে, গার্মেন্টস অনেক চলে যাবে মুন্সিগঞ্জ আর শরীয়তপুরে। ঢাকার জনপ্রবাহ অনেক ঠেকাবে এই পদ্মাসেতু। গাজিপুর, ময়মনসিংহের মতো হবে এই দুই জেলা।
৮. ২০২১ থেকে দুর্নীতি কমা শুরু হবে যদি সরকারের " অল থ্রু অনলাইন " পরিকল্পনা ২০২১ এর মধ্যে শেষ হয়। সেক্ষেত্রে ল্যান্ড এবং ফ্লাটের ব্যবসায়ে আরো ধ্বস নামবে।
৯. তরুণরা দৌড়াচ্ছে, মানুষদের গতি আর বাড়বে - গতি বাড়লে সেক্স ট্রেড বাড়ে কিন্তু জনসংখ্যা কমে। ২০৫০ নয়, ২০৩০ এই জনসংখ্যা স্থির হয়ে যেতে পারে। আগামী ১৬ বছরে অন্তত দেড় কোটি লোক বিদেশের শ্রম বাজারে যাবে যার অধিকাংশ তরুণ তরুণী। খারাপ ভালো জানি না, তবে নারী শ্রমিকদের বিদেশে যাওয়ার গতি বাড়ছে এবং তা হয়তো এক দশক পরে জাম্প করবে যদি না সরকার গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে নারী শ্রমিকদের বাহিরে যাওয়া বন্ধ না করে দেয়।

এই ৯টি কারণ ছাড়াও আছে আরো কিছু কারণ। আপাতত এই ৯টি যথেষ্ট আপনি ফ্লাটে বা জমিতে বিনিয়োগ করবেন কি করবেন না!

ভালো থাকুন সবাই।
২৩টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×