somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২০০৯ থেকে ২০১৫ –বাংলাদেশের দুঃসাহসী অভিযাত্রা

২৮ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সময়ে সরকার যখন ভিক্ষুকমুক্ত করার বিভিন্ন প্রকল্প নিতো তখন আমি খুব মজা পেতাম। কারণ ওই ভিক্ষুকমুক্ত করার যে অর্থ তা আবার অন্য দেশ থেকে ভিক্ষা করে আনা হতো। পরনির্ভরতার সেই দুঃসময় যেন কেটে যাচ্ছে আমাদের।
পদ্মাসেতুর টাকার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে এই বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক ১টা টাকা না দিয়েই ঘুরালো তিন বছর। সময় নষ্ট করে খরচ বাড়িয়ে দিলো অনেক বেশি। অর্থমন্ত্রীর ভাষায় বিশ্বব্যাংক নিজেই যখন দুর্নীতিগ্রস্ত তখন টাকা না দিয়ে দুর্নীতির প্রসঙ্গ আনা পদ্মা সেতুকে পিছিয়ে দেয়ার নামান্তর। বিশ্বব্যাংকের এমন কোন প্রকল্প কি আছে যেখানে দুর্নীতি নেই?
যেদিন থেকে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিলো নিজের টাকায় পদ্মা সেতু বানাবে এবং বিশ্বব্যাংকে কড়া ভাষায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলো ,বাংলাদেশ সেদিন থেকে উন্নয়নের 3G লেভেলে যাত্রা শুরু করেছে।
যখন দালালরা বললো , সরকারের সিদ্ধান্ত হাস্যকর, তখনোও কেউ চিন্তাও করেনি পদ্মা সেতুতেই থেমে নেই বাংলাদেশ, ৩৬০০০ কোটি টাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বানানোর ঝুঁকি নিতে পারে। কেউ চিন্তাও করেনি বাংলাদেশে এলিভেটর এক্সপ্রেসের কাজ শুরু হবে,ঢাকার এয়ারপোর্ট রোডে অসাধারণ সব ফ্লাইওভার হবে নিজের টাকায়, নিজের পরিকল্পনায়।
সরকার দ্রুততম সময়ে হাজার সমালোচনা সত্ত্বেও নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন তিনগুণ করে ফেলেছে। ২০০৯ এ মোবাইল ব্যবহারকারী ছিলো ৫.৫ কোটি এখন ১৩ কোটি। কিন্তু সে সব ছাড়িয়ে যে ঘটনাগুলো বাংলাদেশের উন্নয়নের বুনিয়াদ গড়ে তুলছে, বাংলাদেশের অনেকগুলি সাহসী সিদ্ধান্ত। যেমন -
ঘটনা - ২০০৯:
কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলাদেশ বিরোধী কার্যক্রমের জন্য দুটো এনিজওর নিবন্ধন বাতিল করেছিলো প্রধানমন্ত্রীর আওতাধীন এনজিও অ্যাফেয়ার্স, কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিব্ন্ধন ফিরিয়ে দিতে হয়েছিলো।
ঘটনা ২০১৫:
সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ডেকে সেখানে তাদের ৩.৮ মিলিয়ন ইউরোর অর্থায়ন বন্ধ করতে বলেছে এবং একটি এনজিওর কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছ – যা করার মতো শক্তি বাংলাদেশের ২০০৯ এও ছিলো না।
এবং সরকার কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প’ কক্সবাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার।
যারা এ বিষয়ে জানেন , তারা ভালো করেই বুঝেন যে, এটি কত বড় সাহসী ঘটনা। এবং কতবড় ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ২৪ বছন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ভূখণ্ডে জায়গা দিয়ে বাংলাদেশ কী পেয়েছে ? পুরো কক্সবাজারের মূল ব্যবসা রোহিঙ্গারা নিয়ে নিয়েছে, ইয়াবা দিয়ে পুরো দেশ ধ্বংস করছে, মানব পাচারের হাজার কোটি টাকার অবৈধ ব্যবসা গড়ে তুলেছে, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সারা বিশ্বে বিভান্ন স্থানে মারামারি করে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে।

এসব থেকে বাংলাদেশ যেন গা ঝাড়া দিয়ে উঠছে, তার যা করা উচিত, সেগুলো করার সাহসী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে একের পর এক। জনগণের মাঝে এই সাহসের ঢেউ লাগবেই। একটু একটু লাগছেও। তখন যারা অন্যের পা চেটে অভ্যস্ত তারাও সাহস ফিরে পাবে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সেই দেশকে স্বাধীনতার পর ভিক্ষুকের মতো গত চার দশক ঘুরতে হয়েছে, দেশের বড় বড় সম্পদ অন্যদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়েছে, যখন তখন ধমক খেয়েছে, অভ্যন্তরিন বিষয়ে যে যখন ইচ্ছে, সে তখন ধমক দিয়েছে।

ধমকাধমকির দিন শেষ, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যে সাহসী যাত্রা শুরু করেছে , সে সাহস ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে, নাগরিকদের হৃদয় থেকে হৃদয়ে। কোন নাগরিককেই যেন কারো পা চেটে, মাথা নত করে বাঁচতে না হয়।

সাহসকে কোন অর্থনৈতিক সূচক দিয়ে মাপা যাবে না। কিন্তু সাহসই অর্থনীতির প্রতিটি সূচককেই পাল্টে দেয়। প্রতিটি নাগরিকের রক্তে রক্তে সে সাহস সঞ্চারিত হোক।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×