somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাঙা একটি পাত্র এর কর্ম। (উপদেশমূলক গল্প)

২৪ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক কাল আগের কথা।
একজন দরিদ্র লোক একটি দুর্গম
পাহাড়ী এলাকায়
পানি বহনের কাজ করত।
তার দুইটি পাত্র ছিল, একটি লাঠির
দুই
প্রান্তে পাত্র
দুটি ঝুলিয়ে কাঁধে নিয়ে সে পানি বহন
করত।
রোজ অনেকটা পথ
তাকে হেঁটে পাড়ি দিতে হত।
দুটি পাত্রের একটি কিছুটা ভাঙ্গা,
আরেকটি ত্রুটিহীন।
পানি নিয়ে যেতে যেতে ভাঙ্গা পাত্রটি প্রায়
অর্ধেক
খালি হয়ে যেত। অপর
দিকে ত্রুটিহীন
পাত্রটি প্রতিদিন
সুন্দরভাবে কানায় কানায়
ভরে পানি পৌছেদিত।
এভাবে দরিদ্র লোকটি রোজ তার
মনিবের
বাড়িতে এক পাত্র আর অর্ধেক
অর্থাৎ দেড় পাত্র
পানি পৌছে দিত।
স্বাভাবিক ভাবেই,
ভালো পাত্রটি তার এ কাজের
জন্য খুব গর্বিত ও আনন্দিত থাকত।
অপরদিকে ভাঙ্গা পাত্রটির মন খুব
খারাপ থাকত।
সে খুব লজ্জিত আর বিমর্ষ থাকত।
কেননা তাকে যেকাজের জন্য
বানানো হয়েছিল সে তার
সেই কাজ
পুরোপুরিভাবে করতে পারছিল না ।
ত্রুটিপুর্ণ পাত্রটি এভাবে অনেক
দিন পানি বহনের
কাজ করার পর একদিন আর
সইতে না পেরে লোকটির
কাছে তার ব্যর্থতার জন্য
ক্ষমা চাইলো।
সে বলে উঠলো,
“আমি আমাকে নিয়ে লজ্জিত ও
হতাশ,আমি তোমার
কাছে ক্ষমা চাই”।
দরিদ্র
লোকটি জানতে চাইলো “কেন
তুমি লজ্জা পাচ্ছো” ?
“তুমি কত কষ্ট করে রোজ
আমাকে বয়ে নিয়ে যাও,
নদী থেকে আমাকে পানি দিয়ে পূর্ণ
করেনাও, অথচ
আমি তোমার মনিবের
কাছে যেতে যেতে অর্ধেক
পানি ফেলে দিই, আমার এক
পাশে ফাটল, ঐ ফাটল
দিয়ে অর্ধেক
পানি ঝরে পরে যায়”। লোকটি তার
পাত্রটির প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন
করলো,
বলল,“মনখারাপ করো না।
হয়তো এরমাঝেও ভাল
কিছু আছে যা তুমি এখন
বুঝতে পারছো না”।
ভাঙ্গা পাত্রটি তবু তার অপরাধ
বোধ আর
লজ্জা থেকে মুক্তি পেল না যদিও
স্বান্তনার
বাণী শুনে কিছুটা শান্তি পেল। মন
খারাপ
করে সে প্রতিদিনের মতো আজকেও
লোকটির
কাঁধে চড়ে পানি বয়ে নিয়ে যেতে লাগলো,
আর পথ
চলতে চলতে ফাটল
দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে পানি পরতে লাগলো,
কান্নার
সাথে মিলে মিশে এক
হয়ে ঝরতে লাগলো।
পাত্রটি পথে যেতে যেতে আশেপাশে দেখতে লাগলো,
সবাই কত ভালো আছে সুখে আছে,
কি চমৎকার
রৌদ্রজ্জ্বলসকাল, পাহাড়ি পথের
পাশে নাম
না জানা কত শত ফুল ফুটে রয়েছে।
সকালের রোদে,
মন ভোলানো কোমল হাওয়ায়
তারা হেলছে, দুলছে,
খেলছে।
“অথচ আমার মাঝে এত কষ্ট কেন” ।
পাত্রটি ভাবতে ভাবতে রোজকার
মত
আজওধনী লোকটির
বাড়িতে অর্ধেক
পানি পৌছে দিল।
ফিরতি পথে আবারও তারব্যর্থতার
জন্য দরিদ্র
লোকটির কাছে সে ক্ষমা চাইলো।
তার মন খারাপ
দেখে লোকটি একটু থেমে পথের
পাশে ফুটে থাকা কিছু
পাহাড়ি ফুল ছিঁড়ে এনে দিল
তাকে।
“দুঃখ করো না। আমি আগে থেকেই
তোমার এ ত্রুটির
কথা জানতাম,তাই যাবার
বেলা প্রতিদিন
তোমাকে আমার কাঁধের একই
দিকে বয়ে নিয়ে যেতাম।
আর যেতে যেতে তুমি তোমার
ফাটল
দিয়ে পানি ঝরিয়ে ঝরিয়ে যেতে,
কখনো কাঁদতেও।
এভাবে পথের এক
পাশে তুমি প্রতিদিন
পানি দিতে,দেখো পথের ঐ
দিকে চেয়ে ! কত শত
সুন্দর ফুল ফুটে রয়েছে ! তুমিই
তো তাদেরকে পানি দিয়েছো,
অথচ পথের অপর
পাশে চেয়ে দেখো! ধূলো পাথর
ছাড়া কিচ্ছু নেই,
কোনো ফুলও ফোটেনি”।.
আমরা আমাদের ছোট ছোট সৎকর্ম।
দ্বারা পৃথিবীকে সুন্দর
করতে পারি ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×