অনেকদিন আগে এ টি এন বাংলা চ্যানেলে টো টো কোম্পানি নাটকের এড দেখে লিখতে মন চেয়েছিলও কিন্তু লিখি লিখি করে লেখা হয়ে উঠেনি বলেই আজ লেখা শুরু করলাম ---- টো টো কোম্পানি নামে লেখাটি -----। আমরা কয় বন্ধু ছিলাম খুব কাছের , কলেজে যেতাম একসাথেই আর চলা ফেরাও করতাম একসাথেই আবার ফিরতাম একসাথেই তবে আমরা পড়াশুনায় খুব একটা ভালো ছিলাম না যাকে বলে বা আমরা বলতাম চলেবল এই আর কি , আমরা যখন ছুটির দিন পেতাম সেদিন আমরা গ্রামের ছোট একটি নিদিষ্ট বাজারের এক জায়গায় জড়ও হতাম । সেখানে বসে নানা গল্প শুরু করে দিতাম যে গল্পের ছিলোনা কোনও আগা মাথা আবার কখনো কেউ বলতো পঢ়া ছেড়ে চাকুরী করবো কারন কোনও কোনও বন্ধুর পারিবারিক অবস্থা ভালো ছিলও না তাই বাবার আর্থিক অবস্থা বুঝেই বাপের বড় ছেলে হিসাবে ছিলও তার দায়িত্ব তাই তারা বলতো চাকুরী করবো । এ কথার আবার অনেক কারণও ছিলও তাহলো আমরা খুব একটা পড়াশুনায় মনোযোগী ছিলাম না বলে পঢ়ার প্রতি ছিলও অনীহা আবার ইতিমধ্যেই আমরা ইঁচড়েপাকাও হয়ে গেছি তবে রাজনীতির মাঝে খুব একটা থাকতাম না তবে তাদের কাছাকাছি থাকতাম অনেক সময় । এরই মধ্যে আমি অন্যত্র পঢ়ার জন্য চলে গেলাম আর সেই বন্ধুগুলি থেকে গেলো নিজের অবস্থানে আর মাঝে আমি যখন বাড়ী আসতাম তখন ওদের সাথে আবার একত্র হয়ে যেতাম এবং সারাদিন চলতো আজেবাজে কথার আড্ডা পরে আমরা ধরলাম তাস খেলা যে খেলায় সময় যে কখন চলে যেতো নেই ঠিক ঠিকানা । ইতিমধ্যেই আমার এক বন্ধু পঢ়া শুনা বাদ দিয়ে ফেলেছে আর এক বন্ধু বিয়ে করে ফেলেছে পার্শের গ্রামেই , শ্বশুর মশাই মোটামুটি প্রভাবশালী । এখানে একটি গল্প বলে যাই তাহলো আমার ঐ বিয়ে করার বন্ধুটির বিয়ের কার্ডে তার শ্বশুর মশাই লিখেছিলেন বন্ধুটির পরিচয় তাতে ঐ বন্ধুটির শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে লিখতে গিয়ে যা লিখেছিলেন কিন্তু বন্ধুটি আমার সেই সময়ে সেই লেখাপড়া শেষই করেনি তাই নিয়ে আমরা এখনো হাসাহাসি করি কোনও কোনও সময় । যাকগে সে কথা , এর মধ্যে আমার যে বন্ধুটি পড়াশুনা বাদ দিয়ে গ্রামেই রয়েছে তার সাথে ছিলও আবার ঘনিষ্ঠতোতা বেশী বলতে গেলে ২৪ ঘনটাই বাড়ী থাকলে তার সাথে সাথেই তাই ওদের বাড়ী যাওয়া হতো বেশী বেশী আর ওর আব্বা ছিলও খুব রসিক মানুষ এবং সহজ / সরল । তাই যখন ওর আব্বার সাথে দেখা হতো তখন তিনি বলতেন আমাকে , যে আরে বাবা আমার ছেলে যে বিয়েও করেনা সংসার ধর্মও করে না কোনও কাজও করেনা কর্মও করে না ও যে ভবঘুরে হয়ে গেলো ও দিন রাত শুধু টো টো করে কোথায় কোথায় ঘুরে বেঢ়ায় তার নেই কোনও হিসাব । আবার কখন বাড়ী আসে তাও কোনও দিন বুঝতে পারিনি এমনকি খাওয়া / দাওয়ারও কোনও টাইম টেবিল নেই তাই বাবা ওকে একটা কিছু করতে বলও নইলে যে ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছি । তাই বন্ধুটি আমায় বলতো যে বেকার / ভবঘুরে জীবন আর ভালো লাগেনা কি করি কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা তাই সারাদিন তাস খেলে সময় কাটাই । আমরা আবার কখনো কখনো চলে যেতাম যাত্রা দেখতে , কখনো পাখী শিকারে পদ্মা নদীর তীরে কখনো যেতাম এই গ্রাম থেকে ঐ গ্রাম আবার মাঝে মাঝে ঐ বন্ধুটি গ্রামে নাটক করতো এবং হতো নায়ক , তার মানে আমি নায়ক হবো । তাই সে আবার আমাদের এখানে একজন সিনেমা নির্মাতা পরিচালকের বাড়ী ছিলও তার সাথে মাঝে মাঝে দেখা করতো সিনেমায় নায়ক হবার জন্য , আবার খুঁজতও চাকুরী কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও হয়নি এতদিনে একটা চাকুরী । আমার ঐ বন্ধুটি আবার মাঝে মাঝে যেতো হস্তরেখাবিদের কাছে ভাগ্যের কোনও পরিবর্তন হয় কিনা । আমরা আবার রাতে যেতাম আখের রস খেতে আখ ভাঙ্গানো কলে তারপর যেতাম খেজুরের রস খেতে খেজুর গাছ তলায় আবার যেতাম ভরা নদীতে জ্যোৎস্না রাতে নৌকায় পিকনিক করতে । কখনো গহিন রাতে বাড়ী ফিরতাম আমরা দুজনে অন্ধকার রাস্তায় তখন বড় বড় গাছ তলায় ভুতের ভয় করতো আবার বৃষ্টির দিনে কাদাযুক্ত গ্রামের পিচ্ছিল রাস্তায় কখনো স্লিপ খেতাম । বন্ধুটি কখনো অনেক রাতে আমাকে আমার বাড়ী এগিয়ে দিতে এসে থেকে যেতো প্রায়শই । আমাদের বাড়ীতে আমরা থাকতাম এক বিছানায় একজনের খাবার দুজনে খেয়ে নিতাম কখনো কখনো । তাই আমি যখন আসতাম বাড়ী আর যেতে মন চাইতো না ওদের ছেড়ে লেখাপড়া করতে । তার পর আমি একদিন পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকুরী বিজ্ঞপ্তি তাই দেখে ওকে বললাম ঐ বেকার বন্ধুটিকে বললাম অ্যাপ্লাই কর সে মোতাবেক ও দরখাস্ত করলো এবং চাকুরীটি মিলে গেলো তখন সে গ্রাম ছেড়ে চলে গেলো কর্মস্থলে থাকে এখন সেখানেই । এখন আমার সাথে আর তেমন একটা দেখা হয়না তবে অনেক বসর পর হটাত দেখা হয় । তাই কেউ যদি দেখে থাকেন এ টি এন বাংলা চ্যানেলের রাত ৯ ৩০ মিনিটের টো টো কোম্পানির নামের নাটকটি দেখে থাকেন তাহলে জানাবেন যে এই গল্পের সাথে তার মিল আছে কিনা ? আসলে এই গল্পের মুল অর্থই হয় ভবগুরে >
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪