somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবনি ভূল করেছিল

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজ যখন অনিরূদ্ধের পছন্দের ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিল ঠিক ঐ মুহুর্তটা পৃথিবীর সবচেয়ে অসহ্যকর মুহুর্ত মনে হচ্ছিল অবনির কাছে।একটা সময় বৃষ্টি খুব একটা ভালো লাগতনা অবনির,যদিও প্রায়ই ঝুম বৃষ্টিতে ভেজা তার অভ্যাস ছিল।সেই বৃষ্টিতে ভেজাটা কেবলই ছিল তার উৎফুল্লতা,দৃশ্যের রোমাঞ্চটা উপলবদ্ধি করতনা কোনোদিন।কিন্তু বৃষ্টির শব্ধটা ভালোলাগতনা অবনির কাছে।মনে মনে নিজের কাছেই একটা প্রশ্ন জুড়ে বসত "আচ্ছা শব্ধ ছাড়া কি বৃষ্টি হতে পারেনা?"এই শব্ধের জন্যেই বেশিক্ষণ বৃষ্টি দেখতে পছন্দ করতনা অবনি।তবে মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে ভিজে অনেক আনন্দ পেত অবনি কিন্তু কোনো অনুভূতি কখনোই ছিলনা তার।

অবনি অনেক সুখী একটা মেয়ে ছিল।জন্মের পর তার তেইশ বছরের জীবনে কোনো দুঃখ-কষ্ট জড়াতে পারেনি তাকে।প্রতিটা মুহুর্ত তার উৎফুল্লতায় কাটত।শুধু পরিবারের ছোট মেয়ে বলেই এতো ভালোবাসা পায় যে, তা কিন্তু না।বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়স্বজন সবাই তাকে খুব ভালোবাসে।এমনিভাবেই যখন খুব সুখের দিন যাপন করছিল ঠিক ঐ সময় অনিরূদ্ধের আবির্ভাব তার জীবনে।


সবকিছু ভূলে ধীরে ধীরে অবনি কেমন যেন বদলে যেতে লাগলো।অবনি কখনোই দূর্বল চিত্তের মেয়ে ছিলনা,কিন্তু আস্তে আস্তে সে অনিরূদ্ধের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ছিল।সবকিছু থেকে নিজেকে গূটিয়ে ফেলল,বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ অনেকটা কমিয়ে দিল।কেবল অনিরূদ্ধের ভালোবাসা তাকে ব্যাকুল করে তুলছিল তখন।ঘন্টার পর ঘন্টা অনলাইনে কথা বলা,এরপরও দিনে অন্তত চার পাঁচবার ফোনালাপ ছিল তাদের নিত্তনৈমিত্তিক কাজ।ঘুম ভোরবেলা অবনির ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিত অনি,শূভ সকাল বলে তার দিনের শুরূটা করিয়ে দেয়া ছিল অনির দৈনন্দিন কাজ।তারপর সারাদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝেও ফোন করতে ভূল করতনা অনিরূদ্ধ।আবার অবনি যখন ঘুমাতে যেত ঠিক ঐ মুহুর্তে শূভ রাত্রি বলাটট ছিল যেন অনির দায়িত্ব।


আর অবনির কাছে যে বৃষ্টিটা ছিল শুধুই আনন্দ ও উৎফুল্লতার সেই বৃষ্টিকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিল অনিরূদ্ধ।অনি বৃষ্টি খুব ভালোবাসে,তাই যখনই বৃষ্টি হত তখনি অবনি ছোট্ট একটা বার্তা পাঠাত "অনি,তোমার পছন্দের ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে তাই তোমায় খুব ফীল করছি"।অনিও সাথে সাথে উত্তর দিত "তাহলে চল আমরা আজ এই বৃষ্টির মাঝেই হারিয়ে যাই"।তারপর আবার ফোন করে বলত "টুনটুনি,তুমি বৃষ্টিতে ভিজ আমিও কল্পনায় ভিজব তোমার সাথে"।অবনিকে ভীষন ভালোবেসেছিল অনি।অনির বাবা-মা কেউই জীবিত নেই,তাই সবসময়ই নিজেকে খুব দুঃখী ভাবত সে।কিন্তু অবনি তার দুঃখটাকে ভূলিয়ে রাখার চেষ্টা করত সারাক্ষণ।

অনিরূদ্ধের ভালোবাসার মোহে আটকা পড়ে যখন তাকে আপন করে পাবার প্রত্যাশায় দিন গূনছিল অবনি ঠিক ঐ মুহূর্তে হঠাৎ করেই অনিরূদ্ধ নির্জীব হয়ে গেল।অবনির সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিল,একটা মেসেজ এর উত্তর দিচ্ছেনা সে।কত ফোন করেছে অবনি,কিন্তু ফোন রিসিভ করছেনা অনি।অবনি আজ নিজের কাছেই অচেনা হয়ে যাচ্ছে,আর ভাবছে কেনইবা এমন করলো অনিরূদ্ধ?কোনো ভূল করলে তো একবার প্রকাশ করতে পারতো সে!তা না করে সে এরকমভাবে নিজেকে আড়াল করে নিল কেন সে?

এক ইংরেজ ঔপন্যাসিক বলেছিলেন "তুমি সুখের পেছনে ছুটলে সুখ তোমার কাছে ধরা দেবেনা"।তাই অবনি আজ সুখের পেছনে ছুটা বন্ধ করে দিয়েছে আর মনে মনে তার প্রিয় আইজ্যাক আসীমভের একটা কথা আওড়াচ্ছে বারবার "জীবন মনোরম,মৃত্যু শান্তিময়,এ দুয়ের মধ্যকার উত্তরনটুকু ভোগান্তির"।

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×