somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

*****রান্না— বান্না***** ( রেসিপি পোষ্ট)

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রান্না —- বান্না

রান্না একটা শিল্প সন্দেহ নাই। সব শিল্প সাধনা করতে সবার ভাল লাগবে তাও না। রান্না করতে আমার মোটেও ভালো লাগে না । তাছাড়া মোগলের সাথে থাকলে খানা মোগলাই ! এতদিন বিদেশে থেকে আমিও খাওয়া দাওয়ার ব্যপারে খানিকটা বিদেশী হয়ে গেছি মনে হয় ! এখানে যেসব সবজি পাওয়া যায় (আমরা বেশি খাই) যেমন পাতাকপি, ফুলকপি, মিষ্টি কুমরা, লাউ, স্কোয়াশ (আমাদের জিঙে /চিচিঙ্গা ধরণের),পাপরিকা, এমন কি তিতো করলা পর্যন্ত রান্না না করেই (হালকা সেদ্ধ করেই খেতে পারি)! তাই বলেনতো সেদ্ধ করেই খাওয়া গেলে কে আবার এত কষ্ট করে লবন, তেল আর মূল্যবান সময়ের অপচয় করব (বলাই বাহুল্য আমি কিন্তু মোটেই আলসে কোনো মেয়ে নই ! )! সবাই সব কিছু পারে না | না, আরো পজিটিভলি বলি কথাটা সবাই- ইকিছু না কিছু পারে। আমার আপু ভাল রান্না পারে, আমি ভাল ঘর গোছাতে পারি। মানুষ চেষ্টা করলে সবই পারে এর জন্য শুধু প্রয়োজন, Courage, Patience, Creativity. এই তিনটা গুন যার মাঝে থাকবে সে, যেকোন কাজেই সফল হবে বলে আমার বিশ্বাস।

আমরা যখন প্রথম সুইডেনে এলাম তখন অবাক হয়ে দেখি এদেশে মিষ্টির কোন দোকান নেই ! তেমন ভালবিস্কুটও নেই ! আছে শুধু হাজার রকমের চকলেট | বেকারি আইটেমগুলোর মধ্যে আটা আর ময়দার তৈরী বিভিন্ন রকম মধ্যে মোফিন্স, বিভিন্ন ধরণের কেক ।যদিও মিষ্টি না থাকায় আমার তেমন সমস্যা হয় না কারণআমি মিষ্টি টিষ্টির খুব বড় ভক্ত কখনোই নই, খাই না খুবএকটা।কিন্তু তবুও সেই মিষ্টির অভাবেই ফ্যামিলির কারো কারো মুখ তেতো হয়ে উঠলো কিছুদিনের মধ্যে | মিষ্টির অভাব কিছুটা পূরণ হতো বাংলাদেশী কারো বাসায় দাওয়াতে গেলে | সেই দাওয়াত গুলোতে বাসায় বানানো দইসহ দুই তিন ধরণের মিষ্টির আইটেমও থাকতো। মিষ্টিখাবার আগে সব সময়ই একটা প্রশ্ন পর্বও থাকতো । একেক জন খাওয়ার আগেই প্রশ্ন কর শুরু করে,কি ভাবে বানিয়েছেল, খুব সুন্দর হয়েছে, টেষ্টি হয়েছে । সব সময়ইপ্রশ্ন জিজ্ঞাসাকারীদের অন্যতম থাকত আমার ভাবি ।আমি তখন ছোট । শুধু নিষ্চুপ শুনে যাওয়াই ছিল আমার প্রধান কাজ।

ভাবী খুবই করিৎকর্মা মানুষ | দাওয়াতের প্রশ্নপর্বে অর্জিত নবলব্ধ জ্ঞান বাসায় এসে হাতেনাতে ট্রাই করে | একবার না পারিলে দেখো শতবার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে ভাবীর মিষ্টি বানানোর অভিযানে চার বছরে কত যে দুধ, ময়দা আর চিনি নষ্ট হয়েছে তার কোনো হিসেব বের করাও দুঃসাধ্য আমার জন্য ! যাহোক, ঘুব সম্ভবত ক্লাস নাইনে পড়ি |ভাবী অনেক আগ্রহ করে চমচম বানালেন ! সেটা চমচমতো হয়নি, হয়েছে পাথরের ঢিল ! কারো মথায় পরলে চমচমের বেমক্কা আঘাতে মাথাতো ফাটবেই বীভৎসরক্তারক্তিও হবে | ভাবী তার চমচমের এই কম কম প্রসংশায় খুবই কষ্ট পেলো মনে । কষ্টে বলেই ফেল্ল আমি আর মিষ্টিই বানাব না। তখন ভাবীকে কে সান্তনা দিতে আমিই বল্লাম, এবার তাহলে আমি চেষ্টা শুরু করব । সেই থেকে, মানে ২০০৮ সাল থেকে আমার মিষ্টি বানানোর অভিযান শুরু ! প্রথম প্রথম নষ্ট যে করি নাই তা নয় তবে সেটা তুলনা মূলক কম আর প্রাকটিস মেকস পারফেক্ট ।এক সময় দ্ই, মিষ্টি বানানোর “ভালো কারিগর “ তকমাপেয়ে গেলাম ! এখন প্রায় ১০ /১২ আইটেমের মিষ্টি বানাতে পারি ।একের পর এক রেসিপি পোষ্ট আসবে।

আমার আজকের এই রেসিপি পোষ্টটা উৎসর্গ করছি নীলদর্পন আপুকে । নীলদর্পণ আপুর একটা রিকোয়েস্ট থেকেই এই রেসিপি পোস্টটার কথা প্রথম ভেবেছিলাম কয়েক মাস আগে | আপুকে যদিও অনেক দিন ধরে ব্লগেদেখছি না তবে আমি আশা করব উনি আবার ব্লগেনিয়মিত আসবেন ।

আচ্ছা, শুধু শুধু কথা না বলে এবার আসল কথা বলি।আজকে রসগোল্লা দিয়ে শুরু করছি আমার রেসিপি পোষ্ট

রসগোল্লা বানাতে আমার যা লাগবে ।
দুই লিটার দুধ ,চার কাপ চিনি ,দুই গ্লাস টকদই দুই চা চামচ সূজি ।

রসগোল্লা বানাতে আমার যা লাগবে ।
১ : দুই লিটার দুধ
২ : চার কাপ চিনি
৩ : ২ গ্লাস টকদই
৪ : দুই চা চামচ সূজি


এবার রসগোল্লা বানানো শুরু করা যাক | স্টেপ বাই স্টেপ | প্রথম স্টেপ থেকে দশ স্টেপ দিলেই রসরাজ রসগোল্লা রেডি খাবার জন্য ! আসুন তাহলে আর দেরি না করে বানাতে শুরু করি রসগোল্লা

প্রথমে দুধ একটা পাতিলে দিয়ে চুলায় বসিয়ে দিতে হবে ।



দুধ ফুটে উঠলে দুই গ্লাস টকদই দিতে হবে।
এবার আরো একটু জাল দিতে হবে ছানা গুলো উপরে ভেষে উঠবে , দেখতে ঠিক এরকম হবে ।



তখন প্লাষ্টিকের বা ষ্টিলের ছাকনির উপর পাতলা কাপড়ের ঠেলে দিতে হবে ও ঠান্ডা পানির কল ছেড়ে দিতে দিন এভাবে।



ছানা ভাল ভাল ভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে , ভাল করে চিপে ,চিপে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে ।

ছানা যেন এরকম ঝরঝরে হয়।



ছানার সাথে এবার ২ চামচ সূজি দিয়ে ভাল করে মেখে নিতে হবে।



এখন এখান থেকে একটু একটু ছানা নিয়ে দুই হাত দিয়ে গোল করে ছোট ছোট বল তৈরী করুন।



এবার একটা বড় পাতিলে চার কাপ চিনিতে ১৪ কাপ ঠান্ডা পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে দেন। চিনি পানির সাথে মিশে গেলেই বলগুলো দিয়ে দিয়ে ডাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে ।



২৫– ৩০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে দেখুন বল গুলো রসে ভিজে রসগোল্লা ।



এবার একটা টেষ্ট করে দেখুন তো কেমন হয়েছে?

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৫
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×