somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

**** পথে চলতে চলতে **** (পর্ব ৭)

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সুইডেন এ আসার পর বিশেষ করে সরকোড ( ড্রাভিংল্যাইন্সেস), পাওয়ার আগে বাসে, থোগ (মেট্টো) এ চলতে ফিরতে, বা দোকানে অনেক বার অনেক জিনিস ফেলে এসেছি , প্রথম দিকে কয়েকটা মোবাইল ফিরে পাইনি সত্য, তবে বেশীর ভাগই জিনিসই ফিরে পেয়েছি।

এখানে আসার তখন প্রায় দুই বছর হবে তখন একদিন ভাবীর সাথে শপিং এ গিয়েছি I ভাবী আমাকে একজোড়া কেডস কিনে দিয়েছে অবশ্য পছন্দ আমিই করেছি। ভাবী আরো কিছু জিনিস কিনার পর আমরা বাসায় ফিরব প্রথমে মেট্রোতে, পরে অল্প একটু বাসে গেলেই বাসহোল প্লাস(বাস স্টেপস) বাসার সামনেই। মেট্রো থেকে নামার পর ভাবী বল্ল, ‘চলো আপার বাসায় যাই ( ভাবীর বোনের বাসা)I আমার যেতে ইচ্ছা করছে না, কিন্ত ভাবীর বোনের বাসায় যেতে এক বাস আর আমাদের বাসায় যেতে অন্যবাস ধরতে হবে। আমি ভাবীকে বলি,’ ভাবী আমি বাসায় চলে যাই’?
- তুমি একা যেতে পারবে ?
- হ্যা পারব।
- সত্যি যেতে পারবে তো ?
- হ্যা! পারব অল্প একটু দুর তো।

ভাবী তখন আমাকে বাসে তুলে দেন । আমি সামনের সিটে বসে ভিতরের সিটে জুতোর প্যাকেট রেখেছিI মাত্র পাঁচ মিনিটের রাস্তা I কিন্ত এর আগে কখনো একা যাইনি তাই হয়ত একটু টেনশনে ছিলাম I স্টপেজে বাস থামার সাথে সাথে দ্রত নেমে গিয়েছি জুতোর ব্যাগ ফেলে । কয়েক পা যাওয়ার পরই খেয়াল হয়েছে আমার হাতের ব্যাগ কই ? পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি বাস চলে যাচ্ছে ।আমার পছন্দের জুতো হারানোর কষ্ট আবার ভয়ও লাগছে ভাবী যদি বকা দেয় ! ভয় আর কষ্টের মিলনে কান্না করতে করতেই ভাবীকে ফোন দিয়েছি।
- ‘এই কাঁদছ কেন,বাস থেকে নামতে পারোনি’? ভাবী ফোন ধরেই আমার কান্না শুনে জানতে চায় I
-‘ নামতে পেরেছি,
- তাহলে কাঁদছ কেন ?
- আমার জুতোর ব্যাগ ফেলে এসেছি’, আমি কাঁদতে কাঁদতে বলি ।
- ‘কাঁদতে হবে না, এখন বাসায় যাও I আমি তোমাকে আরেকটা কেডস কিনে দিব’, ভাবী রাগ না করেই বলে ।

সন্ধ্যার পর দেখি, ভাবী সত্যি এক জোড়া কেডস নিয়ে এসেছে I হাসি মুখে কেডস আমার হাতে দিয়ে বললো, ‘নাও আবার কিনে আনলাম’।

- ‘' আমি কেডস পেয়ে প্যাকেট খুলে নেরে চেরে দেখে খুশীতে চিৎকার করে উঠলাম ভাবী, এটা তো একেবারে সেই কেডসটাই “।
- ‘জী,সেই দোকান থেকে সেই একই কেডস এনেছি, একইরকমইতো হবে’,ভাবী বলে।
-এটা তো সেই প্যাকেটই এই যে এখানে আমি একটু চিরে ছিলাম! আমি হাত দিয়ে খুটে খুঁটে সেই একই রকম একটা ফুটো প্যাকেটে দেখে বলি I
- ‘ওটা তো আমি করেছি’ ভাবী একটু মুচকী হেসে বলে।

ভাবী যত যাই বলুক আমার মনের ভিতর একটু খুঁত-খুঁত রয়েই গেল।
রাতে খাবার টেবিলে ভাবী সব পরিস্কার করে বললেন, SL সেন্টার ( বাস, ট্রেন মানে যোগাযোগ মাধ্যম যা আছে তাদের অফিস) ফোন করে জুতো উদ্ধারের কাহিনী।



২:



ডেনমার্ক থেকে আমার বড় ভাইয়া যখনই আসেন যাওয়ার সময় ভাইয়ার কাছে সুইডিশ ক্রনার যা থাকে সেগুলো আমাকে দিয়ে যান । সেবার ভাইয়াদের টিকেট আমি কেটে দিয়েছিলাম তিন হাজার ক্রোনার আর ভাইয়ার কাছে যা ছিল সব মিলিয়ে সারে চার হাজার ক্রোনার ভাইয়া আমাকে দিয়ে যান। টাকা যেখান সেখানে থেকে এটিএমমেশিনে কার্ড ইউজ করে তোলা যায় কিন্ত জমা করা যায় নাI তার জন্য ব্যাংকেই যেতে হবে । প্রায় এক সপ্তাহ ব্যাংক টাইমে আমি কোন সময়ই বের করতে পারিনি ব্যাংকে যাওয়ার I তাই টাকাটা ওয়ালেটেই নিয়ে ঘুরছি সেই পুরোটা সময়।

স্কুল থেকে ফিরছি মেট্রোতে। মেট্রোতে টিকেট চেকার (SL kontroll ) টিকেট চেক করতে এসেছে। এখানে টিকেট চেকার সব সময় আসে না কারন মেট্রো ষ্টিশনে কার্ড রিডেবল অটোমেশিনে বসানো আছে সেখানে কার্ড পাঞ্চ করেই মানুষকে মানুষে মেট্রো/ বাসে যেতে হয় এর পরও মানুষ চুরি করে তাই মাঝে সাঝে এরা মেট্রো, বাসে হানা দেয়। আমার SL kort (মেট্রো টিকেট) ছিল ওয়ালেট এর ভিতরে I আমি টিকেট চেকারকে স্কুল ব্যাগ থেকে ওয়ালেট বের করে টিকেট দেখালাম। তারা টিকেট চেক করে ‘থাক’ বলে চলে যায়।

বাসায় ফিরে ব্যাগ থেকে বই পত্র বের করে দেখি ওয়ালেট আমার ওয়ালেট নেই স্কুল ব্যাগ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পেলাম না! স্কুল শেষে বাসায় ফেরার খুশী সব তখনই উধাও হয়ে গেলো I সেটার ভিতরে আমার ছয় মাসের SL kort যার এখনো তিনমাস বাকী আছে,আমার লেগেতিম্যাশুন ( আইডি কার্ড) যেটা নতুন করতে পাঁচশত ক্রনার লাগবে, আমার ব্যাংক কোর্ড এটা করতে অবশ্য টাকা লাগবে না শুধু ফোন করে জানালেই হবে , আর ক্যাশ সারে চার হাজার ক্রোনার। মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে বসলাম কোথায় হারাতে পারে ওয়ালেটটা I আমারদৃঢ় বিশ্বাস ওটা মেট্রোতেই ফেলে এসেছি। যাহোক, SL center-এ ফোন করে বল্লাম,
- আমি তিনটা দশের গ্রনা লিনিয়ে ফ্রন হ্যাসেলবি মুট হকছ্যাত্রা এই থোগ এ আমার প্লোনবুক ফেলে এসেছি I তোমরা কি পেয়েছ ?
- তুমি কি সাকেট ( শিউর) তুমি মেট্রোতেই ফেলেছ?
- আমি 100% সাকেট না I তবে আমার বিশ্বাস ওটা মেট্রোতেই পরেছে ।
- টিব্যার (সরি), আমরা ওটা এখনো পাইনি I কিন্তু তুমি কোন দুশ্চিন্তা করো না I আমাদের হাতে এখনো আসেনিI তবে লস্ট জিনিস কখনো দুই এক দিন পরেও SL center-এ আসে I আসলেই আমরা তোমাকে কল করব’।

SL center-এ কথা বলার পর কি আর করব নেট ওপেন করে ব্যাংক কার্ড স্প্যারা (spärra, লক) করে দিয়ে, নতুন একটা কার্ডের জন্য রিকোয়েস্ট করলাম I আমার SL kort রেজিট্রেশন করা আছে যদি হারায় যায় SL সেন্টারে জানালেই নতুন একটা দিবে I কোন টাকা লাগবে না তবে এক সপ্তাহ সময় লাগবে।সেটাও করলাম।আইডি কার্ডের জন্য পুলিশ আনম্যাল (জিডি) করতে হবে। কিন্ত সেটা করলাম না ভাবলাম দেখি দুই এক দিন।

পরের দিন কোন ফোন এল না I তার পরের দিন সকালে sl সেন্টার থেকে ফোন এল আমার প্লোনবুক পাওয়া গিয়েছে I আমি গিয়ে যে কোনো সময় নিয়ে আসতে পারি।সেদিনই বিকালে আমি ওদের অফিসে গেলাম I আমার হাতে প্লোনবুক দিয়ে তারা জিজ্ঞেস করলো, ‘দেখ সব ঠিক আছে নাকি’?

আমি প্লোনবুক হাতে নিয়েই,মনে মনে বলি, মনে হয় ঠিক নেই সারে চার হাজার ক্রোনারে ব্যাগটা যতটুকু উঁচু ছিল এখন তা নেই I তবু ওদের সামনেই প্লোনবুক ওপেন করলামI ব্যাংক কার্ড, আইডি কার্ড , আরো কিছু দোকানের কার্ডছিল সেগুলো সবই আছে শুধু SL কার্ড আর সাড়ে চারহাজার ক্রোনার নেই ! ওদের বললাম:
-সারে চার হাজার ক্রোনার আর sl kort নেই।
- টিব্যার (tyvärr, সরি) এব্যাপারে আমরা তোমাকে আর কোন হেল্প করতে পারব না। আমাদের লোক এটা মেট্রোতে পেয়েছে তার আগেই হয়ত কেউ টাকা আর sl কার্ড নিয়ে নিয়েছে।

তবু তাদের থাক (ধন্যবাদ) বলে চলে আসলাম। মেট্রোতে বসে মনে মনে ভাবলাম এটা কোন সুইডিশ করেনি আমি নিশ্চিত I আমার মত কোন ইনব্যান্ডরাই (বিদেশী) এটা করেছে। মনে মনে আবার ভালও লাগল এদের সাথে থেকে কিছুটা ভদ্রতো অন্তত আমরা হতে পেরেছি, যে আমার পুরো প্লোনবুকটাই গায়েব করেনি। সেই প্লোনবুক টা আমার অনেক শখের আর দামীও ছিল !

কিন্ত আমার টাকা!! আমি কি এমনি এমনি ছেরে দিব!!নাহ্ তাই কি কখনো হয় !! আমাদের বাসা ফরস্যাকরিং(ইন্সুরেন্স) করা এর সাথে ইনক্লোডিং মোবাইল বা প্লোনবুক বাহিরেও হারায় তার ক্ষতি পূরনও এরা দিবে। এর জন্য অবশ্য কিছু ঝামেলাও করতে হয়েছে, যাইহোক সে সব করে ওদের কাছ থেকে পুরোটা না পেলেও তিন হাজার ক্রোনার পেয়েছিলাম।
ইউরোপের জীবন অনেক বিজি কিন্ত যে কোন কাজ এত সহজে করা যায় ভাবলেই অবাক লাগে।
এরপরও অনেকবারই দোকানে প্লোনবুক ফেলে এসেছি কিন্ত ঠিক মতই ফিরে পেয়েছি।আমার যদি ফোন করতে দেরী হয় ওরাই ফোন দিয়ে জানিয়ে দেন, প্লোনবুকেই আমার আইডি কার্ড, সরকোড থাকে সেগুলোতে আমার পারসুন নাম্বার দেখে তারা আমার ফোন নাম্বার, বাসার অ্যাড্রেস সবই বের করতে পারে।



৩ :
ক্লাস এইটে পড়ি বাসা থেকে বাসে স্কুলে যেতে হয়। বাসের সীটে বসতে গিয়েছি তাকিয়ে দেখি একটা মোবাইল। যদিওখুব নতুন না আর আমার হাতের মোবাইলের চেয়ে দামীওনা তবু খুব খুশী হয়েছি কারন মোবাইল আমি কয়েকটাই হারিয়েছি যে গুলো ফিরে পাইনি আজকে পেয়েছি আমি ওএটা দিব না ভেবে মোবাইলটা হাতে নিয়েই অফ করে ব্যাগে ভরে রাখলাম। দিন শেষে বাসায় ফিরে চিন্তায় পরে গেলাম এটা এখন কি করব! না পারছি ফেলতে না পারছি গিলতে কারন ভাইয়া ভাবী যদি দেখে আমার কাছে দ্বিতীয় একটা মোবাইল তাহলে প্রথম প্রশ্ন এটা আমি কোথায় পেলাম তখন কি বলব এটা ভেবেই
খুব অশান্তি লাগতেছিল। ইচ্ছে করছে ঢিল মেরে ফেলে দেই , শেষ মেষ ভাবীকে বল্লাম,

- ‘ভাবী আমি একটা মোবাইল পেয়েছি’ ।
- ‘কোথায়?
- ‘স্কুলে যাওয়ার সময় বাসে’।
- ‘কেউ ফোন করেনি’ ?
- ‘আমি তো ফোন বন্ধ করে রেখেছি’।
- ‘মোবাইল নিয়ে আস দেখি’?

মোবাইল ভাবীর হাতে দিলাম। ভাবী মোবাইল অন করে কন্ট্রাক নাম্বার দেখে এ্যাসলিং (প্রিয়তম) এর নাম্বারে কলকরে। এক ভদ্রলোক ফোন রিসিভ করলো I ভাবীর ভদ্রলোকের কিছু কথাবার্তা হলো:
-এটা আমার ফ্রো(স্ত্রী)-এর মোবাইল ! ‘তুমি কি এটা পেয়েছ’?
- জী না I এটা আমার ছোট বোন পেয়েছে I
- সকালে সে এটা হারিয়েছে, সারাদিন অনেকবার কল করেছি কিন্তু এটা বন্ধ ছিল I
-সে স্কুলে ছিল তাই ফোনটা বন্ধ করে রেখেছিল I এখন এটা কি ভাবে নিতে পারো ?
- ‘তোমার ল্যান্ডফোন নাম্বারটা বল’।
- তোমরা কি এখনই আসতে চাও’ ? জিজ্ঞেস করে ভাবি আমাদের ল্যান্ড ফোন নাম্বার বললেন I
-‘আমরা এখুনি আসছি’ নাম্বার শুনে ভদ্রলোক বল্লেন I

পনের মিনিট পর এ্যাসলিং আর ফ্রো দুজনেই এসে হাজির। মোবাইলটা দেওয়ার পর হ্যাজবেন্ড ওয়াইফ খুব খুশী হয়ে বলেন, ফোনটা তেমন দামী না আবার পুরোনোও হয়ে গিয়েছে, কিন্ত এটার মধ্যে অনেক জরুরী কন্ট্রাক নাম্বার আছে যেগুলো আমার জন্য খুব প্রয়োজন। উনারা অনেক থাক থাক বলে দুইশ’ক্রনার আমাকে দিয়ে বললেন, ‘তুমি গ্লাস(আইসক্রীম)খেও’। মনে মনে খুব হাত বাড়িয়ে দুইশ’ক্রনার নেওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্ত ভাইয়া ভাবী আমাকে নিতে দেয় নি। আমার খুব রাগ হয়েছিল।মোবাইলের কষ্ট আমি ভুলে গিয়েছি I কিন্ত সেই দুইশ ক্রোনার না পাবার কষ্ট আমার অনেক দিন পর্যন্ত ছিল !

মানুষের মন কত কুৎসিত! আমিও মানুষ তাই আমার মনও হিংসায় ভরা মোবাইলটা পাওয়ার পর আমার মনে প্রথমেই এসেছে আমার মোবাইল ও তো কেউ পেয়েছিল ফিরত দেয়নি আমিও দিব না। এটা নিয়ে আমার কোন লাভ হবে না এটা জানার পর নিতে চেয়েছি ।
৪:



এটা সুইডেন আসার একেবারে প্রথম দিকের ঘটনা I সুইডিশ ক্রোনারও ভাল মত তখন আমার চেনা হয়নি কারন বয়স কম থাকার কারনে টাকা পয়সা নিয়ে আমার কোন কাজ কারবার ছিল নাI একদিন বিকাল বেলা পার্কে খেলে বাসায় ফিরছি, সামনে ভাজকরা এক হাজার ক্রনারের একটা নোট পরে আছে।আসলে সেটা ক্রোনার নাকি অন্য কোনদেশের মুদ্রা সেটা ধারনা তখন আমার ছিল না শুধু ১০০০ লিখাটা দেখেই আমার চোখ দুটো খুশীতে চিক চিক করে উঠল। পিছনে আবার লোকও ছিল তাও কোন তোয়াক্কা না করেই তারা হুরো করে নীচু হয়ে টাকাটা তুলে জ্যাকেটের পকেটে ভরে এক দৌড়ে বাসায়।

- খুশীতে গদ গদ হয়ে ‘ভাবী, আমি এক হাজার ক্রোনার পেয়েছি’।
- ‘কই,দেখি’? ভাবি দেখতে চায় I আমি নোটটা বের করে ভাবীর হাতে দেই I
- ‘আরে বোকা এটাতো ক্রোনার না’ ! ভাবী নোটটা খুলে উল্টে পাল্টে বলে I
- ‘তাহলে এটা কোনদেশী টাকা’? হতাশ গলায় আমি জিজ্ঞেস করি I

ভাবী তখন নেট সার্চ করে জানালেন ওটা উগান্ডিয়ান শিলিং I তাও নাকি এতো পুরোনো যে এখন ওই শিলিংউগান্ডায়ও অচল ! আমার এত মন খারাপ হয়েছিল কান্নাই করে ফেলেছিলাম পরে ভাবী আমাকে এক হাজার ক্রোনারের একটা নোট দিয়ে আমার কান্ন বন্ধ করেছিল ।
ছারা আমি আর কখনো কিছু কুড়িয়ে পাইনি I এর জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, কারন আমি মানুষ,আর আমার মনেও লোভ আছে। কিন্ত পরের জিনিসের প্রতি লোভ ভাল না জানি তার পরও। আমার আম্মু সব সময় বলত,’ অন্যের জিনিসের প্রতি লোভ করবা না ভাগ্যে আল্লাহ যা রেখেছেন সেটা তুমি পাবা’। কিন্ত আমরা মানুষ আমাদের মনে লোভ আছে তবে কেউ সেটা দমন করতে পারে কেউ পারে না।


৫ :
কয়েক মাস আগে একদিন রাত আটটার দিকে অপরিচিত নাম্বার থেকে আমার মোবাইলে ফোন এলে আমি রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে —- তুমি নিশ্চয় আফরা?
- জী, আমি আফরা।
- তুমি তোমার ভিসাকোর্ড থাপ্পা করেছ ( ফেলে গিয়েছ ) আমি ওটা পেয়েছি।
- আমি তো আকাশ থেকে পরলাম বল কি !! ভ্যান্তা (ওয়েট) আমি আমার ওয়ালেট এ খুঁজে দেখি আসলেই আমার ভিসাকোর্ড নেই।আচ্ছা তুমি এটা কোথায় পেয়েছ?
- এটা আমি একটা ব্যাংককমোটের কাছেই পেয়েছি।
- (তখন আমার মনে পরল সন্ধ্যার আগে আমাদের কাছের সেন্টরুম ( বাজার) ব্যাংককমোট থেকে কিছু টাকা তুলেছি)
-ওহ হ্যা আমি সন্ধ্যায় ওখান থেকে কিছু টাকা তুলেছিলাম মনে হয় জ্যাকেটের পকেটে রাখতে গিয়ে পরে গিয়েছে ।
- হ্যা, সেটাই হবে। এখন তুমি যদি কার্ড ফিরত নিতে চাও তাহলে আমি কালকে তোমার ঠিকানায় পোষ্ট করে দিব আর যদি তুমি এটা বাতিল করতে চাও তাহলে আমি এখনি এটা ফেলে দিব।
- না ফেলে দিও না, তুমি কার্ড পাঠিয়ে দিও। তাকে থাক বলে ফোন রেখে দিলাম ।
- কিন্ত আমার মনের শান্তি তো চলে গেল, আমার ওয়াইফাই ভিসাকার্ড কোন কোড নাম্বার ছারাই ২৫০ ক্রনারের শপিং করতে পারবে, এভাবে যদি সে কয়েক দোকান থেকে কেনা কাটা করতেই থাকে তাহলে!!
নিজের বোকামীর জন্য নিজের উপরই রাগ হতে লাগল কি দরকার ছিল এটা বলার আমি এখনি কার্ড স্প্যারা করে দিতাম। পরের দিন ও রাতে প্রায় প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় আমি আমার একাউন্ট চেক করেছি আমার একাউন্ট থেকে
কোন টাকা যায় নাকি আর কি যে টেনশনে ছিলাম ! তার পরের দিন আমার কার্ড আমার হাতে এসে পৌঁছল।
তখন নিজের কাছেই নিজেকে খুব সংকীর্ণমনা মনে হল আমি কত সন্দেহপ্রবণ এত ভাল একটা মানুষ সম্পর্কে কত খারাপ ধারনা করেছিলাম। তার তো আমাকে ফোন করার কোন দরকার ছিল আবার পোষ্ট করার ঝামেলারও দরকার ছিল সে একেবারে নি:স্বার্থ ভাবেই এটা করেছে অথচ আমার মনটা কত সন্ধেহ প্রবণ

ফটো সবই আমার মোবাইল থেকে তোলা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২৯
৪০টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×