somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

পলাশ তালুকদার
"নতুন কিছু জানার জন্য নতুন কিছু করো"

ইতিহাস বিকৃত করে মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব ছড়িয়েছে হিন্দুরা

২৫ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক্ষেত্রে প্রথমেই বলে নেই স্তনকর বা ব্রেস্টট্যাক্স কি?
এক সময় নিয়ম ছিলো শুধু ব্রাম্মণ ব্যতিত অন্য কোন হিন্দু নারী তার স্তনকে ঢেকে রাখতে পারবে না। শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ শ্রেণীর
হিন্দু নারীরা তাদের স্তনকে একটুকরো সাদা
কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে পারতো, বাকি হিন্দু
শ্রেণীর নারীদেরকে প্রকাশ্যে স্তন উন্মুক্ত
করে রাখতে হতো। তবে যদি কোন নারী
তার স্তনকে কাপড় দ্বারা আবৃত করতে
চাইতো, তবে তাকে স্তনের সাইজের উপর
নির্ভর করে ট্যাক্স বা কর দিতে হতো। এই
নির্মম করকেই বলা হয় স্তনকর বা ব্রেস্টট্যাক্স।
এবার একটু সমালোচনায় আসা যাকঃ হিন্দুয়ানী মুখ থেকেই বোধয় আমি শুনেছি যে, এক সময় মহিশুর (দক্ষিণ ভারতের এলাকা)
শাসনকর্তা ছিলেন টিপু সুলতান।আর সবাই বলতো তিনি নাকি তরবারির ভয় দেখিয়ে অনেক হিন্দু নারীকে মুসলিম বানিয়েছিলেন।
কিন্তু ইতিহাস বলছে, ঐ সময় টিপু সুলতান হিন্দুদের একধরণের জংলী কালচার (স্তনকর) মোটেও পছন্দ করেননি।তিনি চেয়েছেন এই নগ্নতা বন্ধ হোক।তাই তিনি হিন্দু নারীদের আহবান করেছিলেন- “যদি তোমরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো, তবে কাপড় পরার অধিকার পাবে।” এ কথা শুনে হাজার হাজার হিন্দু নারী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলো। অথচ বর্তামানে এই ইতিহাসটি এখন বিকৃত করে প্রচার করে হিন্দুরা যে, মুসলিম শাসক টিপু সুলতান জোর করে হিন্দু নারীদের তরবারি দেখিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিয়েছে। কিন্তু মাথা মোটার দলেরা একবার ও চিন্তা করেনা যে, ইতিহাস বিকৃত করার পরেও ণারীদের সাথে কেন পুরুষদের উপর জোর করে ধর্ম গ্রহণ এর কথা আসলো না। যদি টিপু সুলতান তরবারির ভয়ই দেখাতেন তবে পুরুষদের কেও দেখাতেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তা তিনি করেননি। কারন তখন পুরুষদের স্তনকর দিতে হতনা। (ব্যপারটা খুবেই পরিষ্কার)
আসলে ঐ সময় হিন্দুরা ছিলো অ্যামাজন জঙ্গলের জংলীদের মত অসভ্য ও বর্বর। মুসলিম শাসকরা এসে হিন্দুদের সভ্যতা শিক্ষা দেওয়াতে তারা কিছু সভ্যতা শিখতে পেরেছে। এ সম্পর্কে হিন্দু ইতিহাসবিদ সুরজিত দাসগুপ্ত বলে- “ঐ সময় হিন্দু নিম্নবর্ণের লোকদের উর্ধাঙ্গ অনাবৃত রাখতে হত। সে সময় ভারতবর্ষের কেরালাতে অমুক হিন্দু নারী ইসলাম গ্রহণ করেছে এটা বলার প্রয়োজন ছিলো না, বলতে হতো শুধু
‘কুপপায়ামিডুক’ শব্দখানা। এ শব্দখানার অর্থ ‘গায়ে জামা চড়িয়েছে’।
(সূত্র: বই-সুরজিত দাসগুপ্তের ‘ভারতবর্ষ ও ইসলাম’, পৃষ্ঠা:১৩০-১৩১)
হিন্দুদের বর্বরতাময় এবং জংলীদের মত সেই সময়ের ঐ স্তনকর এর পরিনতিঃ
১৮০৩ সালে নাঙ্গেলী (Nangeli) নামক এক
নারী তার স্তনকে আবৃত করে রাখে। যখন
গ্রামের ট্যাক্স কালেকটর তার থেকে স্তনকর
চাইতে আসে, তখন নালেঙ্গী তা দিতে
অস্বীকার করে এবং নিজের দুটি স্তনকে
ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে পাতা দিয়ে মুড়ে
ট্যাক্স কালেকটরকে দিয়ে দেয়। তখন কাটা
স্তন দেখে ট্যাক্স কালেকটর অবাক হয়ে যায়। স্তন কেটে ফেলার কিছুক্ষন পরেই
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য নাঙ্গেলীর
মৃত্যু হয়। স্ত্রীর মৃত্যু শোকে নালেঙ্গীর
স্বামীও সাথে সাথে আত্মহত্যা করে। এই
ঘটনার পর থেকেই স্তনকর রোহিত হয়।তবে স্তনকর রোহিত হলেও দক্ষিণভারতে নারীদের স্তন আবৃত করার জন্য বহু সংগ্রাম করতে হয়েছে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা পর্যন্ত করতে হয়েছে তাদের। ১৯ শতাব্দীর মাঝে এসে যখন কিছু হিন্দু নারী তাদের শরীরের উপরের অংশ আবৃত করার অধিকার দাবি করে, তখন হিন্দু পুরোহিতরা স্পষ্ট করে বলে দেয়, নিচু বর্ণের নারীদের শরীরের উপরের অংশ আবৃত করা
ধর্ম বিরোধী। বিষয়টি নিয়ে ১৮৫৯ সালে
দক্ষিণ ভারতে একটি দাঙ্গা সংগঠিত হয়। এই
দাঙ্গার উদ্দেশ্য ছিলো হিন্দু নারীদের
শরীরের উপরের অংশ আবৃত করার অধিকার
আদায় করা। এই দাঙ্গায় ‘কাপড়ের’ দাঙ্গা
হিসেবেও পরিচিত। আর এসব ফ্যাতনার থেকে সাধারণ হিন্দু নারীদের রক্ষা করার জন্যই মুসলিম শাসক টিপু সুলতান ইসলাম ধর্ম গ্রহনের আহবান জানিয়েছিলেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৬ সকাল ৮:০৪
৩০টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×