somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনের নির্মম প্রতিশোধ!B-)

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জনের কথা কি আপনাদের মনে আছে?যৌবন বয়সে নানারকম কেচ্ছাকাহিনী করে বেড়ানো সেই জন?তো জনের এখন বয়স হয়েছে,এখন সে সাদামাঠা যান্ত্রিক কর্পোরেট জীবনে অভ্যস্ত।অফিস,বাসা,উইকেন্ডে বৌকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া এরকমভাবেই চলছে তার জীবন।তো অফিসে এক অলস দুপুরে জনের কাজকর্ম তেমন না থাকায় ভাবল যে একটু ফোনে কথা বলা যাক পুরোনো বন্ধু লিন্ডনের সাথে।তো অফিসের ল্যান্ডফোনটা দিয়ে করল ফোন।রিং হচ্ছে....
"হ্যালো,লিন্ডন আছে?"
"এখানে লিন্ডন বলে কেউ থাকেনা,খালি আজাইরা ডিস্টার্ব!"রুক্ষস্বরে কেউ একজন বলে ফোনটা ঠাস করে রেখে দিলো।
বড়ই চোট পেলো জনের মনটা।এরকম ব্যবহার করে নাকি কেউ?ভদ্রতাবোধ ব্যাপারটা কি মানুষের মাঝ থেকে উঠেই যাচ্ছে?ভুলটা জনেরই,সে শেষের ডিজিটটা ৫ এর জায়গায় ৬ চেপেছিলো।কিন্তু সামান্য একটা ভুলের জন্যে এমনতর অপমাণ?জনের মধ্যে প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে উঠলো।একটু পড়ে তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।আরে ব্যাটাকে শিক্ষা দেয়া তো কোনো ব্যাপারই না!ঐ ব্যাটার ফোন নম্বর তো সে জেনে গ্যাছে,কিন্তু সে জনের ফোন নাম্বার জানেনা।এইবার জমবে মজা!!জন আবার ফোন করল অভদ্র লোকটার কাছে।
"হ্যালো" অপরপাশ থেকে আবারো সেই রুক্ষ কন্ঠস্বর।X(
"শোন শালা তুই একটা ছাগভুদাই" বলেই জন ফোন রেখে দিলো।বিমলানন্দে ভরে উঠলো জনের মন।
এরপর থেকে মাঝেমধ্যেই জন এই কাজটা করা শুরু করলো।মনটা একটু খারাপ থাকলে,বা বোর ফিল করলে জন ঐ কাজটা করে থাকে।

"হ্যালো"
"চুপ ব্যাটা ছাগভুদাই"

"হ্যালো"
"দূরে গিয়া মর ছাগভুদাই"
..........................।
তো চলতে থাকলো এভাবেই।কিন্তু হঠাৎ একটা সংবাদ শুনে জনের মাথায় বাজ পরল।নতুন প্রযুক্তি,কলার আই.ডি সিস্টেম চালু হচ্ছে দেশে।এ তো বড় ঝামেলা।ফোন নাম্বার তো কোনোভাবেই জানতে দেয়া যায়না ঐ লোকটাকে।অবশ্য দেশের সবখানে এটা এখনও চালু হয়নি।দেখা যাক ছাগভুদাইয়ের ওখানে ওটা চালু হয়েছে কিনা।দীর্ঘশ্বাস ফেলে জন ফোন করল,
"হ্যালো"
"হ্যালো,আমি টেলিফোন কোম্পানি থেকে ফোন করছি,আমাদের নতুন সুবিধা কলার আই.ডি ঠিকমত কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করার জন্যে।আপনার ফোনে কি এই নাম্বারটা দেখা গ্যাছে?"
"না"
"দেখবি ক্যামনে শালা,তুইতো একটা ছাগভুদাই!যাহ ঘাস খা!!"
ফোন রাখার পর বড়ই প্রশান্তি অনুভব করল জন।আহ!জীবন বড়ই মজার।জীবনকে ঝাঝা!!B-)

কিছুদিন পরের ঘটনা।জন শপিং করতে গিয়ে গাড়িটা পার্কিং করার জন্যে জায়গা খুঁজছে।তো সামনে একজন শীর্ণ দেহের বৃদ্ধার মন্থর নড়াচড়ার কারণে একটু ধৈর্য ধরে থাকতে হচ্ছে আর কি।তো বৃদ্ধা চলে যাওয়ার পরে যখন গাড়িটা পার্কিং করতে যাবে,তখন হুট করে কোথা থেকে অন্য একটা গাড়ি তাকে ওভারটেক করে চলে গ্যালো জনকে।জনের মনটা আবারও খারাপ হয়ে গ্যালো। মানুষের ভদ্রতা জ্ঞান বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই বুঝি।বিরস বদনে গাড়িটির দিকে তাকিয়ে জন খেয়াল করলো,ওখানে একটি বিজ্ঞাপন সাঁটানো আছে।
"একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন সুলভ মূল্যে বিক্রয় হইবে।আগ্রহী ক্রেতারা #^%$^%&%& :P এই নাম্বারে যোগাযোগ করুন"।এইবার খুশি হয়ে উঠলো জনের মনটা।পাওয়া গ্যাছে আরেকটা ছাগভুদাই!!

তো সেইদিনই জন ফোন করল ঐ নাম্বারে।
"আপনি মনে হয় একটা ওভেন বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন।"বিনম্র কন্ঠস্বর জনের।
"হ্যাঁ,আপনি কিনবেন নাকি?"
"জ্বী,জনাবের বাসার ঠিকানাটা যদি দেয়া হয়,তো কৃতার্থ হই"
"অবশ্যই" বাসার ঠিকানাটা বলল লোকটা।জন টুক করে টুকে নিলো।
"অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।"
"ওকে"
"আপনাকে আরেকটা কথা বলার আছে আমার......"
"বলেন"
"তুই একটা ছাগভুদাই"
ফোন রেখে দিলো জন।হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাওয়ার অবস্থা তার।তো এভাবেই যাচ্ছিলো জনের দিনকাল তার দুই ছাগভুদাইকে নিয়ে।কিন্তু এভাবে একসময় জনের নিজেরও পানসে লাগা শুরু হলো।নতুন কিছু একটা করা দরকার।তো কি করা যায়?জন ফোন করল ছাগভুদাই-১ এর কাছে।
"তুই একটা ছাগভুদাই"।কিন্তু এবার আর জন ফোন রাখলোনা।কিছুক্ষণ নীরবতার পরে ওপাশ থেকে ছাগভুদাই-১ বলল,
"আছোস এখনও"
"হ"
"আর আমাকে ফোন করবিনা'
"করুম"
"তোরে যে সামনে পাইলে কি করতাম........"
"সাহস থাকলে আয় আমার বাড়ীত।আমার নাম হ্যারি।আমার ঠিকানা হৈলো,১৩৩,হ্যানসন স্ট্রিট।"জন ছাগভুদাই-২ এর নাম ও বাসার ঠিকানাটা দিয়ে দিলো।;)
"দাঁড়া,আমি আইতাছি।আল্লা খোদার নাম নেয়া শুরু কর।আইজকা তুই শ্যাষ" হমকি দিলো ছাগভুদাই-১।
"ঠিকাছে আয়।দেখা যাইবো।"জনও পাল্টা শাসিয়ে ফোন রেখে দিলো।
এইবার ফোন করল ছাগভুদাই-২ এর কাছে।
"হ্যালো!"
"হ্যালো,কে ছাগভুদাই?"
"সাহস থাকলে কাছে আয়,ফোনে ডিস্টার্ব করিস লজ্জা লাগেনা?
'অখে,আমি আইতাছি।রেডি থাক।"বলে ফোন রেখে দিলো জন।সময় নাই দ্রুত করতে হবে।গাড়িটা নিয়ে চলে গ্যালো ১৩৩ হ্যানসন স্ট্রিটে।একটু দুরে অবস্থান করে অপেক্ষা করতে থাকল।
কিছুক্ষণ পরে শুরু হলো বড়ই মনোহর এক লড়াই।ছাগভুদাইদ্বয় একে অপরের পশ্চাদ্দেশে লাথি মারছে।জনের আবার মনে হলো,জীবনটা বড়ই মজার!জীবনকে ঝাঝা!

#নেট থেকে অনূদিত
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৬
৬৩টি মন্তব্য ৬৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×