somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লেবুপাতার ঘ্রাণ অথবা কর্কট জীবন

০৩ রা জুন, ২০১২ ভোর ৬:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

*
আমার ম্লানমুখ দেখে তোমাদের সহানুভূতি এবং কোমল চোখের যে রসায়ন তৈরী হয় তা ভিখিরীর মত লুটেপুটে নেই আমি, চেটেপুটে খাই। ন্যাড়া মাথা, শুস্ক ঠোঁট, কর্কশ চামড়া- আমি কুৎসিত হয়ে গেছি দেখতে। আমার কাছে দেবশিশুদের পাঠিও না, ওরা অভিশপ্ত হয়ে যাবে, বিদায়চুম্বন দিও না, তোমরা আক্রান্ত হবে, হাত বাড়িও না...ওহ ঔষধ দিচ্ছো? আচ্ছা, এগুলো খেলে কি আমি আবার সুন্দর হয়ে যাবো আগের মত? আমি সুস্থ হতে চাই না, নরকযন্ত্রণা ভোগ করব তবুও সুন্দর হব। আর একটিবারের জন্যে। মৃত্যু তো অবশ্যম্ভাবী। পরিপাকতন্ত্রের ষড়যন্ত্রে একবেলা ভালো খেলে পরের বেলা উগড়ে দিই যেন আস্ত পাকস্থলিটা সহ।

"আমি সুন্দর হব সুন্দর হব একটু একটু করে
নেবো এই পৃথিবীর যত সুন্দর দুটো হাত জড় করে"

শায়ানের গান। আমার খুব পছন্দের। শায়ান অবশ্য দেখতে সুন্দর না। তোমরা এখন আবার তার এই গানের লিরিকের সৌন্দর্য বিষয়ক দার্শনিক তত্ত্ব কপচাতে এসো না। মনের সৌন্দর্য দিয়ে কী হবে? আমার বুকে যে লেবুফুলের সুবাস পেতো, তীব্র রিরংসা নিয়ে তাকিয়ে থাকতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিকে, সে তো এখন তোমাদের মত গড়পড়তা সহানুভূতিক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে আমার দিকে। কেমো দেবার পর থেকে চেহারাটা যা যাচ্ছেতাই হয়েছে না!

এইসব...
পাকস্থলি, রেচনতন্ত্র, জননাঙ্গ, নিতম্বের পাঁচড়া, উরুর ঘা সবাই মিলে আমাকে খুব যন্ত্রণা দেয়। ভাগ্যি, ভেতরের ওসব ঘা-পাঁচড়া তোমরা দেখতে পাও না। আমার সহ্যক্ষমতা প্রবল। আমার দেহের ভেতরে-বাহিরে ফ্যাসিস্ট কর্কটরাজ্যের আগ্রাসনের সাথে যুঝে চলেছি তোমাদের ভালোবাসা আর চিকিৎসাশাস্ত্রের নৈবেদ্য সাথে করে। ক্ষয়ে যাচ্ছি, সয়ে যাচ্ছি, সরে যাচ্ছি...

সরে যাচ্ছি তোমাদের কাছ থেকে। ঔষধ, ইনজেকশন, কেমো, স্ক্যান, রিপোর্ট, ডাক্তারদের মিটিং, টিএসসি প্রাঙ্গনে আমার জন্যে নাকি কনসার্টও হয়েছে। কনসার্টে তারা আমার এক বছর আগের সুন্দর একটা ছবি দিয়েছিলো। একসময় আমিও সুন্দর ছিলাম! ভাবতেই অবাক লাগে।
-সিস্টার, আমি কি পারবো...
কাশির দমকে কথা আঁটকে যায়। সহানুভূতিশীল নার্স আমার কাঁধে হাত বোলাতে বোলাতে সুস্থ হবার আশাবাদ ব্যক্ত করতে থাকে, অভয় যোগায়। কথা শুনতে শুনতে, আশীর্বাদ এবং সহানুভূতি হা-ভাতের মত গিলতে গিয়ে যখন একদলা রক্তাভ শক্ত শ্লেষ্মা মেঝেতে ফেলি, তখন আরেকটা দলা উঠে আসার প্রাক্কালে আমার সুন্দর হবার সম্ভ্যাব্যতা সম্পর্কিত প্রশ্নটি ঢেকে রাখি গোপনে লেবুপাতার রুমালে...

শেষ কবে চুমুর দেয়ালিকা এঁকেছিলে আমার মুখে, নাকে, ঠোঁটে? তুমি খুব দক্ষ চুম্বনচিত্রকর ছিলে, আর আমি ছিলাম সতেজতায় উদ্ভাসিত ক্যানভাস। এখন আর কোথায় আঁকাআঁকি করবে বল! তোমার অনিচ্ছুক ঠোঁটতুলি আমার খসখসে ত্বকে এসে স্নিগ্ধতা আর তীব্রতার যুগল ধারাপাত ভুলে যায়। আমি কী ভীষণ কুৎসিত হয়ে গেছি! জানি তারপরেও আমাকে ভালোবাসো, ভালোবাসবে আরো কিছুদিন, হয়তোবা যতদিন বেঁচে আছি তার চেয়েও বেশি দিন... কী এসে যায় তাতে! হ্যাঁ, আমরা সবাই হয়তো স্বার্থপর খুব আপেক্ষিকভাবে চিন্তা করলে। আমি সুন্দর হতে চাইছি শুধু তোমার জন্যে? না রে না! আয়নায় যখন নিজের ডাইনীমূর্তি দেখি, শিউরে উঠি। দিনের পর দিন সৌন্দর্যস্মৃতির ভুতুড়ে কঙ্কাল আর বর্তমানের কদর্য অবয়বকে একসাথে বসে ঠাট্টা-তামাশা আর গুলতানি করতে আমিই তো দেখি, তুমি দেখো না, তোমরা দেখো না। এদের বদ রসিকতা বরদাস্ত করতে হয় বাধ্য হয়ে, এমন কী এরা আমাতে উপগতও হয়। আমার ঘা, ঘামাচি, ঘামে মুখমেহন করে। এই দুটো অমানবিক আর কামুক চরিত্রকে একটিবারের জন্যে শিক্ষা দিতে হলেও আমাকে সুন্দর হতে হবে। কেউ আবার ভুল করে মনের সৌন্দর্যের গালভারি উপঢৌকন নিয়ে এসো না! ছুড়ে ফেলে দেবো, বিচ্ছিরি খিস্তি করব...ওরা আসছে...ওরা আসছে...
*
-হ্যালো বিউটি কুইন! আরে আজ তোমাকে যা সেক্সি লাগছে না! খাসা মেয়ে তুমি।
সৌন্দর্যস্মৃতির কঙ্কালটা আড়ম্বর করেই আসে বাতি নিভিয়ে দিলে। তোমরা কেউ দেখতে পাও না। আমি গুনগুনিয়ে গাই
"সুন্দর হব, সুন্দর হব একটু একটু করে..."
-রাতের বেলাটা স্মৃতি রোমন্থনের জন্যে বেশ ভালো সময়, কী বলিস? আহা! যেবার তুই কলেজের ব্যাচমেটদের সালতামামিতে "ন্যাচারাল বিউটি" খেতাব পেলি কেমন লেগেছিলো রে?
"নেবো এই পৃথিবীর যত সুন্দর দুটো হাত জড় করে..."
গেয়ে চলি আমি।
-তোর গানের গলাটাও জোস্ ছিলো। এখন তো হাই স্কেলে গাইতে গেলে ব্রঙকাইটিস রোগীর মত কাশবি। ছি ছি!
-তুমি আমার সাথে এমন কর কেন?
-কেমন করি সোনা? আমার কাছে তো তুমি এখনও সুন্দর আছো। আমি ছাড়া তোমাকে কে ওরকম আদর করবে বল? দেখি, পাজামাটা খোল তো, উরুর ঘা, পাঁচড়াগুলোতে আদর করে দিই।
তার লকলকে ধারালো জিভ আমার উরুসন্ধিতে বিবমিষা জাগায়। একটু পর তার দোস্ত এসে যোগ দেবে এতে। আমার বর্তমান কুৎসিত অবয়ব খোলস ছেড়ে বের হয়ে আমাকে জাপটে ধরবে। অর্গি চলবে অর্গি চলবে অর্গি চলবে সারারাত।
-আরেকটু কোকেইন নিবা? এক স্নিফ? হু?
আমি নিরুত্তর চেয়ে থাকি চলতি রাত আর স্মৃতির কালোর থাবায় কন্ঠরূদ্ধ হয়ে। এখন ওরাই কথা বলবে, জানি আমি। এমনটাই হয়ে আসছে প্রতিরাতে, তোমরা জানো না।
-আমাদের বিউটি কুইন ঢাকা শহরে বসে কোকেইন নিতো চিন্তা কর! ভালো কানেকশন ছিলো। বয়ফ্রেন্ডটাও ছিলো সেরকম।
বয়ফ্রেন্ড! চুমুচিত্রকর! যে আমাকে লেবুপাতার রুমাল দেবে বলেছিলো, আর...
-কো কো কোকেইন! ক্যান ক্যান ক্যান্সার!
-সে বলেছিলো কোকেইন ইজ আ গ্ল্যামারাস ড্রাগ।
-ভুল তো কিছু বলে নি! লুক এ্যাট হার। আইন্ট শি গ্ল্যামারাস?
-আমাদের কাছে তো অবশ্যই! খিক খিক খিক। তবে বাকিদের ব্যাপার বলতে পারবো না।
-পারবি ঠিকই। ঢং করিস কেন? দ্যাখ না, সুন্দর হবার জন্যে কেমন পাগল হয়ে উঠেছে?
ওদের কথোপকথন চলতে থাকে। সাথে টিটকারি এবং অর্গি। প্রতিরাত ধর্ষণ। হাহাহা আমার মত কুৎসিতকে দেখেও কারো যৌনস্পৃহা জাগ্রত হতে পারে?
-ইউ নো হোয়াট? ইউ আর আ ফাকিং নার্সিসিস্ট জাঙ্কি শিট!
-তোমার জন্যে একটা গান গাইবো বিউটি কুইন! তোমাদের গ্রুভি পার্টিতে খুব জোরে বাজাইতা বলত কোনটা? আরে এই মুহূর্তে এরিক ক্ল্যাপটন ছাড়া আর কে বেশি প্রাসঙ্গিক হতে পারে?
"If you wanna hang out
You've gotta take her out
Cocaine
If you wanna get down
Down on the ground
Cocaine
She don't lie
She don't lie
She don't lie
COCAINE"

কোকেইন, গ্রুভ পার্টি, এ্যালকোহল, মারিজুয়ানা, এক্সট্যাসি, ওল্ড স্কুল রক থেকে ব্ল্যাক মেটাল। কোনটা আমাকে খেলো? আমি কী অনুতপ্ত? জীবনটাকে এরকম খেলো করে ফেলেছি বলে? না! আমি সবসময় সুন্দর হয়ে বাঁচতে চেয়েছিলাম। সুন্দরের সঙজ্ঞা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক হতে পারে। আমার কাছে সুন্দর মানে ছিলো বাহ্যিক চাকচিক্য, মিউজিক, ড্রাগস এবং নিরামিষ-অবশ্যই না! তার সাথে মিশতে গিয়ে আমি জেনেছিলাম, এগুলো গ্ল্যামারাস। এখন! এখন এই ধর্ষণকবলিত অবস্থায়ও উঠে দাঁড়িয়ে থাপড়াবো, যদি কোন আঁতেল এসে বলে আমার রোগসমূহের পেছনে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ভূমিকা কীরকম ছিলো। আমি সেটা উপভোগ করেছি। টাইম মেশিনে করে নিয়ে গেলে আবারও কোকেইন নেবো, সারারাত নাচবো সবার সাথে, ঘুমুবো একজনের সাথেই। তার সিফিলিস আছে বলে সন্দেহ করে প্রতিরোধক ব্যবহার করব না, কজ আই ফাকিং লাভ দ্যাট মিট ইনজেকশন!

খেয়াল করি নি কখন আমি দাঁড়িয়ে পড়েছি এই দূর্বল শরীর নিয়ে। খেয়াল করি নি কখন আমি কঙ্কাল এবং খোলসের আলিঙ্গন ভেদ করে চিৎকার শুরু করেছি। যখন সম্বিত ফিরে পেলাম দেখি,ধর্ষকামী দুজন বিমর্ষ মুখে বসে আছে। দেখে আমারই মায়া লাগলো। কন্ঠে কোমলতা এনে বললাম,
"যাও, আর এসো না। লাভ নেই"
তারা সম্মতি জানিয়ে আমার ভেতর সেঁধিয়ে গেলো। ভোর হচ্ছে তখন।

তারা আর আসে নি কখনও
*
আবারও একটা ক্লান্তিকর দিন আসে বেতোরোগী হাঁফ ধরা বুড়োর পিঠে করে। বুড়োদের আমি ঘৃণা করি। উমম... ঠিক তা না। বুড়ো হতে ঘৃণা করি। বুড়োদের কাছ থেকে সহানুভূতি পেয়ে চলেছি প্রতিনিয়ত। নানা-নানু,দাদা-দাদী... আচ্ছা এসব সহানুভূতির যোগজীকরণ করলে কি আমি সুন্দর হতে পারবো? আমি আমার গোপন হ্যান্ডব্যাগে জমাচ্ছি এসব। ইদানিং রাতের বেলা নতুন একজন আসে আমার কাছে, সে দিয়েছে। তার পরিচয় কখনও স্পষ্ট করে বলে না। তবে আমার ধারণা, যেই দুই ব্যাটাকে ভাগিয়েছি তারাই একীভূত হয়ে ছদ্মবেশে আসে। সে অনেক ভালো ভালো কথা বলে। সুন্দর স্মৃতি, দূরন্ত শৈশব, সবুজ ঘাস, এবং...লেবুপাতার রুমাল।
-তুমি আসলে কে বলত?
-তোমার হ্যান্ডব্যাগটা দাও তো। দেখি কতটুকু জমিয়েছো।
-কী?
-সহানুভূতি, ভালোবাসা, চুমু, স্নেহ, আদর...
-এসব দিয়ে কি আমি সুন্দর হতে পারবো? আমি সুন্দর হব...
-...একটু একটু করে...
-সত্যি এটা সম্ভব?
-সম্ভব কী না জানি না, কিন্তু সবাই তাই চায়।
-সবাই আমাকে সুস্থ দেখতে চায়, সুন্দর না।
-সুস্থ না হলে সুন্দর হবে কেমন করে?
-সুস্থ হলে হাজার বিধিনিষেধ, আমি পারবো না। আই নো মাই ডেস্টিনি। গান শোনো, সেক্স পিস্তলের।
"I've lived a life that's full
And each and every highway
And that, much more than this
I did it my way
Regrets I've had a few
But then again, too few to mention
I did what I had to do
I saw it through without exemption
I've planned each charted course
Each careful step along the highway
And more, much more than this
I did it my way..."
বুঝলা কিছু? বোঝো নাই। তোমার চেয়ে ঐ দুইজন ভালো বুঝতো বরং। নাও, এখন কিছু ডায়লগ দাও! জীবন সম্পর্কে মোটিভেশন, পিতা মাতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য, শিক্ষকের মর্যাদা, প্রেমিক নবাবজাদা হাহাহাহাহাহাহা!

সে চুপ করে থাকে। আমি রেগে যাই।
- কী হল? চুপ করে আছো কেন? বল!
-না।
-কেন না? কিছু বল! বল! বল! বল! বল!
-না।
-ডোন্ট ইউ পিপল কেয়ার এবাউট মি? আ লিটল?
-হ্যান্ডব্যাগটা রাখো। আমি এখন যাই। দেখা হবে আবার।

সে চলে যাওয়ার পরে হ্যান্ডব্যাগটা খুলি আমি। এক আশ্চর্য মাদকতাময় গন্ধে সুরভিত হয়ে ওঠে ঘর। কোকেইনের মত তীব্র না। স্নিগ্ধ। কোমল। ঘরোয়া। চেনে চেনা। গন্ধগুলো আমি চিনতে পারি সব! বাবার পুরোনো ট্রাঙ্কের জঙধরা নেশাতুর গন্ধ। রান্নাঘর থেকে বেরুলে মা'র শরীর থেকে ডিম-সাবান-পেঁয়াজের এক অদ্ভুত মোহময় গন্ধ বেরুতো, সেটা। নানুর পানদানী, সাজুগুজু খালামনির জর্জেটফুলের গন্ধ, প্রিয় পুরুষের লেবুপাতা গন্ধ...আমাকে আমোদিত করে। আমাকে আচ্ছন্ন করে। আমি কাতর স্বরে বলতে থাকি, আমাকে ভালোবাসা দাও, স্নেহ দাও,আদর দাও...

"হাত বাড়াও, টেনে নাও
এখনি এখনি এখনি..."

আর এসবের সংস্পর্শে কি আমি সুন্দর হয়ে উঠবো আবার? আরো আরো আরো কিছুর প্রত্যাশায় হ্যান্ডব্যাগটা খুলি।

একটা আয়না। দুমুখো। একপাশে আমার প্রিয়জনদের দেখতে পাই। হাসিমুখ। ভরাচোখ। আশ্বাস। নির্ভরতা। ভালোবাসা।
আরেকপাশে আমার কদাকার মুখ। খুব কি কদাকার? চুলগুলো একটু বেড়ে উঠেছে না? ত্বকের রুক্ষতা কিছুটা বিলীন হয়েছে না? ওষ্ঠ এবং অধরে চুম্বনচিত্র আঁকতে আসবে তো লেবুপাতার রুমাল নিয়ে নরকের রাজপুত্র! জানালার শার্সি খুলে দিলে বৃষ্টি এবং বাতাসের রুপকথারা আমায় তাদের একজন করে নেবে? আমি সুন্দর হচ্ছি! একটু একটু করে!
-তুমি সুস্থ হচ্ছ।
সেইজন। আবার এসেছে। যে আমাকে হ্যান্ডব্যাগটি উপহার দিয়েছিলো।
-আমি সুস্থ হতে চাই না! ইট উইল অল বি দ্যা সেইম!
-আমরা চাই।
-তোমরা চাও?
-তুমি চাও না যে আমরা চাই?
তার এহেন কৌশলী প্রশ্নে আমি অপ্রতিভ হই ক্ষণিকের জন্যে।
-হ্যাঁ চাই।
-তাহলে?
-তাহলে কী?
-হ্যান্ডব্যাগটা রাখবে নাকি নিয়ে যাবো?
-থাক!
-আমি কী আবার আসবো?
-এসো...

*
ব্যাগটার চেইন আঁটকে গেছে, কী মুশকিল! অনেক কসরৎ করে তবেই খোলা যায়। আমার ঘরের দরজাটাও অদ্ভুত আচরণ করছে। যেন নিজের ইচ্ছেমত চলে! কখনও খিল এঁটে বসে থাকে, প্রিয় আগন্তুক চাইলেও আসতে পারে না। কখনও হাট করে খোলা থাকে, স্মৃতির কঙ্কাল আর কদর্যতার খোলসদেহ হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে।

আমি কখনও সুঘ্রাণক্রেতা। কখনও আয়নামহলের রাজকন্যা, কখনও বাঁদী! কখনও আশান্বিত। কখনও ধর্ষিত। কখনও বিজয়ী।

আসলে আমি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবো নাকি জীবনকে ভালোবাসবো, সুস্থ হব নাকি সুন্দর হব এইসব প্রশ্নে দ্বিধাগ্রস্থ। অবশ্য ঘোরের ঘেরাটোপে বসবাসকারী কে'ই বা পারে সঠিক সিদ্ধান্তে অটল থাকতে!

কেউ কেউ থাকে এরকম...



১২৬টি মন্তব্য ১২৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×