কলেজে পড়ি তখন। হারম্যান মেইনার, ১৯৯৯ সাল। একজনের সাথে অন্যরকম একটা বন্ধুত্ব হয়ে গেলো। বেশ গভীর বন্ধুত্ব। এমন ঘনিষ্ঠতার জন্যে তার আউট অফ দ্যা বক্স চিন্তাধারাই প্রধান কারণ ছিলো। আমরা তখন লিখতে শুরু করেছি। পাঠক বলতে তার লেখার আমি (এবং আরো দুই একজন), আর আমার বেলাতেও তাই। সে ছিলো অতিমাত্রায় পিউরিটান। পর্ন, সেক্স এসবের ব্যাপারে তার তীব্র অনীহা ছিলো। চারিপাশের বেশিরভাগ জিনিসই তার পছন্দ হতো না, বলা যায় অনেকটা নাক উঁচু টাইপ ছিলো সে। তার বিচিত্র চিন্তাধারার একটি উদাহরণ দেই-
একদিন ফিজিক্স ল্যাবে আমরা কাজের ফাঁকে গল্প করছিলাম। প্রসঙ্গত মেয়ে, বিয়ে এসব চলে এলো। তার বিবাহপরবর্তী আচরণ সম্পর্কে সে ঐতিহাসিক একটি বক্তব্য দিয়েছিলো। যা আমি আজও স্মরণ করি। "বিয়ের পর আমি অন্তত তিন মাস মেয়েটির সাথে শারীরিক সম্পর্কে যাবো না। একজনকে ভালোভাবে জেনে-বুঝে তারপরই না তার শরীরে প্রবিষ্ট হওয়া যায়। বিয়ের রাতেই যারা মিলিত হয়, তারা পশু!"
মজা পেলেন? মজা কিন্তু শেষ হয় নি এখনও। সে আরো বলেছিলো, "বিয়ের এক বছরের মধ্যে যদি বাচ্চা হয়ে যায়, তাহলে আমার মা, ফুপি, বোন এরা আমার সম্পর্কে কী ভাববে? ছিঃ ছিঃ!"
আমার এই বন্ধুটির কথা খুব মনে পড়ছে এই ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে। এই ফেব্রুয়ারিতেই কেন তাকে মনে পড়ছে তার পেছনে কারণ আছে। সে আমার জন্মদিনে তারাশঙ্করের 'কবি' উপন্যাসটি উপহার দিয়েছিলো। আর লিখেছিলো বেশ আবেগী ভাষায় কিছু কথা। সেখানে সে আমাকে ভবিষ্যতের একজন বড় লেখক আখ্যায়িত করেছিলো। এরকম আরো কিছু কথা লিখেছিলো যেগুলোর যোগ্য আমি ছিলাম না, অন্তত সেই সময় মনে করতাম না। বিরক্ত হয়ে ঐ পৃষ্ঠাটিই আমি ছিড়ে ফেলেছিলাম। এ কথা শুনে সে বেশ আঘাত পেয়েছিলো। আর বলেছিলো... নাহ কী বলেছিলো তা এখানে উল্লেখ করতে চাই না। সেটা বিশ্বাসযোগ্য হবে না।
তাকে মনে পড়ছে, কারণ আমি বড় লেখক হতে না পারলেও কীভাবে যেন চারটি বইয়ের লেখক হয়ে গেছি। তাকে উপহার দিতে পারতাম যদি! সে হারিয়ে গেছে। জানি না কোথায়!
সে হারিয়ে গেলেও মন্মথের মেলানকোলিয়ার ঠিকানা আছে একটি। বইমেলায় চৈতন্যের স্টলে- ৬০৪-৬০৫
অথবা নিতে পারেন রকমারি থেকে- এই লিংক থেকে
কথা হবে তো?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১৮