somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাগরকন্যা কুয়াকাটাঃ পর্ব ১

২৩ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সকাল ৭ টায় আমরা পৌছাই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত,আমাদের গন্ত্যব্যে ৷ এবার হোটেল এ উঠার পালা ৷ তার আগেই শাওন আর জুবায়ের ব্যাগ আমাদের হাতে দিয়ে দৌড় মেরেছে সমুদ্রে ৷ ওয়েস্টার্ন মোটেল আগে থেকেই বুকিং করে গেছিলাম ৷ একটু খোজাখুজির পর পেয়ে গেলাম হোটেল ৷হোটেল রুম দেখে মোটামুটি সন্তুষ্ট ৷ সবায় গোসল করে বিশ্রাম নিয়ে নিলাম ৷ কুয়াকাটা তথ্য কেন্দ্র,সমুদ্র সংলগ্ন দোকানটিতে গিয়ে ঠিক করলাম ট্রলার ফাতরার চর আর লাল কাঁকড়ার চর ঘুরার জন্যে ৷ সকাল ৯ টায় মহিপুর খাল থেকে আমাদের ট্রলার ছাড়লো ৷ খালটি কুয়াকাটা থেকে ৫ কিমি দূরে ৷ খাল পর্যন্ত আমরা গেছি ভ্যানে করে ৷ পুরো কুয়াকাটায় রিকশা চোখে পরেনি একবারো ৷ অসাধারন প্রকৃতির মধ্য দিয়ে শুরু হলো আমাদের যাত্রা ৷ দুইপাশে অনেক মাছধরার ট্রলার ৷ প্রায় ৩০ মিনিট চলার পর আমরা পৌছালাম লাল কাঁকড়ার চরে ৷ পথে পার করে এসেছি শুটকীপল্লী ৷ লাল কাঁকড়ার চরের প্রধান বৈশিষ্ট্য হাজার হাজার লাল কাঁকড়া হলেও আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো তিন নদীর মোহনা ৷ আন্ধারমানিক- নীলগন্জ- সোনাতলা নদী তিনটা একত্রিত হয়ে সমুদ্রে মিলিত হয়েছে এইখানে ৷ চরে নেমেই আনন্দে মন প্রফুল্ল ৷ হাজার হাজার লাল কাঁকড়া যেগুলো আমাদের দেখেই পালাচ্ছে ৷ আমরা সরে গেলে আবার উঠে দৌড়াচ্ছে ৷ বিনয় ছিলো রং বেরঙের ঝিনুক সংগ্রহে ব্যাস্ত ৷ আর আমি ছাড়া বাকি সবায় ব্যাস্ত কাঁকড়ার সাথে দৌড়াদৌড়ি, কাঁকড়া ধরা নিয়ে ৷ আমি ভাই এগুলো ভয় পাই তাই একটু দূরে দূরেই ছিলাম ৷ লাল কাঁকড়ার চর থেকেই দেখা যাচ্ছিলো ফাতরার চর ৷ প্রায় ১ ঘন্টা কাঁকড়ার চরে লাফালাফি করে আবার উঠে বসলাম ট্রলার এ ৷ কিছুক্ষন যেতেই শুরু হলো সাগরের স্রোত ৷ জোয়ার চলছিলো তখন,মনে হচ্ছিলো এই বুঝি গেলো ট্রলার টা ৷ সাঁতার জানা নেই তো তাই মনে ভয়টা একটু বেশীই!
৩০ ঘন্টা চলার পর পৌছালাম ফাতরার চর এ ৷ফাতরার চর এর মূল অবস্থান বরগুনা জেলার টেংরাগিরি তে ৷তবে আমাদের মত সবায় ই কুয়াকাটা হয়ে যায় এবং এই রাস্তাটাই সহজ ৷ ফাতরার চর/বন কে দ্বিতীয় সুন্দরবন বলা হয় ৷ নির্দিষ্ট একটা পথ ধরে ১০-১৫ হাটলে অপরপ্রান্তে পাওয়া যায় আবারও সমুদ্র ৷ আবারও সমুদ্র দেখে ডুব দিতে ইচ্ছা করছিলো কিন্তু হতাশ! সৈকত বটে তবে বালুর নয় পিচ্ছিল মাটির ৷ ডুব দিতে নামাটা খুবই রিস্কি ৷
তবে শত শত গাছের শিকড় হয়ে যায়গাটা সুন্দর ই লাগছিলো ৷ সবচেয়ে আকর্ষনীয় মনে হচ্ছিলো সমুদ্রের গর্জন ৷ ১ ঘন্টা নিবিড় ছায়ায় কাটিয়ে ফের উঠলাম ট্রলারে ৷ ফিরবো কুয়াকাটা ৷ দুপুর ১ টা নাগাদ ফিরে আসলাম কুয়াকাটায় ৷ ফিরে এসেই নেমে গেলাম সমুদ্রে ৷ প্রায় আড়াই ঘন্টা লাফালাফি করছি সমুদ্রে ৷ অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলো বিনয় এর সাথে সমুদ্রের স্রোতে ওর ডান হাতটা ডিলোকেট হয়ে গেলো ৷ দুপুরের খাবার খেতে আসলাম খাবার-দাবার হোটেল এ ৷ হোটেলের পরিবেশ দেখে ঢুকেছিলাম তবে ব্যাবহার আর স্বাধ এ সম্পুর্ন হতাশ!
বিকাল টা কাটিয়ে দিলাম ঘুমে, শরীর ছিলো খুব ই ক্লান্ত ৷ সন্ধ্যায় শুরু হলো মারাত্নক ঝড় ৷ সাথে আছে বজ্রপাত আর বিদ্যুৎ চমকানো ৷ হোটেলের বারান্দায় বসে বসে ঝড় দেখছিলাম আমরা ৷ রাতে খাবার খেতে গেলাম,এবার ঢুকলাম মোটামুটি পরিবেশের জমুনা হোটেল এ ৷ তিন প্লেট ভাত খেয়েছি,বুঝতেই পারছেন কতটুকু তৃপ্তি মিটেছে আমার! তারপর হোটেল ফিরে কলব্রীজ খেলা আর ঘুম!
এভাবেই কেটেছে কুয়াকাটায় আমাদের প্রথম দিন ৷
কিছু ছবিঃ
১) আমরা কিছুজন


২)পথের প্রকৃতি



৩)শিকড় আর আমি


৪)শত শত শিকড়



৫)মাটির পিচ্ছিল সৈকত এ শাওন আর জুবায়ের


৬)ঝিনুকের সমাহার


৭)সমুদ্রে লাফালাফি


৮)প্রকৃতিতে মুগ্ধ আমি


৯) তানভীর ভাই জ্যান্ত কাঁকড়া খায়


১০) জুবায়ের সেই ভয় পাইছিলো


১১)ফাতরার বনে আমরা সবায়


১২) ফাতরার বনের প্রবেশ পথ ও ফুল



১৩) সেল্ফি স্টিক এ কাঁকড়া


১৪)কাঁকড়া দিয়ে শেষ করলাম


চলবে........
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:০২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×