somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাগরকন্যা কুয়াকাটাঃ পর্ব ২

২৮ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের দিন রাতেই হোন্ডার ব্যাবস্থা করে আসছিলাম ৷ ভোর ৫ টায় হোটেলের সামনে ৪ টা হোন্ডা হাজির ৷ সবায় রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম ৷ প্রথম লক্ষ্য গঙ্গামতীর চর,যেখান থেকে সবচেয়ে ভালো ভাবে সূর্যোদয় দেখা যায় ৷ প্রায় ২০ মিনিট সাগরের তীর ধরে চলার পর পৌছায় আমরা গঙ্গামতীর চর এ ৷ বিচ এর উপরেই অনেক ছোট-বড় আকারের গাছ ৷ গাছের নামটা জানা হয়নি! তো গাছ দেখে আমাদের গ্রুপের দুই বাঁদর শাওন আর জুবায়ের গাছের উপর উঠে সেলফি তোলা শুরু করলো ৷ তবে নিরাশ হলাম যেই সূর্যোদয় এর জন্য এতদূর এলাম খারাপ আবহাওয়ার কারনে তা আর দেখা হলোনা ৷ সূর্য ঠিক ই দেখেছি তবে সূর্যোদয় না!!
এরপর ছোট্ট একটু নদী পার হয়ে আমরা পৌছালাম কাওয়ার চর!!! সেই গ্রামীনফোনের বিখ্যাত কাওয়ার চর ৷ কুয়াকাটা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ৷ দুইপাশে সমুদ্র আর দুই পাশে খাল থাকায় কাওয়ার চর আসলে একটি দ্বীপ ৷ চরের শেষ প্রান্তে একটি ব্রীজ চরকে কুয়াকাটার সাথে যোগ করেছে ৷ কুয়াকাটার ঝাউবন এই কাওয়ার চর এই ৷ দেখতেই অসাধারণ লাগছিলো!! প্রকৃতির এক সুন্দর রূপ এই ঝাউবন ৷ ঝাউবন এ কিছু নীরব সময় কাটালাম আমরা ৷ সমুদ্রের গর্জন টা ঝাউবন এর ভিতর থেকে শুনতে মধুর লাগছিলো ৷ তারপর আবার হোন্ডায় উঠে কাওয়ার চর ঘুরলাম ৷ দুই পাশের বিশাল ক্ষেত মাঝে ছোট্ট মেটো রাস্তা আবার কোথাও পিচ ঢালা পথের দুই পাশে সারি সারি নারকেল গাছ ৷ কাওয়ার চর ঘুরা শেষে আমরা গেলাম মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির এ ৷ বৌদ্ধ মন্দির টির পাশেই রাখাইন পল্লী ৷ যেখানে রাখাইন রা কাপড় বুনে এবং বিক্রি করে ৷ বিনয় সেখান থেকে দুইটা শাল ও কিনে এনেছে ৷ আর তানভীর ভাই তার প্রিয় মানুষের জন্য ব্যাগ!
সেখান থেকে বের হয়ে জমলো আমাদের ডাব খাওয়ার আসর ৷ মাত্র ২০ টাকায় এতো মজাদার ডাব খুব কম যায়গায় পেয়েছি ৷ ডাব খাওয়া শেষে যাই কুয়াকাটা বার্মিজ মার্কেট সংলগ্ন সীমা বৌদ্ধ মন্দির এ ৷ যেখানে দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে বড় অষ্টধাতুর মুর্তি আছে ৷ তার পাশেই লোহা দিয়ে আবদ্ধ কুয়াকাটার ঐতিহ্যবাহী কুয়া ৷ যার নামেই কুয়াকাটার নামকরণ করা হয়েছে ৷ সকাল ১০ টা নাগাদ ফিরে আসি কুয়াকাটা শহরে ৷
এবার পালা বিখ্যাত লেবুরচরে যাওয়ার! কীসের জন্যে বিখ্যাত??
কাঁকড়ার জন্যে ৷ আমাদের ও উদ্দেশ্য কাঁকড়া খাওয়া ৷ কুয়াকাটা থেকে হাতের ডান দিকে ৬ কিমি গেলেই লেবুরচর ৷ লেবু নেই তবে কাঁকড়া ভাজি আছে ৷ সেখানে গিয়ে প্রথমে ৩ টা কাঁকড়া ভাজি করতে বললাম ৷ কেও খাবে তো কেও খাবেনা ৷ কাঁকড়া ভাজি করার ফাকে আমরা আবার ও ঘুরে আসলাম লাল কাঁকড়ার চর/তিন নদীর মোহনা ৷ লেবুর চরের পাশেই লাল কাঁকড়ার চর ৷ সেখানে মজা করে কাঁকড়া কে সিগারেট খাওয়ানো হলো!!
ফিরে এসে দেখি আমাদের কাঁকড়া ভাজি রেডি ৷ ৩ টা শেষ হলো ৩ মিনিট ও লাগেনি ৷ কেও বাদ নেই সবায় ই খেলো ৷ তখন বুঝলাম লেবুর চরের বিখ্যাত হওয়ার স্বার্থকতা ৷ এতই সুস্বাদু যে পরে আরও ২ টা খেয়েছি আমরা ৷ এবার উঠার পালা! কিন্তু না তখনই দোকানদার সমুদ্র থেকে ধরে নিয়ে আসলো টুনা আর বগনা মাছ ৷ তানভীর ভাই দেখে বললো ফাহাদ টুনা মাছ সাংঘাতিক মজার ৷ পরে আবার ১ টা টুনা আর ১ টা বগনা ভাজি করে খেলাম ৷
টুনা মাছ! উফ অসাধারন ৷ এখনও যখন ই ভাবি টুনা মাছের কথা আমার সেই স্বাদ টা মনে পরে যায় ৷ বলতে গেলে টুনা আর কাঁকড়া আমাদের ভ্রমনকে আজীবন সৃতির পাতায় গেঁথে রাখলো!!
দুপুরে কুয়াকাটা ফিরে এসে আবার সমুদ্রে লাফালাফি ৷ বিকালে ছিলাম সমুদ্রের সিট গুলোতে ৷ প্রকৃতির সাথে মানুষের সখ্যতা দেখছিলাম ৷ শেষ বিকেলে শাওন এর ঘোড়ায় চড়া ৷ শাহীন মামার ঝালমুড়ি আমার একলাই চার প্লেট পেটে যাওয়া ৷ পাকা আমের বানানো! সব অসাধারণ ছিলো ৷
রাত ৮ চার কুয়াকাটা এক্সপ্রেস বাস এ করে আমরা ঢাকার ফিরতি পথে রওনা হও ৷ তারপর পুরো কাহিনী টা শুধু ঘুমের রাজ্যে ৷ সকাল ৬ টা আমরা সবায় নিরাপদ ভাবে ঢাকায় পৌছাই ৷
এভাবেই শেষ হয় আরও একটি অসাধারণ ভ্রমণ ৷
কিছু ছবিঃ
১) সারি সারি নারকেল গাছ


২)ঝাউবনের মাঝে আমি


৩) কাওয়ার চর আর কুয়াকাটার সংযোগ সেতু থেকে তোলা


৪)শাওন আর জুবায়ের এর বাঁদরামী


৫)ডাবের সমাহার


৬)আচার এর সমাহার


৭) সীমা বৌদ্ধ মন্দির এ বিনয় আর তানভীর ভাই


৮)লাল কাঁকড়া আর সিগারেট



৯) জ্যান্ত কাঁকড়া ভাজির জন্যে রেডি


১০)কাঁকড়া খাওয়া শুরু ও শেষ



১১) এই সেই টুনা মাছ


১২)পাকা আম


১৩) সূর্য দেখেছি কিন্তু সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত নয়


১৪)বিলাসের এপিক ওয়ান!!


১৫)গঙ্গামতীর চর এ


১৬) নদী পার হই


১৭)কুয়াকাটার কুয়ার সামনে


১৮) কাঁকড়া খাওয়ার জন্যে আমরা রেডি


১৯)মুর্তি সাথে


২০) সমুদ্রের সিট গুলোতে

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:০৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×