somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরুপ সৌন্দর্যের ছোয়াঃ বিছানাকান্দি,পাংথুমাই

২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পরদিন সকাল ৬ টা বের হওয়ার ইচ্ছা ছিলো,কিন্তু ফ্রেশ হয়ে বের হতে ৮ টা বেজে গেলো ৷ অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পর হবিগঞ্জ থেকে সিলেটগামী বাসে টাই পেলাম ৷ সিলেট শহরে পৌছাতে পৌছাতে ১১ টা ৷ বিন্দুমাত্র বিলম্ব না করে ব্যাগ গুলো রাখার জন্যে আম্বরখানার হোটেল প্রবাসী তে রুম নিলাম ৷ হোটেল এর ম্যানেজার আমাদের বিছানাকান্দির রিজার্ভ সিএনজি ঠিক করে দিলো ৷
এতো মারাত্নক খারাপ রাস্ত আমার জীবনে খুব কমই দেখেছি ৷ রাস্তাটাও বিশাল, চলছি তো চলছি .. রাস্তার আর শেষ নেই ৷ যত রাস্তা যাচ্ছি ততো অনেকদিনের ইচ্ছা পূরন হওয়ার আকাঙ্খা ৷ অবশেষে ১ঃ৩০ টার সময় পৌছালাম আমরা হাদারপাড় এ ৷ হাদারপাড়ে নৌকার মাঝিদের সিন্ডিকেট দেখে চক্ষু আমার কপালে!! আকাশচুম্বী দাম হাকাচ্ছে ৷ শেষে কোনো উপায় না পেয়ে আমাদের মতো অন্য ৪ জনের গ্রুপ এক হয়ে একটা ট্রলার ঠিক করলাম ৷ প্রথম যাত্রা পাংথুমাই/বড়হিল ঝর্না ৷ মজার বিষয় হলো এই ভরা বর্ষাতেও ট্রলার মাঝ নদীতে আটকে যায় ,হাটু পানির কারনে!!
দুপাশে গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপ, সামনে ভারতের বিশাল পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে প্রায় ১ ঘন্টা পর পৌছালাম পাংথুমাই ৷ ছবিতে যতটুকু সুন্দর,সরাসরি তার থেকে হাজারো গুন বেশী অপরুপ ৷ নৌকায় করে ১০ মিনিটের জন্য ভারতের জলসিমানায় থাকা হলো আর ঝর্না টা আরেকটু বেশী সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্য ও হলো আমাদের ৷ এবার ফেরার পালা ৷ প্রায় ৪০ মিনিট পর আমরা পৌছাই স্বপ্নের বিছানাকান্দি তে ৷ সময় তখন ৩ঃ৪০, হাতে সময় খুব কম ৷ বিলম্ব না করে শরীর টা এলিয়ে দিলাম হিমঠান্ডা পানিতে ৷ মনে হচ্ছিলো যেনো আমার জীবনটা স্বার্থক ৷ পানির স্রোত আমাকে টেনে নিয়ে যেতে চায়,তাই বুদ্ধি করে বড় দুইটা পাথরের মাঝখানে বসে পরলাম! এবার আর পানির বাহাদুরী নাই!!
দেখতে দেখতে ফিরার সময় হয়ে গেলো ৷ ভারতীয় পন্য কিনাকাটা করে ফের ট্রলার এ উঠে বসলাম ৷ মনটা আজ বড্ড বেশীই স্বার্থক ৷ মনে ভাবনা একটাই জীবনটাকে আরও বেশী স্বার্থক করতে হবে ৷
এবার একটা মজার ঘটনা,ফিরার পথে দেখি একটি ট্রলার বন্ধ হয়ে আছে ৷ ইন্জিন নষ্ট ৷ ট্রলারের মাঝি আমাদের বারন করছেন উনার ট্রলার টা আমাদের সাথে বেধে নিতে ৷ আমাদের মাঝি রাজি তবে বিনিময়ে কিছু তেল নিলো অন্য মাঝি থেকে ৷ ফির চলতে শুরু করলো, কিন্তু কিছু পথ যাওয়ার পর আমাদের ই বিপদ ৷ তেল শেষ ট্রলার বন্ধ ৷ বৈঠা দিয়ে টানতে হবে,এই দেখে অন্য মাঝি তার ট্রলার টা ছুটিয়ে নিলো ৷ আর সাথেই সাথেই আমাদের মাস্টারমাইন্ড মাঝি দেখালো তার কারিশমা,ট্রালর চালু দিতেই স্টার্ট ৷ মুহুর্তেই চলে আসলাম হাদারপাড় এ ৷ মাঝি আমরা যেনো ঠিকভাবে ফিরতে পারি তাই প্লান টা করলো!!
এবার সিএনজি তে উঠে শহরে ফেরার পালা ৷ আবারও সেই ভয়ানক খারাপ রাস্তা পেরিয়ে ৮ টায় পৌছালাম আম্বরখানা ৷ রাতের খাবার খাই বিখ্যাত পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টে ৷ যেমন তার সুনাম তেমনই তার খাবার ৷ এতটাই তৃপ্তি মিটিয়ে খেয়েছি যে খাওয়ার পর দাড়িয়ে থাকা টা কষ্টকর লাগছিলো ৷ রাত ১১ঃ৩০ টার হানিফ বাসের টিকেট কাটা ছিলো ৷ শেষসময় টুকু হযরত শাহজালাল(রহঃ) এর মাজারে কাটালাম ৷ বাসে উঠার পর তো ঘুম,তবে বাসটা ছিলো পাঙ্খা ৷ রাত ৩ঃ৫০ এই আমরা ঢাকায় পৌছে গেলাম ৷ এভাবেই শেষ হলো আমাদের আরও একটি ভ্রমন ৷

কিছু ছবিঃ
১)শাহজালাল (রহঃ) এর মাজারের একটি অংশ


২)পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট


৩)আমরা সবায় বিছানাকান্দি তে


৪) শান্তি রে শান্তি


৫)পাংথুমাই সামনে


৬)ভারতে আমরা


৭)নদী,পাহাড়,আকাশ আর বিনয়


৮) আমরা সবায় পাংথুমাই এ


৯) আমি


১০) মাঝ নদীতে ট্রলার আটকানো

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩০
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×