somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘালয় ভ্রমনঃ পর্ব ৪(সিন্তুং,উমিয়াম)

২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এবারের এমন এক গন্তব্য যা আমাদের ড্রাইভার ই চিনেনা। আজ রবিবার, সোহরা তে আজ কোনো খাবারের দোকান ও খোলা দেখছিনা।
ওয়াহ রাশি ফলস, আমার জন্নে এক ভালবাসার নাম। ২০১৫ সালে প্রথম দেখেছিলাম, কিন্তু অস্বাভাবিক দূরে হওয়ায় যাবো কিনা জানতাম না। তবে এবারের ট্রিপে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যাবোই । পথ ছুটছে অজানায়, বরাবরই আমার ম্যাপ মুখস্ত রাখার স্বভাব। এক আমার ভরসায় ড্রাইভার ও চলতে শুরু করলো। আবহাওয়ার কোনো পরিবর্তন আজো হয়নি, আশেপাশে মেঘ ছাড়া আর কিছুই দেখার বালাই নাই। অনেক পথ পেরিয়ে পৌঁছেছি জোকশা নামের একটি ছোটো শহরে, এখানেই প্রথম বোর্ড এ সিন্তুং এর নাম দেখতে পারলাম এখান থেকে আরো ৬০ কিলো দূরে। মাঊকিন্রো শহর থেকে চিকন সরু একটি রাস্তা চলে গেছে সিন্তুং এর দিকে। রাস্তার ধারের সৌন্দর্য দেখার মত, হঠাত হঠাত মেঘ সরে গিয়ে একটু ভেল্কি দিতো দুরের পাহাড়ের আর সবুজের।


রাস্তার অবস্থা বেশি একটা ভালোনা, তাই দূরত্ব যেন বহুগুনে বেড়ে গেছে। পথ চলতে চলতে এখন এমন এক যায়গায় আমরা চলে এসেছি যার চতুরদিকে বিস্তৃত মাঠ ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ছেনা। জনমানুষের কোথাও কোনো দেখা নাই, মনের মদ্ধে কেমন জানি একটা ভয় কাজ করতে শুরু করলো। ড্রাইভার আমার দিকে তাকায়, আমি ড্রাইভার এর দিকে তাকায়। সবায় এ যেনো নিরিহ। এরকম প্রায় ৩০ মিনিটের মত এক প্রকার শুন্নে চলছিলাম। বহুদুর পর হঠাত একটি ঘর দেখলাম, এবার যেনো ভয় আরো বেড়ে গেলো। কোনোমতেই ভারতে আছি মনে হচ্ছিলো না, চায়না অথবা নেপাল এ আমরা নিশ্চয় চলে এসেছি। দুপুর ২ টা বাজে আমরা পাশাং নামে একটি গ্রামের কাছে এসে পৌঁছেছি , এখানে এসে হাফ ছেড়ে বাচলাম সবায়। কারন সামনে বিশাল একটি গ্রাম , কিছু গাড়ি ও দেখা যাচ্ছে। তার চেয়েও বড় কথা হলো বোর্ড এ সিন্তুং আর মাত্র ১১.৫ কিলো দূরে দেখাচ্ছে। মন খুশি কিন্তু পরক্ষনেই বিপদ। এখান থেকে শুরু গ্রামের কাঁচা রাস্তা।
একের পর এক পাহাড় পেরিয়ে বিকেল ৩.৩০ এর সময় পৌঁছাই ওয়াহ রাশির গেটে। আমি যানতাম এখান থেকে আরো কিছু দূর ট্রেক করতে হয়। তবে বরাবরের মত মেঘালয় রাজ্যের অসাধারন বেবস্থায় আমি মুগ্ধ , এই ঝরনায় যাওয়ার পথ ও সিড়ি বাঁধানো। ১০ মিনিটের মত সিড়ি ধরে নেমে প্রথম দেখা পাই স্বপ্নের।


আরো ৫ মিনিটের মত নিচে নেমে সামনাসামনি দেখা পাই ওয়াহ রাশির।


ওয়াহ রাশির সর্বমোট ৭ টি ধাপ, এই ঝরনার পানি থেকেই একটি নদির সৃষ্টি। কিছুদুর গিয়ে ঝরনার শেষ দুটি ধাপ দেখতে পেয়েছিলাম আমরা।


এবারে ফেরার পালা,আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়নি বিন্দুমাত্র। পরবর্তী তে লাইতলুম যাওয়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সন্ধে হয়ে যাওয়ার কারনে শিলং শহরেই পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নেই। রাতের শিলং শহর এক ভালোবাসার নাম, কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি কোনো দালানকোটার শহর আমাকে এতটা মুগ্ধ করবে।


রাতে শহর টা ঘুরে দেখলাম হালকা।


ভোর হলো, আজ ফেরার পালা। শেষ সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা ঘুরতে চলে গেলাম উমিয়াম লেকে। শহর থেকে খুব বেশি দূরে না। স্থানীয় রা বারাপানি লেক হিসেবেই বেশি চিনে। রাস্তার ধার থেকেই এক টুকরো শান্তি মনে হচ্ছিলো লেক টিকে । স্থির পানি, তার মদ্ধে পাহাড়ের দৃশ্য । এক কথায় অপরুপ।


শিলং শহরে ফিরে সবায় টুকটাক কেনাকাটা করে পথ ধরি নিজের দেশের। বিকাল ৫ টায় আমরা বাংলাদেশে পা রাখি, সবায় সুস্থ ভাবে ফিরে আসি মাতৃভুমিতে।
এভাবেই শেষ হয় আমাদের ৫ দিনের মেঘালয় ভ্রমন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×