প্রায় একি সময় পৃথিবীতে ওরা ৮ জন নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত ছিল। নিজ নিজ কাজে দক্ষতা অর্জন করলেও fate ছিল একেক জনের আলাদা।
ঘটনা ১:
দুপুর বারোটা। নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির science auditorium এ আজ পিন পতন নীরবতা। ৫ দিনব্যাপী seminar এর আজ শেষদিন। প্রথম দুইদিন হাসি ঠাট্টা, খাওয়া দাওয়া, পরিচিতি পর্ব নিয়ে কাটলেও শেষ তিন দিন সারা পৃথিবীর নামকরা বিজ্ঞানীদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল আমেরিকার তরুণ বিজ্ঞানী দম্পতি মার্ক আর ক্লারা সিম্পসন। কিন্তু আজ সকাল ৭ টা থেকে শুরু হওয়া সেশন এ এই দম্পতি যা বলল, তা সমস্ত বিজ্ঞানীদের এককথায় stunned করে দিয়েছে।
simpson দম্পতির research সত্য হলে পৃথিবীতে Alzheimer’s disease (বয়সকালে স্মৃতিশক্তির হ্রাস) বলে কিছু থাকবে না। বরং এমন ও হতে পারে, চিকিতসা করা তো সম্ভব হবেই। এমন কি মানুষের স্মরণ শক্তিও বাড়ানো যাবে। প্রাথমিক হতভম্ব ভাব কেটে গেলে হলঘর হাত তালি তে ফেটে পড়ল, সিম্পসন দম্পতিকে অভিনন্দন জানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন সমস্ত বিজ্ঞানীরা।
ঘটনা ২:
চাইনীজ প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও দাঁড়িয়ে আছেন জানালা সামনে। অনেক দূরে তাঁর দৃষ্টি। চীন আজ বিশ্বের বুকে এক মহাপরাক্রমশালী শক্তি। কিন্তু চীন এখনো সবচেয়ে বড় শক্তি নয়। প্রধানতম শক্তি হতে হলে অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী হতে হবে। নিজের দেশের বিশাল জনশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি না করলে ট্রাফিক জ্যাম এর কারণে সময় নষ্ট ঠেকানো যাবে না। ক্ষতি হবে লাখ লাখ টাকা। ওয়েন জিয়াবাও ডাকলেন দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী উদ্যোক্তাদের। তাদের কি দিলেন প্রজেক্ট। বিনিময়ে দিলেন সম্মান, অর্থ, সুযোগ।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাত্র ৩৮ মাসের মধ্যে তৈরি হয় বুলেট ট্রেন। এতে কাজের সুযোগ হয় প্রায় ১৩০,০০০ মানুষের। অতঃপর ২০১১ সালের জুন মাসের এক সকালে সমস্ত যাত্রীর সাথে শরিক হন প্রধানমন্ত্রী। জানা যায়, এই উদ্যোগ কে সফল করে তোলার পেছনে দুই তরূণ চাইনীজ বিজ্ঞানীর অসামান্য অবদান। কিন্তু চীন এক অদ্ভুত কারণে এই দুই তরূণ তরূণীর নাম প্রকাশ করে নাই। তবে যতদর জানা যায়, তারা অত্যন্ত সম্মানের আসনে অধিষ্টিত এবং পরবর্তী প্রজেক্ট নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ত।
ঘটনা ৩:
ভারতীয় বিজ্ঞানীরা তাকিয়ে আছেন অধীর আগ্রহে তাদের এতদিনের তৈরি মহাকাশযান এর দিকে। তাদের এত দিনের স্বপ্ন আজ পূরণ হতে চলেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই উতক্ষেপিত হবে তা। ক্রিকেট পাগল ভারত যে সত্যি মঙ্গলে যান পাঠাতে পারবে, তা নিয়ে তারা নিজেরাও সেভাবে আশাবাদী ছিলেন না। সবকিছু ভোজবাজীর মত বদলে যায় দুই তরূণ বিজ্ঞানীর নিবিড় পরিশ্রম আর অনবদ্য উতসাহের কারণে। রাম সিং আর প্রিয়া সিং দম্পতির প্রতি শ্রদ্ধা, বিস্ময়, ভালবাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকে ভারতবাসী। সমস্ত বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে ভারতের মহাকাশযান রওয়ানা হয় মঙ্গল জয়ের উদ্দেশ্যে।
ঘটনা ৪:
অন্ধকার ঘরে আপনমনে কাজ করে চলেছে যুবক। কোন দিকে তার কোন নজর নাই। কাজ টা শেষ করতে হবে সময়ের মাঝেই। কাজ শেষ হতেই যুবক সন্তুষ্টির শিষ দেয়। জানালা খুলে দাঁড়ায় খোলা বাতাসের শ্বাস নিতে। আর মাত্র ১ ঘন্টা পর ওরা আসবে ডেলিভারি নিতে। সবকিছু ঠিক আছে কিনা দেখতে যুবক আরো একবার এসে দাঁড়ায় তার সদ্য তৈরি ককটেল এর সামনে। এত কষ্ট করে তৈরি ককটেল টাকে সে আদর করে দেয় একবার, বারবার। হঠাত দুম…………
অনেক দূরের একটা ঘরে আগুন দেখা যাচ্ছে। স্বপ্না স্কুল থেকে ফিরে আসছিল বাসার পথে।আগামীকাল তার দ্বিতীয় পরীক্ষা। বাসার কাছাকাছি আসতে আসতে শুনতে পায়, “রাজিন মিয়া নিজের ককটেল এ নিজেই পুড়ছে” চারিদিকে হাহাকার। রাজিন এর বাসার পাশ দিয়ে চলে যেতে দেখা যায় অপরিচিত কয়েকজনকে।
স্বপ্না ওদের চিনতে পেরেছে। ওরাই ওর ভাইকে পথভ্রষ্ট করেছে। ভাইকে অনেক বুঝিয়েও সে ফিরাতে পারে নাই। স্বপ্না কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। ভাইবোনের এই দুনিয়া থেকে ভাইটাও চলে গেল। স্বপ্না কিছুই বুঝতে পারে না। বাড়িতে অনেক পুলিশ। স্বপ্না পাশের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে, আগামীকাল হরতাল, পরীক্ষা পিছিয়েছে। ক্লান্ত স্বপ্না ঘুমিয়ে পড়ে। সকালেই ঘুম ভেঙ্গে যায়। অবাক হয়ে দেখে সবাই পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে। স্বপ্না জানতে পারে পরীক্ষা বাতিল হয় নাই। পরীক্ষা হচ্ছে আজ। আগুনে পোড়া ঘরের দিকে একবার তাকিয়ে চোখের পানি ফেলে স্বপ্না আবার রওয়ানা দেয় পরীক্ষা সেন্টার এর দিকে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা মতি মিয়া, সুরুজ আলী অসভ্য কথার ফুলকি ছুটিয়ে দিচ্ছে। স্বপ্নার মুখ শক্ত। কিছুতে কিছু আসে যায় না। সে একাই চলেছে তার সপ্ন কে জয় করতে……………………………..
স্বপ্না মেয়েটা যুদ্ধ করে হেরে গিয়ে আত্মহত্যা করবে নাকি, সমস্ত যুদ্ধ জয় করে এই অশান্ত দেশটাকে যোগ্য নেতৃত্ব দিবে, তা দেখার জন্য মহাকাল গভীর আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে।এই ছোট্ট দেশ টা মানব সভ্যতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটা সত্য হতে হলে স্বপ্নাকে আজ সফল হতেই হবে। নাহলে যে, তার ভাইয়ের মত আরো অনেক ভাই পুড়ে যাবে, মারা যাবে সামনের দিনগুলাতে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৩৭