যিঁনি আর একটু হলে আমেরিকা দখল করে নিচ্ছিলেন। কোন মন্ত্রে? কোন্ সে জাদু? একটু ঘুরে দেখার তীব্র ইচ্ছা হল।
ছবি: রজনীশের সমাধির সামনে ধ্যানমগ্ন অনুসারী।
ওশো রজনীশের সাথে পরিচয় যখন ডা. জাকির নায়িকের লেকচার গোগ্রাসে গিলতাম, সেই সময়ে। সত্তর ঘন্টার উপর জাকির নায়িকের লেকচার রেকর্ড করেছিলাম টিভিকার্ড দিয়ে। পরে যথাযথ কারণে নায়িক সাহেবকে ছুঁড়ে সামনে এগুতে হয়।
তখন পরিচয় এটুকুই ছিল, রজনীশ হলেন একজন নতুন ধর্মবেত্তা। কথাটা মোটামুটি সত্যিই। এখনো মনে পড়ে, রজনীশের কবরে লেখা, নেভার বর্ন, নেভার ডাইড।
ওশো শব্দটার মানে, বৌদ্ধিক হাই-প্রিস্ট। কোন একটা বৌদ্ধ মনাস্টারির খতিব সাহেব। রজনীশ মানে রজনীর ঈশ্বর। অর্থাৎ কলির অবতার। ইসলামেও এমন একটা ধারণা আছে- শেষ নবী হিসাবে রাসূল দ. এবং শেষ ত্রাতা হিসাবে ইমাম মাহদি রা.। তাঁর ভক্তকুলে ডাকনাম ছিল, ভগবান। ভগবান অর্থ, যিঁনি জন্মের উৎস। বাংলা ভাষায় ভগবান অর্থ, সরাসরি একমেবাদ্বিতীয়ম্ ঈশ্বর।
ছবি: সাইকিক হিলিঙ দিতে থাকা রজনীশ। যে কোন দ্বিতীয় ধাপের ধ্যানীই সাধারণত সাইকিক হিলিঙ দিতে পারেন। তৃতীয় ধাপের ধ্যানীরা পারেন স্পর্শ হিলিঙ করতে। অসাধারণ একটা বিদ্যা। ওশো'র কোর্সে সাইকিক হিলিঙ এর নাম 'সিদ্ধি'। অর্থাৎ উদ্দেশ্য পূর্ণ হওয়া। সময় লাগে সপ্তাহ তিনেক।
রজনীশ সাহেবের ডিসি প্লেন ছিল মোটে দশটা। আমেরিকার বুকে যেখানে ক্যাম্প করেছিলেন, সেখানে দশ মাইলব্যাপী একটা তাঁবুময় এলাকা। চল্লিশের উপরে লিমোজিন।
ভারতে তাঁর আশ্রম দেখলাম, নেটে। সে তো আশ্রম না, সিক্স স্টার হোটেল। থাকা খাবার খরচও তেমনি। কিন্তু ভাসিয়ে দেয়ার মত টাকা হলে অবশ্যই তার আশ্রমে গিয়ে সপ্তা দুয়েক থেকে দুয়েকটা কোর্স করার প্রবল তীব্র ইচ্ছা আছে। তলায় বসে মেডিটেট করার জন্য কী নেই, কাঁচের বিশাল বিশাল পিরামিডও আছে। আছে পাহাড়ি চওড়া খরস্রোতা নদী। জঙ্গল, লেক, মাঠ আর চরম বিলাসবহুল ব্যবস্থা। বিলাস নয়, এক জীবনে দেখার ইচ্ছা আছে, কোথায় কোন জ্ঞান কেমন করে লুকিয়ে থাকে।
রজনীশ সাহেবের সাথে এর বাইরে যা পরিচয় পেলাম, তা হল, তিনি মেডিটেশনের ধারাতে যতটা না মুক্তি দিতে পেরেছেন, তারচে বেশি ঘোরগ্রস্ত করতে, সম্মোহিত করতে পেরেছেন। বই লিখেছেন বেশ কয়েকটা। প্রচুর পড়তেন। প্রচুর ধ্যান করতেন। প্রকৃতার্থেই মহাধ্যানী। কিন্তু আমার একটা অনুভব আছে, তিনি মোক্ষ বা নির্বাণ বা কামালিয়াতের পর্যায়ে যাননি। তাঁর বিলাশ-ব্যাসন-ঐশ্বর্য-মদ: এই কথাই বলে। আবার কামালিয়াতের আগের পর্যায়ে থাকা অবস্থায় মানবের যখন সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়, কমবেশি সবকিছুর উপর যখন আদেশ প্র্রায়শই চলে, তখন তার যে উন্মাদনা, তার যে সীমা ছাড়ানো উল্লাস-উচ্ছ্বাস-কর্তৃত্ব এবং কথকতা- সেই পরিচয়ও ওশোর কার্যক্রমে তীব্রভাবে প্রকটিত। ডা. বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী সাহেবের পরিবারের একজনের সাথে কথা হল, রজনীশকে প্রাণঘাতী রোগপ্রয়োগে খুন করা হয়েছে। কথাটা সত্যিই মনে হল। এ ছাড়া উপায় ছিল না, তিনি আর একটু হলে আমেরিকা দখল করে নিতেন।
ছবি: ওশো ইন্টারন্যাশনাল। পুনে, ভারত। পার্টটাইম কাজের বিনিময়েও থাকা যায়। তাও ব্যায়বহুল। পিৎজা টিৎজা খেতেই অনেক খরচ। একবেলা ভরপেট দুজনে খেতে চাইলে হাজার পাঁচেক তো যাবেই। এ যেন হাসানের অ্যাসাসিন বাহিনীর কৃত্রিম বেহেস্ত।
আমাদের রিভিউর উদ্দেশ্য... তাঁর মেডিটেশনে ঠিক কী ছিল, যা দিয়ে তিনি 'আর একটু হলে আমেরিকা দখল করে নিতেন'।
রজনীশের ভক্তকূলের যেসব ভিডিও দেখলাম তাতে তাদের সর্বমুক্ত মানব হওয়ার যে চূড়ান্ত লক্ষ্য, সে থেকে বেশ দূরে মনে হল। মনে হল, ঘোর আর নেশার সর্বশেষ চূড়ায় পৌছে আছেন তারা। মোহনবাঁশীর শেষ বীণ শুনে অধীর।
দৈনন্দীন একটা মেডিটেশন সব ধ্যান-পদ্ধতি তেই থাকে। ওশো রজনীশের এই দৈনন্দীন মেডিটেশন পুরোপুরি ধারাভাঙা। বাঁধভাঙা। এতে মাত্র একটা ভয়েস আছে। মাত্র একটা। আর সেটা হল: স্টপ্! এই মেডিটেশনটা একঘন্টার। পাঁচ ভাগে বিভক্ত। ধ্যানীরা পাঁচ, সাত, আট, দশ, এগারো, বারো, উনিশ এইসব সংখ্যাকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
ছবি: কার কাছে করজোরে প্রার্থণারত আনা আল হক্ব স্বয়ম্ভূ ভগবান? এইরূপে রজনীশকে প্রায়ই দেখা যেত। তিনি আমিত্বের দরজা হয়ত পেরুতে পারেননি। তবু পরম এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বরের প্রতি তাঁর সমর্পণও দেখার মতো।
এই ধ্যানটা টরেন্ট করে নামালাম। মাঝরাতে করেও ফেললাম।
নিয়ম হল, সবগুলো একের পর এক চলবে। বিনা বিরতিতে। প্রথমটায়, শুধু শ্বাস নেয়া। বা প্রাণায়াম। দশ মিনিট। কিসসু না, যত দ্রুত সম্ভব শ্বাস নিতে আর ছাড়তে থাকা। দ্বিতীয়টাও দশ মিনিটের। মুক্ত নাচন। যেভাবে খুশি নাচো। নিজেকে প্রকাশ করো। তৃতীয়টাই আমার মতে আসল। দশ মিনিট। হু মন্ত্র বা জিকির। চতুর্থটা, যেভাবে থাকা, সেভাবেই, বিন্দুমাত্র না নড়ে স্থির হয়ে যাওয়া। পনেরো মিনিট। কোন শব্দ নেই, কিছুই নেই। পঞ্চমটা, সেলিব্রেশন। পনেরো মিনিটে কোমল সুরে পরস্পরকে অভিবাদন।
এই মেডিটেশনটা প্রমাণ করে, রজনীশ কতটা বড় ধ্যানী ছিলেন এবং কতটা গভীর তাত্ত্বিক। যদিও তার মেডিটেশন পদ্ধতি নিজের পদ্ধতি হিসাবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আমি নারাজ এবং অন্যকে করতে বলতেও নারাজ, সে আবার ভিন্ন বিষয়।
ছবি: রজনীশের আশ্রম, ওশো ইন্টারন্যাশনাল।
রজনীশ মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমান সেই তীব্র অস্থিরতার সময়ে। যন্ত্র আসছে। মানুষের কাজ কমছে। এলএসডি এবং অন্যান্য সিন্থেটিক ড্রাগস মানুষকে জীবিতাবস্থায় ভেস্তে দিচ্ছে, বা বেহেস্তি স্বাদ চাখাচ্ছে।
নতুন শারীরিক-মানসিক-সামাজিক রোগের প্রাদুর্ভাবে কম্পিত পশ্চিম। অ্যাঙজাইটি, জেনারেশন গ্যাপ, গণ-পরিবারহীনতা, হাইপারটেনশন, বিষণ্নতা, গণ-প্রজনন বিকৃতি, গণ-পৈশাচিকতা, খাদ্যাভ্যাসের কারণে হৃদরোগ, শ্বাস-সীসা-বিষের কারণে ফুসফুস এবং অন্যান্য রোগ, শ্বাসকষ্ট, গণ-নির্ঘুমতা, বাদ্য-নির্ভরতা, এইডস, কনজিউমারিজম, এবং সবচে বড় কথা, গণ-নীতির অভাব ও গণ-আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শকের অভাব।
ছবি: এত সুন্দর বাগানে এসে মওলানা রুমী চোখ বন্ধ করে আছেন কেন? রুমি বললেন, আমিতো তাও মাঝে মাঝে চোখ খুলি। বন্ধ করে যা দেখা যায় তা দেখলে তোমরা তো আর চোখই খুলতে না... পুনেতে গিয়ে একটু নিজের মত ধ্যান করারও ইচ্ছা হল।
এই শেষের দুটা ট্রামকার্ডও ওশোকে নিয়ে গেল চূড়ায়। সেই অস্থির এইটিজ। যেখানে রকস্টাররা আইডল, টিভি উপস্থাপকরা, বি মুভিজের নায়করা, কিন্তু কোথায় যেন শান্তি নেই। স্থিরতা নেই।
নু্ডিজম, ন্যাচারালিজম, স্যাটানিজম, অ্যাথেয়িজম, কমুনিজম এবং ক্যাপিটালিজম- ষড় বিকৃত ইজমের চাপে মানুষ দিকভ্রান্ত। জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ আর আকাশ বাতাসে সীসা।
রজনীশ জানেন, এই অদ্ভুতুড়ে কিম্ভুতুড়ে প্রজন্মটাকে কোনদিক দিয়েই মানানো যাবে না। কোনদিক দিয়েই তাতিয়ে বাঁকিয়ে শান্ত করা যাবে না। এই অদ্ভুতুড়ে পশ্চিমা প্রজন্ম'র এমন একজনও নেই, যে ওই রোগগুলোর একাধিকের ধারক নয়।
এরা সেই প্রজন্মের, যে প্রজন্ম পৃথিবীর জন্মের পর এই প্রথম চারদিক ফাঁকা দেখছে। এবং এই ফাঁকা চারদিকটাই তীব্রবেগে চেপে বসছে তাদের ভিতরে। দম নেয়ারও অবকাশ নেই।
অবকাশ নেই। ছোটো। ছুটে ছোটাছুটি থেকে শান্তি পেতে আরো তীব্রবেগে ছোটো। তারা আর মদ-নারী-মাৎসর্যে বিন্দুমাত্র তৃপ্তি পায় না। সে স্থান দখল করেছে ড্রাগস-রিপ্রোডাকটিভ অর্গানের বিকৃত ব্যবহার এবং মনোবিকৃতি।
এই প্রজন্মকে সুস্থ করতে হলে, একটু শান্তি দিতে হলে তার এই মেডিটেশনের পথ ধরা ছাড়া উপায় ছিল না হয়ত।
তাই পুরো ধ্যানটাই বিচিত্র। যেখানে ধ্যান মানেই স্থিরতা, সেখানে রজনীশের প্রেসক্রিপশনের দৈনন্দীন ধ্যান মানেই তীব্র অস্থিরতার ভিতর দিয়ে যাত্রা। অস্থিরকে প্রথম মুহূর্তেই স্থির করার চেষ্টা করলে সে বসবে না।
তাই প্রথম শ্বাস নেয়ার অংশ বা প্রাণায়ামে দেখি, তীব্রভাবে দশটা মিনিট দ্রুত দম নিতে ছাড়তে থাকতে হয়। এটা হল অস্থিরতা দূর করার দারুণ পদ্ধতি। তুমি অস্থির? আরো অস্থির ছাড়া কিছু হতে চাও না? তাই হও। এই প্রাণায়ামটা ভয়ানক। করলাম, পরদিন সারাদিন মনে হল নাকের জায়গায় পাইপ বসিয়ে পাইপের মাথায় ফ্যান বসিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা নিয়মিত করলে ফুসফুস, শ্বাসযন্ত্র, নাক, এমনকি হার্টও পরিস্কার হয়ে যাবে। তখনকার তীব্র সার্বিক দূষণ, সিগারেট থেকে মারিজুয়ানা থেকে কোকেইনের অত্যাচার, সেসব পরিষ্কার করে শরীরটাকে আবার মানুষ করার চমৎকার পথ নিয়েছিলেন রজনীশ।
যেহেতু অস্থির, তার অস্থিরতা যেভাবে খুশি সেভাবে প্রকাশ করার পথ করে দেয়ার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় ধাপটা হল ফ্রি এক্সপ্রেশন। বিষয়টা এমন, পাত্রভর্তি পানি তো মুখ খুলে দাও। মনভর্তি কষ্ট তো কাউকে বলো। যা থাকে তা চাপিয়ে রেখো না, প্রকাশ করো। হালকা হয়ে যাবে।
তৃতীয় ধাপ, যা আসল মেডিটেশন, সেই হু জিকিরের নিয়ম হচ্ছে, দাড়িয়ে লাফাতে লাফাতে হু বলা। তবে তিনি ঠিক করেছিলেন, এই প্রজন্ম যেহেতু দৈহিকতা এবং প্রজনন ছাড়া কিছু বোঝে না, সেহেতু তাদের মন্ত্রের সেন্টার হোক দুই উরুর মধ্যবর্তী অঞ্চল। মোদ্দা কথা, তুমি সচেতনতায় যেখানে আছো, সেখান থেকে উত্তরণ হোক।
এই হু বলা দশ মিনিট চলার পর যেভাবে থাকবে, সেভাবে স্থির করে দেয়া হবে স্টপ বাণীর মাধ্যমে। পনের মিনিট। স্থির। অচল। নি:শব্দ।
এটাই হল মেডিটেশনের গভীরতম থিতানোর রজনীশিয়ান পদ্ধতি। রাজ যোগ, মৌনতা, আত্মহীনতা, সুলতানুল আযকার।
পঞ্চম ধাপেই আসে শান্ত মিউজিক। আমরা কিছু অ্যাচিভ করেছি, এবার পরস্পরকে সৌজন্য সাধুবাদ অভিনন্দন জানানো হোক। অর্থাত এই পঞ্চম ধাপে তিনি তার অনুসারীদের মানবে পরিণত করছেন। পারস্পরিকতার প্রতি যে বিমুখতা চলে এসেছিল পশ্চিমে, তা থেকে আবার ফিরিয়ে আনা।
সবশেষে, মিউজিকের রিভিউ।
এমনধারা মিউজিক শুনিনি বলাটাই কি স্বাভাবিক না?
মনের সচেতন, অবচেতনকে স্পর্শ করে অনেক মিউজিকই। কিন্তু অচেতনকে স্পর্শ করে এমন বাদ্য শোনা কঠিন বিষয়। ওশো মেডিটেশনে মিউজিকগুলো, যা টের পেলাম, তাতে মনে হয় কুন্ডলিনীকে সরাসরি জাগ্রত করে। শুধু যে জাগ্রত করে, তাই না, তা ঠেলে বের করে আনে। কোন একজন মানুষ স্বইচ্ছায় ওশো মেডিটেশনে বসবে, সে শ্বাসের মিউজিকের সময় দুলে দুলে শ্বাস নিবে না, তাহলে গ্যাছে। সে ফ্রি এক্সপ্রেস মিউজিকের সময় হেলেদুলে নিজেকে নাচাবে না, তাহলে গ্যাছে। সত্যি। কারণ, শরীরের উপর দিয়ে সেটাকে পার করে না দিলে তা মনের উপর প্রভাব ফেলবে।
রজনীশিয়ান মেডিটেশনে অনেককেই দেখা যায় প্রথম প্রথম বমি করতে, অজ্ঞান হয়ে যেতে, বা নিস্তেজ হয়ে যেতে- এটাই স্বাভাবিক।
এই মিউজিকের আরেকটা বৈশিষ্ট্য, কথায় নয়, বাক্যে নয়, মন্ত্রে নয়, শুধু মিউজিক দিয়ে নার্ভকে খালি করে দেয়া। আরেকটা, শুধু মিউজিক দিয়ে সম্মোহিত করা।
তিনি শ্রাব্যতার সব সীমার মিউজিক ব্যবহার করেছেন। তীব্র কঠোর সভ্যতার মিউজিকে মিশিয়েছেন যন্ত্রের পরিচিত ঘর্ঘড়, সেইসাথে চৈনিক ও ভারতীয় মিশেল।
আর একটা বাজে বিষয়ের কথা না বললেই নয়। ওশোর উপর কিছু দোষ চাপানো হয়। যেমন, তার অনুসারীরা ড্রাগ এডিক্ট। আসলে ড্রাগ এডিক্টরা তার কাছে গিয়ে কোনএকভাবে ড্রাগমুক্ত হতো। প্রথমদিকে আসা ছিচকে ছিনতাইকারীরা ছিনতাই করেও তাকে অর্থ দিতো। কিন্তু তা ব্যক্তির পর্যায়ে। তার মেডিটেশন রত অবস্থায় নগ্নতা দেখা যায়। কিন্তু যে মানুষগুলো তা করেছিল, তারা আগে ছিল নুডিস্ট এবং ন্যাচারিস্ট। অর্থাত মানুষও কুকুর শুকরের মত পশু, তাই নাঙা থাকবে এবং ইত্যাদি ইত্যাদি।
মানুষকে কিছুটা শান্ত করেছেন। শান্তি দিয়েছেন। ড্রাগ ছাড়িয়েছেন। যৌন বিকৃতি ছাড়িয়েছেন। ওশো রজনীশ তাই একজন সফল জাদুকর। কিন্তু জাদুকরই বলব, কারণ নির্বাণ তাঁর হয়েছে এমনটা বোঝার কোন উপায় নেই। নির্বাণপ্রাপ্তে যে আত্মহীনতা থাকে, সেই আত্মহীনতা তাঁর মধ্যে প্রকটভাবেই অনুপস্থিত।