عن أَبِي سَعِيدٍ الخدري ، قَالَ: " كُنَّا نَحْمِلُ لَبِنَةً لَبِنَةً وَعَمَّارٌ لَبِنَتَيْنِ لَبِنَتَيْنِ ، فَرَآهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَنْفُضُ التُّرَابَ عَنْهُ ، وَيَقُولُ: وَيْحَ عَمَّارٍ ، تَقْتُلُهُ الفِئَةُ البَاغِيَةُ، يَدْعُوهُمْ إِلَى الجَنَّةِ ، وَيَدْعُونَهُ إِلَى النَّارِ قَالَ: يَقُولُ عَمَّارٌ: " أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الفِتَنِ "
হাদিস শরীফের সারকথাঃ হযরত আবু সাঈদ খুদুরী রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- আমরা মসজিদ বানানোর জন্য একটি একটি করে পাথর বহন করছিলাম আর হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রাদিআল্লাহু আনহু দুটি দুটি করে পাথর বহন করছিলেন প্রিয়নবী দৃশ্যটি দেখে তার শরীর থেকে ধুলা-বালি ঝেড়ে দিলেন এবং বলতে লাগলেন- আম্মারের জন্য আফসোস!! তাঁকে একটি বিদ্রোহী গ্রুপ শহীদ করবে, আম্মার তাদেরকে জান্নাতের দিকে ডাকবে আর তারা আম্মারকে জাহান্নামের দিতে ডাকবে এটা শুনে আম্মার রাদিআল্লাহু আনহু বললেন- হে আল্লাহ আমি আমি সেই ফেতনা থেকে ফানা চাই।
১. বুখারী শরীফ , ৮খন্ড, পৃষ্ঠা-১৮৫-১৮৬
২. তিরমিজি শরীফ, ৫ খন্ড, পৃ. ৬৬৯
৩. মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল, ২খন্ড, পৃ. ১৬১,১৬৪,২৬৪
প্রায় ২৫ জন রাবী থেকে বর্ণিত হাদিস শরীফটি নিঃসন্দেহে মুতাওয়াতির হাদিস যার ব্যাপারে সন্দেহ রাখলেও ঈমান থাকবেনা এই হাদিস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, সেই বিদ্রোহী গ্রুপ কোনটা? কে সেই বিদ্রোহী গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল?
আর কেহ নয়, কাফের এজিদের বাপ।
খোলাফায়ে রাশেদীনের বিরোধীতা, হক্বের ধারক মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহুর বিরোধীতা করা কখনো বৈধ হতে পারেনা আর এটাকে ইজতিহাদী ভূল বলে হত্যাকারীকে বাঁচানোর কোন সুযোগ নাই কেননা ইজতিহাদ ঈমান নিয়ে নয় শরীয়তের মাসয়ালা নিয়ে হয় অতএব আমি খেলাফতের পক্ষে থাকবো নাকি বিপক্ষে থাকবো সেটা ঈমানের বিষয় অর্থাৎ আমাকে খেলাফত তথা খোলাফায়ে রাশেদীনের পক্ষে থাকতে হবে কেননা উনাদের পক্ষে থাকা ই ইসলামের পক্ষে থাকা উনাদের হুকুম উনাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার ব্যাপারে প্রিয়নবীর নির্দেশনা আছে যথা-
عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ
অর্থঃ তোমাদের উপর আমার নির্দেশিত সুন্নাত এবং খোলাফায়ে রাশেদীনদের সুন্নাত (সিদ্ধান্ত) মেনে নেওয়া আবশ্যক। (তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
এই হাদিস শরীফে থেকে স্পষ্ট হয়ে গেলো- খোলাফায়ে রাশেদীনদের অনুসরণ কেবল আমাদের উপর নয় বরং সকল মাকবুল সাহাবায়ে কেরামদের উপরও ছিলো এবং কিয়ামত পর্যন্ত তাদের অনুসরণ করাই ঈমান তাদের বিপক্ষে যাওয়া মানে প্রিয়নবীর বিপক্ষে যাওয়া আর প্রিয়নবীর বিরুদ্ধে যাওয়া সরাসরি আল্লাহর বিরুদ্ধে যাওয়া। মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু সহ খোলাফায়ে রাশেদীন উনারা ই সর্বোচ্চ উলিল আমর তথা উম্মতের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত প্রণয়নকারী যাদের আনুগত্য করার হুকুম আসছে সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফে যেমন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ
অর্থঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ ও তাঁর হাবীব এবং তোমাদের মধ্যে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী তাদের আনুগত্য স্বীকার করো।
(সূরা আন-নিসা, আয়াত নং-৫৯)
যেহেতু মাওলায়ে আলা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু খোলাফায়ে রাশেদীনের একজন শুধু তা নয় তিনি বাবুল ইলম অর্থাৎ উনার জ্ঞান উনার সিদ্ধান্ত উনার অবস্থান সবকিছু মদিনাতুল ইলম প্রিয়নবী থেকে সরাসরি আসা সুতরাং কেউ যদি উনার সিদ্ধান্ত উনার জ্ঞানের বিপরীতে অবস্থান নেই তখন তাকে মুমিন বলার কোন সুযোগ নাই কেননা মাওলা আলী রাদিআল্লাহু আনহু মুমিনের অবিভাবক, মুমিন ছাড়া কেউ তাঁর আপন হবেনা আর মুনাফিক ছাড়া তার কেউ শত্রু হবেনা।আহলে সুন্নাতের ছদ্মনামে আহলে সুন্নাতের বিরুদ্ধে খারেজি, মোয়াবিয়াপন্থী, মুলুকিয়তপন্থী, বস্তুবাদি চক্রান্ত এসব । এরা সুন্নী নয়, এদের আকিদা বাতিল, এরা আল্লাহতাআলার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহতাআলার জাতে পাকের প্রত্যক্ষ নুর ঈমান রাখেনা, এরা বাতিল শিয়াবাদের মত খারেজি আকিদা মোতাবেক মহামান্য খলিফাতুর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে শুধু একজনকে স্বীকার করে বাকিদের অস্বীকার করে, এরা ইসলাম বা আহলে সুন্নাতকে অরাজনৈতিক মনে করে আবার কখনো ইসলামী হুকমতের নামে খারেজি রাজনীতি আবার কখনো বস্তুবাদি মতবাদের বিষাক্ত জাতীয়তাবাদী অপরাজনীতির অনুসরণ করে, এরা খুব কৌশলে মেরাজ স্বীকার করেও শশরীরে মেরাজ ও আল্লাহতাআলার প্রত্যক্ষ সাক্ষাত দর্শন অস্বীকার করে, এরা অভিশপ্ত কাফের এজিদকে মুসলিম মনে করে, এরা আল্লাহতাআলার নির্দেশ অমান্য করে অভিশপ্ত কাফের এজিদের বাপকে জলিলুল কদর সাহাবি বলে, এরা কোরআনুল করীমের নির্দেশিত খেলাফতের পক্ষে কথা বলে না বরং খেলাফতের বিপরীত ও কলেমার বিপরীত কাঠামো মুলুকিয়তের সমর্থন করে কৌশলে খেলাফত অস্বীকার করে, এরা এজিদের বাপকে হক বলে সমর্থন করে প্রকারান্তরে মাওলায়ে আলা সাইয়েদেনা আলী রাদিআল্লাহু আনহু কে গালি দেয়া, লাআনত দেয়া, যুদ্ধ করা , ইমামে আকবার সাইয়েদেনা হজরত ইমাম হাসান রাদিআল্লাহুকে খুন করা, ইসলামের খেলাফত উৎখাত করে বাতিল মুলুকিয়ত কায়েম করা, মহান মকবুল সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু আনহুমকে খুন করা, চুক্তি ভংগ করে বেঈমানি করা, অভিশপ্ত কাফের এজিদকে অবৈধভাবে ক্ষমতা তুলে দিয়ে কারবালার হত্যার পথ করা- মোয়াবেয়ার এসব ঈমান বিরোধী দ্বীন ধ্বংসাত্মক ইত্যাদি সকল অপকর্মের সমর্থক খারেজি মালাউন । আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের পবিত্র নামে এরা তাওহীদ রেসালাতের খেলাফ এবং আহলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিদ্বেষী বাতিল খারেজি মুলুকিয়তি ও বস্তুবাদি মতবাদ চালিয়ে দিয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আসল ধারাকে শিয়াবাদি মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে রাখতে চায় । কাজ্জাব এজিদবাদি মালাউন মোনাফেকদের সম্পর্কে সুন্নী জনগণকে সতর্ক থেকে সুন্নীয়তের বিশুদ্ধ ও পূর্ণাঙ্গ ধারা সুরক্ষা করতে হবে । আল্লামা আরেফ সারতাজ , আল্লামা অধ্যাপক ডঃ কাওসার আমীন,
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৭