somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে রম্য চলচিত্র

১৪ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১০:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শ্রেষ্ঠাংশে
উসাইন বোল্ট – প্রধান লায়ক
লালি , কুতকুতি , কামিনী – প্রধান লায়িকা ,
এম এ জলিল অনন্ত – প্রধান গুটিবাজ
পটভূমি - গাও গেরামের প্রেম পিরিতি

কাহিনী সংক্ষেপ -

লালি ও কুতকুতি দুইজন ছোটবেলার সাথী । তাদের বন্ধুতের কথা সারা গ্রামশুদ্ধ প্রসিদ্ধ । পাশাপাশি দুই জনের বাড়ি , সারাদিন তারা একসাথে থাকে । একজন আরেকজনকে মুখে তুলে খাওয়াইয়া দেয় , গোসল করাইয়া দেয় , চুলে বিলি করে দেয় , হাতে বুকে বেথা হলে টিপে দেয় , দুলে দুলে একসাথে গান গায় । মোটকথা একজন আরেকজনের প্রান জুস !
একদিন তারা পাশের গ্রামে দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে যায় । দৌড় দিবে অত্র অঞ্চলের সেরা দৌড়বিদ আভুল । তাই স্বচক্ষে আভুলের দৌড় দেখতে হাজির হয় মাঠে ।
মাঠে উপস্থিত হয়ে দেখে আভুল দৌড় দিবে এক ফর্সা ধবধবে পোলার সাথে । বেঁটে ওই পোলার নাম উসাইন বোল্ট । মাঠের ধর্ষকরা আভুলের পতিপক্ষ দেখে হা হা লু খু ফে ( হাসতে হাসতে লুঙ্গী খুলে ফেলে ) , দৌড়বিদ আভুলের সাথে বাছুর দৌড়াইয়া কোনদিন পারে নাই আর এ কোন বাঁটুল উসাইন বোল্ট !
যাই হোক দৌড় শুরু হয় এবং সবাইকে ভেল্কী দেখিয়ে আভুলকে একদম পিছনে ফেলে উসাইন বোল্ট ৯.৫৮ সেকেন্ডে ফাস্ট হয় ! ধর্ষকরা পুড়া ত্থ ! আভুইল্লা হেরে গেল ! এইডা কিছু হইলো ! লাইন ক্রস করার পর উসাইন বোল্ট তীর দিয়ে একটা গেঁদা ফুল লালি আর কুতকুতির দিকে ছুড়ে দেয় ! গেঁদা তাদের দুজনার পায়ের কাছে এসে পড়ে । বিস্ময়ে হতাবাক দু জন উসাইন বোল্ট এর দিকে তাকালে সে দুই জনের দিকে চোখ টিপি মারে । আর ঠিক সেই মুহূর্তেই দুইজন একসাথে উসাইন বোল্টের প্রেমের গাঁতায় পড়ে যায় । দুই জনই উসাইন বোল্টকে তাদের স্ব স্ব মন দিয়ে দেয় । আর চিনেমায় কাইমেক্সের শুরু হয় তখন থেকেই ।
লালি ফুল নিতে নিতে বলে – সে আমাকে ফুল দিয়েছে , কুতকুতি ফুল ছিনিয়ে নিয়ে বলে – তোর মাথা ঠিক আছে ? সে তীর ছুড়েছে আমার দিকে চেয়ে , সে আমাকে গেঁদা ফুল দিয়েছে ।“ ব্যাস আর কই যায় কে ! এতদিনের বন্ধুত্ব এক গেঁদা ফুলের কাছে শেষ । মাঠেই দুই জন চুলাচুলি শুরু করে গেঁদা ফুলের অধিকার নিয়ে ( বাস্তবের সাথে কেউ মিল পেলে আমার কি করার নেই ) মাঠের ধর্ষক নতুন খেলায় মজা পেয়ে আবার “ হা হা লু খু ফে “
অবস্থা যখন কাপড় ছিঁড়াছিরি পর্যায়ে তখন উসাইন বোল্ট হাজির হয় । সে সমাধান দিয়ে বলে – “ আমার মায়ের ইচ্ছা তার ছেলের বউ ডাকতর হবে তাই যে এইবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় পাস করবে , আমার নেক্সট গেঁদা ফুলের তীর শুধুই তার দিকে ছোড়া হবে “ ।
লালি কুতকুতির মাথা নষ্ট । কি করে কি করে ! উসাইন বোল্ট কে পাবার জন্য তাদের মেডিকেলে ভর্তি হতেই হবে । সারারাত লালি , কুতকুতি ঘুমাতে পারে না । ছটফট করে । ফেবুতে দুই জন একই স্ট্যাটাস দেয় - “ কিছুই ভাল লাগে না , শুধু তীর ছুড়তে মন চায় , হে তীরন্দাজ আমায় তীর ছুড়া শিখাও ।“ শুধু তাই না একজনের স্ট্যাটাস যেন অন্য জন দেখতে না পারে তাই তারা একে অপরকে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে ডিলিট করে ব্লক মেরে দেয় । আগে বান্ধবী ছিল তো কি হয়েছে এখন তারা শত্রু , মুখ দেখাদেখি বন্ধ ।
এই সুযোগে কিছু “ জুয়াখেলা পরিষদ “ তাদের পরিষদের নাম পরিবর্তন করে রাখে “ ওমুক তমুক মেডিকেল ভর্তি কোচিং “ একানে ১০০% গ্যারান্টি সহকারে ( প্রশ্নপত্র ফাঁস ) মেডিকেলে ভর্তি করানো হয় “
লালি আর কুতকুতি দুইজনে জুয়ার আসরে ভর্তি হয় । তারা মন প্রান ঢেলে কোচিং করে । লেকচার শিট মুখস্ত করে , কুইজে তা বমি করে , আর সেই বমি করানোর জন্য সেই জুয়ার আসর বেনামে কোচিং সেন্টার গুলো লালি আর কুতকুতির বাপের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা !
এইদিকে গ্রামের প্রসিদ্ধ গুটিবাজ এম এ জলিল অনন্ত গাঁয়ের বড় ভাইদের কাছে গুটি চালে যে কোচিং সেন্টারগুলান তারা যেই পরিমান টাকা কামায় এলাকার বড় ভাইদের কিন্তু সেই তুলনায় কমিশন দেয় না । অনেক কম দেয় । ভাগ বাঁটোয়ারায় ন্যায় ইনসাফ হচ্ছে না । ব্যাস ! বড় ভাইদের টনক নড়ে ।এলাকার বড় ভাইরা হিংসা করে গ্রামের আইনে সংশোধন আনতে উঠে পড়ে লাগলো । তারা মানুষকে লাগলো এই তিন মাস পড়াশুনার নামে এই সব জুয়ার আসর রমরমা করতে দেয়া ঠিক নয় । তাই ভর্তি পরীক্ষাই উঠাইয়া দিতে হবে । মেডিকেলে ভর্তি হবে মাধ্যমিকের রেজাল্টের ভিত্তিতে ( কারন ওইখান থেকে কমিশন আদায়ে কোন মাইরের চান্স নাই )
এই কথা শুনে লালি আর কুতকুতির আবার মাথায় হাত । বলে কি ! তারা তো আগে ভাল মতো পড়ালেখা করেনি । কারণ তখন তো উসাইন বোল্ট তাদের মন কেড়ে নেয়নি ! তাই তাদের জিপিএ অনেক কম । অপরদিকে তাদের বাড়ির বুয়া মর্জিনার মেয়ে কামিনীর জিপিএ ভাল । সোনার এ + , তাইলে কি উসাইন বোল্ট কামিনীর দিকে প্রেমের তীর ছুড়ে দিবে !
এই সংকটে দুই বান্ধবী আবার হাত মিলিয়ে ফেলে । তারা অনেক গবেষণা একটা সমাধান বের করে “ তালা সমাধান “ ; তারা প্ল্যান করলো কামিনীকে একটা ঘরে তালা মেরে রাখতে হবে । যেই প্ল্যান সেই কাজ , তারা কামিনীকে তালা মেরে দেয় । কোন মতেই কামিনী আর উসাইন বোল্ট এর প্রেম হতে দেয়া যাবে না ।
যেদিন মেডিকেল রেজাল্ট সেদিন আবার স্ক্রিনে হাজির গুটিবাজ এম এ জলিল অনন্ত । সে খড়ের আগা দিয়ে নাক চুল্কাতে চুল্কাতে লালি আর কুতকুতিকে খবর দিল উসাইন বোল্টের নাকি পাইলস ! এই কথা শুনে রাগে দুক্ষে দুই বান্ধবী ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দেয় । যার জন্য এতো কিছু সেই উসাইন বোল্ট এর পাইলস !
দুই বান্ধবী টানটান উত্তেজনায় একসাথে উসাইন বোল্ট এর ফেইসবুক ওয়ালে পোষ্ট দেয় –
“ হে ধোঁকাবাজ ! তোর নাকি পাইলস ! এতদিনে বুঝলাম কেনু তোর ডাক্তার বউ লাগবে ! তোর নিজের পুটুর চিকিৎসা করানোর জন্যই তুমি ডাক্তার বউ খুজতেছিলি ! ছে ছে ! তোকে ডিসলাইক । “
কাহিনীর শেষ দিকে বারী সিদ্দিকির ইমোশুনাল গানের সাথে দেখা যাবে দুই বান্ধবী গলাগলি ধরে কাঁদছে , ওইদিকে তালা বদ্ধ ঘরে কামিনী চিতকুর পেরে কাঁদছে , লালি কুতকুতির পোষ্ট পেয়ে উসাইন বোল্ট পুড়া তব্দা খেয়ে যায় ! এরা বলে কি ! অপমান সইতে না পেরে সে দৌড়াতে দৌড়াতে কাঁদে । অপরদিকে জুয়ার আসর ভেঙ্গে যাওয়ায় জুয়াড়িরা তাস শাফল করতে করতে কাঁদে আর কল্কিতে টান দেয় , এলাকার বড় ভাইরা কমিশন না পেয়ে ঢেঁকুর তুলে কাঁদে ! চারিদিকে একটা বিশাল ট্র্যাজিক সিচুয়েশন এর ভিতরে গাঁয়ের সেরা গুটিবাজ এম এ জলিল অনন্ত বগল বাজিয়ে হাসে আর নাচে কারন তার প্ল্যান সার্থক । সে তুরি বাজিয়ে গান ধরে –
“ তুতুতু তুতু তারা
পুটুতে পুটুতে পাইলস ধরা ! “


( বি দ্র - এইখানে চলচিত্রের গল্প তুলে দেয়া হয়েছে , সিকোয়েন্স ভাগ করে স্ক্রিপ্ট খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ করে শুটিং শুরু করা হইবেক )

আরও একটি রম্য

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪৮
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×