somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষণ, ইভটিজিং. অশলীলতা..মোবাইলে থ্রীজি প্রযুক্তি ....সময় এসেছে আওয়াজ তোলার

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে আমার জীবনের একটি বাস্তব ঘটনার কথা লিখি। গত বছরের মার্চ এপ্রিল মাসের দিকে আমার পুরাতন পিসিটি আমার একজন সহকর্মীর (বয়সে আমার চেয়ে বেশ বড় এবং তার একটি ক্লাস এইটে পড়া মেয়েও আছে) কাছে বিক্রি করে দেই। আমার পুরাতন পিসিটিতে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ফাইল ছিল যেগুলো আমি তাকে আপাতত ডিলিট করতে মানা করি যাতে পরবর্তী সময় আমি সেগুলো আমার নেটবুটের হার্ড ড্রাইভে স্থানান্তর করতে পারি। এভাবে অলসতার কারনে আজ যায় কাল যায় কিন্তু আমার আর তার বাসায় যাওয়াও হয় না আর ফাইল গুলো আনাও হয় না। আমার সেই সহকর্মীটি কম্পিউটার সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানে না। আমাকে প্রায় বলে তার বাসায় গিয়ে কিছু টুকটাক কম্পিউটার অপারেশন তাকে শিখিয়ে দিতে কিন্তু সময় করে যাওয়া হয়না একদিনও । যাইহোক হঠাৎ একদিন শুনলাম তিনি নাকি কোন এক কম্পিউটারের দোকান হতে তার পিসির সি ড্রাইভটি শুধু ফরমেট করিয়ে নিয়েছেন। তাকে কারন জিগাসা করতে তিনি বললেন মাঝে মাঝে নাকি তিনি কম্পিউটার রান করতে পারতেন না কাল পর্দা এসে স্থির হয়ে থাকতো। বুঝলাম ডুয়াল অপারেটিং হিসাবে উবুন্টু থাকায় তিনি এ সমস্যায় পড়তেন(যদিও তাকে বিষয়টি খুব ভাল ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম প্রথমেই)। যাইহোক এরপর তিনি আমাকে যে প্রশ্নটি করলেন তাতে বিস্মিত না হয়ে পারলাম না। "রফিক ভাই , আপনার পিসিতে কি কোন ব্লু ফ্লিম আছে নাকি!" আমি তো একে বারে থ। এ প্রশ্নের কি উত্তর আমি তাকে দেব? আমি তাকে পাল্টা প্রশ্ন করলাম আপনার কিভাবে মনে হল যে আমি এই বোকামিটা করব যেখানে আপনার বাসায় একজন উঠটি বয়সের মেয়ে আছে এবং মূলত সেই পিসিটি ব্যবহার করবে। আমি বেশ কিছুটা রাগও হলাম।
এতে তিনি বলেলেন, 'কিছু মনে করবেন না রফিক ভাই। আসলে আমার শালার পিসিতে সেদিন বসছিলাম তো ...তার পিসিতে বিভিন্ন ফাইলে ক্লীক করতে করতে দেখি এই জিনিস। তাই আপনাকে জিগাসা করলাম আর কি!'
-'আপনার শালাকে জিগাসা করেনি যে সে কেন এসব জিনিস তার একজন উঠতি বয়সের নাবালিকা ভাগনী থাকার পরও তার পিসিতে সযত্নে রেখেদিয়েছে?'
-ওই বলল এগুলো নাকি পিসিতে এমনিতেই রাখতে হয়!
-কি করে আপনার শালা ?
-একটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক।
-বিয়ে করছে না করে নি?
-বিয়াও করছে ছেলে মেয়েও আছে!
যাই হোক এই হলো আমাদের সমাজের তথ্যপ্রযু্ক্তি যন্ত্র ব্যবহারের নমুনা। যাইহোক এবার আসা যাক আমাদের দেশে এবং পার্শ্ববর্তী দেশে ধর্ষণের ঘটনায়। এসব ঘটনার পর সারাদেশই আলোচনা-সমালোচনা, বাদ প্রতিবাদ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ, সমাবেশ ইত্যাদির ঝড় বয়ে যায়। কিন্তু কিছু দিন পর আবার সব ঠান্ডা। আমরা সবাই জানি রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। তাই যেকোন সমস্যা সমাধানের জন্য তার গোড়াতে হাত দেওয়াই সর্বোত্তম।
ধর্ষণ, ইভটিজিং ইত্যাদি যে ঘটনা গুলো ইদানিং কালে ঘটছে তা আসলে আমাদের মাঝে মোবাইল, টিভি ইন্টারনেন্ট প্রভৃতি দ্বারা ছড়িয়ে পড়া ব্যাপক হারে অশলীলতার ফসল ছাড়া আর কিছুই নয়। এসব অপরাধের বিভিন্ন বছর ওয়ারী পরিসংখ্যান দেখলে বিষয়টি সহজেই বুঝা যায়। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হতে দেখছি এসব বিষয়ে কিছু বলতে বা লিখতে গেলে আগে বক্তার বা লেখকের প্রতি আক্রমনটা বেশি আসে। তাদের মৌলবাদী, ছাগু ইত্যাদি বলে খাটো করা হয় । কিন্তু একটা বিষয় আমরা সবাই এড়িয়ে যাই তা হল আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা। আমরা কি পারি না সব রকমের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে তাদের জন্য একটি পর্ণগ্রাফী মুক্ত ইন্টারনেন্টের এক বিশাল রাজ্যে স্বাধীন চলাচল নিশ্চিত করতে? যেখানে একজন ভবিষ্যতের ডাক্তার বা ইন্ঞ্জিনিয়ার তার প্রয়োজনীয় জ্ঞান খুব সহজেই আহরণ করতে পারবে?কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে আমাদের দেশে বদলে যাও বদলে দাও স্লোগানে বি্শ্বাসী সুশীল সমাজের লোকজন আমাদের স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে ইন্টারনেন্টকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা চালালো এসম্পর্কে কিছু বলছে না। তাহলে কি তারা সমস্যাটি নিয়ে উট পাখির মত আচরণ করছে না?অশলীলের বিপরীত হলো সুশীল কিন্তু কি এক রহস্য জনক কারনে আমাদের দেশের সুশীল সমাজ নামে পরিচিত বুদ্ধিজীবি শ্রেণীর মানুষেরা এই বিষয়টাতে নীরব ভুমিকা পালন করে চলছে।
অশলীলতাকে আসলে যেকোন মানদন্ডেই (ধর্ম, রাষ্ট্র, মানবতা) নেতিবাচক দিকে রাখা যায়। তাহলে কে আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদি হচ্ছি না?

বর্তমান সরকার দেশে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল যোগাযোগ চালু করেছে যা নিঃসন্দেহে একটি ভাল উদ্যোগ কিন্তু এই শুভ উদ্যোগও সুফলা বয়ে আনতে পারবে না যদি না আমরা অশীললতামুক্ত একটি ইন্টারনেন্ট ব্যবস্থা এই নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থায় অন্তর্ভূক্ত করতে পারি। কারন আমাদের মোট ব্যান্ড উইথের অর্ধেকের বেশি বর্তমানে অশলীল মাধ্যমে ব্যয় হচ্ছে যা ভবিষ্যতেও হবে।
লেখার শুরতে একটি ঘটনা বলেছিলাম এবার আরেকটি ঘটনার কথা বলি। আমার পাশের বাসার এক ক্লাস নাইনে পড়া ছেলে (মোজ দাড়ি এখন ভালমত গজায় নি)কিছু দিন আগে একই পাড়ার একটি মেয়েকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করে। গত সপ্তাহে শুনি সেই ছেলেটি নাকি বাবা হয়েছে। এখন আর ছেলেটি আগের মত পাড়া খেলাধুলা করতে পারে না তাকে রুজি রোজগারের সন্ধানে ছুটেত হচ্ছে। এই যে ছেলে বা মেয়েটির ভবিষ্যৎ নষ্ট করার জন্য দায়ী কে?
সুতরাং সময় এসেছে আওয়াজ তুলার, প্রতিবাদী হবার। আসুন আমরা সবাই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হই, সরকারকে বাধ্য করি ইন্টারনেন্টকে পর্ণগ্রাফী মুক্ত করতে ।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×