somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"অভিজিতের হত্যাকান্ড ও অমিমাংসিত প্রশ্নেরা"

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্মের নামে নাশকতাকারীদের প্রতি শত সহস্র ঘৃণা প্রকাশ করে ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডে গভীর শোক প্রকাশ করছি। অভিজিৎ রায়ের মত বিশাল পরিমন্ডলের একজন ব্যাক্তিত্বকে যেভাবে প্রকাশ্য জনস্রোত ও বিপুল পুলিশি নিরাপত্তার মাঝে কুপিয়ে হত্যা করা হল তা একটি আতংকজনক ও অকল্পনীয় ঘটনা! সেখানে পুলিশের ভূমিকায়, একাধিক স্পষ্ট অবজেকশন দাঁড় করা সম্ভব।

প্রশ্ন তোলা সম্ভব, দায় স্বীকারকারী তথাকথিত ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম সেভেন’ নামে যারা হঠাৎ দৃশ্যপটে আবীর্ভুত হলো, তাদের নিয়েও। এই তথাকথিত চরমপন্থী সংগঠনটি, সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যান বিভাগের একজন সিনিয়র অধ্যাপকের নির্মম হত্যাকান্ডের পর পর, ফেসবুকে একটি ফেইক আইডি খুলে, তৎক্ষণাৎ হত্যার দায় স্বীকার করে, সর্বপ্রথম আবির্ভূত হয়েছিলো। কিন্তু সেই ঘটনাটির পরে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা ও ব্যার্থতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার কোনই সুযোগ নেই।

একাধিক স্বশস্ত্র ব্যাক্তি দ্বারা আভিজিৎ রায়কে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে, হত্যা করার সময়, একুশে বই মেলাকে ঘিরে থাকা, বিপুল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা, কোথায় হাওয়া হয়ে গিয়েলেন? তারা কেন এগিয়ে এলেননা? কেন উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা অভিজিতের নির্মম অবস্থা দেখেও এগিয়ে না এসে জনতাকে সরিয়ে রাখার হাস্যকর দারোয়ানগিরি করলেন! কেন ঘটনাস্থলে থাকা সেই সদস্য ও তার গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা অভিজিতের স্ত্রীর ডাকে সাড়া দিলেন না? কিংবা ধাওয়া করলেন না খুনিদের?

তারও চেয়ে বড় প্রশ্ন, একুশে বই মেলাকে ঘীরে থাকা বহু স্তরের নিরাপত্তা ও চেকপয়েন্ট গুলো নিয়ে।

প্রশ্ন তোলা যায় অপরাধিরা কীকরে অস্ত্র নিয়ে সেসব চেকপয়েন্ট পার হল? আবার পালিয়ে যাওয়ার সময়ই বা ঐ এলাকার চেকপোষ্টের নিরাপত্তাবাহিনী কোথায় ছিলো? কেন ঘটনাস্থলের পুলিশ, অপরাধিদের গমনপথ অনুযায়ী, ঐ এলাকার বাহিনীকে নির্দেশনা পাঠালেন না? কিংবা, কেন নির্দেশনার পরেও, পলায়নপর স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তারা আটক করলেন না?

চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও উদ্বেগের মাঝে চলা জনবহুল একটি জাতীয় মেলার নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুরুতর সব প্রশ্ন উত্থাপন করা সম্ভব।

যেসব প্রশ্নের কোন জবাব আমাদের জানা নেই। দৈনিক প্রথম আলো (আপডেট: ১০:১৬, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ) সূত্রে আমরা যতটুকু জানতে পারি তা উদ্ধৃত করা হল-


“প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে বলছেন, ঘটনাস্থল ও এর আশপাশে অস্ত্র হাতে পুলিশ সদস্যরা থাকলেও তাঁরা ছিলেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। হামলাকারীদের ধাওয়াও করেননি তাঁরা”

“অভিজিতের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক অজয় কুমার রায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘পুলিশ হয়তো আমার ছেলের খুন ঠেকাতে পারত না। কিন্তু পুতুলের মতো দাঁড়িয়ে না থেকে তারা তো খুনিদের ধরতে পারত।”



“পুলিশ যে ঘটনাস্থলেই ছিল, সে কথা পুলিশ কর্মকর্তারাই স্বীকার করেছেন। পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার আবদুল বাতেন প্রথম আলোকে বলেন, শুধু পুলিশ নয়, সেখানে অনেক সাধারণ লোকও ছিলেন”।

“রমনা অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) এস এম শিবলী নোমান আরেক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘একজন পুলিশ ঘটনা দেখে মনে করেছিল, মারামারি হচ্ছে। এ রকম যে ঘটবে, সেটা আগে বুঝতে পারেননি”

এস এম শিবলী নোমানের কথার রেশ ধরে বলতে চাই, আগেও বিপথগামী কিছু পুলিশের গ্রেফতার বানিজ্য, অপহরন, ডাকাতির মত গুরুতর অপরাধ কিংবা নিত্য চাঁদাবাজির সময় যে সাধারন দৃশ্য আমরা দেখে এসেছি অর্থাৎ “পুলিশের নেম প্লেট খুলে পরিচয় লুকানোর ব্যার্থ চেষ্টা”, সেই একই দৃশ্য এসময় দেখে আমরা রীতিমত সন্দেহের ঘোরে আবর্তিত হচ্ছি!

ওপরের সব প্রশ্নের জবাব যেন এই পুলিশ সদস্যের এই বেআইনী ও ইনডিসিপ্লিনারি আচরনে না মিলে যায়, আমরা সেই আশাবাদ ব্যাক্ত করলেও, প্রতিটি সম্ভাব্যতাকে যাচাইয়ের দাবি তো করতেই পারি!





এতবড় একটি খুনের সাথে জড়িত, প্রকাশ্য খুনিদের আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃক ধরার ক্ষেত্রে, এই ভীষণ অনীহা, সত্যিই আমাদের বিস্মিত করেছে! মনে হচ্ছে যেন ঠিক অভিজিৎ হত্যাকান্ডের মুহুর্তটিতে বই মেলাকে ঘিরে থাকা বহুস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পূর্ণই গায়েব হয়ে গিয়েছিলো! আমরা আমাদের নিরাপত্তার প্রশ্নে নারায়নগঞ্জের মত নিরাপত্তা বাহিনী সম্পৃক্ত আর কোন ‘কন্টাক্ট কিলিং’ আতংককে প্রশ্রয় দিতে চাইনা। এই আতংকের অবসান হতেই হবে।


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×