somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘আনু মুহাম্মদ’রা নিজের টাকায় কলা খায়।

০৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাস্টার্সের ভাইভা শেষ করে প্রফেসর আনু মুহাম্মদ এর রুমে গেছি।

স্যারের কাছ থেকে বিদায় নিতে। স্যার জিজ্ঞেস করলেন, 'কি করতে চাও। প্ল্যান কি'? আমি বললাম, 'কোন প্ল্যান নাই স্যার। যা কিছু ইচ্ছে। যে কোন কিছু একটা! তবে এখনো কিছু ভাবি নি'।

স্যার একটা ফোন নাম্বার দিয়ে বললেন, 'এই নাম্বারটায় ফোন করে কথা বলে দেখো তো'!
আমি আর আমার আরেক বন্ধু, সেদিনই নাম্বারটায় ফোন করে ফেললাম। দেখা করলাম। তার দুদিন পর থেকে আমাদের একটা চাকুরি হয়ে গেল।

আমরা প্রবলভাবে উত্তেজিত। যেমনই হোক, একটা কিছু তো করছি। সেই যে একটা কিছু করা শুরু হল, সেই পথ চলছেই। দশ বছর হয়ে গেল। জানি না সেই পথ কবে ফুরাবে, অথবা আদৌ ফুরাবে কীনা!

মাঝখানে প্রফেসর আনু মুহাম্মদ এর সাথে খুব বেশি যোগাযোগ রাখতে পারি নি। তিনি নিজেও ব্যস্ত হয়ে গেছেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আন্দোলন, সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন নিয়ে। শিক্ষকতা করেন, দেশব্যাপী গণসংযোগ করেন।

সপ্তাহ দু'য়েক আগে খুলনায় গেছিলাম। একটা ট্রেনিং সেন্টারে দুপুরে খেতে নেমে দেখি, একই ডাইনিং হলে তিনি। আমার ভেতরটা খুশিতে টগবগ করছিল যেন। কি অবাক রকমের আনন্দে বুকের ভেতরটা পরিপূর্ণ হয়ে গেল! একজন শিক্ষককে দেখলে এরকম আনন্দ কখন হয় কারো?

প্রায় দৌড়ে গিয়ে স্যারের সামনে হাজির হলাম। তারপর নানা প্রসঙ্গ, নানা কথা। স্যার নানা প্রশ্ন করলেন। জানালাম, কি করছি এখন। মনে করিয়ে দিলাম যে, আপনার হাত ধরেই এই সেক্টরে আমার শুরু। বিস্ময়কর ব্যাপার হল, তার এই ব্যাপারে কিছুই মনে নাই। বরং অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, 'তাই নাকি'?

আমি জানি, মহান মানুষেরা এরকমই হয়। এরা মানুষকে, দেশকে উজাড় করে দেন। বুক পেতে দেন। কখনোই বিনিময়ের জন্য অপেক্ষা করেন না। শুধু মহান নয়, এসব মানুষেরা সফলও বটে। দারুণ লেখেন, ভাল বক্তা, শ্রেণীকক্ষে নিয়মিত, অসাধারণ। এরা সভাপতি হলে বিভাগের সেশন জট লুপ্ত হয়।

সেদিন দেখি, এক নামকরা নারী সাংবাদিক, লেখিকা, তিনি আবার একটা ঘরানার বুদ্ধিজীবীও- একটা কলাম লিখেছেন, যার শিরোনাম, আনু কলা খায়। পুরা লেখায় আনু মুহাম্মদ যে দেশদ্রোহী, দালাল, সেটা প্রমাণ করার কি যে প্রাণান্তকর চেষ্টা! সেই সাংবাদিকের মূঢ়তা, অজ্ঞতা দেখে খুব করুণা হল আমার! আমি সেই লেখার মন্তব্যের ঘরে গিয়ে লিখে দিয়ে এসেছি, 'আনু নিজের টাকায় কলা খায়। আপনার মতো ছিলা কলা দেখলেই ঝাপাইয়া পড়ে না'।

আমার কষ্ট হচ্ছে এই ভেবে যে, মাঝখানে বড় একটা সময় স্যারের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারি নি। সেই অপরাধে এই পোস্টটার মাধ্যমে আপনার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, আমার প্রিয় শিক্ষক।

আপনি ভাল থাকুন।
শিক্ষকতার জয় হোক।
সংগ্রাম দীর্ঘজীবী হোক!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:০৪
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×