somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাজের লোক, মানুষ এবং একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা!

০৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অফিস থেকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। গভীর ঘুম!

ঘুম ভাঙলো পেটে খুব ক্ষুধা নিয়ে! ঘড়িতে বাজে সাড়ে আট টা! তড়িঘড়ি করে চোখেমুখে পানি দিয়ে, বাইরে এসে দেখি লংকাকান্ড!
তুমুল বৃষ্টি! বৃষ্টির সাথে ঝড়! রাস্তাঘাটে পানি জমে গেছে। একটা দুটো অটো দেখা যাচ্ছে বটে; তবে সবারই বাড়ি ফেরার তীব্র তাড়া! তার মানে হোটেলের রেস্টুরেন্টই ভরসা!

সমস্যা হলো, রেস্টুরেন্টে খাবার অর্ডার করে বসে থাকতে হবে কমপক্ষে আধা ঘন্টা! এই আধাঘণ্টা পেটের ক্ষুধা সামলাবো কি করে? রুমে ফিরে একটা বই নিয়ে রেস্টুরেন্টে ফিরলাম। কোণার দিকের একটা রুমে গুটিসুটি মেরে বসলাম। খাবার অর্ডার করে বইয়ে মনোযোগ দিলাম। বিরাট কাঁচ ভেদ করে বাইরে বাড়ি ফেরা মানুষের তাড়া দেখা যাচ্ছে! ভিজে একাকার হয়ে যাওয়া অটো, কখনো সখনো দ্রুত ছুটে যাচ্ছে দু/একটা কাচঁ তোলা গাড়ি, গাড়ির চাকায় ছলকে উঠছে কাদা পানি!

আমার পাশের বড় টেবিলে একটা পরিবার খেতে বসেছে। চায়নিজ খাবারের অর্ডার করেছে। চিকেন ফ্রাই, ভেজ এবং আরও এটাসেটা! খাবারের ঘ্রাণ আসছে! আমার ক্ষুধা আরও বেড়ে গেল।

হঠাৎ একটা শিশুর চিৎকার শুনে মনোযোগ সেদিকে ফিরলো। ছোট্ট একটা শিশু হাত পা ছুড়ে কাঁদছে! তের চৌদ্দ বছরের একটা বালিকা প্রাণপণ চেষ্টা করছে তার কান্না থামাতে; কিন্তু পারছে না। এই দৃশ্য দেখে পাশের টেবিলের পরিবার হেসে কুটিকুটি! এবার বুঝতে পারলাম, বালিকা আসলে এই পরিবারেরই 'কাজের মেয়ে'! পরিবারটি যখন খাওয়া দাওয়া করছে, বালিকার দায়িত্ব পড়েছে তাদের বাচ্চা সামলাবার!
আমি আরও মনোযোগ দিলাম। বালিকার টেবিলেও খাবার আছে, তবে সে খাবার আর পরিবারটির খাবারে বিস্তর তফাৎ। তাকে ভাত, ডাল আর সবজি দেয়া হয়েছে। বেচারি সেই খাবারটাও খেতে পারছে না।

আমরা নাকি ক্রমশ সমৃদ্ধ দেশের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু মানসিকতায় এই দৈণ্যতা কোথা থেকে পেলাম আমরা? আমরা মানবিকতার এ কোন মুখে অগ্রসর হচ্ছি? এইটা কোন পারিবারিক মূল্যবোধ? এই পরিবারটির সাথে কয়েকটা শিশুও আছে, ওরা কি শিখছে পরিবারের বড়দের কাছ থেকে?

আমার ক্ষুধাটা হঠাৎ করেই চলে গেল!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×