somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছলনাময়ী

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার দাদা এবং নানা উভয়েই নাকি পাক্কা ইমানদার ছিলেন। দাদার সারাজীবনে নাকি মাত্র চৌদ্দ অক্ত নামাজ কাজা হয়েছিল। আমার আম্মা এসব কথা আমাকে প্রায়ই শোনাতেন। আমাকে বলতেন, আমি যেন আমার দাদা-নানার মতো পাক্কা ইমানদার হই। এজন্য নাকি আমাকে মাদরাসালাইনে লেখাপড়া করতে হবে।

আমার আম্মার বিশ্বাস, মাদরাসালাইনে পড়া ছাড়া পাক্কা ইমানদার হওয়া যায় না। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই আমাকে মাদরাসায় ভর্তি হতে হলো। অবশ্য মাদরাসায় ভর্তি হতে আমার কোনো আপত্তি ছিল না।
যাই হোক, ভর্তি হলাম মাদরাসায়। খুব ভালোভাবে লেখাপড়া শুরু করলাম। কিছুদিনের মধ্যেই বাবা-মাসহ হুজুরদের চোখের মণি হয়ে গেলাম। এভাবে কেটে গেল কয়েকটি বছর।

২০০৫ সাল। কোরআনের হাফেজ হলাম। আমি হাফেজ হয়েছি শুনে সবার সে কি আনন্দ! আমার আম্মা তো খুশিতে কেঁদেই ফেলেছিলেন। সেদিন সবার অনন্দ দেখে আমারও খুব ভালো লেগেছিল।

তারপর ঢাকার বনানীতে জামাত লাইনে ভর্তি হলাম। খুব ভালোভাবেই চলছিল লেখাপড়া। প্রতিটি ক্লাসেই আমার নাম ছিল মেধা তালিকায় সবার উপরে। তাছাড়া বাংলা বক্তব্য ও ইসলামি সঙ্গীতসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রথম হতাম বরাবরই।

আমাদের মাদরাসায় একটি সাহিত্য সংঘ ছিল। সেখানেও রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলাম। সেখানে আমাকে রবীন্দ্রনাথের ‘শেষের কবিতা’ বইটি উপহার দিয়েছিল। সেদিন আমার আনন্দ ছিল দেখার মতো। কিন্তু এ আনন্দ আমার বেশিদিন স্থায়ী হয় নি।
পরিবারের ছোট ছেলে এবং লেখাপড়ায় ভালো থাকার দরুন আমার প্রতি সবার আদরের মাত্রাটা একটু বেশি ছিল। কথায় আছে, ‘সুখে থাকতে ভুতে কিলায়’। আমার বেলায়ও হয়তো তাই হয়েছিল।

তখন পড়তাম মালিবাগে। ভর্তি, ইন্টারভিউ অনেক কঠিন হয়েছিল সেখানে। তারপরও ভালো ফল করায় থাকা-খাওয়া ফ্রি ছিল। কথাটা পরিবাবের কাউকে জানালাম না। কারণ মনের মধ্যে একটা বাজে চিন্তা কাজ করছিল তখন। থাকা-খাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাকে বাড়ি থেকে টাকা দেবে আর সেই টাকা দিয়ে আমি একটি মোবাইল ফোনসেট কিনবো। মোবাইল ফোন ব্যবহারের বড় শখ ছিল আমার। কিন্তু পরিবারের কঠিন নির্দেশ ছিল, লেখাপড়া অবস্থায় ফোন ব্যবহার করতে পারবো না। তাই তাদের না জানিয়েই ফোন ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম মাসের টাকাটা পেয়েই একটি মোবাইল ফোনসেট কিনে ফেললাম। তখন থেকেই শুরু হলো আমার লেখাপড়ার অবনতি। সারাক্ষণ শুধু ফোন নিয়েই বসে থাকতাম। ক্লাসের মধ্যেও হুজুরদের চোখ ফাকি দিয়ে মোবাইল ফোনসেট টিপতাম প্রায় সময়।

এমনিভাবে একদিন বিকেলে বসে ফোন টিপছিলাম, হঠাৎ মনে পড়লো অনেকদিন আগে আমার একবন্ধুর মোবাইল ফোন দিয়ে একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম। অসাধারণ লেগেছিল মেয়েটির কণ্ঠ। কথাটি মনে হওয়াতে কেন যেন মেয়েটির সঙ্গে কথা কথা বলতে খুব ইচ্ছা হলো।
দেরি না করে ফোন দিলাম বন্ধুর কাছে। জিজ্ঞাসা করলাম মেয়েটির নাম্বার আছে কিনা।
সে বললো, আছে।
জিজ্ঞাসা করলাম, তুই কি তার সঙ্গে কথা বলিস?
সে বললো, অনেক দিন আগে একবার বলেছিলাম। এখন আর বলি না।
আরো দুই একটা প্রশ্ন করে তার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে নিলাম।

সেদিন ছিল ২৪ ডিসেম্বর ২০০৮। বিকেল সাড়েচারটা। ফোন দিলাম কাঙ্ক্ষিত নাম্বারটিতে|
ওপাশ থেকে মিষ্টি মেয়েলি কণ্ঠ শুনতে পেলাম। হ্যালো, কে বলছেন প্লিজ।
মুগ্ধ হয়ে গেলাম কণ্ঠ শুনে।
-জি, আমাকে আপনি চিনবেন না।
-চিনবো না, তাহলে ফোন দিয়েছেন কেন?
বললাম অনেকদিন আগে একবার রংনাম্বারে আপনার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। খুব ভালো লেগেছিল আপনার সঙ্গে কথা বলে। তাই আজ আবার ফোন দিলাম।
এভাবেই শুরু হয়েছিল তার সঙ্গে কথোপকথন। তার নাম ছিল দুটি, আখি এবং অযুথি। সবাই তাকে আখি বলে ডাকলেও আমি তাকে অযুথি নামে ডাকতাম। এ নামটি আমার খুব প্রিয় ছিল।

অযুথিদের বাড়ি ছিল ঘোড়াশাল। সম্পর্কের দুই-একদিন পরই তার কাছে থেকে আমি এসব কিছু জেনে নিয়েছিলাম।
প্রথমদিন অযুথির সঙ্গে কথা বলেই তাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। কিন্তু সেটা তাকে বুঝতে দিই নি। এভাবেই চলছিল দিন-রাত দুজনের ফোনে কথোপকথন।
একদিন সময় বুঝে তাকে আমার ভালোবাসার কথা জানালাম। কিন্তু সে না করে দিয়েছিল। বলেছিল, সে নাকি একজনকে ভালোবাসে। আমাকে ভালোবাসা তার দ্বারা সম্ভব নয়।

চুপ হয়ে গিয়েছিলাম তার কথা শুনে। কিন্তু স্বাভাবিক কণ্ঠে বলেছিলাম, ঠিক আছে, তুমি যেহেতু একজনকে ভালোবাসো সেহেতু আমি আর তোমাদের দুজনের মাঝখানে এসে বাধা সৃষ্টি করবো না। তাকে তুমি ভালোবেসে সুখী হও। কথাটা বলতে যদিও কষ্ট হয়েছিল তবুও বলেছিলাম। কারণ একজনের সুখ ভেঙে আমি সুখী হতে চাই না।

ঘটনাটা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিন্তু না! বিধাতার ইচ্ছা হয়তো অন্য কিছু ছিল। কেন যেন সেদিন রাতে আবার ফোন দিলাম তাকে। সে খুব হাসি-খুশি কথা বলেছিল আমার সঙ্গে। কিন্তু আমি খুব আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম সে রাতে। কান্নাভেজা কণ্ঠে নিজের লেখা একটি কবিতা আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলাম। তারপর লাইনটা কেটে দিয়ে তার নাম্বারটা ডিলিট করে দিলাম।

ইচ্ছা ছিল তার সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখবো না। কিন্তু বিধি বাম! সে এবার আমাকে ফোন দেয়া শুরু করলো। রিসিভ না করে কেটে দিলাম কয়েকবার। তারপরও ফোন। বাধ্য হয়ে রিসিভ করলাম। ফোন দেয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলাম।
বললো, আমার সঙ্গে সে মিথ্যা বলেছে। আসলে সে কাউকে ভালোবাসে না। আমাকে পরীক্ষা করার জন্য নাকি তার মিথ্যা বলা। কিন্তু আমার কবিতা শোনার পর সে আর মিথ্যা বলার কোনো প্রয়োজন মনে করে নি। এবার সেও আমাকে তার ভালোবাসার কথা জানালো।

তারপর থেকে ফোনেই চলছিল দুজনের মন দেয়া-নেয়া। দিন-রাত কথা বলতাম তার সঙ্গে। লেখাপড়ার কোনো মন-মানসিকতাই ছিল না তখন। নামে মাত্র লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলাম। অবশেষে তারও সমাপ্তি ঘটলো।
একদিন অযুথি আমাকে বললো, তার বিয়ে নিয়ে পরিবারে আলোচনা হচ্ছে। যে কোনো সময় নাকি তার বিয়ে হয়ে যেতে পারে। আমি যেন কিছু একটা করি। তা না হলে চিরদিনের জন্য তাকে হারাতে হবে।

তার কথা শুনে মাথায় যেন আকাশটা ভেঙে পড়লো। কি করা উচিত বুঝতে পারলাম না। এই বয়সে বিয়ে করা কিভাবে সম্ভব? তাছাড়া এখন বিয়ে করে খাওয়াবো কি তাকে? রাখবো কোথায়? আবার তাকে হারাতেও পারবো না। কিছুই ভাবতে পারছিলাম না। মাথাটা ভারী হয়ে এলো।

অবশেষে সব চিন্তা বাদ দিয়ে কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিলাম। এ একটা সিদ্ধান্তই আমার সুখের জীবনটা ধ্বংস করে দিল। যে কোনো কিছুর বিনিময়েই হোক, অযুথিকে আমার চাই-ই চাই। তাই আর সাত-পাঁচ না ভেবে একবন্ধুর মাধ্যমে গাজীপুরে একটি চাকুরি ঠিক করলাম।

তারপর একদিন সুযোগ বুঝে পরিবাবের কাউকে না জানিয়ে, এমনকি হুজুরদেরও না জানিয়ে মাদরাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে চাকুরিতে যোগ দিলাম।

এবার শুরু হলো ভিন্ন জীবন। একরকম ভালোই লাগছিল আমার কাছে। দিন-রাত শুধু ফোনে কথা চলতো অযুথির সঙ্গে। যে কোনো কারণেই হোক, একদিন যদি মোবাইলে তার সঙ্গে কথা বলতে না পারি তাহলে মনে হতো যেন কতো যুগ যুগ ধরে তার সঙ্গে কথা বলি না। মনে হতো, সে আমার কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

একদিকে পরিবারের সবাই যখন তাদের এতো আদরের ছেলে কোথায় হারিয়ে গেল সে চিন্তায় অস্থির, ঠিক তখন আমি এক ছলনাময়ী সুকণ্ঠি নারীর মিথ্যা ভালোবাসায় হাবুডুবু খাচ্ছি। আশ্চর্য! যে বাবা-মা আমাকে এতো ভালোবাসতেন সেই বাবা-মাকে আমি কোথায় আছি, কেমন আছি একথাটাও জানানোর প্রয়োজন মনে করলাম না।
আসলে এ সময়গুলো ছিল আমার জীবনের এমন এক সময়, যা আমার অতীতকে ভুলিয়ে দিয়েছিল। পুরোপুরি ‘পাপিষ্ঠ’ হয়ে গিয়েছিলাম। তা না হলে না দেখে একটা মেয়ের জন্য এমন অন্ধপাগল হয়ে গেলাম কেন? এতো গভীরভাবে ভালোবাসার বিনিময়ে সে কি দিয়েছে আমাকে? হ্যাঁ দিয়েছে! অনেক কিছু দিয়েছে যা কখনো ভোলার মতো নয়।

একদিন বিকেলে মনটা খুব প্রফুল্ল ছিল আমার। বিকেলটা ছিল খুবই সুন্দর। সারাদিনের ক্লান্ত রবিটার সোনালি আভায় চিকচিক করছিল শস্য জমিনগুলো। এমন একটা বিকেলের জন্য যুগ যুগ ধরে অপেক্ষা করে কবি-সাহিত্যিক। এ সুন্দর বিকেলটাকে পুরোপুরি উপভোগ করার জন্য ফোন দিলাম অযুথিকে।

ইচ্ছা ছিল দারুন একটা সারপ্রাইজ দেবো তাকে। কিন্তু আমি সারপ্রাইজ দেয়ার আগেই আমাকে সে এমন এক সারপ্রাইজ দিল যার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। অযুথি খুব স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো, আমাকে তুমি ভুলে যাও।

পাথর হয়ে গিয়েছিলাম তার কথা শুনে। কোনো কথা বলতে পারলাম না। মনে হয় নিজের বোধশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম। খুব কষ্টে বললাম, আমি এখন কথা বলতে পারছি না। একটু পরে ফোন দিচ্ছি। লাইনটা কেটে দিলাম। স্বাভাবিক হওয়ার জন্য মসজিদে গেলাম নামাজ পড়তে। নামাজ পড়তে গিয়ে শুধু এতোটুকু লাভ হলো, চোখের জলে নামাজের জায়গা ভেজালাম। নামাজের পর পাশে দাঁড়ানো মুসল্লিরা আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।

তারপর যখন ফোন দিলাম তখন ওপাশের কণ্ঠ শুনে অবাক না হয়ে পারলাম না। অন্য একটি মেয়ে ফোন ধরে বললো, আমি নাকি রংনাম্বারে ফোন করেছি। এখানে নাকি অযুথি নামের কেউ থাকে না। এবার দুই চোখে শুধু অন্ধকার দেখতে পেলাম। বলে কি মেয়েটা! যাকে পাওয়ার জন্য সব কিছু ছেড়ে এলাম তার নাম্বার কি আমি ভুলতে পারি? সেদিন অনেক অনুনয়-বিনয় করে বলেছিলাম, একটিবারের জন্য হলেও যেন ফোনটা অযুথির কাছে দেয়।

সেদিন আমার কথা রেখেছিল মেয়েটি। ফোনটা দিয়েছিল অযুথির কাছে। কিন্তু তার সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারি নি। শুধু কেঁদেছিলাম। কতোক্ষণ কেঁদেছিলাম তা বলতে পারবো না। চার-পাঁচ ঘণ্টা পার হয়ে গেয়েছিল। এর মাঝখানে শুধু একটি কথাই বলেছিলাম, কেন তুমি আমাকে এতো কষ্ট দিলে? না দেখে তোমাকে এতো ভালোবাসার কারণেই কি? পারলে না অন্ধের মতো তোমাকে ভালোবাসার অপরাধটা ক্ষমা করতে?
কোনো উত্তর পাই নি তার কাছ থেকে। সেও কাঁদছিল। কিন্তু ফোনে হলেও তার কান্নার আওয়াজটা যে কৃত্রিম ছিল তা বুঝতে আমার একটুও কষ্ট হয় নি।

নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলাম আমি। যার জন্য সব কিছু ত্যাগ করলাম তাকেও হারালাম। বুঝতে পেরেছিলাম জীবনে কতো বড় ভুল করে ফেলেছি। ইচ্ছা ছিল ভ্যালেনটাইনস ডে-তে দেখা করে দুজনে বিয়ের কাজটা সেরে ফেলবো। কিন্তু তা আর হলো না। মনের ইচ্ছাকে মনের মধ্যেই মাটি চাপা দিতে হয়েছে।

ভ্যালেনটাইনস ডে এসেছিল। কিন্তু দুজনের দেখা করা হয় নি; বিয়েও হয় নি। ব্যথায় বুকটা ভেঙে গিয়েছিল আমার। জীবনের প্রথম যে মেয়েটিকে ভালোবাসলাম তাকে দেখারও ভাগ্য হলো না আমার। মনের মধ্যে মেয়েদের প্রতি আগে একটা বিশ্বাস ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। কোনো এক ছলনাময়ী সে বিশ্বাসটা ভেঙে ফেলেছে। অন্তত ভালোবাসার ব্যাপারে এখন আর মেয়েদের বিশ্বাস করতে চাই না, বিশ্বাস করি না।

মনে আছে, একদিন এক অনুষ্টানে আমার কণ্ঠে গান শুনে একটি মেয়ে আমাকে I love you বলেছিল। তাকে এতো জোরে ধমক দিয়েছিলাম যে, সে কেঁদে ফেলেছিল। মুখে বিদ্রুপের হাসি টেনে বলেছিলাম, I love you-এর মানে বোঝো তোমরা? শুধু মুখ দিয়ে বললেই হলো I love you? এর বাস্তবতা কতো কঠিন তা জানো?

চলে এসেছিলাম। বিরাট ভুল করেছি জীবনে। আর ভুল করতে চাই না। যতোটুকু দুঃখ পেয়েছি জীবনে তার জন্য কে দায়ী? সেটা আজও নির্ণয় করতে পারি নি। অতি আবেগপ্রবণ এই আমি? নাকি আমার অতি শখের বশে কেনা মোবাইল ফোন? নাকি আমার বানানো সেই কবিতা যার জন্য ডুবন্ত তরী প্রবল ধাক্কায় ভেসে উঠেছিল পুনর্বার? নাকি ছলনাময়ী সেই মেয়েটা যে আমার ভালোবাসার চুল পরিমাণ দামও দেয় নি? নাকি এটা ছিল আমার ললাট লিখন?

এসব প্রশ্ন এখন পাঠকদের ওপরই চাপিয়ে দিলাম। আমি আর এসব নিয়ে ভাবতে চাই না। এখন আমার কাজ শুধু একটাই, পরিবারে যে একটা স্থান ছিল সে স্থানটা আবার ফিরিয়ে আনা। যদিও জানি সেটা সম্ভব নয়। কারণ খাল কেটে কুমির আনার কাজটা নিজ হাতেই করেছি। সুতরাং আফসোস করে কোনো লাভ নেই। তারপরও চেষ্টা করছি।
লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি। নিজের খরচ নিজেই বহন করছি। আশা করছি অতি কষ্টের বিনিময়ে হলেও পরিবারে আবার একটি ভালো স্থান পেয়ে যাবো খুব শিগগিরই। সেই দিনটিরই আশা করছি। তাই আর অতীত নিয়ে ভাবতে চাই না। অতীত মানুষকে কষ্ট দেয়।

কষ্ট করতে চাই না। তারপরও অবুঝ মন যখন কোনো স্মরণীয় দিনে অতীতের স্মৃতি মনে করে নিঃশব্দে অশ্রু ঝরায় তখন মনকে সান্ত্বনা দিয়ে বলি, ছিঃ কাঁদছিস কেন? সে ছিল এক ছলনাময়ী! তার জন্য কাঁদতে নেই।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×