বিজ্ঞাপনের ভিডিওটাতে দেখা যাইতেছে, একটা ছেলে নির্দিষ্ট ছকের ভেতর দিয়া বাইক চালানোর জন্য ড্রাইভিং টেস্ট দিতেছে। এরপর ছকের ভেতর দিয়া চালাইতে ব্যর্থ হয়া পইড়া গেছে। ব্যাকগ্রাউন্টে কলিজার ধুকপুকানি আওয়াজ। কিছু একটা হইতে যাইতেছে টাইপ। এরপর পরীক্ষক কইলো, সরি ভাই, আমরা আপনেরে নিতে পারতেছি না। ছেলেটা হতদরিদ্র চেহারা নিয়া মায়ে হাসপাতালে আছে প্রচুর টাকার প্রয়োজনভঙ্গিতে আমতা আমতা কইরা কইলো, ভাই চাকরিটা খুব দরকার আমার।
কাহিনি এই পর্যন্তই। এরপর প্রাতিষ্ঠানিক কথাবার্তা এবং স্লোগান। কইলো—“দুঃখিত, এইখানে (কোম্পানির নাম) অদক্ষ চালকগোরে নেয়া হয় না। কারণ, আমাদের কাছে সব কিছুর আগে যাত্রীদের নিরাপত্তা। আর এক্ষেত্রে সবচে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হইতেছে, কার পেছনে আমাদের যাত্রীরা চড়ছেন?”
লাস্ট ও ফিনিশিং ডায়ালগে কইলো—“আপনে যে রাইড ব্যবহার করছেন, সেখানে চালকদের দক্ষতার ব্যাপারটা গুরুত্ব পায় তো?”
আমার কাছে বিষয়টা তাৎক্ষণিক ভালোই লাগছে। দেশ আগায়া যাইতেছে। জনগণের সাথে কোম্পানিগুলোও সতর্ক হইতেছে। মানবিক মূল্যবোধ তৈরি হইতেছে। খারাপ কি?
কিন্তু নিচে দেয়া ডিসক্রিপশনে গিয়া দেখলাম, তাদের কাছে রেজিস্ট্রেশনের জন্য ছবি, এনআইডি, গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স চাইতেছে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কেন চাইতেছে? তারা তো টেস্ট ড্রাইভ নিতেছেই, যেমনটা বিজ্ঞাপনে দেখলাম। তাইলে কি বিআরটিসির লাইসেন্স ও তার ড্রাইভ টেস্ট নিয়া আঙ্গুল তুলতেছে কোম্পানিটা? তাও আবার সেইটা বিজ্ঞাপনের ভাষায়? বাংলাদেশ সরকারের একটা অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যখন এইভাবে খুল্লমখোলা কথা কয়া পার পায়া যায়, তখনই বুঝা যায়, বাংলাদেশ কতটা নিচে আছে! তবুও দেখেন, কারো টনক নড়ে না?
তার উপর পাবলিকরে শেষে গিয়া কনফিউশনে ফালায়া দিতেছে এই বইলা, “আপনে যে রাইড ব্যবহার করছেন, সেখানে চালকদের দক্ষতার ব্যাপারটা গুরুত্ব পায় তো?” মানে, আমরাই সরকারের এই দূর্বল জায়গাটায় প্রথম হাত দিছি। অন্য কেউ দিতে পারছে?
ছবি প্রতীকী, সূত্র ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৪