somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঁচ মিশালীঃ পর্ব- ০৭

০৭ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘একের ভেতর দুই’, ‘একের ভেতর তিন’, ‘একের ভেতর সাত’, কিংবা ‘একের ভিতর সব’ ধরণের বিজ্ঞাপন প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। এসব চটকদার বিজ্ঞাপন অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অনুরূপ আমিও নিয়মিত বিরতিতে ‘একের ভেতরে অনেক’ বা ‘পাঁচমিশালি’ টাইপের একটা পোস্ট দেই। এখানে একই লেখায় ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের উপর কয়েকটা ছোটখাটো লেখা থাকে। যদিও এর সবগুলোই আমি আমার ফেসবুক পেজে দিয়েছি।

যাইহোক, ‘পাঁচমিশালি’র নতুন একটি পর্ব নিয়ে আপনাদের সমীপে হাজির হলাম। আশা করি সাথেই থাজবেন।

১. ধৈর্য্য মহত্তম গুণ।



তখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। এক বড়ভাই সদ্য চাকুরীর পরীক্ষা দিয়ে এলেন। সেই পরীক্ষায় একটা অদ্ভুত মনস্তাত্ত্বিক প্রশ্ন এসেছিল। সেটি হলঃ আপনি চকলেট কিভাবে খান?

ক) পুরোটাই কামড়ে খ) পুরোটাই চুষে গ) কিছু চুষে কিছু কামড়ে ঘ) গিলে।

এর সঠিক উত্তর হবে ‘খ’ মানে ‘পুরোটাই চুষে’। কারণ এই প্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষক আপনার ধৈর্যের মাত্রা পরিমাপ করছেন। এজন্য ‘খ’ এ প্রশ্নের জন্য সঠিক উত্তর। সাধারণত একজন ধৈর্যশীল ব্যক্তি ছাড়া সুস্বাদু ও মুখরোচক চকলেট পুরোটা চুষে খাওয়া বেশ কঠিন। আমি এর প্রমাণও পেয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এমন কয়েকজনকে চিনি যারা চকলেট মুখে পুরেই মুড়মুড় করে কামড়ে এক নিমেষেই খেয়ে ফেলেন। আর ব্যক্তিগত জীবনে তাদেরকে খুব অধৈর্য হিসেবেই পেয়েছি। অবশ্য শতভাগ মানুষের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা কার্যকরী নাও হতে পারে।

যাইহোক, ধৈর্য্য মানুষের শ্রেষ্টতম গুণ। এটি মানুষের লক্ষ্য এবং স্বপ্নকে সদা জীবিত রাখে। এমনকি ধৈর্য্য স্বয়ং মানুষকে জীবিত রাখে। ধৈর্য্যহীন মানুষ সবসময় বিপদে পতিত হয়। এজন্য ধৈর্য্য মহত্তম গুণ। আল্লাহতায়ালা বলেনঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য্য ধারণ কর।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ২০০)।

আল্লাহতায়ালা আরো বলেনঃ “নিশ্চয় ধৈর্যশীলদের অপরিমিত পুরস্কার দেয়া হবে।” (সুরা যুমার আয়াত: ১০)।

মহানবী (সাঃ) বলেন, ‘ধৈর্য হচ্ছে মুক্তির দরজা’। কাজেই, জীবনে যত যাই ঘটুক না কেন, ধৈর্য হারানো একদম অনুচিত।

২. প্রত্যেক ধর্মেই প্রেম আছে, তবে প্রেমের কোন ধর্ম নেই।

৩. মানুষের হাত আল্লাহর দরবারে দুই কারণে ওঠে।
দোয়ার জন্য এবং বদ দোয়ার জন্য।

হে আল্লাহ! মানুষের বদদোয়া থেকে আমাদের হেফাযত করুন। আমিন।

৪. স্মার্টফোনে ক্যামেরা সিস্টেম না থাকলে এটি কখনোই এত জনপ্রিয়তা পেত না।



৫. জীবনে মাত্রাতিরিক্ত প্রত্যাশা ক্ষতির কারণ হতে পারে। স্বাভাবিক গতিতে চলতে দিলেই জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে আনন্দময়।

৬. বাংলাদেশের ‘জাতীয় রোগ’।



এক সময় পত্রিকায় মাঝে মাঝেই পড়তাম, ‘(প্রাকৃতিক) গ্যাসের উপর ভাসছে দেশ’। যদিও বাস্তবে এর সত্যতা মেলেনি। তবে আসল সত্যি হল, দেশ নয় ‘গ্যাসের উপর ভাসছে স্বয়ং মানুষ’। এর মানে কি? বুঝিয়ে বলছি।

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএমএস হেলথ ও লংকাবাংলা রিসার্চের তথ্য বলছে, ‘সর্বাধিক বিক্রীত ১০ ওষুধের ছয়টিই অ্যাসিডিটির, মানে গ্যাসের’। দেশে যত ঔষধ বিক্রি হয় তার অর্ধেকই গ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের। আজব!

দেশের বেশীরভাগ মানুষ নিয়মের কোন ধার ধারে না। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, সময়মতো খাবার না খাওয়া, ভেজাল খাবার, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার, ধূমপান ও মদ্যপানের কারণে মানুষের মধ্যে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়ছে। আর এ থেকে মুক্তি পেতে গ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ওষুধের ওপর নির্ভরতাও বাড়ছে। বলাই বাহুল্য, আমরা প্রেসক্রিপশানের ধারও ধারি না।

অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা আজ ‘জাতীয় রোগ’ হিসেবে চিহ্নিত। আর জাতীয় ঔষধ ‘অমিপ্রাজল’/ইসমিপ্রাজল জেনারের ঔষধ। অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের রোগী যে হারে বাড়ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে মানুষ যদি তাদের পায়ুপথে গ্যাস সিলিন্ডার লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় তবু অবাক হব না। হাহাহা।

৭. টার্কি পাখির কথাঃ



কিছুদিন আগের কথা। মাংশের বাজারে মুরগী কিনে প্রসেসিংয়ের অপেক্ষায় আছি। দোকানের বাম দিকে তাকাতেই দেখি বিশাল বিশাল সাইজের মোরগের মত দেখতে কি যেন। আক্ষরিক অর্থেই বিশাল সাইজ! দোকানীকে জিজ্ঞেস করে জানলাম এগুলো টার্কি নাম। বন্য পাখি হলেও বর্তমানে একে গৃহে পালন করা হচ্ছে। এক একটি টার্কির নাকি মাংশ হয় ৬/৭ কেজি!! অবিশ্বাস্য ব্যাপার! আস্ত একটা খাসির সমান! দোকানী কথায় কথায় আরও জানালো ৪০০/-কেজি দরে মাংশ বিক্রি করা হয়।

পরে টার্কির ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহ করে অবাক হলাম। এর মাংশ কোলেস্টেরল মুক্ত এবং পর্যাপ্ত পরিমান প্রোটিন সমৃদ্ধ। সারা বিশ্বে এটি ‘রয়েল মিট’ হিসেবে পরিচিত। যাদের অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া নিষেধ অথবা যারা নিজেরাই এড়িয়ে চলেন, কিংবা যারা গরু/খাসীর মাংস খায়না, টার্কি তাদের জন্য প্রিয় একটি বিকল্প।

অবশ্যই খেতে হবে। আমি অবশ্য ভাবছি অন্য কথা। আসছে কুরবানী ঈদে খাসির বদলে ১/২টা টার্কি কুরবানী দিলে কেমন হয়? হাহাহা।

৮. চোখের পরীক্ষাঃ



ছবির লাল বৃত্তটাকে ভালভাবে দেখুন।

যদি নং 88 দেখেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার বাম চোখ দুর্বল;
যদি নং 83 দেখেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার ডান চোখ দুর্বল;
যদি নং 38 দেখেন তাহলে বুঝতে হবে আপনার দু'চোখই শক্তিশালী;
আর যদি নং 33 দেখেন তাহলে আজই ডাক্তার দেখান। আপনার দু'চোখই দুর্বল।
এটি আমেরিকান চক্ষু চিকিৎসদের প্রণীত চোখের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সহজ পরীক্ষা পদ্ধতি।

[কালেক্টেড]

৯. বিপন্ন সিরিয়া!!



একটাই অক্সিজেন মাস্ক ছিল। আর সেটা পরম আদরে ছোটবোনের মুখে ধরে নিজে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল বড় বোন। আহারে! কি দিয়ে, কোন ভাষা দিয়ে তাদের এই ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ করা যায়? আদতে ভাষা এখানে অন্তসারশূন্য! বিশ্ব বিবেক আজ মৃত।

সিরিয়ার এই দুই শিশুসহ শত শত অবুঝ শিশু কি দোষ করেছিল???


সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ ছবি ও তথ্যগুলো বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন সূত্র থেকে নেয়া।

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×