somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পথেঘাটে হিজড়া সমস্যা এবং এর সমাধানকল্পে আমার দুটি কথা

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"টাকা না দিলে চুম্মা দিয়ে টাকা নিমু।" বলেই মানুষটা ছেলেটার দিকে মুখটা বিকৃত করে এগিয়ে আনলো বা "টাকা দে, নাহলে তোর সামনেই কাপড় খুইলা ফালামু।" বলে মানুষটা তার পড়নের শাড়ি হাটু পর্যন্ত তুলে ফেললো।

এইকথাগুলো শোনেননি এরকম মানুষ মনে হয় পাওয়া দুষ্কর। ঢাকার রাস্তায় এসব খুব কমন ঘটনা। আমি নিজেও একাধিকবার এরকম ঘটনার স্বীকার। বাসে করে কোথাও যাচ্ছেন বা বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দিচ্ছেন হঠাৎ করে একদল হিজড়া কোথা থেকে যেন চলে আসবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের চাহিদা না মেটাবেন ততক্ষণ উপরের মতো করে আপনাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবেই।

আর সাথে মেয়ে থাকলে তো কথাই নেই। ওদের চাহিদাটাও তখন দ্বিগুণ। আপনার সাথে আপনার মা নাকি বোন নাকি প্রেমিকা আছে তারা বোঝার চেষ্টাও করবে না। একের পর এক অশ্লীল বাক্যব্যায় আর অশ্লীল কার্যকলাপ করেই যাবে।

এদের আবার সোর্স থাকে। কোন বাসায় বাচ্চা হয়েছে খবর ঠিকই এদের কাছে পৌছে যায়। বা আবাসিক এলাকায় গিয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে দেখবে কোন বাসায় নবজাতকের কাপড়-চোপড় দেখা যায়। আর একটা নবজাতকের বাসা পেয়ে গেলেই হলো।

সদলবলে সে বাসায় গিয়ে মোটামুটি বৈধ এক চাঁদাবাজি চালাবে। আপনার সন্তান হয়েছে মানে ওদের নামে আরোও পাঁচ দশ হাজার টাকা বাজেট করুন। সাধারণত বাসায় যখন কোন পুরুষ মানুষ থাকে না, তখনি তারা যাবে। মায়ের কোল থেকে বাচ্চা কেড়ে নিবে এবং মোটামুটি জিম্মি করবে। যতক্ষণ টাকা না পাবে ততক্ষণ বাচ্চাকে নিয়ে ক্যাচ ক্যাচ খেলার কথাও শুনেছি। সেই মুহূর্তে মায়ের মনের অবস্থাটা একবার ভেবে দেখুন।

হিজড়াদের এই চাঁদাবাজি মোটামুটি বৈধ বলেই স্বীকৃত। আপনি থানায় অভিযোগ করলেও কোন লাভ হবেনা। পুলিশ বলবে এটা তো স্বাভাবিক। কিছু টাকা পয়সা দিয়ে বিদায় করে দিন।

তবে সরকার বা প্রশাসন যদি এই ব্যাপারটায় একটু নজর দেয় তাহলে হয়তো এটার একটা সমাধান আছে। একবার শুনেছিলাম ঢাকার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে নাকি হিজড়াদের নিয়োগ দেয়া হবে। কিন্তু সেই সংবাদ সংবাদপত্রের পাতা পর্যন্তই সীমাবব্ধ। বাস্তবে কোন প্রয়োগ দেখলাম না।

ওদের প্রতি যেমন আমার ক্ষোভ আছে তেমন, ওদের প্রতি একটা সহানুভূতিও আছে। ওদের প্রতি কঠোর হওয়ার প্রয়োজন নেই, কিন্তু সরকার বা কোন বড় সংস্থা ওদের নিয়ে কোন আঈন করে, কঠোর ভাবে তা বাস্তবায়ন করলেই সমাধান সম্ভব।

ওরা যে কোন কাজ করতে পারে না; এমন কিন্তু না। আমার বোন আমেরিকায় থাকে। আগে সে একটা শপিং সেন্টারে জব করতো। সেই মার্কেটে নাকি বেশ কয়েকজন হিজড়া কাজ করতো। আমার গ্রামে ঠিক পাশের বাড়িতে এক হিজড়া কাজ করতো। তাহলে আমাদের দেশে সব লেভেলে কেন সম্ভব না?
একবার ইত্যাদিতে দেখেছিলাম, কোন এক গার্মেন্টস বা অন্য কোন এক ফ্যাক্টরী আছে যেখানে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধীরা কাজ করেন। উদ্দ্যোগটা আমার কাছে চমৎকার লেগেছে।

এরকম কোন প্রতিষ্ঠান কি করা যায় না যেখানে কাজ করবে শুধুই হিজড়ারা। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিলে কি না সম্ভব?

প্রাইমারি পাশ কোন ছেলে বা মেয়ে যদি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কাজ করতে পারে তাহলে হিজড়ারা কেন পারবে না।

কোন প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ী যদি ভিন্নভাবে সমাজের উপকার করতে চান তাহলে কিন্তু এরকম ভিন্ন একটা উদ্দ্যোগ নিতেই পারেন। আমি শতভাগ নিশ্চিত যে এইকাজে সরকারের কাছ থেকে যেমন সবরকম সহায়তা পাবেন তেমনি আপনার প্রতিষ্ঠানের বিনা পয়সায় একটা মার্কেটিং ও হয়ে যাবে। আর জনগণের বাহবা তো আছেই।

ভিন্নকিছু করে নজরে আসতে কে না চায়? শুধু প্রয়োজন আইডিয়া আর বাস্তবায়নেকারীর এক হওয়া। হয়তো ভিন্নভাবে সমাজসেবা কেউ করতে চাইছেন কিন্তু সেরকম কোন বুদ্ধি মাথায় আসছে না। বা প্রশাসনও ব্যাপারটা নিযে উদ্বিগ্ন কিন্তু কোন সমাধান পাচ্ছেন না। হয়তো হিজড়ারাও চায়না মানুষের কাছ থেকে জোড় জবরদস্তি করে টাকা তুলতে, তারাও হয়তো চায় যদি অন্য সবার মতো সম্মানজনক কোন কাজ করতে। পায়না বলে শুধুমাত্র খেয়ে পড়ে বাঁচার জন্য এরকম করছে।

আমি চাচ্ছি এরকম কিছু একটা হোক। সরকার বা কোন সমাজসেবক এরকম কোন উদ্দ্যোগ নিক। আর দশটা নারী পুরুষের মতো হিজড়ারাও রক্তে মাংশে গড়া বুদ্ধিমান মানুষ। তারাও আমাদের মতো লেখাপড়া করবে, চাকরি করবে, ব্যবসায় করবে। শুধু ওদেরকে সুযোগ দিতে হবে। তাহলে ওরাও সম্মানজনক কোন পেশায় প্রবেশ করতে পারবে, আর আমরাও রাস্তাঘাটে এরকম কোন বিব্রতকর অবস্থায় পড়বো না হয়তো।

আমি যত সহজভাবে বললাম বাস্তবতা হয়তো এত সহজ না। এজন্য সরকার বা দেশের প্রশাসনকেই উদ্দ্যোগ নিতে হবে। চলুন আমরা উনাদের নজরে আনার চেষ্টা করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×