somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিকি
ছোটো প্রাণ,ছোটো ব্যথা >ছোটো ছোটো দুঃখকথা >নিতান্তই সহজ সরল >সহস্র বিস্মৃতিরাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি>তারি দু-চারিটি অশ্রুজল>নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা> নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ> অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে>শেষ হয়ে হইল না শেষ

“The Notebook 2013 (Original Title: A nagy füzet )” ---- হাঙ্গেরির এই সিনেমাটি দুইটি অসহায় ছেলের অনুভূতিহীন হওয়ার নির্মম গাঁথা এবং বর্বর বাস্তবতার এক অন্য রূপ দেখাবে...... |-) |-) |-) |-) |-) |-) |-)

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




“People speak sometimes about the "bestial" cruelty of man, but that is terribly unjust and offensive to beasts, no animal could ever be so cruel as a man, so artfully, so artistically cruel.”

আবেগ বা অনুভূতি মানব চরিত্রের এক অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। মানুষের সকল অনুভূতি নির্দিষ্ট একটি feeling station থেকে আসে...এবং সেই নির্দিষ্ট feeling station এর নাম হল মন। মানবিক দিকের অনুকূল পরিস্থিতিতে যার নাম স্নেহ, প্রতিকূল অবস্থায় তা বিদ্বেষে পরিণত হয়ে যায়... অনুকূলে যা ভালোবাসা, প্রতিকূলে তা ক্রোধ হয়ে যায় । পৃথিবীর অনেক জিনিসের মত অনুভূতিগুলোও শক্তির নিত্যতা সূত্র মেনে চলে... আলোক শক্তি রুপান্তর হয়ে যান্ত্রিক অথবা যান্ত্রিক শক্তি রুপান্তর হয়ে রাসায়নিক...এভাবে পৃথিবীর অনেক কিছুই রুপান্তর প্রক্রিয়াতে চলছে... Metamorphosis বলে যাকে! অনুভূতিগুলোও ঠিক একই ধাঁচের হয়ে থাকে...পরিবর্তনশীল এবং ভঙ্গুর... কিন্তু স্থিতিস্থাপক নয়। কোন মানুষ অনুভূতির এই ক্ষমতা হারায় অনেক কারণে যার মধ্যে অন্যতম একটি পারিপার্শ্বিকতা ।আজকের সিনেমা যুদ্ধভিত্তিক হলেও...যুদ্ধের ফলে মানব মনের এক অন্য চিত্র তুলে ধরেছে সূক্ষ্মভাবে...যাকে আমরা বাংলা ভাষাতে “পরিস্থিতিতে অনুভূতিহীন” বলে থাকি।



১৯৪৪ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট...সিনেমার ঘটনা আবর্তিত হয় দুই যমজ ভাইকে ঘিরে....। যার একজনকে সিনেমাতে অভিহিত করা হয় “One” নামে এবং অপরজনকে “Other” নামে। উন্নত, শহুরে পরিবেশে বেড়ে উঠা এই দুই ভাই, তাদের মা বাবার অত্যন্ত আদুরে... বাবা জার্মান মিলিটারিতে কর্মরত একদিন যুদ্ধে ফেরত যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়...এবং যুদ্ধে যাওয়ার আগে তাদের দুইজনকে একটি Notebook দেয় এবং বলে তাদের কিছুদিন নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থানের জন্য শহুরে পরিবেশ থেকে অচেনা কোন জায়গায় পাঠিয়ে দাওয়া হবে...। তারা যেন তাদের চিন্তাধারা, কাজ, অনুভূতিগুলো Notebook টাতে লিপিবদ্ধ করে যাতে তাদের কোন একটি সময়ের প্রতিচিত্র তারা তাদের ভবিষ্যতে লেখ্য রূপে দেখতে পায়। বাবা যুদ্ধে চলে যাওয়ার পর তাদের মা “One” এবং “Other” এর সুরক্ষিত অবস্থানের জায়গা হিসেবে হাঙ্গেরির বর্ডার সংলগ্ন একটি প্রত্যন্ত জায়গায় নিজের মায়ের কাছে রেখে আসার চিন্তা করে। ছেলে দুইটির ইতোপূর্বে তাদের নানীর সাথে ১৩ বছরের জীবনে কখনও সাক্ষাত হয়নি। নানীর কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তারা বুঝতে পারে, তাদের নানী আর কিছু হলেও স্নেহবৎসল নয় বরং অনেক বেশি বদরাগী এবং নির্মম স্বভাবের। এই অবস্থাতেই তাদের মা বিরূপ স্বভাবের নানীর তত্ত্বাবধানে ছেলে দুইটিকে রেখে আসে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে “ যুদ্ধ শেষ হলেই সে ফিরে এসে তাদের দুই ভাইকে নিয়ে যাবে, কিন্তু ততদিন পর্যন্ত তারা যেন ধৈর্যশীল এবং পরিস্থিতির সাথে সহনশীল অবস্থায় থাকে এবং একে অপরের সঙ্গ যেন কখনই না ছাড়ে”। প্রথমদিন “One” এবং “Other” এর নানী তাদের বাড়ির বাইরে সারা রাত বেঞ্চে অবস্থান করায় এবং শর্ত জুড়ে দেয় “ খাওয়ার পেতে হলে তা অর্জন করতে হবে, খাওয়ার বিনিময়ে কাজ করতে হবে”। পরের দিন থেকে তারা তাদের নানীর বিভিন্ন কাজ করে দিতে থাকে, কাঠ কেটে দেয়া থেকে পানি তুলে দেয়া পর্যন্ত কাজ তারা শুধু একটু খাওয়ার প্রয়োজনে করে দেয়...। তাদের নানী সেই কাজের বিনিময়ে প্রথম তাদের আলুর তৈরি স্যুপ খেতে দেয় এবং তাদের বাড়িতে থাকার অবস্থান করে দেয়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তারা তাদের মায়ের কথামত, পড়াশুনা করতে থাকে... তাদের সাথে আনা বই নিয়ে যার মধ্যে বাইবেল উল্লেখযোগ্য। প্রতিদিন নিয়ম করে দুই ভাই পড়ে এবং তাদের দিনের কার্যাবলী লিপিবদ্ধ করে রাখে। কিন্তু দিনকে দিন গেলে তারা খেয়াল করে, তারা যতটা সহজে পৃথিবীর মানুষগুলোকে এই গ্রামাঞ্চলে আসার পূর্বে জেনে এসেছে... মানুষ জাতি এতটাও সহজ কোন জিনিস নয়। বিনা কারণে তাদের মানুষ, বিশেষত তাদের নানী প্রহার করতে থাকে, একটু খাদ্য পাওয়ার আশায় অসহ্য সব যন্ত্রণা তাদের সহ্য করা লাগে..... বর্বর পৃথিবীর বর্বরতার অসহায় শিকার হতে থাকে তারা প্রতিদিন প্রতিনিয়ত। এভাবে একদিন তারা সিদ্ধান্ত নেয়, মানুষ যতই বর্বরতা করুক তাদের সাথে তারা সেই ব্যাথা সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করবে, ক্ষুধার্ত থাকার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তারা ক্ষুধাকে বশ মানাবে..... ক্রুদ্ধ এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে গেলে অনুভূতিহীন হতে হবে তাদের । শুরু হয়, যমজ দুই ভাইয়ের নতুন এক বর্বর জীবনের সূচনা..... অনুভূতিহীন হওয়ার প্রক্রিয়া। তাদের জীবন গিয়ে শেষ পর্যন্ত কোন পর্যায়ে দাঁড়ায়? বর্বর পৃথিবী এবং যুদ্ধের বাস্তবতা তাদের পরিণতি নিয়ে যায় কোন দিকে? সিনেমাটার মূল বৈশিষ্ট্য প্রেক্ষাপটের ভয়াবহতা তুলে ধরার capability এবং এর ভিন্নধর্মী প্লট। যে কোন যুদ্ধের তুলনায় অনেক মাত্রার কঠিন যে যুদ্ধের নাম তা স্বয়ং জীবনযুদ্ধ...এই সিনেমা তা উপলদ্ধি করায়। যমজ দুই ভাইয়ের প্রাণবন্ত ১৩ বছরের বালক থেকে শেষ অবধি ভাবলেশহীন মার্কা মানুষে পরিণত হওয়ার যে metamorphosis দেখায় এক বাক্যে তা অসাধারণ। এই সিনেমাতে entertainment খুঁজতে গেলে গুঁড়ে বালি পড়বে...এই সিনেমাটা যতটা না দেখার তার থেকে অনেক বেশি উপলদ্ধির। Agota Kristof এর “The Notebook ” উপন্যাস অবলম্বনে এই সিনেমাটি তৈরি হয়েছে...১৯৮৬ সালের এই বইটি ফ্রেঞ্চ ভাষার অন্যতম একটি ক্লাসিক হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। ৮৬ তম অস্কারে এটি হাঙ্গেরির হয়ে Best Foreign Language Category তে প্রতিনিধিত্ব করেছিল। সিনেমার গল্প আর কিছু হলেও রূপকথার নয়... এতে আছে বর্বর বাস্তবতা, যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং সবার উপরে দুইটি অসহায় যমজ ছেলের অনুভূতিহীন হওয়ার নির্মম গাঁথা। এই The Notebook নিকোলাস স্পার্কস এই সেই অমর প্রেমের গাঁথা “The Notebook” এর পুরোই বিপরীত... নাম একই হলেও বিষয় পুরোপুরি ভিন্ন! It is a very much sensitive movie with a lot of cruelty and horrifying drama. #:-S #:-S #:-S #:-S



“The Notebook 2013 (Original Title: A nagy füzet )”

IMDB rating: 6.9/10
Genre: Drama/ War
Cast: László Gyémánt, András Gyémánt, Piroska Molnár
Country of Origin: Hungary




**** এই লেখা সম্পূর্ণ রূপে আমার… পূর্বের কোন লেখার সাথে মিলে গেলে তা একান্তই co-incidence….no resemblance. আশা করি পোস্টটি ভালো লাগবে ! Happy Movie Watching !:#P !:#P !:#P
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×