somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শতভাগ বিনোদনে ঠাসা ব্ল্যাকমেইল //

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঘুর্নিঝড়ের কবলে ডুবে আছে পুরো শহর।এর মধ্যেই বেঁচে উঠেছে দুটো তাজা প্রান।জীবন চলার পথে অরিন আর মুসকান পরিনত হয় মহিলা গুন্ডায়।এই দুটো চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছে পূজা আর তিথি।ছবিটি দেখার পর জানতে পারলাম এটি হিন্দী গুন্ডে ছবি থেকে কপি করা হয়েছে ,যদিও অনন্য মামুন শুরু থেকেই দর্শকদের এমন মুগ্ধতায় নিয়ে গিয়েছিলেন যে ছবির পান্ডুলিপি কোথা থেকে নকল করা তা নিয়ে ভাবার অবকাশ আমরা পাইনি।বিশেষ করে চমৎকার কিছু সংলাপ চরিত্রেরর মধ্য দিয়ে খুব সাবলীল উপস্থাপন করেছেন পরিচালক।
ব্ল্যাকমেইল চমতকার সমন্ব্য় করিয়েছে -টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র দুই ধারার শিল্পীদের।এক্ষেত্রে হোটেলের ম্যানেজার চরিত্রে সোহেল রশিদের নাম উল্লেখ না করলেই নয়।তাকে আমি চিনেছি একজন পরিশুদ্ধ লেখক এবং নাটকের অভিনেতা হিসেবে।কিন্তু পূর্নদৈর্ঘ্য বাংলা ছবিতে এমন নেগেটিভ চরিত্রে তার সাবলীল অভিনয় আরো বেশি মুগ্ধ করেছে।টিভি নাটকের আর একজন অভিনেত্রী যে কিনা দাদা ভাইয়ের বোনের চরিত্রে অসাধারন প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছে।এই দুজন বাংলা ছবির সম্ভাবনাময় ভিলেন –এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
এবার দেখা যাক ছবিতে কি আছে।একটি পুরোদস্তর বাংলা ছবি হবার জন্যে যা যা দরকার তার সবটাই দিয়েছেন অনন্য মামুন।একশন,গানেরদৃশ্য ,সংলাপ ,অভিনয়ের ভেরিয়েশন,চরিত্রের আচমকা পরিবর্তন-এক কথায় বলা যায় এক দমে শেষ করে নেওয়ার মতোন একটি ছবি।অনেক সময় প্রেমের দৃশ্য দেখলে আমাদের একঘেঁয়ে মনে হয়,কিন্তু এই ছবির গান গুলো এমন সময় মতোন প্রেজেন্ট করা হয়েছে যে মনেই হয়েছিল এখানে গান হলে ভালো হতো।তবে মৌসুমী এবং ববিকে সমান তালে উপস্থাপন করতে গিয়েও ববিকে মনে হয়েছে রোমান্টিক দৃশ্যে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।এর মূল কারন কি শুধুই রোমিও তাকে ভালোবেসেছে বলে নাকি ববি সিনিয়র নায়িকা বলে।এখানে একটা কথা উল্লেখ না করলেই নয় যে মৌসুমী বাংলা ছবিতে নতুন হলেও অভিনয় দক্ষতায় কিন্তু ববির চেয়ে অনেক মেধাবী।একশন দৃশ্যে তার শারীরিক গঠন অনেক বেশি মাত্রায় সাপোর্ট দিয়েছে।অন্যদিকে ববিকে রোমান্টিং দৃশ্যেই বেশি ভালো লেগেছে,মারামারির দৃশ্যে খুব একটা মানানসই লাগেনি।মিলনের সাথে মৌসুমীর আরো একটা গান হলে সমান সমান লাগতো, আগাগোড়াইতো তারা সমানে সমানে ছিল।সে যাই হোক গানের ক্ষেত্রে যে সাহসিকতার পরিচয় অনন্য মামুন দিয়েছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার।একটুও ভাল্গার মনে হয়নি –“তোকে ছাড়া আর ভাল্লাগেনা...।“গানটি ইউটিউবে খুঁজে পাবো বলে আমার বিশ্বাস।এখন এই দুই সিংহীর মাঝখানে মিলন কে কি আদৌ সিংহের মতোন মনে হয়েছে মিলন অর্থাৎ রোমিওর উপস্থিতি?- তা নিয়ে আমার মনে শংসয় আছে।কারন মিলন একজন দক্ষ অভিনেতা ,কিন্তু বানিজ্যিক ছবির ফুল প্যাকেজ নায়ক হবার মতোন যোগ্যতা তার আছে কিনা তা ভাব্বার বিষয়।আর মৌসুমী হামিদের সাথে তার বয়সের পার্থক্য ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ।

এখন একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি।কমার্শিয়াল ছবি করতে গেলে পোশাক আশাকেও অনেক আধুনিক হতে হয়।আর আধুনিক হবার মানেই যে খোলা মেলা কাপড় বা সর্বদা টাইট শার্ট প্যান্ট পড়তে হবে এমন কোন মানে নেই।এই ছবিতে যিনি চত্রিত্রের অংগস্বজ্জা করেছেন তিনি লক্ষ করলেই দেখবেন ছবির শেষ দৃশ্যে দাদাভাইয়ের মৃত্যূর প্রতিশোধ নিতে মেয়েটি তার গায়ের শাড়ি খুলে ফেলে।ভেতরের যে কাপড়টি বেরিয়ে আসে তা দেখার জন্যে আমরা প্রস্তুত ছিলাম না মোটেও।মেয়েটি যদি মোটা না হয়ে একদম স্লীম হতো বিষয়টা চোখে লাগতো না,সে কেবল উতড়ে গেছে তার অভিনয় গুণে ।আবার অন্যদিকে মৌসুমীর গায়ের রঙ বেশ কালো।সে জন্য তাকে তার সাথে মানিয়ে যায় এমন পোশাক পড়ানো দরকার মনে হয়েছে।টাইট গেঞ্জি আর জিন্সের মাঝখানে মেদ সর্বস্ব পেট দেখতে কারো ভালো লাগবে না নিশ্চইই।যদি নকল করতেই হয়,পুরোটা করাই ভালো।শিল্পা-শেঠি বা প্রিয়াংকা চোপড়ার চেহারা লাগেনি দর্শকের মন জয় করতে ,কেবল অভিনয়ের প্রতি যত্শীলতা আর নিজের ফিগাররের প্রতি সচেতনতা থাকলেই যথেষ্ট।
মিশা সওদাগরের কথা আর লিখবো না।কারন তাকে নিয়ে এতো বেশি প্রশংসা করেছি যে এখন নতুন কোন শব্দ পাচ্ছি না।তাকে ছাড়া একটা তিন ঘন্টার ছবি দেখা এখন সত্যি অনেক কঠিন কাজ বলে আমার মনে হয়।সে যাই হোক,ছবির গল্প নকল হোক আর আসল ,পরিচালক আমাদের কোথাও দম নেওয়ার সুযোগ দেন নি।এক কথায় পুরো পয়সা উশুল করেই ঘরে ফিরেছি।আর মনে মনে গাইছি-আইসক্রীমের মতো আমার ভীষন কুল...তোর সাথে প্রেম করিতে হবেনারে ভুল।
পরিশেষে আমার বিরাট অভিযোগ আছে ব্ল্যাকমেইল ছবির পোষ্টার নিয়ে।এ পর্যন্ত যতোগুলো পোষ্টার দেখলাম সব গুলোতেই মিলনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।আর মৌসুমী এবং ববি দাঁড়িয়ে আছে দুই পাসে।একটা ছবিতেতো রীতি মতোন অশ্লীলভাবে নায়িকার ব্যাকসাইড দেখানো হয়েছে।কিন্তু কেন?নারীর শরীর দেখিয়ে অথবা পুরুষকে প্রাধান্য দিয়ে ছবির মার্কেটিং আর কতো কাল হবে এই দেশে ?পুরো ছবি দেখলেই বোঝা যায় এখানে রোমিওর কোন কেরামতি নেই,সব কেরামতি নারী চরিত্রকে ঘিরে ।তারপরো কেন এমন অবিবেচক পোস্টার লাগানো হচ্ছে যত্র তত্র?এতে ছবির মান কমে,শরীর দেখিয়ে দর্শক টানতে চাওয়ার দিন কবে যে শেষ হবে তা কে জানে।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৭
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×