##
তুমি হয়তো জানো না, বহু আগে যখন এইসব ফুল পাখি বৃক্ষের কোনো সীমানা ছিল না, মাটিও ভেঙে ভেতরে খাদ ও জলের প্রবাহ হয়েছিল কোথাও,—তখন, কোনো এক সন্ধ্যার কিছু আগে, মান ভাঙাতে তোমার পেছনে, পেছন পেছন ভীরু পায়ে ভাঙা সাইকেল ঠেলতে ঠেলতে এগিয়ে গিয়ে, কর্নারের ওই কড়ই গাছটার আড়ালে হঠাৎ তোমাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।
তারপর, ঝড়-ঝঞ্জার এক শতাব্দী পর আরো কোনো শতাব্দী পেরিয়ে হয়তো, কাঠ-ফাটা রোদ্দুরে তোমাকে দেখেছিলাম আবারো। দাঁড়িয়ে আছো এক চিলতে সময়ে। ওখানেই—যেখানে কড়ই গাছের আড়াল আমার বিস্ময়। আর তখন, উদাসী হাওয়ায় তোমার গোলাপী-লাল ওড়না আর আমার দ্বিতীয় মৃত্যুর দিন—মনে আছো শুধু এইটুকু। তাই—
তুমি হয়তো জানো না, আজ, এই শতাব্দীর দিন ও রাত্রি-তে, আমার আত্ম-অংশ-কে রেখে এসছি তোমার পাশেই। সে চিরায়ত। বহমান, ব্রহ্মার ছেলে। আমার আ-শৈশব প্রেম। আমার কৈশোর। আমার প্রথম যৌবনের প্রবল স্রোতের ধারা। সে আমার আমি।
তোমার পাশেই আছে ও। খুব কাছে। কাছাকাছি।
তুমি হয়তো জানো না, রাত্রি গভীর হলে যখন একে একে সব আলো নিভে যায়, ও তখন আমাকে সংকেত পাঠায়। আমাকে দৃষ্টি দেয়। আমি দেখতে পাই ব্যালকোনিতে তোমার মুখ। সমগ্র দিনের সমস্ত মেকআপ-মুখগুলো খুলে একদম একা নিষ্পাপ একটি মুখ—একটি বিষণ্ণ ফুল—যে তার একান্ত ভ্রমরের অপেক্ষায় অদ্ভুত সুন্দরভাবে প্রস্ফুটিত। বিশ্বাস করো, সেই মুহূর্তের ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ও বাতাসের খেলায় যখন দুলে ওঠে তোমার জুলফি—আলগোছে বাঁ-হাতে সরিয়ে দাও চোখের সামনের চুল,—সেই প্রথমবারের মতোই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে আমার—
মনে হয় শরীরের সমস্ত স্রোত নিয়ে দাঁড়াই তোমার সামনে। চোখে চোখ রেখে বলি এইতো আমি—মহাকাল—তোমার গন্তব্য—তোমার মোহনা। এইখানে এসে বিলীন হও। মাথা রাখো এই কাঁধে। নির্ভার হও। ভালোবাসো। আমাদের অপেক্ষার শেষ এখানেই। ভালোবাসো এবং
ভালোবাসো,—শুধুই ভালোবাসো ।।
১৫.০৭.২০১৮
ছবি : তৌসিফ হক
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪২